ফুসফুস ক্যান্সার প্রতিরোধ চাই
০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম
ফুসফুসের ক্যান্সার সচেতনতা মাস নভেম্বর
বিশ্বব্যাপী ফুসফুসের ক্যান্সারের ক্রমবর্ধমান প্রাদুর্ভাব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যেই নভেম্বর মাসটিকে ফুসফুসের ক্যানসার সচেতনতা মাস হিসাবে পালন করা হয়। আমাদের দেশেও সেমিনার ও সিমপোজিয়ামের মাধ্যমে মানুষকে সচেতন করা হয়ে থাকে। ধুমপান ও দুষিত বাতাসের কারনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হচ্ছে ফুসফুসের। ফলে দেখা দিচ্ছে শ্বাসকষ্টের সমস্যা, ফুসফুস ক্যানসার। এটি প্রাথমিকভাবে শনাক্ত করা বেশ কঠিন। কারণ অন্যান্য ক্যানসার শনাক্তকরণে যে স্ক্রিনিং পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, তা ফুসফুস ক্যানসারের ক্ষেত্রে ততটা কার্যকর না। তাই আক্রান্ত ব্যক্তি কোনো কারণে ফুসফুসের এক্সরে করেছেন, সেখান থেকে সন্দেহজনকভাবে পরবর্তী সময়ে ফুসফুস ক্যানসার শনাক্ত হয়ে থাকে।
> ফুসফুস ক্যানসার দুভাবে হতে পারে:-
১. ফুসফুসে ক্যানসার যখন শুধু ফুসফুসেই সীমাবদ্ধ থাকে। বলা যায় কাশি, জ্বর, গলার স্বর পরিবর্তন, কাশির সঙ্গে রক্ত কিংবা শ্বাসকষ্ট ফুসফুসে ক্যানসারের কিছু সাধারণ উপসর্গ, যেগুলো ফুসফুসে সীমাবদ্ধ থাকে।
২. ফুসফুস ক্যানসার ফুসফুসে সীমাবদ্ধ না থেকে ফুসফুস থেকে অন্য কোথাও ছড়িয়ে পড়ে; যেমন হাড়ে ছড়িয়ে পড়লে প্রবল ব্যথা অনুভব হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে ফুসফুস ক্যানসার মস্তিষ্কেও ছড়িয়ে যেতে পারে, এমনকি অজ্ঞান অবস্থাতেও রুগী আসতে পারে। এটি লিভারে ছড়িয়ে পড়লে পেটে ব্যথা কিংবা জন্ডিস নিয়ে আসে।
> ক্যান্সার কী?
বহুকোষী প্রাণীর শরীর অসংখ্য ছোট ছোট কোষের সমন্বয়ে তৈরি। এই কোষগুলো একটা নির্দিষ্ট সময় পরপর মৃত্যুবরণ করে। আর এই পুরনো মৃত কোষগুলোর স্থানে নতুন তৈরি হওয়া কোষ এসে জায়গা করে নেয়। সাধারণভাবে কোষগুলো নিয়ন্ত্রিতভাবে এবং নিয়মমাফিক বিভাজিত হয়ে নতুন কোষের জন্ম দেয়। তবে যখন এই কোষগুলো ক্যান্সার সহায়ক অনকোজিন সক্রিয় হওয়ার কারণে অথবা ক্যান্সার দমনকারী জিন নিষ্ক্রিয় থাকায় অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধি পেতেই থাকে; তখনই সেই স্থানে মাংসের দলা অথবা চাকা দেখা যায়। যাকে বলা হয় টিউমার। এই টিউমার বিনাইন কিংবা ম্যালিগন্যান্ট হতে পারে। ম্যালিগন্যান্ট টিউমারই ক্যান্সার নামে পরিচিত। অর্থাৎ নিওপ্লাস্টিক বা টিউমার কোষ উচ্চহার বিশিষ্ট আক্রমণাত্মকতা, মেটাস্টাসিস এবং শরীরের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ার ক্ষমতা সম্পন্ন হলে তাকে ম্যালিগন্যান্ট টিউমার বা ক্যান্সার বলে অভিহিত করা হয়।
> ফুসফুসের ক্যান্সারঃ-
উপরোক্ত বিষয়গুলো ফুসফুসে সংঘটিত হলে তাকে বলা হয় ফুসফুসীয় ক্যান্সার। শ্বাসতন্ত্রের যাবতীয় রোগের মধ্যে ফুসফুসের ক্যান্সার সবচেয়ে মারাত্মক। আমাদের দেশে মরণব্যাধি ক্যান্সারের সঠিক পরিসংখ্যান তেমন নেই। ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ফর রিসার্চ তথ্য অনুযায়ী প্রতি বছর বাংলাদেশে ১ লাখ ৫০ হাজার মানুষ নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে প্রতি বছর মারা যায় প্রায় ৯১ হাজার জন। মৃত্যুবরণকারী ব্যক্তিগণ প্রধানত ফুসফুস, কোলোরেক্টাল, পাকস্থলি, লিভার, স্তন, খাদ্যনালী, প্যানক্রিয়াস ও জরায়ুমুখ ক্যান্সারে ভুগেই মারা যান সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশে শনাক্ত মোট ক্যান্সার রোগীর প্রায় ১৬ শতাংশই ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত। ফুসফুসীয় ক্যান্সার ফুসফুসের শ্বাসনালি, বায়ুথলি ও মিউকাস গ্ল্যান্ডের এপিথেলিয়াম ইত্যাদি যেকোনো কোষ থেকেই সৃষ্টি হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে ক্যান্সার শুধু ফুসফুসেই সীমাবদ্ধ না থেকে তা লসিকাগ্রন্থি ও অন্যান্য অঙ্গে (যেমন মস্তিষ্ক, হাড় ইত্যাদি) ছড়িয়ে পড়তে পারে।
ক্যান্সার কোষের ওপর নির্ভর করে ফুসফুসের ক্যান্সারকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়, যেমন- স্মল সেল কারসিনোমা ও নন-স্মল সেল কারসিনোমা। নন-স্মল সেল কারসিনোমাকে আবার তিনটি ভাগে ভাগ করা যায়- স্কোয়ামাস সেল কারসিনোমা (৩৫ শতাংশ), এডেনোকারসিনোমা (৩০ শতাংশ) এবং লার্জ সেল কারসিনোমা (১৫ শতাংশ)। এ ছাড়াও ফুসফুসের অন্যান্য ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে এডিনয়েড সিস্টিক কারসিনোমা, লিম্ফোমা, সারকোমা প্রভৃতিদেখা যায়, যা মূলত দুর্লভ প্রকৃতির।
> ফুসফুসের ক্যান্সারের কারণঃ-
বিশ্বব্যাপী পুরুষের মৃত্যুর প্রথম কারণ ফুসফুসের ক্যান্সার, আর নারীদের ক্ষেত্রে এটি দ্বিতীয় কারণ। গ্রামের চেয়ে শহরবাসীরাই ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন বেশি। অবশ্য এর পেছনে যথাযথ কারণও বিদ্যমান- গ্রামের চেয়ে শহরে যানবাহন ও কল-কারখানার কালো ধোঁয়া, বায়ুদূষণ, ধুলাবালি সবকিছুই অনেক বেশি।
অজৈব পদার্থের ক্ষুদ্র কণা বা আঁশ যেমন- এসবেস্টস, নিকেল, ক্রোমিয়াম এবং জৈব পদার্থ যেমন- বেনজিন, বেনজোপাইরিন ইত্যাদি বায়ুর সঙ্গে ফুসফুসে প্রবেশ করে ফুসফুসের ক্যান্সার সৃষ্টি করতে পারে। ফুসফুসের ওপর প্রতিনিয়ত অত্যাচারই এর জন্য দায়ী। ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ রোগীই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ধূমপায়ী ও তামাকসেবী।
দিনে ২০টি করে ৪০ বছর সিগারেট খেলে ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কা অধূমপায়ীর তুলনায় প্রায় ২০ গুণ বেশি। নিয়মিত ধূমপায়ীদের মধ্যে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্মল সেল ক্যান্সার হতে দেখা যায়। ফুসফুসের অন্যান্য ক্যান্সারের তুলনায় এটি বেশি মারাত্মক এবং অপেক্ষাকৃত দ্রুত শরীরের অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে।
আবার ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর আত্মীয়ের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিও অন্যদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। এ থেকে ধারণা করা হয় যে, এই ক্যান্সারের উৎপত্তিতে বংশগত প্রভাবও বিদ্যমান। এ ছাড়া সিলিকোসিস, ইন্টারস্টিশিয়াল লাং ডিজিজ, সিস্টিক ফাইব্রোসিস, ক্রোনিক ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদি রোগগুলোতে ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকিও বেশ বৃদ্ধি পায়।
বায়ুতে রেডন গ্যাসের উপস্থিতি এবং অনাকাঙ্ক্ষিত তেজস্ক্রিয়তাও ফুসফুসের ক্যান্সারের উল্লেখযোগ্য কারণ। কতিপয় বিশেষ পেশাজীবী, যেমন- কয়লার খনিশ্রমিক, বিল্ডিং নির্মাণ শ্রমিক, পেট্রোলিয়াম, কেমিক্যাল বা রাবার কারখানার শ্রমিক ও জাহাজ শ্রমিক, যারা এক্স-রে বিভাগে কাজ করেন, যাদের রেডিয়েশন থেরাপি দেওয়া হয়, অ্যাসবেস্টস কারখানার কর্মী কিংবা প্রচুর ধূলা-বালুর মধ্যে কাজ করেন- এ ধরনের ব্যক্তিদের মধ্যে ফুসফুস ক্যান্সার হওয়ার হার বেশি। সেইসঙ্গে শরীরের অন্য কোথাও ক্যান্সার হলে সেই স্থান থেকে রক্তের মাধ্যমে দ্রুত ফুসফুসে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিও থাকে। যাকে বলা হয় ফুসফুসের সেকেন্ডারি কারসিনোমা। প্রায় ৪০ শতাংশ রোগীর ফুসফুসের ক্যান্সার একদম শেষ পর্যায়ে গিয়ে ধরা পড়ে। এর কারণ হলো অবহেলা।
> ফুসফুসের ক্যান্সারের লক্ষণঃ
ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম লক্ষণ হলো কাশি। কাশি যদি আট সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয় সঙ্গে বুকে ব্যথা থাকে তাহলে সাবধান হতে হবে। দুই-তৃতীয়াংশ রোগীর ক্ষেত্রে ফুসফুসের ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণ হিসেবে কাশি দেখা যায়। তবে কাশির সঙ্গে কফ তৈরি হবেই, এমন কোনো কথা নেই। কারণ খুশখুশে কাশিও হতে পারে ফুসফুসের ক্যান্সারের লক্ষণ। কাশির সঙ্গে রক্ত ওঠা ফুসফুস ক্যান্সারের আরেকটি লক্ষণ। ধূমপায়ী পুরুষ রোগীদের ক্ষেত্রে এ লক্ষণটি আরও বেশি দেখা যায়। এ ছাড়াও ক্যান্সার কোষ শ্বাসনালির কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করে। তাই দেখা দিতে পারে শ্বাসকষ্টও।
তদুপরি দীর্ঘদিন গায়ে গায়ে জ্বর থাকা, হঠাৎ করে ডায়েট বা ব্যায়াম ছাড়াই প্রায় ৫ কেজি বা তার বেশি ওজন কমে যাওয়া, ঘনঘন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়া, দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কর্কশ বা খসখসে হয়ে যাওয়া কণ্ঠস্বর বা কণ্ঠস্বরে হঠাৎ পরিবর্তন, দীর্ঘ সময়ব্যাপী ক্লান্তি বা অবসাদবোধ, দুর্বলতা, ক্ষুধামান্দ্য প্রভৃতিও হতে পারে ফুসফুসের ক্যান্সারের লক্ষণ।
পাশাপাশি শরীরের বিভিন্ন অংশ, যেমন ঘাড়, পিঠ, বুক ও বাহুতে ব্যথা হতে পারে। যা কাশি দেওয়ার সময় আরো বেড়ে যায়। প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষের ফুসফুস ক্যান্সার ধরা পড়ে বুক ও কাঁধের ব্যথা নির্ণয়ের মাধ্যমে।
> ফুসফুসের ক্যান্সার শনাক্তকরণঃ-ফুসফুসের ক্যান্সার শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে বুকে এক্স-রে করা হয়। মাইক্রোস্কোপের নিচে কফ বিশ্লেষণের মাধ্যমেও অনেক সময় ক্যান্সার কোষের উপস্থিতি শনাক্ত করা সম্ভব। তবে ক্যান্সার শনাক্তের সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো বায়োপসি। যেখানে অস্বাভাবিক কোষ বা টিস্যুর পর্যবেক্ষণ বা নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করা হয়। প্রচলিত বায়োপসিগুলোর মধ্যে ব্রংকোস্কপি, মেডিয়াস্টিনোস্কপি, নিডল বায়োপসি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
ফুসফুসীয় ক্যান্সারের চিকিৎসা শুরু করার আগে ক্যান্সার কোন পর্যায়ে আছে- তা নির্ণয় করা হয়। ক্যান্সারের ধরণ, অবস্থান ও আকার, স্টেজিং, গ্রেডিং এবং রোগীর শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে চিকিৎসার পরিকল্পনা করা হয়।
> প্রতিরোধে পরামর্শঃ-
ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো ধূমপান না করা ও তামক সেবন থেকে বিরত থাকা। এমনকি ধূমপায়ীর নিকটে অবস্থান করা থেকেও বিরত থাকতে হবে। শিল্প কারখানা ও গাড়ির কালো ধোঁয়া নির্গমন গ্রহণযোগ্য মাত্রায় কমিয়ে আনা জরুরি। বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ যেমন- ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম, অ্যাসবেস্টস ইত্যাদি এড়িয়ে চলাও বুদ্ধিমানের কাজ। আবার ফুসফুসের প্রদাহজনিত রোগ যেমন- যক্ষ্মা, নিউমোনিয়া ভালো হয়ে যাওয়ার পর ফুসফুসের আক্রান্ত স্থানে ক্যান্সার দেখা দিতে পারে। তাই এ বিষয়ে যথাসম্ভব সতর্ক থাকা আবশ্যক। ৫০ বছরের বেশি বয়সী ব্যক্তি যদি ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে প্রতিদিন ২০টির বেশি সিগারেট ব্যবহার করেন; তাহলে তাদের ফুসফুসের ক্যান্সারের জন্য স্ক্রিনিং করা উচিত। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগটি ধরা পড়লে চিকিৎসার মাধ্যমে মৃত্যুহার অনেকটাই কমিয়ে আনা যায়। সতর্কতার সঙ্গে কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে এই ভয়াবহ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশেই এড়ানো যায়। আর ফুসফুসকে সুস্থ রাখার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করে খাবার। বয়স বৃদ্ধি, পরিবেশ দূষণ এবং বিভিন্ন অসুখ-বিসুখের কারণে যাদের ফুসফুসের কার্যক্ষমতা কমে গেছে, তাদের খাবারের তালিকায় বাড়তি নজর দেয়া প্রয়োজন। আমেরিকান লাং অ্যাসোসিয়েশন এর রিপোর্ট অনুযায়ী, এক্ষেত্রে কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারের পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত। কারণ কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার পরিপাকের সময় বেশি কার্বন ডাই অক্সাইড তৈরি করে এবং উপকারি ফ্যাট জাতীয় খাবার পরিপাকের সময় কার্বন ডাই অক্সাইড কম পরিমাণে তৈরি করে। যার ফলে সুস্থ থাকে আমাদের ফুসফুস।
* পানিঃ-ফুসফুসের স্বাস্থ্য এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ঠিক রাখতে প্রতিদিন দুই থেকে তিন লিটার বা তার বেশি পানি পান করুন। এতে ফুসফুসের রক্ত সঞ্চালন ঠিক থাকে এবং শ্লেষ্মা পাতলা থাকে। ফলে শরীরের ভেতরে থাকা দূষিত পদার্থ ও জীবাণু হাঁচি-কাশির মাধ্যমে সহজেই বের হয়ে যায়।
* গ্রিন টিঃ-গ্রিন টি একটি স্বাস্থ্যকর পানীয়। গ্রিন টিতে থাকা উচ্চমাত্রার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফুসফুসের প্রদাহ কমায় ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। ফুসফুস ভালো রাখতে প্রতিদিন দুইকাপ গ্রিন-টি পান করতে পারেন।
* মাছঃ-বিভিন্নরকম মাছ আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে মাছ বেশ কার্যকরী। বিশেষ করে ফ্যাটি অ্যাসিড যুক্ত সামুদ্রিক মাছ ফুসফুসের কার্যক্ষমতাকে অনেকটা বাড়িয়ে দেয়। মাছে থাকা ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড ফুসফুসের সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়তা করে। তাই নিয়ম করে মাছ রাখুন পাতে।
* কাঁচা হলুদঃ-হলুদে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও কারকিউমিন, যা ফুসফুসকে দূষিত পদার্থের প্রভাব থেকে রক্ষা করে এবং প্রদাহ কমায়। প্রতিদিন সকালে কাঁচা হলুদ চিবিয়ে খেতে পারেন। শুধু হলুদ না খেতে ভালো না লাগলে মধু ও হলুদ একসঙ্গে খেতে পারেন।
* রসুন ও আদাঃ-এতে থাকা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্য ফুসফুসকে ভালো রাখে এবং ফুসফুস থেকে দূষিত পদার্থ বের করতে সাহায্য করে। ফুসফুসের রক্ত সঞ্চালন উন্নত করে এবং ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি কমাতে কাজে লাগে এই দুই মশলা।
* ব্রকলিঃ-ব্রকলিতে আছে সালফোরাফেন ও অক্সিডেটিভ, যা স্ট্রেসের ক্ষতি থেকে শরীরকে রক্ষা করে এবং ফুসফুসের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। তাই প্রতিদিনের খাবারের রাখুন ব্রকলি।
* ফল ও শাকসবজিঃ-নানারকম ফল ও শাক-সবজি খেলে ভালো থাকবে ফুসফুস। বেদানা, আপেল, আঙুর, কমলালেবু, পেয়ারা, গাজর, বিনস, শসা, কুময়ো ইত্যাদি ফল ও শাকসবজি ফুসফুস ভালো রাখে। এছাড়াও, পাকা মরিচ, অলিভ অয়েল, বাদাম ও বীজ জাতীয় খাবার, পেঁয়াজ, দুধ ও ডিম ইত্যাদি খাবার ফুসফুসের যতœ নিতে কার্যকর ভূমিকা পালন করে।
মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান, জাতীয় রোগী কল্যাণ সোসাইটি
চিকিৎসক,কলাম লেখক ও গবেষক
মোবাইল: ০১৮২২-৮৬৯৩৮৯
ইমেইল: [email protected]
বিভাগ : স্বাস্থ্য
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ তাদের মতামত জোর করে শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দিতো
ফরিদপুরে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় প্রাণ গেল মা ও মেয়ের
পতিত স্বৈরাচারের দোসর বিদ্যুৎ খাতের মাফিয়া আলাউদ্দিন নাসিম এখন কোথায়?
টঙ্গীবাড়ীতে সার ও বীজ আলু ডিলাদের সাথে ইউএনওর মত বিনিময় সভা
বরিশাল মহানগরীতে যৌথ বাহিনীর অভিযানে বিপুল দেশীয় অস্ত্র সহ দুজন আটক
জনগনকে সেবা দিতে হবে গফরগাঁওয়ে - ময়মনসিংহ নবাগত জেলা প্রশাসক
খুলনা বিভাগীয় বইমেলা ২৬ নভেম্বর থেকে শুরু
সালথায় স্কুলের যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল প্রধান শিক্ষকের
জাতির উন্নতিতে কোনো নেতাই কাজ করেনি: শিবির সভাপতি
দক্ষিণ আফ্রিকায় গ্যাং-শাসিত অবৈধ স্বর্ণখনির ঝুঁকির জীবন
নির্বাচন কমিশন গঠিত, নতুন সিইসি নাসির উদ্দীন
সাতক্ষীরায় গণসংবর্ধনা পেলেন সাফজয়ী ৩ খেলোয়াড়
সকাল থেকে স্থবির মহাখালী, ভোগান্তি চরমে
নারায়ণগঞ্জের জালকুড়িতে মিললো যুবকের গলাকাটা লাশ
আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে আপিলের বিধান রাখার কারণ জানালেন আইন উপদেষ্টা
ট্রাম্পের এ্যাটর্নি জেনারেল ম্যাট গেটজের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন আটকে গেল!
সাবেক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি মেহেদীর জামিন স্থগিত
ফ্যাসিস্ট হাসিনার পক্ষে আদালতে লড়তে চান জেড আই খান পান্না
মিরপুর ও মহাখালীতে অটোরিকশা চালকদের ধাওয়া দিল সেনাবাহিনী
সরকারি প্রাথমিক স্কুলগুলো ভালোভাবে চলে না -প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা