আওয়ামী লীগকে গণহত্যাকারী হিসেবে ঘোষণার আগ পর্যন্ত রাজপথে থাকবো : এনসিপি নেতৃবৃন্দ

Daily Inqilab মাসুদ পারভেজ (উত্তরা)

২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:১৪ পিএম | আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:১৪ পিএম

আওয়ামী লীগকে গণহত্যাকারী হিসেবে ঘোষণার আগ পর্যন্ত রাজপথে থাকবে বলে জানিয়েছে এনসিপির নেতৃবৃন্দগণ।

স্বৈরাচার আওয়ামী লীগের বিচার ও তাদের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ, সংস্কার এবং গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে বৃহত্তর উত্তরা জোন জাতীয় নাগরিক পাটি (এনসিপি) আজ ২৩শে এপ্রিল বুধবার সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।

এসময় প্রধাণ অতিথির বক্তব্যে এনসিপির কেন্দ্রীয় মূখ্য সংগঠন সার্জিস আলম বলেন,
জুলাই-২০২৪ সালের অন্যতম যুদ্ধক্ষেত্র বাংলাদেশের ইতিহাস যতদিন থাকবে, ততদিন থাকবে উত্তরা বিএনএস সেন্টারের ইতিহাস। আরো থাকবে ওই ৫ই আগষ্ট যেদিন মানুষ গণভবনের দিকে তাকিয়ে ছিল কখন আমরা গণভবনে যাবো। ৫ আগষ্ট প্রথম উত্তরা বিএনএস সেন্টার থেকে গণভবনের দিকে যাত্রা শুরু হয়েছিল।
আন্দোলনের আজ ৮ মাস পর দাঁড়িয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টিকে বলতে হবে না আপনাদের কি করতে হবে? অন্তবর্তী কালীন সরকারকে ক বলতে হবে না আপনাদের কি করতে হবে? বিএনএস সেন্টারের এই দেওয়াল গুলো বলে দিবে বাংলাদেশ সরকারের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে কি করতে হবে। আপনারা চারপাশের দেয়ালের দিকে তাকান দেওয়ালে লেখা আছে খুনি হাসিনার কথা। রক্তের উপর লেখা আছে খুনি হাসিনার কথা, ২৪ এর এই রক্তের উপর দাঁড়িয়ে আমরা কিভাবে নির্বাচনের কথা বলতে পারি, এই নির্বাচনের কথা বলে খুনি হাসিনার নাম থেকে খুনি শব্দটি মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে চাপ দেওয়া হচ্ছে প্রশাসনকে দুর্বল করা হচ্ছে খুনি হাসিনার নাম থেকে যাতে খুনী শব্দটি মুছে দেওয়া যায়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং প্রশাসনের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি ও সবচেয়ে বড় ষড়যন্ত্র খুনি হাসিনার নাম থেকে খুনি শব্দটি মুছে দেওয়া। তিনি আরো বলেন, উত্তরার দেওয়ালে দেওয়ালে লেখা আছে রক্তে রক্তে লেখা আছে স্বৈরাচার চাই না, স্বৈরশাসন চাই না, স্বৈরাচারের দোসরদেরকে চাই না।
এই উত্তরা যে স্বৈরাচারকে হটিয়েছে সেই স্বৈরাচারকে আমরা আর চাই না, আমরা চাইনা এই বাংলায় আর স্বৈরাচার গঠিত হোক, স্বৈরাচার তৈরি হোক।বিক্ষোভ সমাবেশে সারজিস আলম আরো বলেন, হাসিনা কখনো একা খুনি হাসিনা হয়ে ওঠে নাই, যারা তাকে খুনি হাসিনা হয়ে উঠতে সহযোগিতা করেছে এই বাংলায় তাদের বিচার হওয়া না পর্যন্ত, না হওয়া পর্যন্ত এই বাংলায় কোন নির্বাচন চাই না। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, আজকে যারা বড় বড় কথা বলে তাদেরকে আমরা দেখেছি ওই যে অফিসের গেট ওই যে অফিসের দেয়াল তার ভিতরে নিজের মুখ ডেকে রেখে চেয়ারের বুকে বসে থাকতে। ঐদিন স্বৈরাচারকে হটানোর জন্য যারা ওই গেট ভেঙে বাইরে বের হয়ে আসছিল, যারা নিজের বুক স্বৈরাচারের সামনে পেতে দিয়েছিল তাদের ওই লাশের দিকে না তাকিয়ে তাদের ওই রক্তের দিকে না তাকিয়ে, তাদের বিচার না চেয়ে যারা আজ নির্বাচন নির্বাচন করছেন তাদের চোখ ক্ষমতার দিকে। তারা ক্ষমতার লোভে নির্বাচন নির্বাচন করছে, যাদের চোখ ক্ষমতার দিকে ছিলো তাদের আজ কি অবস্থা হয়েছে তা খুনি হাসিনার দিকে তাকালেই আপনারা দেখতে পাবেন। এনসিপির কেন্দ্রীয় মূখ্য সংগঠন আরো বলেন,
এই বাংলাদেশে শহীদের বিচার না হওয়া পর্যন্ত যারা নির্বাচন নির্বাচন করছে, তাদের লোভ ওই চেয়ারের দিকে তাদের লোভ ক্ষমতার দিকে। খুনি হাসিনার পতন হয়েছে এই বাংলায় তাদেরও পতন হবে। যারা জনগণের স্বার্থ এই বাংলায় দেখেনি,যারা ব্যক্তি স্বার্থকে জনগণের স্বার্থ বলে চালিয়ে দিয়েছে তাদের বিচার এই বাংলায় হবে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই তাদের ফল ভালো হবে না, আমরা এর আগেও দেখেছি আওয়ামী লীগ সরকারের সাথে মিশে একদল প্রশাসন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করেছে, তারা এখনো অন্যদের সাথে মিশে মামলা বাজি ও সন্ত্রাসী করে যাচ্ছে। আবার তারাই নিরপরাধ সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার করছে হয়রানি করছে মামলা দিচ্ছি, আবার তারাই অনেক বড় বড় সন্ত্রাসী খুনিদেরকে গ্রেপ্তার করছে না,উল্টো আরো তাদেরকে সহযোগিতা করছে। তারা করছে- মামলা দিয়ে টাকা নেওয়ার ব্যবসা, মামলা দেওয়ার পর নাম কাটানোর ব্যবসা, আবার মামলা দিয়ে জামিনের ব্যবসা, তারা এখন লাশ নিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে।২৪ এর গণঅভ্যুত্থানের কথা, ২৪ এর ভাইদের রক্তের কথা, এই চব্বিশের ভাইদের গণহত্যার বিচার না হওয়া পর্যন্ত বাংলার ছাত্র জনতা কোন নির্বাচন মেনে নিবে না। কোন অন্যায় মেনে নিবে না। আমরা তাদের পক্ষ থেকে, আমরা বাংলার গণমানুষের পক্ষ থেকে একটি কথা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, যে সব নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে,তাদের বিচার এই বাংলার মাটিতে নানা হওয়া পর্যন্ত এই বাংলার মানুষ কোন নির্বাচন চায়না। আমি বাংলার মানুষের পক্ষ থেকে বলতে চাই যারা বাংলাদেশে এত বড় একটি গণহত্যা ঘটিয়েছে তাদের এই বাংলাদেশে কোন রাজনীতি করার অধিকার থাকতে পারে না। তারা বাংলাদেশে রাজনৈতিক অধিকার বিন্দুমাত্র দেখাতে পারেনা। তাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা দাঁড়াবে, তাদের বিরুদ্ধে আহত সৈনিকরা দাঁড়াবে, তাদের বিরুদ্ধে সজন হারানো মা-বোনেরা দাঁড়াবে,২৪ এ আন্দোলনের ছাত্র-জনতা দাঁড়াবে।
সারজিস আলম বলেন,আমরা নাগরিক পার্টি বলছি এই বাংলার মাটিতে আগামী নির্বাচনের আগে খুনি হাসিনার বিচার দেখতে চাই, আমরা আপনাদের কাছে খুনি হাসিনার বিচার চাই, স্বাধীন নির্বাচন চাই, খুনিদের বিচার চাই, আপনাদের সাথে আবারও রাজপথে দেখা হবে।

গত শুক্রবার বিমানবন্দর মহাসড়কে ফ্যাসিস আওয়ামী লীগের দোসর ও গণহত্যা মামলার আসামিদের ঝটিকা মিছিলের প্রতিবাদে আন্দোলনে উত্তাল হয়ে উঠেছে উত্তরা। দফায় দফায় প্রতিবাদ মিছিল ও বিক্ষোভ মিছিলে উত্তরার রাজপথ সরব।
সরেজমিনে দেখা যায়, আমার ভাই কবরে খুনি কেন বাহিরে জুলাই ঘোষণা পত্র দাও, না হয় বিপ্লবীদের ফাঁসিতে ঝুলাও। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে( কেনো যদি, কিন্তু হবে না)দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা এমন নানান লেখার ভেনার পেস্টুন হাতে নিয়ে জতীয় নাগরিক পাটির সদস্যরা উত্তরা বিমানবন্দর মহাসড়ক বিএনএস সেন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে আজ বুধবার বিকাল ৪.৩০ মিনিটে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করেন।
সমাবেশ শেষে আওয়ামী লীগের দোসর ও গণহত্যার মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবিতে বিমানবন্দর মহাসড়ক হাউজবিল্ডিং হয়ে উত্তরা পূর্ব থানা আজমপুর এসে বিক্ষোভ মিছিলটি শেষ হয়।সরেজমিনি দেখা যায়, এনসিপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনএস সেন্টার এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
এবিষয়ে উত্তরা পশ্চিম থানার অফিসার ইনচার্জ হাফিজুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, আজকের বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে যে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়াতে ডিসি মহোদয়ের নির্দেশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এসময় প্রশাসনের অনান্য সংস্থার সহায়তায় কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা ছাড়াই শান্তি পূর্ণ ভাবে সমাবেশটি শেষ হয়। বিক্ষোভ সমাবেশ চলাকালীন সময়ে
সড়কে যান চলাচল সচল রাখতে থানা পুলিশের পাশাপাশি ট্রাফিক পুলিশের সদস্যরাও কাজ করেছেন। ফলে বিমানবন্দর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক ছিলো।


বিভাগ : বাংলাদেশ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

হরিরামপুরে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সোহান আটক
গাজীপুরে মসজিদের খতিব রহিজ উদ্দিন হত্যার ঘটনায় মামলা
সাভারে রং মিস্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, আটক ১
বরগুনায় দেদারসে ধ্বংস করা হচ্ছে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির পোনা: নিষিদ্ধ মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রকাশ্য দিবালোকে
জকিগঞ্জে কৃষকদলের কর্মী সমাবেশে দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ২৬
আরও
X
  

আরও পড়ুন

কিডনি চিকিৎসায় এক হাজার ডায়ালাইসিস যন্ত্র কিনছে সরকার : স্বাস্থ্য সচিব

কিডনি চিকিৎসায় এক হাজার ডায়ালাইসিস যন্ত্র কিনছে সরকার : স্বাস্থ্য সচিব

হরিরামপুরে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সোহান আটক

হরিরামপুরে ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি সোহান আটক

দ্বন্দ্ব ভুলে রাজপরিবারে ফিরতে চান প্রিন্স হ্যারি

দ্বন্দ্ব ভুলে রাজপরিবারে ফিরতে চান প্রিন্স হ্যারি

গণঅধিকার পরিষদে যোগ দিলো বিভিন্ন দলের অন্তত ১ হাজার নেতাকর্মী

গণঅধিকার পরিষদে যোগ দিলো বিভিন্ন দলের অন্তত ১ হাজার নেতাকর্মী

নারী সংস্কার কমিশনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট

নারী সংস্কার কমিশনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট

গাজীপুরে মসজিদের খতিব রহিজ উদ্দিন হত্যার ঘটনায় মামলা

গাজীপুরে মসজিদের খতিব রহিজ উদ্দিন হত্যার ঘটনায় মামলা

দক্ষিণ সুদানে হাসপাতালে বিমান হামলা, নিহত ৭

দক্ষিণ সুদানে হাসপাতালে বিমান হামলা, নিহত ৭

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ হ্যাকড

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ হ্যাকড

সালমান-শাবনূরের প্রেম নিয়ে যা বললেন ডন

সালমান-শাবনূরের প্রেম নিয়ে যা বললেন ডন

আলবানিজ ফের অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত

আলবানিজ ফের অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত

ইসরায়েলি অবরোধে গাজায় অনাহারে ৫৭ ফিলিস্তিনির মৃত্যু, অধিকাংশই শিশু-বৃদ্ধ

ইসরায়েলি অবরোধে গাজায় অনাহারে ৫৭ ফিলিস্তিনির মৃত্যু, অধিকাংশই শিশু-বৃদ্ধ

৫০ বছর পূর্ণ করল বিতর্কিত ফারাক্কা বাঁধ

৫০ বছর পূর্ণ করল বিতর্কিত ফারাক্কা বাঁধ

সাভারে রং মিস্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, আটক ১

সাভারে রং মিস্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যা, আটক ১

'মেট গালা–২০২৫' মাতাবেন যারা

'মেট গালা–২০২৫' মাতাবেন যারা

এলপি গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণ বিকেলে

এলপি গ্যাসের নতুন দাম নির্ধারণ বিকেলে

বরগুনায় দেদারসে ধ্বংস করা হচ্ছে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির পোনা: নিষিদ্ধ মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রকাশ্য দিবালোকে

বরগুনায় দেদারসে ধ্বংস করা হচ্ছে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির পোনা: নিষিদ্ধ মাছ বিক্রি হচ্ছে প্রকাশ্য দিবালোকে

‘প্যালেস্টাইন-২’ দিয়েই ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালাল ইয়েমেন

‘প্যালেস্টাইন-২’ দিয়েই ইসরায়েলের সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালাল ইয়েমেন

জকিগঞ্জে কৃষকদলের কর্মী সমাবেশে দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ২৬

জকিগঞ্জে কৃষকদলের কর্মী সমাবেশে দুই গ্রুপে সংঘর্ষ, আহত ২৬

নতুন করে আরো ১ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা কক্সবাজারে, চাপ বাড়ছে আবাসন সংকটে

নতুন করে আরো ১ লাখ ১৩ হাজার রোহিঙ্গা কক্সবাজারে, চাপ বাড়ছে আবাসন সংকটে

বিশ্বে দূষিত বাতাসের শীর্ষে রিয়াদ, ঢাকার অবস্থান সহনীয় পর্যায়ে

বিশ্বে দূষিত বাতাসের শীর্ষে রিয়াদ, ঢাকার অবস্থান সহনীয় পর্যায়ে