কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় চলছে হরিলুট- জমজমাট ঘুষ-বাণিজ্য, দেখার কেউ নেই!
০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৪২ পিএম | আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫:৪২ পিএম
কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ কার্যালয় ঘিরে আওয়ামী ফ্যাসিস্ট আমলে গরে উঠেছে
একটি শক্তিশালী ঘুষ- বাণিজ্য সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেটের নিত্য নতুন ফন্দিবাজি, জালিয়াতি, চাঁদা আদায়ের ফন্দী য়েন এখনো শেষ হচ্ছেনা।
সংঘবদ্ধ চক্রের হাতে অত্র এলাকার ভূমিসেবা প্রত্যাশী অনেক সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত হয়রানিসহ নিজেদের ভূমি হুকুম দখলের প্রাপ্য বৈধ অর্থ হারাচ্ছে। এতুন চক্রের সাথে জড়িত রয়েছে জেলা প্রশাসনের কতিপয় কর্মকর্তা, সার্ভেয়ার, অফিস সহকারী এবং স্থানীয় চাঁদাবাজ, দালালগণ। এই চক্রে রয়েছে প্রচুর অবৈধ অর্থ-সেই অর্থ দ্বারা সরকারের উপরিমহল থেকে শুরু করে নজরদারীসহ বিভিন্ন সংস্থাকে ম্যানেজ করে থাকেন ওরা।
অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য-উপাত্তে প্রতিয়মান হয় যে, কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ভূমি অধিগ্রহণ শাখাকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা অসাধু ঘুষ-বাণিজ্য ও বানোয়াট, কল্প কাহিনীর শিকার হয়ে বহু নিরীহ মানুষ দিনের পর দিন ভোগান্তিতে পর্যবসিত। অসংখ্য নিরীহ মানুষ এই সিন্ডিকেটের কাছে আত্মসমর্পণ বাধ্য হয়।
এই চক্রের লোলুপদৃষ্টির শিকার ও ভুক্তভোগীদের উত্থাপিত তথ্যে জানা যায়, চক্রটি প্রথমতঃ ভূমি মালিকদের টার্গেট করে থাকেন, পরে তাদের অফিসিয়াল প্রভাব দেখাতে মরিয়া হয়ে উঠেন। তাদের ইশারায় ফাইল উঠে-ফাইল নামে। পরে তাদের অনৈতিক প্রভাবে ফাইলবন্দী করে দর কষাকষি করে ৩০থেকে ৪০ ভাগ টাকা
আদায় করে থাকেন।
ভুক্তভোগী মাতারবাড়ি কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের অধিগ্রহণকৃত ভূমির সেবা প্রত্যাশী বেদার উদ্দিন আজাদ জানান, কক্সবাজার জেলায় একাধিক মেগা প্রকল্পের আওতায় শত শত একর জমি সরকার অধিগ্রহণ করেছে। এই উন্নয়ন কর্মকান্ডে অর্থ বরাদ্দের সুযোগে অনৈতিক ফায়দা হাসিলের স্বার্থে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গঠিত হয় কক্সবাজার জেলা প্রশাসন ঘিরে। তিনি নিজেও এই চক্রের শিকার হয়ে ৩০ ভাগ পর্যন্ত নিজ সম্পত্তির টাকা প্রদান করতে বাধ্য হয়েছেন। তিনি এইরূপ ঘুষ- বাণিজ্যের সিন্ডিকেট হোতাদের আইনের আওতায় শাস্তি দাবি করেন।
অন্য একজন ভুক্তভোগী সরকারি কলেজের অবসরপ্রাপ্ত প্রফেসর আখতার আলম জানান, জেলা দায়রা জজ ১ম আদালত হতে অমাবশ্যাখালী মৌজার জনৈক ছৈয়দ নুরের অধিগ্রহণ কৃত জমির অংশ হতে ১৫ (পনের লক্ষ) টাকা ক্রোকাবদ্ধ করে। এন.আই.এ্যাক্ট মামলার বাদী হিসেবে তাহাকে ডিক্রিদার হিসেবে প্রদান করার জন্য ৩ বৎসর পূর্বে জেলা প্রশাসক কক্সবাজার বরাবরে লেভি ওয়ারেন্ট ইস্যু করা হয়।
রাজস্ব শাখার নানাবিধ হয়রানির পর সম্প্রতি কার্যক্রম শুরু করে। কিন্তু চেক প্রাপ্তির লগ্নে এই সিন্ডিকেট চক্রের ঘুষ-বাণিজ্যের প্রস্তাবে সম্মতি আদায় করতে না পেরে তারা ঘুষ নেয়ার নতুন পথ বের করে।
মনগড়া কাল্পনিক আপত্তি উত্থাপন করে চাঁদা আদায়ে বাধ্য করার জন্য অফিস সংশ্লিষ্ট অসাধু ব্যক্তি ও দালাল চক্রের যোগসাজশে মিথ্যা, বানোয়াট দাবী উত্থাপন করে বৈধ প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত রাখা হয়। ভুক্তভোগী হওয়ায় তিনি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আদালতে আসামীসহ সংশ্লিষ্টদের শান্তি দাবী করে ফৌজদারী অভিযোগ দায়েরে বাধ্য হয়েছেন।
জানা গেছে, বর্তমানে অভিযোগটি পি.বি.আই কক্সবাজার দপ্তরে তদন্তাধীন রয়েছে। বিশেষায়িত এই সংস্থা আইনানুগ কার্যক্রম এই জঘন্য সিন্ডিকেটের মূল উৎপাটন করে মুখোশধারীসহ সকলকে আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে সক্ষম হবে বলে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন ভোক্তভোগীরা।
এই চক্রের কয়েকজন সদস্য ইতিপূর্বে ধরা পড়েছে। এমনকি
এই চক্রের সদস্য কক্সবাজারের সাবেক জেলা প্রশাসক রূহুল আমিন ও সাবেক জেলা প্রশাসক রাজস্ব জাফর আলম কোটি কোটি টাকা ঘুষ গ্রহণের দায়ে জেল খেটেছেন।
স্থানীয় অপর ভুক্তভোগী শহরের নুনিয়ারছড়ার বাসিন্দা আবদুল করিম জানান, জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ বিষয়ে একটি দালাল সিন্ডিকেট রয়েছে। জমজমাট দালালির টাকা কামিয়ে কতিপয় দালাল এই শহর এলাকায় একাধিক দালান সহ বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে। তাদের রয়েছে প্রচুর ব্যাংক-ব্যালেন্স রয়েছে। অথচ প্রকল্প চালু হওয়ার পূর্বে তাদের সামাজিক ও আর্থিক অবস্থান তলানির পর্যায়ে ছিল। অসৎ উপায়ে অর্থ উপার্জনকারী দানবীয় এই মানুষগুলোর দাপটে এলাকার মানুষ তটস্থ থাকে এবং এই চক্র আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নয় বরং বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শনে তারা সিদ্ধহস্ত।
সচেতন মহলের প্রশ্ন বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে সম্প্রতি এতো বড় ত্যাগ, প্রাণ বিসর্জন এই হায়েনাদের কোন পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়নি। তারা মনে করেন দুর্নীতিমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরো নিবিড় তদারকি সময়ের দাবি।
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা আজহারের রিভিউ শুনানি ২৩ জানুয়ারি
দাঁড়িয়ে থাকা বালুবাহী ট্রাকে মোটরসাইকেলের ধাক্কা, নিহত ২
চীনের অবিশ্বাস্য সামরিক উত্থানে টনক নড়েছে ভারতের!
সস্তায় মাংস রপ্তানির প্রস্তাব দিয়েছিল ব্রাজিল, না আসার কারণ জানালো রাষ্ট্রদূত
বায়ুদূষণে শীর্ষে দিল্লি, ঢাকার অবস্থান কত?
ইউক্রেনে রাশিয়ার ভয়াবহ বোমা হামলা, নিহত অন্তত ১৩
টিউলিপের উচিত এখন দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো : দ্য টাইমস
ভয়ঙ্কর দাবানল : জীবন বাঁচাতে গাড়ি ফেলে পালাচ্ছেন অ্যাঞ্জেলেসবাসীরা
সউদীতে ব্যাপক বন্যা, মক্কা-মদিনায় রেড অ্যালার্ট জারি
মালয়েশিয়ার পাম বাগানে প্রয়োজন ২ লাখ কর্মী
জুলাই গণঅভ্যুত্থান বিষয়ক বিশেষ সেল গঠন
লন্ডনে চিকিৎসা শুরু খালেদা জিয়ার, যা জানা গেল চিকিৎসা সম্পর্কে
গোয়ালন্দে ৩ টি বিদেশী পিস্তল- গুলি ও খালি ম্যাগাজিন উদ্ধার
গাজায় বর্বর হামলায় নিহত আরও অর্ধশতাধিক ফিলিস্তিনি
গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থানা থেকে হত্যা মামলার আসামি পলায়ন
চিরনিদ্রায় সাহিত হলেন এফডিইবি'র কেন্দ্রীয় সভাপতি প্রকৌশলী গিয়াস উদ্দিন
ডাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণার দাবিতে টানা কর্মসূচি ঘোষণা
গভীর রাতে উত্তাল ঢাকা আলিয়া
সংঘর্ষের পর দুটি বাস ও অ্যাম্বুলেন্সে আগুন, নিহত ৪
টানা তৃতীয়বারের মতো সুপার কাপের ফাইনালে বার্সালোনা