বাজেট লক্ষ্যমাত্রা উচ্চাভিলাষী : ফিকি
১০ জুন ২০২৪, ০৭:১১ পিএম | আপডেট: ১০ জুন ২০২৪, ০৭:১১ পিএম
# টেলিকম, কার্বনেটেড বেভারেজ ও ওয়াটার পিউরিফায়ারের ওপর আরোপিত শুল্ক ও কর অতিরিক্ত, উদ্বেগ প্রকাশ
# প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্তের আশঙ্কা করছে ফিকি
এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির যে লক্ষ্যমাত্রা সরকার নির্ধারণ করেছে তা উচ্চাভিলাষী। টেলিকম সহ কয়েকটি পণ্যে আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক এবং ট্যাক্স নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এসব পণ্যের অতিরিক্ত শুল্ক ও ট্যাক্সে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কাও করা হয়েছে। তবে কার্যকরী পরিকল্পনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন সম্ভব বলে জানিয়েছে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগকারী বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন দ্য ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ফিকি)। যদিও উপস্থাপিত বাজেটে কয়েকটি প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে ফিকি।
সোমবার (১০ জুন) রাজধানীর একটি হোটেলে ২০২৪-২৫ সালের বাজেট পর্যালোচনা শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এই পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেছে সংগঠনটি। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার লক্ষ্য নিয়ে এবারের বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) বিপরীতে এবারের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার, জিডিপি প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির যে লক্ষ্যমাত্রা সরকার নির্ধারণ করেছে, তা উচ্চাভিলাষী হলেও কার্যকরী পরিকল্পনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন সম্ভব। তবে এ লক্ষ্য অর্জনে আর্থিক নীতির আরও সংস্কার প্রয়োজন বলে মনে করে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে বাজেটের বিভিন্ন বিষয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন ফিকি সভাপতি জাভেদ আখতার। আরও উপস্থিত ছিলেন ফিকির উপদেষ্টা ও সাবেক সভাপতি রূপালী চৌধুরী।
ফিকি জানায়, টেলিকম, কার্বনেটেড বেভারেজ, ওয়াটার পিউরিফায়ারের উপর আরোপিত অতিরিক্ত শুল্ক এবং ট্যাক্সের কারণে প্রস্তুতকারকদের জন্য বর্ধিত করের বোঝা চাপবে। পাশাপাশি এই ব্যবসাগুলোর মুনাফা এবং কার্যকারিতার ক্ষেত্রে একটি কঠিন চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। একইসঙ্গে প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগ (এফডিআই) কে বাধাগ্রস্ত করবে।
এদিন সংবাদ সম্মেলনে ফিকি সরকারকে আর্থিক খাতের সংস্কারের উপর নজর দেয়ার তাগিদ দিয়েছে, যা একটি শক্তিশালী এবং স্থিতিস্থাপক আর্থিক ব্যবস্থার গড়ে তোলার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। অন্যান্য স্টেকহোল্ডারসহ ফিকি বাংলাদেশের রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত তুলে ধরে এর আরো উন্নতির আহ্বান জানায়।
গৃহস্থালী আয় সমীক্ষা অনুযায়ী, জনসংখ্যার ১০ শতাংশ জাতীয় আয়ের ৪০ শতাংশ অবদান রাখে। তবে এনবিআরের তথ্য বলছে, দেশের মাত্র ১০ মিলিয়ন নিবন্ধিত করদাতা রয়েছে। তাই জনগণকে ট্যাক্স নেটের আওতায় আনার বিষয়টি নিশ্চিত করতে আরো অনেক দূর যেতে হবে। যেহেতু সরকার এ ব্যাপারে কাজ করছে, তাই সামনে ফলাফল পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করে ফিকি। এ ব্যাপারে ফিকি সেক্টরভিত্তিক রাজস্ব বিশ্লেষণ এবং করদাতার ভিত্তি বাড়ানোর মতো উদ্ভাবনী পদ্ধতির পরামর্শ দিয়েছে।
বাজেটে চেম্বারের প্রস্তাবিত সংশোধনী গ্রহণ করায় সরকারকে স্বাগত জানিয়েছে ফিকি। বিশেষ করে সম্ভাব্য করের হারের বিষয়টি, যা ব্যবসায়ীদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ করেছে। এই হার বজায় থাকলে ব্যবসাগুলিকে কার্যকরভাবে পরিকল্পনা করতে এবং বিনিয়োগ করতে সক্ষম করবে।
এছাড়া, ফিকি শিল্পের কাঁচামালের জন্য উৎসে ট্যাক্স ডিডাকশন সহজ করার জন্য তাদের প্রস্তাবকে গ্রহণের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। পাশাপাশি মাসিক উইথহোল্ডিং ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়ার জন্য সময় বাড়ানোর বিষয়টি অর্থবিল ২০২৪-এর মাধ্যমে গৃহীত হয়েছে বলে সাধুবাদ জানিয়েছে ফিকি। কর ব্যবস্থাকে সরল করার জন্য প্রস্তাবিত কর সংস্কারের প্রশংসা করেছে ফিকি।
কিন্তু উচ্চ কার্যকরী করের হার শিল্পের জন্য একটি মূল উদ্বেগের বিষয়। যদিও তারা ব্যক্তিগত তহবিলের জন্য ১৫ শতাংশ আয়কর হারের প্রশংসা করেছে, কিন্তু সরকারী তহবিলকে কর থেকে অব্যাহতি দেওয়ার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। এ বিষয়টি সরকারী এবং বেসরকারী খাতের কর্মচারীদের মধ্যে বৈষম্য তৈরি করছে বলে জানিয়েছে ফিকি।
ব্যক্তিগত আয়কর হার বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে এনবিআর। এই ব্যবস্থা নিয়মিত করদাতাদের কাছে অন্যায় মনে হতে পারে এবং অসাবধানতাবশত কর ফাঁকি দিতে উৎসাহিত করতে পারে। ট্যাক্স সø্যাবে এই ধরনের পরিবর্তনগুলো নিয়মিত করদাতাদের নিরুৎসাহিত করবে কারণ তাদের কঠোর উপার্জনের উপর জরিমানা করা হচ্ছে।
এছাড়াও এটি এনবিআরের বর্তমান প্রেডিক্টিভ ট্যাক্স কালচার নীতির বিরুদ্বে রেট্রসপেক্টিভ হচ্ছে। তাই সংগঠনি ২০২৪-২৫ আয়কর বর্ষে বছরের হার প্রযোজ্য রাখার সুপারিশ করেছে। এ নীতির ফলে আরো সঠিক এবং দক্ষ কর ব্যবস্থা তৈরি করার লক্ষ্যে ট্যাক্স নেট প্রশস্ত করার সাথে করের হার কমাবে।
এনবিআর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করেছে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা, যা প্রস্তাবিত বাজেটের ৬০ শতাংশ। ফিকি এ লক্ষ্য অর্জনের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। প্রস্তাবিত বাজেটে ট্যাক্স, ভ্যাট এবং শুল্ক প্রশাসন স্বয়ংক্রিয় করার জন্য, কর সংগ্রহকে সহজ করা এবং দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বরাদ্দের অভাব রয়েছে । এই সংস্কার ছাড়া, ভ্যাট ক্রেডিট জটিলতা এবং ব্যবসার উপর আর্থিক চাপ অব্যাহত থাকতে পারে। টিডিএস কমপ্লায়েন্সে পরিবর্তন, যেমন ১০ কোটি টাকার উপরে সত্ত্বাকে উইথহোল্ডিং অথরিটির অধীনে অন্তর্ভুক্ত করা গুরুত্বপূর্ণ।
বিভাগ : অর্থনীতি
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসরদের নানামুখী ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা হবে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন
সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধানকে গণঅধিকার পরিষদের ৭ দফা প্রস্তাবনা
নারায়ণগঞ্জে ২৪ ঘন্টায় ৩৪জন ডেঙ্গু আক্রান্ত
বগুড়ায় ঢাকা চট্টগ্রাম কোচ টার্মিনালে শান্ত পরিবহনের কাউন্টার বন্ধের জেরে আতংক উদ্বেগ ও অস্থিরতা !
নির্বাচন কমিশন সংস্কারে ১৭ দফা প্রস্তাব বাংলাদেশ লেবার পার্টির
আন্দোলনে যোগ দিতে রোমানিয়া থেকে দেশে আসেন
মমতাকে নিয়ে সিনেমা বানালেন সৃজিত মুখার্জি, রুদ্রনীল বললেন প্রোপাগান্ডা নয়, এগুলো তো ঠাকুমার ঝুলি…’!
আইপিএলে দল পেলেন না রাহানে-উইলিয়ামসন-আগারওয়ালরা
স্ত্রীকে গলাকেটে হত্যা, ৩ বছর পর স্বামীর মৃত্যুদণ্ড
একুশে টেলিভিশন দখল ছিলো গণমাধ্যমের কন্ঠ রোধের বড় উদাহরণ
এবার নেতানিয়াহুর নাগালে পেলে গ্রেফতারের কথা জানাল ব্রিটিশ সরকার
‘ইমরান খানকে নিয়েই ফিরব’ সরকারকে হুঁশিয়ারি দিলেন বুশরা
মহেশখালীতে সাংবাদিক মাহবু্বের উপর সন্ত্রাসী হামলা -অভিযুক্তরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে হামলাকারী
সাতক্ষীরার আশাশুনিতে মাটি চাপা পড়ে শ্রমিকের মৃত্যু
নৌকায় উঠে বিপদে এখন সিলেটে এক শিবির নেতা : গ্রেফতার করলো পুলিশ
ডিবি হেফাজতে সনাতন মঞ্চের চিন্ময় কৃষ্ণ
পাকিস্তানে ইমরান খানের হাজার হাজার সমর্থক গ্রেপ্তার
হাসিনা হটানোর অনেক মিত্রই আজ হঠকারীর ভূমিকায় : মাহফুজ
মোল্লা কলেজে হামলা-লুটপাট ও ছাত্র নিহতের ঘটনায় বিচারের দাবি কলেজ কর্তৃপক্ষের
পাকিস্তানে শিয়া সুন্নি সহিংসতায় নিহত ৮০, সাত দিনের যুদ্ধবিরতি