কিশোরগঞ্জে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে কটূক্তি করা বক্তব্য সমর্থন করেন না জেলা প্রশাসক (ডিসি) ফৌজিয়া খান। বিতর্কিত ওই বক্তব্যের জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে একটার দিকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ইমেইল থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “জেলা প্রশাসনকে হেয় প্রতিপন্ন ও বিতর্কিত করার জন্য একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা কিছু শব্দ ব্যবহার করেছেন। বিষয়টি পর্যালোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
জেলা প্রশাসন জুলাই বিপ্লবে আত্মদানকারী বীর শহীদ, আহত এবং অংশগ্রহণকারী জাতির অকুতোভয় সূর্য সন্তানদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করে। পাশাপাশি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের লক্ষ্য বাস্তবায়নের মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে জেলা প্রশাসন দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।”
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, “১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন কিশোরগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা ও আলোচনা সভার আয়োজন করে। এ আয়োজনে মুক্তিযোদ্ধাদের সর্বোচ্চ সম্মান জানানোই ছিল মুখ্য উদ্দেশ্য।"
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, "সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী ভূঁইয়া বিতর্কিত বক্তব্য প্রদান করেন। তার বক্তব্য জেলা প্রশাসন, কিশোরগঞ্জ কোনোভাবেই সমর্থন করে না। এটি তার একান্তই নিজস্ব মতামত। বিষয়টি জেলা প্রশাসন দৃঢ়ভাবে নিন্দা জানায় এবং এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
বৃহস্পতিবার দুপুর দেড়টার দিকে গুরুদয়াল সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জ জেলা শাখা।
গত ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিস আলী ভূঁইয়া শহীদ আবু সাঈদকে নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, “আবু সাঈদ কিসের শহীদ? কার সঙ্গে যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছে? তারা আন্দোলন করেছে, দেশটাকে এক হাত থেকে আরেক হাতে পরিবর্তন করেছে। তারা এখন আমাদের শাসন করবে?” বক্তব্য শেষে তিনি ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান দেন।এই বক্তব্য নিয়ে কিশোরগঞ্জে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আওয়ামী ঘরানার মুক্তিযোদ্ধাদের প্রাধান্য দিয়ে আয়োজন করা হয়েছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সাথে বৈঠকে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খান বলেন, "ইদ্রিস আলী ভূঁইয়ার বক্তব্য তার নিজস্ব মতামত। জেলা প্রশাসন এ বক্তব্যের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছে এবং তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"