গাজীপুর সিটি নির্বাচন দুই বিদ্র্রোহী প্রার্থী নিয়ে বেকায়দায় আওয়ামী লীগ
২৯ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:২৪ পিএম | আপডেট: ০১ মে ২০২৩, ১২:১৭ এএম
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হেভিওয়েট দুই বিদ্রোহী প্রার্থী নিয়ে বেকায়দায় রয়েছে আওয়ামী লীগ। শেষ পর্যন্ত আলোচিত দুই বিদ্রোহী প্রার্থী মাঠে থাকলে নৌকার বিজয় নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছেন নির্বাচনী বিশ্লেষকরা।
সেক্ষেত্রে অনেকের মতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিজয় কঠিন হয়ে পরতে পারে।
নির্বাচনী এসব হিসাব নিকাশ এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতেও ঘুরপাক খাচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ কমিটির সদস্য গাসিক গাছা অঞ্চলের সভাপতি ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল্লাহ আল মামুন মন্ডল মেয়র পদে আঁটঘাঁট বেঁধেই প্রতিদ্ব›িদ্বতায় নেমেছেন। তিনি মনোনয়নপত্র দাখিলের পর দিনই বহুল আলোচিত সাময়িক বরখাস্ত মেয়র মো. জাহাঙ্গীর আলমও মেয়র পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এর আগে তার মনোনয়নপত্র দাখিল নিয়ে অনেকেই সংশয় প্রকাশ করেছিলেন। কিন্তু নির্বাচনে অংশ নেয়ার ব্যাপারে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরগরম ছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। অবশেষে সকল জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে এবং হাঁক-ডাকের মধ্যদিয়েই তার মনোনয়নপত্র দাখিল হলে নগরজুড়ে তুলপাড় শুরু হয়। মূহুর্তের মধ্যেই দৃশ্যপট পাল্টে যায়। নতুন করে নির্বাচনী হিসাব-নিকাশ শুরু হয়।
এদিকে নির্বাচনে বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েই গণমাধ্যমে নিজের জীবনের নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করেন জাহাঙ্গীর আলম। তবে যে কোনো পরিস্থিতিতে নিজে অথবা নিজের মায়ের পক্ষ হয়ে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তিনি। জোরপূর্বক অথবা কোনো আইনী মারপ্যাচে তাকে নির্বাচন থেকে বিরত রাখা হলে বিকল্পপ্রার্থী হিসেবে নিজের মাকেও নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য প্রস্তুত রেখেছেন। সেজন্য মায়ের নামেও মনোনয়নপত্র দাখিল করে অস্তিত্বের মরণপণ লড়াইয়ে নেমেছেন।
অপরদিকে আওয়ামী লীগের আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন মন্ডলও নির্বাচনী মাঠের সুফল নিয়েই ঘরে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন। এ অবস্থায় চরম বেকায়দায় পড়েছে আওয়ামী লীগ।
এতে সুবিধাজনক অবস্থান তৈরি হয়েছে জাতীয় পার্টির প্রার্থী নিয়াজ উদ্দিন ও বিএনপি ঘরানার স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থী সরকার শাহনূর ইসলাম রনির।
এ নির্বাচনী মাঠে শেষমেষ আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কোনো প্রার্থী না থাকলে জাতীয় পার্টির ও বিএনপি ঘরোনার স্বতন্ত্র প্রার্থীই
হবেন আজমত উল্লা খানের মূল প্রতিদ্ব›দ্বী এমনটিই মনে করছেন নগরবাসী। এ কারণে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলমের পাশাপাশি ভোটের মাঠে বেশ আলোচনায় রয়েছেন এই দুই প্রার্থী।
এদিকে মেয়র জাহাঙ্গীর বিরোধী আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন মন্ডলও তারুণ্যের শক্তি নিয়ে এবার নির্বাচনী লড়াইয়ে অবর্তীর্ণ হয়েছেন। জাহাঙ্গীর পতনে যারা ভূমিকা রেখেছিলেন মামুন মন্ডলও ছিলেন তাদের মধ্যে অন্যতম। তবে শেষ পর্যন্ত আজমত উল্লা খানকে সমর্থন দিয়ে মামুন মন্ডল নির্বাচন থেকে সরে যেতে পারেন বলেও গুঞ্জন রয়েছে। যদিও মানুন মল্ডল বরাবরই এমন গুঞ্জনের কথা অস্বীকার করে আসছেন। অপরদিকে জাহাঙ্গীর আলমও এবার খালি মাঠে ছেড়ে দিতে চাচ্ছেন না তার ঘোরতর এ দুই প্রতিদ্ব›দ্বীকে। তিনি জীবনের বিনিময়ে হলেও ‘ষড়যন্ত্রকারীদের’ কবল থেকে গাজীপুর নগরীকে রক্ষা করতে চান বলে গণমাধ্যমে ঘোষণা দিয়েছেন। তার শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে থাকার মরণপণ ঘোষণায় নগরবাসীর মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। তার সমর্থকদের মধ্যেও প্রাণ চাঞ্চল্য বিরাজ করছে। তবে নির্বাচনী মাঠে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী কোনো প্রার্থী শেষ পর্যন্ত টিকতে পারবেন কিনা তা নিয়েও অনেকে সংশয় প্রকাশ করছেন। এ অবস্থায় বর্তমান পরিস্থিতি যাই হোক, আগামী ৮ এপ্রিল মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন থেকে মূল নির্বাচনী খেলা শুরু হবে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।
শেষে আওয়ামী লীগের কোনো বিদ্রোহী প্রার্থী না থাকলে বিএনপি ঘরানার স্বতন্ত্রপ্রার্থী সরকার শাহ নূর ইসলাম রনি অথবা জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী এম এম নিয়াজ উদ্দিন নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খানের মূল প্রতিদ্ব›দ্বী হতে পারেন বলেও মনে করা হচ্ছে।
তবে দলের কোনো বিদ্রোহীপ্রার্থী অথবা অন্য কোনো স্বতন্ত্রপ্রার্থীকে এবার কোনো গুরুত্বই দিচ্ছেন না আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আজমত উল্লা খানের কর্মী-সমর্থকরা। যোগ্যতার দিক থেকে কোনো প্রার্থীকেই আজমত উল্লা খানের প্রতিদ্ব›দ্বী মনে করেন না দাবি করে মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ও নৌকা প্রতীকের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. ওসমান আলী বলেন, ‘এবার নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত। কোনো বিদ্রোহী প্রার্থীতায় নৌকার ভোটে কোনো ধরণের প্রভাব ফেলবে না। কারণ, এবারের সিটি নির্বাচনে যোগ্যতা, জনপ্রিয়তা ও জনমত জরিপে আজমত উল্লা খান অপ্রতিদ্ব›দ্বী, অদ্বিতীয় ও অপ্রতিরুদ্ধ।’
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ছিলো ২৭ এপ্রিল। সিডিউিল অনুযায়ী আজ ৩০ এপ্রিল প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাছাই হচ্ছে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৮ মে। নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ৯ মে এবং ভোট গ্রহণ হবে ২৫ মে। সব ভোটকেন্দ্রে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহন করা হবে। গাজীপুর জেলা নির্বাচন অফিসের সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭টি ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৩৮১। এর মধ্যে পুরুষ ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭২১, নারী ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৪২ এবং হিজড়া ভোটার ১৮ জন।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
কানাডার সাংবাদিকতায় গুগলের বড় আর্থিক সহযোগিতা
‘আল্লাহ মানব জাতিকে সম্মান দিয়ে সৃষ্টি করেছেন’
ট্রাম্পের 'হাশমানি' মামলার শাস্তি ঘোষণা ১০ জানুয়ারি , কারাদণ্ডের ইঙ্গিত নেই
প্রবীণ শ্রমিক নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সহিদুল্লাহ চৌধুরী মারা গেছেন
টিউলিপকে বিনামূল্যে লন্ডনে ফ্ল্যাট দেন আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী
৭ ঘন্টা পর আরিচা-কাজিরহাট এবং ৯ ঘন্টা পর পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌরুটে ফেরি চলাচল শুরু
গাজায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় দুইদিনে নিহত ১৪০, কাতারে যুদ্ধবিরতি আলোচনা চলছে
দৌলতদিয়া পাটুরিয়া নৌরুটে ঘন কুয়াশায় ফেরি চলাচল বন্ধ
চিকিৎসক ঘোষণা করেছেন মৃত, অ্যাম্বুলেন্সের ঝাঁকুনিতে ফিরে পেল প্রাণ
মারা গেছেন চিত্রনায়িকা অঞ্জনা রহমান
আবরার হত্যা নিয়ে নির্মিত হলো সিনেমা 'রুম নম্বর ২০১১'
আইটেম গানে নেচে কটাক্ষের শিকার উর্বশী
ভিনিসিয়ুসের লাল কার্ড,বেলিংহ্যামের পেনাল্টি মিসের পরেও রিয়ালের নাটকীয় জয়
রিকেলটনের অনবদ্য ইনিংসে রান পাহাড়ের পথে দক্ষিণ আফ্রিকা
নাঈমুল ইসলাম ও তার পরিবারের ব্যাংক হিসাব ১৬৩টি, জমা ৩৮৬ কোটি
সবার ঐক্যমতে দ্রুতই হবে ডাকসু নির্বাচন : ঢাবি ভিসি
ডলার বেচাকেনায় ব্যবধান ১ টাকার বেশি নয়
আবুবকর সরকার সভাপতি তুহিন হোসেন সাধারণ সম্পাদক
পীর ইয়ামেনী মসজিদের ইমাম মাওলানা এমদাদুলের ইন্তেকাল
খতমে নবুওয়ত না মানলে ঈমান থাকবে না