বেহাতের পথে ২০ কোটি টাকার জমি : নৈপথ্যে আ'লীগের দোসর সিন্ডিকেট
১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৫৬ পিএম | আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৬ পিএম
চরম অব্যবস্থাপনায় নিমজ্জিত সিলেট সরকারী ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ। কলেজের নাম পরিবর্তন হলেও এখন গেজেট হয়নি। দীর্ঘদিন থেকে নেই ব্যবস্থাপনা কমিটি। ছাত্রাবাসের জন্য মূল্যবান জমি বরাদ্দ হলেও লিজমানি পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায়, এখন বেহাত হওয়ার উপক্রম। নগরীর উপশহরে একাডেমিক ক্যাম্পাসের ২১ শতক ভূমি এখনো রেকর্ড করা হচ্ছে না প্রতিষ্টানের নামে। নেই ক্যাম্পাস ভবনের বাউন্ডারী দেয়াল। স্বৈরশাসক আওয়ামীলীগের চিহ্নিত দোসররা, এখনও প্রভাব বিস্তার করে হুমকির মুখে রেখেছে প্রতিষ্টানটির স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের স্বার্থ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, সিলেট সরকারী ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ছাত্রাবাস নির্মানের জন্য মূল্যবান ৩২ শতক ভূমি বরাদ্দ দেন সিলেট জেলা প্রশাসক। ভিপি নং ১১/১৯৮২-৮৩ মূলে ৩২ শতক জমি ছাত্রাবাসের জন্য বরাদ্ধ নিলে গত ২০১৮ সাল থেকে লিজমানি রহস্যজনক কারনে গ্রহন করছে না কর্তৃপক্ষ। এতে করে বরাদ্দ প্রাপ্ত জমিটুকু হাতছাড়া হওয়ার উপক্রম দেখা যাচ্ছে। এই জমির নগরীর ১৫ ওয়ার্ডের অর্ন্তভূক্ত সমতা-৮. এর বাজার মূল্য প্রায় ১০ কোটি টাকা। এছাড়া প্রতিষ্টানের আরও ২৬ শতক মূল্যবান ভূমি রয়েছে বেদখল অবস্থায়। এ নিয়ে পত্র চালাচালি হলেও দখলবাজদের কবল থেকে জমি উদ্ধারে ব্যর্থ হয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। একই ওয়ার্ডের সমতা-১০ নং এ অবস্থিত এই জমির বাজার মূল্য প্রায় ৮ কোটি টাকা। মূল্যবান এই জমির দখলদার ১৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সেক্রেটারী বিজয় কুমার দে বুলু বলে জানিয়েছেন কলেজ সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র। এই দখলবাজের সাথে কলেজে কর্মরত স্বৈরাচারের দােসরদের আঁতাতের কারনে ব্যাহত হচ্ছে দখল উচ্ছেদ। (এফ-৬৬/স: তি: ক:/২০১৩-২০১৪/৩৬৪; তারিখ ০৮/০৩/২০১৪ এবং স্বারক নং ২১০৫;তাং ১৮/০৯/২০১৪ইং এবং স্বারক নং ০৫.৪৬.৯১০০.০১৭.৯৯.০০৯.১৬.৩০৪; তারিখ : ০৮/১২/২০১৮)
অপরদিকে, নগরীর অভিজাত পল্লী শাহাজালাল উপশহর হাউজিং কর্তৃপক্ষ থেকে ১ (এক) একর জমি ক্রয় করা হয় কলেজের নামে। অথচ বিএস রেকর্ডে মাত্র ৭৯ শতক জমি কলেজের নামে রেকর্ডভূক্ত হলেও রেকর্ডহীন রয়েছে ২১ শতক ভূমি। প্রায় ৫ কোটি টাকা মূল্যের এ জমিটুকুর রেকর্ড সংশোধন করা হয়নি আ'লীগের স্বার্থান্বেষী ভূমি খেকোদের স্বার্থে। এখন পর্যন্ত একাডেমিক কাউন্সিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর(স্বাঃ অধিঃ/হোঃদেঃচিঃ/ সইআমেকহা/ ২০১৭-২০১৮/৩৮৪৪; তাং ২৫/১০/২০১৭ইং) গঠন করেননি কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজে ডিইউএমএস র্কোসের পাশাপাশি বিইউএমএস কোর্সো চালুর জন্য ২০১৪ সালে একটি কমিটি গঠিত হলেও এরপর থেকে কার্যক্রম চলমানে গঠন করা হয়নি নতুন কোন কমিটি। ফলে কার্যত বিইউএমএস কোর্সের কার্যক্রম কার্যত বন্ধ। ( স্বারক নং স্বা: অধি/স:তি:ক:/২০১৪/১৩২৫;তারিখ : ৩০/১১/২০১৪ইং)। ক
দীর্ঘ দিন থেকে হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটি / উপদেষ্টা কমিটি / উন্নয়ন কমিটি নেই কলেজে (স্বারক নং এফ-৬৬/সইআমেকহাসি/২০২৩/১৫৫; তারিখ : ০৮/১১/২০২৩ইং)।
কলেজের নাম পরিবর্তন হয়ে সিলেট সরকারী ইউনানী ও আয়ুর্বেদিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল হলেও আইবাসে নাম অর্ন্তভুক্ত কিংবা প্রকাশ হয়নি গেজেট। ফলে অনেক সময় বরাদ্দ আসলেও নামকরণ জটিলতায় ব্যয় করা জটিল হয়ে পড়ে। কলেজে নামে বরাদ্ধকৃত গাড়ীটি ২০১৩ সালে নিয়ে যায় চট্রগ্রামের ফৌজদার হাটে অবস্থিত বাংলাদেশ ইনফেকসাস ডিজিজ ইনস্টিটিউট। আজ অবধি সেই গাড়িটি ফেরৎ আনার পদেক্ষপ নেয়নি কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজে বাউন্ডারি ওয়াল না থাকায় কলেজটি কার্যত অরক্ষিত। এতে মূল্যবান স্থাপনা সহ কলেজের অভ্যন্তরের পতিত জমিতে রয়েছে দখলবাজদের শকুন দৃষ্টি। এমনকি অসামাজিক কার্যকলাপ সহ মাদক সেবনের নিরাপদ স্থান হিসেবে রাতে ব্যবহার হচ্ছে কলেজ আঙ্গিনা। এছাড়া কলেজের অল্টারনেটিভ মেডিকেল কেয়ার প্রকল্পে মেয়াদ শেষে হয়েছে চলতি জুন মাসে। এর ফলে প্রকল্পের ১০ জন শিক্ষক/মেডিকেল অফিসার অন্যত্র বদলী হয়ে চলে যাওয়ায় এখন শিক্ষক শূন্য কলেজ।
অপরদিকে, পতিত শেখ হাসিনার সরকারকালীন ছাত্রলীগের প্রভাব কাটিয়ে দেশীয় চিকিৎসা পদ্ধতির উন্নয়ন প্রকল্পে বহুমুখী লুটপাটে মেতে উঠেন দপ্তরী সোহেল রানা এবং আরামুল হক প্রধান। কেন্দ্রীয় আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ডাঃ মোঃ ইহতেশামূল হক চৌধুরী দুলালের প্রভাব, স্থানীয় সাবেক সাংসদ আবুল মাল আবদুল মুহিতের ভাগনি জামাই ডাঃ মোঃ মহিবুর রহমান খানের তদবিরে কলেজের লোভনীয় ক্যাশিয়ার পদটি দখলে নেন দপ্তরী সোহেল রানা।
এই পদ পেয়ে আর্থিক অনিয়মে বেপরোয়া হয়ে পড়েন তিনি। ওই পদে -----
বিরাট অংকের টাকা খরচ করে মেয়ে মোছাঃ রাহাতুর নুর জুঁইকে (২০২০-২০২১) শিক্ষবর্ষে একটি বেসরকারী মেডিকেল কলেজের পড়াশোনা (এমবিবিএস) করাচ্ছেন। সোহেল রানা ও আরামুল হক প্রধানের বিরুদ্ধে স্বীকৃত একাধিক অভিযোগ প্রমানীত হওয়ার তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় গ্রহন করা হয়নি রহস্যজনক কারনে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করেনি
এদিকে, কলেজ সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তি জানান, চিহ্নিত এই দুই দুর্নীতিবাজ বুদ্ধিভিত্তিক তৎপরতার মাধ্যেমে আ'লীগের কিছু নেতাদের খুশি করে প্রভাব বিস্তার করে যে অনিয়ম দুর্ণীতি করেছে, এর বিহীত ব্যবস্থার প্রত্যাশা করছি। নয়তো তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে পদক্ষেপ গ্রহন করবো।
এছাড়া কলেজে শিক্ষক শূণ্যতা প্রকট আকার ধারন করেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হতে ১৪ জন নিয়োগ প্রাপ্ত অনারারী শিক্ষক মেডিকেল অফিসারদের পক্ষে উচ্চ আদালতের রায় থাকা স্বত্তে উক্ত শিক্ষকদের ক্লাসে যোগ দান বা একাডেমিক কাউন্সিলে অংশগ্রহনের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। সেকারনে কলেজে বর্তমানে রাজস্ব খাতে কোন শিক্ষক বা অধ্যক্ষ নেই। বর্তমানে অধ্যক্ষ হিসেবে অতিরিক্ত দ্বায়িত্ব দেয়া হয়েছে সিলেট এম এ জি ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সহযোগী অধ্যাপক (চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগ) ডাঃ মইনুল ইসলাম চৌধুরী নান্নাকে।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
হবিগঞ্জে বিজিবি'র অভিযান : কাপড়, কসমেটিকস্ সহ ৩ কোটি টাকা মূল্যের ভারতীয় মালামাল উদ্ধার
সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে - অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার
একটি নৃশংস হত্যাকাণ্ড ও অভিবাসন বিতর্কে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র
হোল্ডারকে ছাড়াই বাংলাদেশের বিপক্ষে উইন্ডিজ দল ঘোষণা
ভাসানী গণমানুষের রাজনীতির আলোকবর্তিকা : বাংলাদেশ ন্যাপ
হেমন্তের শেষভাগেও বরিশালে তাপমাত্রার পারদ স্বাভাবিকের ওপরে, কৃষি ও জনস্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব অব্যাহত
সড়ক দুর্ঘটনায় দুমড়ে মুচড়ে গিয়েছে চিত্রনায়ক রুবেলের গাড়ি
ডিএসবির এক এসআইকে ক্লােজড করলেন সিলেটে এসপি, নৈপথ্যে চোরাই পণ্যের তথ্য!
উত্তরায় পোস্টার সরানোর হিড়িক
নারায়ণগঞ্জে রোববার হরতাল
যশোরের সবেক এমপি রণজিতের থাবা হিন্দুদের শ্মশানের জমিতেও!
আজিমপুরে ডাকাতির সঙ্গে শিশু অপহরণের কারণ জানাল র্যাব
রাশিয়া-উত্তর কোরিয়ার সামরিক চুক্তি নিয়ে ত্রিদেশীয় প্রতিক্রিয়া
যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচন
জুলাই-অগাস্টের ‘শহীদদের’ নামে হবে দুই শতাধিক স্টেডিয়াম: আসিফ মাহমুদ
পলের বিপক্ষে পেরে উঠলেন না টাইসন
ভুঁইগড় লিংক রোডের ওভারপাসের ওপর পড়ে ছিল মাছ ব্যবসায়ীর লাশ
মির্জা ফখরুলের সঙ্গে অস্ট্রিয়ার রাষ্ট্রদূত ক্যাথারিনার সাক্ষাৎ
যশোরে চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে নিহত আবদুল্লাহ
নতুন পাঠ্যপুস্তক থেকে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার বিষয়বস্তু অপসারণের দাবি