বাংলাদেশের জাতীয় প্রেস কাউন্সিল একেবারেই অকার্যকর হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান কামাল আহমেদ। রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সাথে তিন পার্বত্য জেলায় ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় কমর্রত সাংবাদিকদের মতবিনিময় সভায় গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন প্রধান কামাল আহমেদ এ কথা বলেন।
প্রেস কাউন্সিল তার কার্যকারিতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে উল্লেখ করে কামাল আহমেদ বলেন, প্রেস কাউন্সিল অতীতে সরকারের দপ্তরে পরিণত হয়েছিল। এই প্রেস কাউন্সিল দেশের সাংবাদিকদের উন্নয়নে কোন কাজই করেনি। এই প্রেস কাউন্সিলের ভূমিকা হওয়ার কথা ছিল স্বাধীন নিয়ন্ত্রক তদারকি প্রতিষ্ঠান হিসেবে। যেখানে সাংবাদিক ও সংবাদপত্র বিষয়ে দেখাশোনার করার কথা ছিল। কিন্তু তারা তা না করে দালালী করার কাজকে হাতে নিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, দেশে প্রেস কাউন্সিলের আর প্রয়োজন নেয়। এই প্রতিষ্ঠানের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। এই প্রতিষ্ঠান থাকার আর কোনো যৌক্তিকতা নেই। এর বিলুপ্ত ঘটিয়ে নতুন প্রতিষ্ঠান তৈরি করা দরকার বলে তিনি মত ব্যক্ত করেন।গণমাধ্যম সংস্কার কমিশন প্রধান আরও বলেন, যা আগামী দিনে কার্যকরী হবে এবং এর মাধ্যমে সাংবাদিকতার সব বিষয়ে জবাবদীহি নিশ্চিত করা হবে এবং সাংবাদিকদের স্বাধীনতাকে সুরক্ষা দেওয়া হবে।
সমতলের সাংবাদিকতা যে চ্যালেঞ্জ তা পার্বত্য তিন জেলায় আরো বেশী বলে উল্লেখ করে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, পার্বত্য অঞ্চলের সাংবাদিকতা করা খুবই কষ্ট সাদ্য। এখানকার সাংবাদিকদের অনেক ধরনের চাপ সহ্য করে সাংবাদিকতা করতে হয়। তার জন্যই আমরা পার্বত্য তিন জেলার সাংবাদিকদের সাথে কথাবলার জন্য এখানে বৈঠক করেছি। ৬ জানুয়ারি আমরা চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকার সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় করেছিলাম। সেখানে আমরা তিন পার্বত্য জেলার সাংবাদিকদের ডাকিনি।
তিনি বলেন, আমার দীর্ঘ ৪০ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে পার্বত্য অঞ্চল নিয়ে অনেক কাজ করেছি তার কারণে এই পাহাড়ের বাস্তবতা বুঝতে পারি। তিনি বলেন পার্বত্য অঞ্চলের সাংবাদিকদের জন্য কমিশনের বিশেষ সুপারিশ থাকবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। সাংবাদিকদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তার পাশাপাশি জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রভাবশালী রাজনীতিবিদদের হাত থেকে সংবাদ মাধ্যমকে মুক্ত রাখাসহ রাঙ্গামাটিতে তিন পার্বত্য জেলার সাংবাদিকদের সাথে গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের সভায় সুপারিশ করা হয়।
মতবিনিময় সভায় আরো জানারো হয়, সাংবাদিকরা আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত এ ওয়েবসাইটের মাধ্যমে মতামত বা সুপারিশ কমিশনের কাছে পৌঁছাতে পারবেন। সাংবাদিকদের প্রেরিত মতামত বিবেচনা করে কিভাবে গণমাধ্যমে সংস্কার আনা যায় এ বিষয়ে কমিশন সুপারিশ পেশ করবে।
সভায় কমিশনের সদস্য, বেগম কামরুন্নেসা হাসান, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মোস্তফা সবুজ উপস্থিত ছিলেন। রাঙ্গামাটি তথ্য অফিসের উপ পরিচালক অমীয় কান্তি খীসা, কমিশনের সদস্য সচিবসহ এ সভায় তিন পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটি খাগাছড়ি ও বান্দরবান জেলার ২৫টি উপজেলার সাংবাদিকগণ উপস্থিত থেকে বিভিন্ন সুপারিশ তুলে ধরেন।