‘শেখ হাসিনা বাক স্বাধীনতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা হরণ করে দাসের জাতিতে পরিণত করেছিল’

মাওলানা মোহাম্মদ শাহজাহান

‘শেখ হাসিনা বাক স্বাধীনতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা হরণ করে দাসের জাতিতে পরিণত করেছিল’

নোয়াখালী জেলা সংবাদদাতা

২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩৫ পিএম | আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:৩৯ পিএম

শেখ হাসিনা সরকার গুম, খুন, নির্যাতন ও সেনাবাহিনীর ৫৭ অফিসারদের হত্যার মাধ্যমে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব হুমকির দিকে ঠেলে দেয়। নির্বাচন,বিচার ব্যবস্থা ধ্বংস করে দিয়ে চাকরির নামে ঘরে ঘরে লাশ উপহার দিয়েছে। ১০ টাকা চালের পরিবর্তে অর্থনীতি ব্যবস্থা ভেঙে দিয়ে কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ তৈরি করেছে বলে মন্তব্য করেছেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান।

বুধবার সকালে নোয়াখালী জিলা স্কুল মাঠে নোয়াখালী জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কর্মী সম্মেলনে সংগঠনের নোয়াখালী জেলা সভাপতি এডভোকেট জহিরুল আলমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান উপরোক্ত কথাগুলো বলেন।

প্রধান অতিথি বলেন, আদালতে আলেম - ওলামাদের ডান্ডা বেড়ি পরিয়ে নেয়া হয়েছে , সাংবাদিকদের কলমে লিখতে বাধা দিয়ে শেখ হাসিনা বাক স্বাধীনতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা হরণ করে বাংলাদেশকে দাসের জাতিতে পরিণত করেছিল।

তিনি আরো বলেন, শেখ মুজিবের আমলে যুদ্ধ অপরাধের মীমাংসিত নন ইস্যুকে ইস্যুতে পরিণত করে জামায়াত নেতৃবৃন্দসহ আলেম-ওলামাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে। বিডিআর বিদ্রোহের নামে পিলখানায় ৫৭ জন অফিসারকে হত্যা করে ফ্যাসিবাদের রাস্তা তৈরি করেছিল শেখ হাসিনা। যিনি নেতা-কর্মীদের রেখে দেশ থেকে পালিয়ে যান, তিনি দেশ প্রেমিক রাজনীতিবিদ হতে পারেন না।

শেখ হাসিনার দেশে আসার বিষয়ে বলেন, শেখ হাসিনা দেশে আসার সুযোগ রয়েছে, তবে বাংলাদেশে আসার মাধ্যমে তাকে গুম, খুন, নির্যাতন ও মানুষ হত্যার বিচারের মাধ্যমে অপরাধী হয়ে আসামির কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে ফাঁসীতে ঝুলতে হব।রাজনীতিবিদ হিসেবে জনগণের সামনে আসার কোনো সুযোগ নেই তার।

জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রেজওয়ানুল হকের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন , বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নোয়াখালী জেলা আমীর শিক্ষাবিদ ইসহাক খন্দকার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি আব্দুস সালাম, চট্টগ্রাম মহানগর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের আমীর এ.এস.এম লুৎফুর রহমান প্রমুখ।

শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান প্রধান বক্তা হিসেবে বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে আমরা আবেদন জানাবো বিগত সময়ে যে সকল শ্রমিক হত্যা হয়েছে, সে গুলোর তদন্ত করে ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে। শ্রমিকলীগের নেতাদের কারনে শ্রমিকদের সব যায়গায় চাঁদা দিয়ে চলতে হয়েছে। যারা শ্রমিকদের নিপীড়ন, নির্যাতন ও হত্যা করেছে তাদের অবিলম্বে নিষিদ্ধ করতে হবে। শ্রমিক সংগঠনের মাধ্যমে যে সকল নেতারা কোটিপতি হয়েছে, অবৈধ টাকার পাহাড় গড়েছে তাদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

তিনি বলেন, নতুন বাংলাদেশে আর কোন চাঁদাবাজি চলবে না। যেখানে চাঁদাবাজি চলবে সেখানে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। চাঁদাবাজরা যেন আর মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে। শ্রমিকদের অধিকারের জন্য ৫৩ বছরে শ্রমিকরা কোন কল্যাণ পায়নি। আপনারা এমন একটা সংস্কার করুন যেন শ্রমিকদের আর নিপীড়ন হতে না হয়, বিনা চিকিৎসায় মরতে না হয়।

সম্মেলনে বক্তারা রিকশা চালকদের শ্রমিক হিস্যার যথাযথ সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করার পাশাপাশি রিকশা চলাচলের জন্য সড়ক ব্যবস্থাপনায় আলাদা লেন করাসহ কয়েকটি প্রস্তাব পেশ করা হয়।

এছাড়াও সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, নোয়াখালী জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা নিজাম উদ্দিন ফারুক, জেলা নায়েবে আমীর মাওলানা সাইয়েদ আহাম্মদ, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা বোরহান উদ্দিন , ইসলামী ছাত্রশিবির নোয়াখালী শহর সেক্রেটারি ছাত্রনেতা হাবিবুর রহমান আরমান, জামায়াতে ইসলামী নোয়াখালী জেলার বিভিন্ন উপজেলার আমীর ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ।

বিভাগ : বাংলাদেশ