কুষ্টিয়া ভেড়ামারা ৪১০ মেঃওঃ কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চ্যানেলের নিকট পদ্মা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন ও রাস্তা নির্মাণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। পদ্মা নদীর উজান থেকে পানি কম আসার কারনে যে কোন মুর্হুতে বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ হওয়ার আশংকা রয়েছে। পদ্মা নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনের দায়ে ৬জন বালু ব্যাবসায়ীকে কারাদন্ড প্রদান করেছে। পদ্মা নদীর বালু মহল দখল নিতে ইতিমধ্যে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ২টি বালু ঘাটে ব্যাপক তান্ডব চালিয়েছে। এ সময় ৬০/৭০ টা মোটর সাইকেল নিয়ে শতাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা বালুর ঘাট দখল নিতে ব্যাপক গুলি বর্ষন, ককটেল নিক্ষেপ করে। ভাংচুর করে ১৫টি মোটরসাইকেল। অগ্নিসংযোগ করা হয় ৬টি মোটরসাইকেলে। এ ঘটনায় ৭ জন আহত হয়েছে।
ভেড়ামারা ৪১০ মেঃওঃ কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের অফিস সুত্রে জানা গেছে, ৪১০ মেঃওঃ কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালানোর জন্য পদ্মা নদী থেকে চ্যানেলের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করে বাস্প ইঞ্জিনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে থাকে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চ্যানেলের মুখে ও আশেপাশে পদ্মা নদীর বালুর স্তপ থাকায় চরম হুমকির মুখে রয়েছে। চ্যানেলের চারপাশে বড় বড় বালুর স্তপ রয়েছে। চ্যানেলের পূর্ব পাশে পদ্মা নদী নদীর পানি বন্ধ করে রাস্তা নির্মাণ করেছে। উজান থেকে পানি কম আসায় যে কোন মুর্হুতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হওয়ার আশংকা রয়েছে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের চ্যানেলে পদ্মা নদী থেকে পানি আসা বন্ধ হলে কুলিং সিস্টেম বন্ধ হয়ে যাবে। বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বন্ধ হওয়ার আশংকা দেখা যাবে। এর ফলে দেশে বিদ্যুৎ ঘাটতিসহ লোড সেডিং হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
ভেড়ামারা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিস সুত্রে জানা গেছে, ভেড়ামারা থানার পুলিশ ও পাবনার নৌ পুলিশের সমন্বয়ে পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কাজে জড়িত থাকার দায়ে ৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। বিনাশ্রম কারাদন্ডরা হলেন সিরাজুল ইসলামকে ১৫ দিন, রাসেল হোসেনকে ১৫ দিন. রেজাউল শেখ ১৫ দিন, শ্রাবন আলীকে ৭ দিন, আব্দুল মমিনকে ৩ দিন এবং সম্রাট হোসেনকে ১ মাস। পদ্মা নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে ভেড়ামারার বাহিরচরের তড়িয়ামহল, বাগগাড়ীপোল, কৈগাড়িপাড়া এবং রায়টা পাথরঘাটে যৌথ অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
বাহিরচর ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার ও বালু ব্যবসায়ী সোহেল রানা ভুঁই বাবু জানান, একদল সন্ত্রাসীরা বালু ঘাটে এসে জোর করে অতিরিক্ত খাজনা আদায় করতে থাকে। এতে ব্যবসায়ীরা সংঘবদ্ধ হয়ে চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। কোন সন্ত্রাসীকে অতিরিক্ত চাঁদা তারা দেবে না। ব্যবসায়ীদের একটি বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। এরই ভিতর বিএনপি’র ক্যাডারা ৬০/৭০টি মোটর সাইকেলে প্রায় শতাধিক সশস্ত্র ক্যাডার বালু ঘাটে প্রবেশ করেই এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষন শুরু করে। ককটেল ফাটায়। এসময় ১৫টি মোটরসাইকেল ভাংচুর এবং ৬টি মোটর সাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয়। আওয়ামীলীগ নেতা রফিকুল ইসলাম চুনু’র নামে ঘাট ছিল। টাকা উঠাতো জাকিরুল নামের এক আওয়ামীলীগ নেতা। এই বালু ঘাট দখল নিতে আধিপত্য বিস্তার করতেই একদল সশস্ত্র সন্ত্রাসী এই হামলা চালায়।
শামসুজ্জামান সবুজ অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি’র ক্যাডাররা সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ঘাটে প্রবেশ করে ব্যবসায়ীদের লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ী গুলি বর্ষন শুরুকরে। ৭ জন ব্যবসায়ী আহত হয়। আমার মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করে পুড়িয়ে দেয়।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার ৪১০ মেঃওঃ কম্বাইন্ড সাইকেল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী প্রকেীশলী রবিউল আওয়াল বলেন, বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি চালানোর জন্য পদ্মা নদী থেকে চ্যানেলের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করে বাস্প ইঞ্জিনের মাধ্যমে বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়ে থাকে। চ্যানেলের নিকট পদ্মা নদী বালুর স্তপ থাকায় চরম হুমকির মুখে রয়েছে। চ্যানেলের পূর্ব পাশে পদ্মা নদীর পানি বন্ধ করে রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। উজান থেকে পানি কম আসায় যে কোন মুর্হুতে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি বন্ধ হওয়ার আশংকা রয়েছে।
ভেড়ামারা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আনোয়ার হোসাইন বলেন, থানা পুলিশ ও নৌ পুলিশের সমন্বয়ে পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কাজে জড়িত থাকার দায়ে ৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। পদ্মা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য একাধিক অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। আগামীতে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।