সাদা দাগ মানেই শ্বেতি নয়
২২ মার্চ ২০২৪, ১২:১৮ এএম | আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৪, ১২:১৮ এএম
শ্বেতি রোগ সম্পর্কে ধারণা থাকা চাই। শ্বেতি হচ্ছে কালো রঞ্জক প্রস্তুতকারী বহির্ত্বকের মেলানোসাইটের অনুপস্থিতিজনিত ত্বকের বর্ণের এক ধরনের অস্বাভাবিকতা, যার কারণে শরীর ও শ্লেষ্মা ঝিল্লির বিভিন্ন স্থানে দুগ্ধ ধবল সাদা সাদা দাগ সৃষ্টি হয়। তবে সাদা দাগ হলেই যে সেটা শ্বেতি রোগ হবে তা কিন্তু নয়।
শরীরের বিভিন্ন স্থানে নানা চর্মরোগও সাদা সাদা দাগ সৃষ্টির কারণ হতে পারে। যেমন- মরফিয়া, লাইকেন স্কেরোসাস, পিটাইরিয়াসিস এলবা, পিটাইরিয়াসিস ভার্সিকলর, পিন্টা, কুষ্ঠ রোগ, রাসায়নিক লিউকোডার্মা, এলবিনিজম পিবালডিজম, নিভাস এনেমিকাস ইত্যাদি। আবার সাদা হলেও যে শ্বেতি রোগ হবে না, তা কিন্তু নয়। শ্বেতি রোগ উজ্জ্বল সাদা বা চকের মতো ধবধবে সাদা বর্ণের হয় এবং এটা স্বাভাবিক বর্ণের চামড়া থেকে সুস্পষ্ট সীমারেখায় পৃথক থাকে। চামড়ার সাদা অংশে কোনোরকম আঁশ বা চর্মের গড়নে, গঠনে ও পুরুত্বে অস্বাভাবিকত্ব থাকে না, তবে সম্পূর্ণ পর্যবেক্ষণের সাহায্যে এ রোগের প্রকৃতি, বিস্তৃতি, বর্ণ ও আনুষঙ্গিক বৈশিষ্ট্য দেখে একজন অভিজ্ঞ চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ খুব সহজেই এ রোগ নির্ণয় করতে পারেন। ক্ষেত্রবিশেষে উডস ল্যাম্প পরীক্ষা এবং চর্ম বায়োপসির প্রয়োজন হয়।
কুসংস্কার আছে, শ্বেতি ছোঁয়াছে রোগ। এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা। একজন শ্বেতি রোগীর স্পর্শ অন্যকে এ রোগে আক্রান্ত করে না।
শ্বেতি রোগ নিয়ে গবেষণায় দেখা গেছে, বাবা অথবা মায়ের শ্বেতি থাকলে তার সন্তানদের এ রোগ হওয়ার কিঞ্চিৎ সম্ভাবনা আছে, তবে তা একটিমাত্র জিন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত না হয়ে বহু জিন বা বংশগতির ধারক দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। একজন শ্বেতি রোগীর ৩০ ভাগ আত্মীয়স্বজনের শ্বেতি রোগ থাকতে পারে, তবে বাবা বা মায়ের শ্বেতি থাকলেই সন্তানের হবে- এমন শতভাগ সম্ভাবনা নেই। এ রোগটিতে পুরুষ ও মহিলা সমহারে আক্রান্ত হয়।
শ্বেতি কেন হয় তা অদ্যাবধি গবেষকরা আবিষ্কার বা অনুসন্ধান করতে পারেননি। চামড়ায় কালো রঙ উৎপাদক বহিঃত্বকস্থিত কোষ মেলানোসাইটের স্থায়ী ধ্বংসপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে এ দৃষ্টিকটু সাদা দাগের সৃষ্টি; কিন্তু কেন এ কোষের অনাকাঙ্খিত মৃত্যু, তার কারণ জানার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
শ্বেতি রোগের সঙ্গে কিছু কিছু অভ্যন্তরীণ রোগের সহাবস্থান থাকতে পারে, যেমন-টাইপ এক বহুমূত্র রোগ, চোখের রোগ, পারনিসিয়াস এনিমিয়া, থাইরয়েড রোগ, এডিসন্স ডিজিস, এলোপেসিয়া এরিয়াটা ইত্যাদি। এ কারণে শ্বেতি রোগী কোনো চর্ম ও যৌন রোগ বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হলে তিনি ক্ষেত্রবিশেষ উল্লিখিত অভ্যন্তরীণ রোগগুলো আছে কিনা- তা শারীরিক ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার সাহায্যে নির্ণয় করে থাকেন।
সূর্যের আলো থেকে শ্বেতি রোগীদের সাবধানে থাকা উচিত; কেননা শ্বেতি রোগীর সাদা স্থানে সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি প্রতিরোধক কালো রঞ্জক না থাকায় আক্রান্ত স্থানগুলো এ রশ্মির প্রতি অতি সংবেদনশীল থাকে, ফলে সূর্যালোকের সংস্পর্শে সহজেই চামড়ার এ স্থান (শ্বেত স্থান) পুড়ে যেতে পারে। তাই সব শ্বেতি রোগীর সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করা উচিত। মনে রাখতে হবে, এ রোগটি সৌন্দর্যহরণ ব্যতীত শরীরের তেমন ক্ষতি করে না। আর খাবারের সঙ্গেও শ্বেতি রোগের কোনো সম্পর্ক নেই। তাই টক, দুধ, ডিম বা অন্য কোনো খাবার এ রোগ বৃদ্ধি করে না।
ডা. সাব্বির মুহাম্মদ শাওকাত
কনসালটেন্ট ও কসমেটিক সার্জন
মোবাইল: ০১৭১২৯৭২৮৪৮
বিভাগ : স্বাস্থ্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বেইজিংয়ে শুক্রবার ঐক্য সংলাপে বসছে ফাতাহ-হামাস
যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সহায়তা বিল বিশ্বকে আরও বিশৃঙ্খল করবে: জনমত জরিপ
ইবতেদায়ী মাদরাসাকে অবহেলিত রেখে দুর্নীতিমুক্ত জাতি গঠন সম্ভব নয়
গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে ইসরায়েলের পাল্টা প্রস্তাব বিবেচনা করছে হামাস
আমেরিকার পর এবার ইউরোপে ছড়িয়েছে ইসরায়েলবিরোধী আন্দোলন
শেরে বাংলার মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা
একটি গাছ রোপণ না করলেও এক বছরে ১৭শ গাছ কেটেছে বন বিভাগ
চোখের পানিতে আসমানের পানি চান হাজারো মানুষ
বৃষ্টি কামনায় মোহাম্মদপুরে বিশেষ মোনাজাত
নেট জগতে সাড়া ফেলেছে জনপ্রিয় অভিনেত্রী ফারিনের গান
ছেলের আঘাতে প্রাণ গেল যুবলীগ নেতার
কালকিনিতে হামলার মামলা করায় ফের হামলা, বোমায় আহত ১৫
রামপালে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের অভিযোগে তিন বিএনপি নেতাকে বহিষ্কার
নাটোরের গুরুদাসপুরে হিটস্ট্রোকে এক ব্যক্তির মৃত্যু
অবশেষে ‘বিদায়’ বললেন মার্তা
ভারত-পাকিস্তান রোমাঞ্চের অপেক্ষায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দূত যুবরাজ
২০১৬ সাল থেকে স্বপ্ন ছিল চেন্নাইয়ে খেলার: মুস্তাফিজ
সোসিয়াদাদকে হারিয়ে শিরোপার হাতছোঁয়া দূরত্বে রিয়াল
বেয়ারোস্টের রাজকীয় প্রত্যাবর্তনে রান তাড়ার অবিশ্বাস্য রেকর্ড পাঞ্জাবের