বোয়ালমারীতে প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত মোঃ দেলোয়ার হোসেন দুলু মোল্লা (৪৬) মারা গেছে । ঘটনার পর টানা ১৬ দিন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসারত মারা গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার(১০ এপ্রিল) মৃত্যুর খবরটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে সবজায়গায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মৃত্যুর খবরটি একটু গোপন থাকলে জানাযায়,গত ৬ এপ্রিল তিনি ঢাকায় মারা যান দুলু মোল্লা।
তিনি ছিলেন, বোয়ালমারী পৌরসভাধীন পূর্ব কামার গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবার নাম মৃত নুরুল হক মোল্লা। জমি-জমা নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে গত ২১ মার্চ তিনি এ হামলার শিকার হন বলে জানাগেছে।
মামলার এজাহার ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানাযায়,পৈত্রিক জমিজমা নিয়ে প্রতিবেশী মোঃ কাশেম মোল্লা,সিদ্দিক মোল্লা গংদের সঙ্গে নিহত দুলু মোল্লা গংদের বিরোধ চলে আসছিল দীর্ঘদিন ধরে। এরই ধারাবাহিকতায় ঘটনার দিন সকালে বিতর্কিত ঐ জমি থেকে দুলু মোল্লার ছোট ভাই মোহাম্মদ আমির হোসেন মাটি কাটতে গেলে বিবাদী কাশেম মোল্লা,সিদ্দিক মোল্লা,লুৎফার মোল্লা,নজরুল মোল্লা,তাহিদ মোল্লা গং বাঁধা প্রদান করেন। এনিয়ে বাক-বিতন্ডার এক পর্যায়ে বিবাদীরা আমির হোসেন কে মারধর শুরু করলে তাকে উদ্ধারে এগিয়ে আসেন দুলু মোল্লা।
এ সময় অভিযুক্তরা দুলু মোল্লাকে ধারালো অস্ত্র (ছুড়া)দিয়ে উপর্যুপরি কুপিয়ে মারাত্মক আহত করে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে প্রথমে ফরিদপুর মেডিকেলে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৬ এপ্রিল তিনি মারা যান। দুলু মোল্লা ও তার ভাই আমির হোসেন মোল্লার উপর হামলার ঘটনায় গত ২৭ মার্চ একটি মামলা হয় বোয়ালমারী থানায়। এতে ৬ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত নামা আরো ৪/ ৫ জনকে আসামি করা হয়। নামাঙ্কিত আসামীরা হলেন,কাশেম মোল্লা, সিদ্দিক মোল্লা, লুৎফর মোল্লা, নজরুল মোল্লা,তাহিদ মোল্লা ও হযরত তালুকদার।
এ মামলায় ১ নং আসামি কাশেম মোল্লা ও ৬ নং আসামী ফজলু তালুকদার গ্রেফতার হলেও বর্তমানে তারা জামিনে আছেন। ইতিমধ্যে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেলোয়ার হোসেন দুলু মারা যাওয়ায় আগের মামলাটি হত্যা মামলায় রুপান্তর সহ আরো দুই আসামীকে এজাহারে অন্তর্ভুক্তির আবেদন জানানো হয়েছে বলে নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানাগেছে। নিহত দুলু মোল্লার বড় ভাই মামলার বাদী আব্দুল মান্নান মোল্লা বলেন,পরিকল্পিত ও নৃশংস ভাবে আমার এক ভাইকে খুন করা হয়েছে। অপর এক ভাই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমতাবস্থায় এ মামলার আসামীরা কি ভাবে জামিন পায় তা আমার বোধগম্য নয়। মামলার সকল অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তারপূর্বক সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন তিনি।
বোয়ালমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মাহমুদুল হাসান এক প্রশ্নের জবাবে বলেন,এ ঘটনায় নতুন করে এজাহার নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। তদন্তের সময় নতুন কোন আসামীর সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তিনি স্বাভাবিক নিয়মেই চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত হবেন। বাদীপক্ষ নতুন করে দুই আসামিকে এজাহারে অন্তর্ভুক্তির আবেদন জানিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে তাদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। মামলার সব আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলে জানান মাহমুদুল হাসান।