ঢাকা   বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১২ পৌষ ১৪৩১

মেধাভিত্তিক-আধুনিক ‘বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ প্রতিষ্ঠার দাবি

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার :

২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০১ এএম | আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০১ এএম

 নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন বিনির্মাণের অংশ হিসেবে ‘বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। একইসঙ্গে বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো বাংলাদেশেও সিভিল প্রশাসনকে অন্যান্য টেকনিক্যাল বা প্রফেশনাল ক্যাডারের সংমিশ্রণ থেকে পৃথক রাখা প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান কার্যালয়ে বিসিএস (প্রশাসন) কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড ও বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় এসব দাবি ওঠে।

সভায় বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের অবসরপ্রাপ্ত এবং কমরত বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা আলোচনায় অংশ নেন। আমন্ত্রিত আলোচকদের মধ্যে ছিলেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মঞ্জুর আহমেদ চৌধুরী, ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ প্রমূখ।

সভায় আলোচকেরা বলেন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান সরকারের উপ-সচিব পদে পদোন্নতির ক্ষেত্রে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের জন্য বিদ্যমান ৭৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫০ শতাংশ করার সুপারিশের কথা বলেছেন। উচ্চ আদালতে মীমাংসিত একটি বিষয়ে এ ধরনের বক্তব্য সম্পূর্ণ অনাকাক্সিক্ষত, কমিশনের আওতাবহির্ভূত এবং সর্বোচ্চ আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তারা বলেন, উপ-সচিব পদে পদোন্নতি প্রত্যাশী প্রশাসনের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কোনো প্রকার মতবিনিময় বা পর্যাপ্ত বিচার-বিশ্লেষণ না করে দেওয়া উল্লিখিত সিদ্ধান্তে মাঠ প্রশাসনসহ সব স্তরে কমরত বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ এবং প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন কমিশন প্রধানের এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদ জানায়।

আলোচকেরা আরো বলেন, কোটার বিরুদ্ধে শুরু হওয়া জুলাই বিপ্লব পরবর্তী গঠিত সংস্কার কমিশনের এই বক্তব্য জুলাই বিপ্লবের স্পিরিট এবং কমিশন গঠনের উদ্দেশ্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক মর্মে প্রতীয়মান হয়। প্রকৃতপক্ষে একটি জনমুখী, জবাবদিহিমূলক, দক্ষ ও নিরপেক্ষ জনপ্রশাসন বিনির্মাণের অংশ হিসেবে সার্ভিসের এন্ট্রি পদ থেকে শুরু করে সচিব পর্যন্ত পদগুলোর সমন্বয়ে একটি মেধাভিত্তিক এবং আধুনিক প্রশাসন ব্যবস্থার উপযোগী বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন।

প্রশাসনসহ রাষ্ট্রের বিভিন্ন সার্ভিসের কর্মকর্তারা যখন অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী আইনশৃংখলাসহ স্থিতিশীলতা রক্ষা এবং সার্বিক পরিস্থিতির উন্নয়নকল্পে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, সেখানে এ ধরনের বক্তব্য আন্তঃসার্ভিস দ্বন্দ্বকে উসকে দিতে পারে। এ জন্য কমিশনের লিখিত রিপোর্ট সরকারের কাছে দাখিলের আগেই আকস্মিকভাবে এ ধরনের একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কেন প্রকাশ্যে নিয়ে আসা হলো এবং তা রহস্যজনক বিধায় কমিশনের অভিপ্রায় খতিয়ে দেখার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানানো হয়।

আলোচকেরা বলেন, বিশ্বের যেসব দেশে আধুনিক জনকল্যাণমুখী প্রশাসন বিদ্যমান, সেখানে কোথাও বিভিন্ন টেকনিক্যাল বা প্রফেশনাল সার্ভিসের কর্মকর্তাদের কোটা-ব্যবস্থার মাধ্যমে সিভিল প্রশাসনে অন্তর্ভুক্তির ব্যবস্থা নেই। তদুপরি, সিভিল প্রশাসনের স্বাতগন্ত্র্যকে উপেক্ষা করে, বিভিন্ন সার্ভিসের কাজের ধরন, বৈশিষ্ট্য, ইত্যাদির পার্থক্য বিবেচনায় না নিয়ে সব জেনারেল বা টেকনিক্যাল বা প্রফেশনাল সার্ভিসকে একত্রে ক্যাডারভুক্তকরণ ব্যবস্থাও আধুনিক প্রশাসনের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং নজিরবিহীন। এ ব্যবস্থার মাধ্যমে নানাবিধ জটিলতা ও আন্তঃক্যাডার দ্বন্দ্বের বীজ রোপিত হয়েছে, যার নিরসন একান্ত প্রয়োজন।

 


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

শেরপুরে জেল পলাতক হত্যা মামলার ৩০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার
মুসলিম জাগরণের অগ্রপথিক মুন্সী মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ আজ জন্মদিন
গত সাড়ে ১৫ বছর যারা শাসন করেছে, তারা দেশকে না সাজিয়ে নিজেদেরকে সাজিয়েছে: আমীরে জামায়াত
জকিগঞ্জে বালাউটি ছাহেবের ঈসালে সাওয়াব মাহফিলে ভক্ত-মুরিদানের ঢল
বান্দরবানে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, পুড়ে যাওয়া ঘরগুলো নির্মাণের নির্দেশ
আরও

আরও পড়ুন

শেরপুরে জেল পলাতক হত্যা মামলার ৩০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

শেরপুরে জেল পলাতক হত্যা মামলার ৩০ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার

মুসলিম জাগরণের অগ্রপথিক মুন্সী মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ আজ জন্মদিন

মুসলিম জাগরণের অগ্রপথিক মুন্সী মোহাম্মদ মেহেরুল্লাহ আজ জন্মদিন

গত সাড়ে ১৫ বছর যারা শাসন করেছে, তারা দেশকে না সাজিয়ে নিজেদেরকে সাজিয়েছে: আমীরে জামায়াত

গত সাড়ে ১৫ বছর যারা শাসন করেছে, তারা দেশকে না সাজিয়ে নিজেদেরকে সাজিয়েছে: আমীরে জামায়াত

রাজস্থানে ৩ দিনেও উদ্ধার হয়নি ৭০০ ফুট গর্তে আটকে থাকা শিশু

রাজস্থানে ৩ দিনেও উদ্ধার হয়নি ৭০০ ফুট গর্তে আটকে থাকা শিশু

জকিগঞ্জে বালাউটি ছাহেবের ঈসালে সাওয়াব মাহফিলে ভক্ত-মুরিদানের ঢল

জকিগঞ্জে বালাউটি ছাহেবের ঈসালে সাওয়াব মাহফিলে ভক্ত-মুরিদানের ঢল

‘অন্তর্বর্তী সরকারের উদারতা এই কপালপোড়া জাতিকে অনন্তকাল ভোগাবে’

‘অন্তর্বর্তী সরকারের উদারতা এই কপালপোড়া জাতিকে অনন্তকাল ভোগাবে’

বিমান হামলায় গাজায় একসঙ্গে ৫ সাংবাদিককে হত্যা

বিমান হামলায় গাজায় একসঙ্গে ৫ সাংবাদিককে হত্যা

বান্দরবানে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, পুড়ে যাওয়া ঘরগুলো নির্মাণের নির্দেশ

বান্দরবানে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রধান উপদেষ্টার নিন্দা, পুড়ে যাওয়া ঘরগুলো নির্মাণের নির্দেশ

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সচিবালয়ের ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শনে উপদেষ্টারা

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় সচিবালয়ের ক্ষতিগ্রস্ত ভবন পরিদর্শনে উপদেষ্টারা

গাজায় যুদ্ধবিরতি বিলম্বে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ হামাস-ইসরায়েলের

গাজায় যুদ্ধবিরতি বিলম্বে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ হামাস-ইসরায়েলের

ফায়ার ফাইটার নয়নের জানাজা বাদ জোহর, অংশ নেবেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ফায়ার ফাইটার নয়নের জানাজা বাদ জোহর, অংশ নেবেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সচিবালয়ের আগুন লাগা ভবনেই উপদেষ্টা নাহিদ-আসিফের মন্ত্রণালয়

সচিবালয়ের আগুন লাগা ভবনেই উপদেষ্টা নাহিদ-আসিফের মন্ত্রণালয়

সচিবালয়ে প্রবেশ করতে শুরু করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

সচিবালয়ে প্রবেশ করতে শুরু করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

চাঁদপুরে দুই উপজেলার মধ্যবর্তী সেতু ভেঙ্গে পড়েছে

চাঁদপুরে দুই উপজেলার মধ্যবর্তী সেতু ভেঙ্গে পড়েছে

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাস মালিককে কুপিয়ে হত্যা

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে বাস মালিককে কুপিয়ে হত্যা

মোজাম্বিকে কারাগারে ভয়াবহ দাঙ্গায় নিহত ৩৩, দেড় হাজার বন্দির পলায়ন

মোজাম্বিকে কারাগারে ভয়াবহ দাঙ্গায় নিহত ৩৩, দেড় হাজার বন্দির পলায়ন

কেনাকাটার সময় আমরা সাধারণত যে ভুলগুলো করি

কেনাকাটার সময় আমরা সাধারণত যে ভুলগুলো করি

মিরপুরে সাংবাদিকদের ২১ বিঘা জমি এখনও ইলিয়াস মোল্লাহর দখলে!

মিরপুরে সাংবাদিকদের ২১ বিঘা জমি এখনও ইলিয়াস মোল্লাহর দখলে!

রংপুরে আওয়ামী লীগ নেতা মিলন গ্রেপ্তার

রংপুরে আওয়ামী লীগ নেতা মিলন গ্রেপ্তার

ইসরায়েলি বর্বরতা চলছেই, গাজায় নিহত বেড়ে প্রায় সাড়ে ৪৫ হাজার

ইসরায়েলি বর্বরতা চলছেই, গাজায় নিহত বেড়ে প্রায় সাড়ে ৪৫ হাজার