কুষ্টিয়ায় ৬বছর পূর্বে আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে আদালত ভবনে অবরুদ্ধ করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলার তদন্তে অগ্রগতি শুন্য।
প্রায় আড়াই মাস পূর্বের এ মামলার আইও বলছেন তদন্তাধীন মামলার তথ্যানুসন্ধানে বাদীর সাথে যোগাযোগ অপরিহার্য, কিন্তু মামলার এজাহারে বাদির সাথে তাৎক্ষনিক যোগাযোগের প্রয়োজনে কোন সেল বা ফোন নং অথবা ই-মেইল আইডি না থাকায় তদন্তকাজ ব্যহত হচ্ছে।
এবছরের ১০ অক্টোবর কুষ্টিয়া মডেল থানায় রুজু হওয়া এই মামলার এজাহার নামীয় তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কুষ্টিয়া-৩ সদর আসনের সংসদ সদস্যা মাহবুবুল আলম হানিফসহ সাবেক দুই সংসদ সদস্য, তৎকালীন পুলিশের মহাপরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারী, কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মেহেদী হাসান ও কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি নাসির উদ্দিনসহ ৪৭ জনের নামোল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরও ২০/৩০ জনের বিরুদ্ধে ওই হত্যাচেষ্টায় জড়িত অভিযোগ রয়েছে। এসব এজাহার নামীয় অনেক ব্যক্তিই এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার এড়িয়ে প্রকাশ্যে কুষ্টিয়া শহরে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের খুঁজে পাচ্ছেন না বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের অভিযোগ।
মামলার জানা যায়,‘২০১৮ সালের ২২ জুলাই মামলার বাদি আমার দেশ পত্রিকার প্রকাশক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ও জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি কুমারখালী উপজেলার বানিয়াপাড়া গ্রামের মৃত: জামিল হোসেন বাচ্চুর ছেলে ইয়াসির আরাফাত তুষারের দায়ের করা একটি মানহানি মামলার বিবাদী হিসেবে কুষ্টিয়ার আদালতে হাজিরা দিতে আসেন। এসময় এজাহার নামীয়দের নির্দেশ/হুকুমে বাদিকে দিনভর অবরুদ্ধ করে রেখে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে আদালত চত্বরেই তার উপর সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা হামলা করে মারধর, ধারালো অস্ত্রের আঘাতে রক্তাক্ত জখম করে গুরুতর আহত করে। এঘটনায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে দেয়া এজাহারটি কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়। শুরুতে মামলাটির তদন্তভার দেয়া হয় কুষ্টিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আবু তাহেরকে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কুষ্টিয়া মডেল থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক সাইমুম হাসানের দাবি, মামলার তদন্ত তদন্তের গতিতেই চলছে; আসামীরা সবাই পলাতক থাকায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তাছাড়া আসামীদের সনাক্তে সাধারণত: মামলার বাদি বা বাদি কর্তৃক মনোনীত কোন ব্যক্তির সাহায্য নিয়ে পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার করে। এই মামলার ক্ষেত্রে সেটা সম্ভব না হওয়ায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। মামলার এজাহারে বাদির কোন ফোন, সেল নং বা ই-মেইল আইডি না থাকায় পুলিশের পক্ষ থেকে তাৎক্ষনিক কোন যোগাযোগ করা সম্ভব হয়ে উঠছে না। এমনকি এজাহারে উল্লেখিত সংগীয় ৪জন প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তির কথা উল্লেখ থাকলেও তাদের কোন নাম ঠিকানা বা যোগাযোগের কোন সেল নং বা ফোন নং নেই যে, তদন্তকাজে উনাদের সাহায্য নিবো।
এবিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক শেহাবুর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে এমামলার তদন্তভার দেয়া হয়েছে উপ-পুলিশ পরিদর্শক সাইমুম হাসান’কে। তিনিই তদন্তের কাজ সম্পন্ন করাসহ এজাহার নামীয়দের গ্রেফতারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন’। তবে এজাহার নামীয় আসামীরা পলাতক থাকায় এখনও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।