ফরিদপুর অঞ্চলে বৃষ্টিতে পাট ধান সবজির বাম্পার ফলনের আশা, কৃষকদের মুখে হাসি
২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪১ পিএম | আপডেট: ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৪১ পিএম

ফরিদপুর অঞ্চলে বৃষ্টিতে পাট,ধান ও সবজির বাম্পার ফলনের আশা। কৃষকদের মুখে হাসি। শুধু মাত্র সালথাই সাড়ে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ। তদ্রূপ আবাদ হয়েছে নগরকান্দা, ভাঙ্গা ও ফরিদপুর সদরের ডিক্রিচড় ও নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের পদ্মার পাড়ে। ফরিদপুর আঞ্চলিক কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে ফরিদপুর অঞ্চলে এ বছর ১ লাখ ৮৪ হাজার ৬ শত ১৪ হেক্টর জমিতে পাটসহ অন্যান্য ফসলের আবাদ হয়েছে।
পেঁয়াজের বাম্পার ফলনের পর এবার পাটেও কৃষকদের ভাগ্যে চাকা ঘুরে সামনে হাতছানি দিচ্ছে সোনালি স্বপ্নে।
গত দুই তিনমাস মাস খড়ায় পুড়ছিলও ফরিদপুর অঞ্চল। চরম চিন্তার মধ্যে ছিল এই অঞ্চলের হাজার হাজার কৃষক। হটাৎ গত দুই সপ্তাহে দুই তিন পর পর রহমতের বৃষ্টিতে ভিজে গেছে ফসলের মাঠ। জেগেছে বোরো ধান চাষেরও সোনালী স্বপ্ন।
ফরিদপুর সদর, সালথা - নগরকান্দা - ভাঙ্গা চারটি উপজেলাই কৃষি নির্ভর এলাকায়। ধান,পেঁয়াজ, পাট।এই তিন ফসলে কৃষকের সারা বছরের আয় এবং জীবন যাত্রার উন্নতির একমাত্র মাধ্যম ফসলের মাঠ।
পাশাপাশি ফরিদপুর সদর থানার ডিক্রিচড়,নর্থচ্যানেল এই দুটি চরবেষ্টিত এলাকা জুড়ে হাজার হাজার বিঘা, ধান,পাট,মিষ্টি কুমড়া,তিল,বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি ক্ষেত জুড়ে জেগে উঠায় সবুজের সমাহারে ভরে উঠছে চরাঞ্চল। যতদূর চোখ যায় শুধুই ধূধূ সবুজ ফসলের মাঠ।
পাশাপাশি চরাঞ্চলের কৃষকরা কয়েক লাখ কলাগাছ লাগিয়েও পেয়েছেন আশানুরূপ সাফল্য। নর্থচ্যানেল এলাকার ৭ নং ওয়ার্ডের মোঃ জিল্লুর মিয়া ইনকিলাবকে বলেন, প্রচন্ড খড়ায় ২৮ বিঘা ক্ষেতের পাট,শাক ও কলা বাগান পুড়ে মরে গেছিল।পর পর দুইদিনের বৃষ্টিতে নতুন মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে ক্ষেত জুড়ে।
আলহামদুলিল্লাহ! আল্লাহ অনেক টাকার মুখ দেখাবে। মন কোন কষ্ট নাই।
ইনকিলাবের সাথে কথা ডিক্রিচর ইউনিয়নের পালডাঙ্গী ৬ নং ওয়ার্ডের রহমান বেপারির সাথে তিনি ইনকিলাব কে বলেন, আমি এ বছর ১০ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করছি। যা খরচ করছি তার পাঁচগুন ফসল পেয়েছি।
এদিকে,সালথা উপজেলায় খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়,চলতি মৌসুমে ফরিদপুরের সালথায় সাড়ে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ করা হয়েছে। পেঁয়াজের পাশাপাশি পাটেও পিছিয়ে নেই এ উপজেলার কৃষি খাত। এখানে পাট, পেঁয়াজ ও আমন ধান এই তিনটি ফসল উৎপাদন হয় সমান তালে। তাই এখানকার কৃষকেরা সব সময় ফসল উৎপাদনে ব্যস্ত থাকেন।
জানা যায়, সালথা উপজেলার শতকরা ৯০% মানুষ কৃষির উপর নির্ভরশীল। তাই তারা কৃষি কাজে গুরুত্ব দেন বেশি। ফসল দিয়েই চলে তাদের সংসার। তাই এবছর পেঁয়াজ উত্তোলনের পরেই সালথা কৃষকেরা পাটের বীজ বপন করেন। এখন জমিতে পাটের গাছ উঁকি মারছে। মাঝে মাঝে বাতাসে পাটের ছোট গাছগুলো নাড়াচাড়া দিচ্ছে। সারা মাঠজুড়ে চলছে পাটের পরিচর্যা নিয়ে চাষিদের ব্যস্ততা। কাচি ও টেঙ্গি দিয়ে পাটের আগাছা পরিষ্কার করছেন তারা।
উপজেলার পাটচাষিরা ইনকিলাবকে বলেন, এবার পেঁয়াজের মধ্যদিয়ে অধিকাংশ জমিতে পাটের বীজ বপন করা হয়েছে।
পেঁয়াজ উত্তোলন শেষে পাটের আগাছা পরিষ্কারের কাজ চলছে। এখন প্রয়োজন পানি, সার ও কীটনাশক। তাহলেই জমির পাটগাছ দ্রুত বেড়ে উঠবে। আপাতত পাটের চারাগাছ সুন্দর আছে। আবহাওয়া যদি পাটের অনুকূলে থাকে তাহলে আশানুরূপ ফলন হবে। সেই সাথে সিজনে পাটের দামটা ভালো পেলে চাষিদের উপকার হবে।
উপজেলা উপসহকারী পাট উন্নয়ন অফিসার মোঃ পারভেজ ইনকিলাবকে বলেন, এবছর তিন হাজার চাষিকে বিনামূল্যে পাটবীজ ও সার দেওয়া হয়েছে। আমরা নিয়মিত পাটচাষিদের পরামর্শ দিয়ে আসছি। আশা করি পাট এবার ভালো হবে।
উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি অফিসার সুদীপ বিশ্বাস ইনকিলাবকে বলেন, এবছর পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১২ হাজার ৩০০ হেক্টর। অন্যান্য ফসলের চাষ কম হওয়ায় পাটচাষের লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করেছে। এপর্যন্ত সাড়ে ১২ হাজার হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।
এই অঞ্চলে তোষাপাট জাতের চাহিদা বেশি। এবার ভারতীয় তোষা বীজ বপন করেছে অধিকাংশ চাষি। চাষিদের সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
তবে ফরিদপুর সদর উপজেলার শত শত কৃষক অভিযোগ করে ইনকিলাব কে বলেন, আমরা মাঠ পর্যায়ের পরামর্শ কৃষি অফিসারদের মাঠে পাই না। অফিসে এসেও তাদের সময়মত পাই না। তারা নিজেরাই এখন ভারতীয় পাটের নিম্নমানের বীজ এবং নিম্নমানের ঔষধ কোম্পানির সার কীটনাশকের ব্যবসা করে। তারা মাঝে মধ্যে আমাদের কাছে আসেন তাদের ব্যবসায়ীক স্বার্থ হাছিল করতে।
ফরিদপুর হাজী শরীতুল্লাহ বাজারের সার বীজ ও কীট নাশকের ডিলার মোঃ তাহের হোসেন ইনকিলাব কে প্রতিদিন ২০/৩০ চাষী নানান সমস্যা নিয়ে আমার কাছে নানান রোগ বালাইর কথা বলে কৃষকরা ঔষধ নেন। কৃষকদের অভিযোগ কোন মাঠ পর্যায়ের কোন কৃষি অফিসার তাদের কাছে যায় না। খোঁজ খবরও নেন না। তার দাবি দেশের রোগী দেখার জন্য যে হাসপাতাল ও ডাক্তারের চেম্বার আছে তেমনি কৃষির বিল্পবের কথা চিন্তা করলে কৃষি অফিসারদেরও বিনামূল্যে কৃষক পরামর্শের জন্য ও তাদের বাধ্যতামূলক চেম্বার খুলে বসানো জরুরি। অন্য কৃষি সেক্টর ধ্বংস হয়ে যাবে অদূর ভবিষ্যতে। তিনি আশা করেন সরকারের এই বিষয়ে আন্তরিকতা বাড়াতে হবে। কৃষক বাঁচলেই দেশ মাথা তুলে দাঁড়াবে ইনশাআল্লাহ!
বিভাগ : বাংলাদেশ
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

ভারতের অহংকার মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী : শেহবাজ শরীফ

উপদেষ্টার আশ্বাসের পরও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা শিক্ষার্থীদের

মাহফুজ আলমকে লক্ষ্য করে বোতল নিক্ষেপ : এনসিপি নেতাদের ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া

ব্যথায় উঠতে পারছেন না শাবনূর,হাঁটছেন খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে

এবার কাতারে গিয়ে ২০০ বিলিয়ন ডলারের বোয়িং চুক্তি করলেন ট্রাম্প

রাস্তাতেই রাত কাটিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা

সাম্য হত্যাকারীদের গ্রেফতারের দাবিতে রাবি জিয়া পরিষদের তিন দফা দাবি

ভারতে ধ্বংস করা হলো মুসলমানদের ২৮০টি ধর্মীয় স্থাপনা

ভারতের মণিপুরে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ১০

‘একটি গোষ্ঠী ৯ মাস ধরে আমার ওপর ক্ষেপে আছে, তারাই এটি ঘটিয়েছে’

ছাগলনাইয়ায় বিজিবি'র হাতে আটক ভুয়া এনএস আই কর্মকর্তা

ঝিনাইদহে ১২০ টাকায় পুলিশের চাকরি পেলেন ২৫ জন, আবেগে কাঁদলেন অভিভাবকরা

কোটচাঁদপুর রেলস্টেশনে বিজিবির অভিযান স্কুল ব্যাগে মিললো হেরোইন

হামলার হুমকিতে ফের অনিশ্চয়তায় আইপিএল

শেষ মিনিটের নাটকীয়তায় জিতে বার্সার অপেক্ষা বাড়ালো রিয়াল

পিএসএলে দল পেলেন সাকিব

বেস্ট হোল্ডিংসের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের তদন্তে দুদক

অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে যৌথ বাহিনী মাঠে নামছে

বিদেশে উন্নত চিকিৎসাপ্রত্যাশীদের জন্য বাস্তবমুখী পদক্ষেপ

নতুন ‘স্ট্যান্ডার্ড’ স্থানের নামের তালিকা প্রকাশ করল চীন