যুক্তরাষ্ট্রে চীনা পণ্যে ১০৪% শুল্ক কার্যকর, বাণিজ্য উত্তেজনা বৃদ্ধি

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

০৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১১ এএম | আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৯:১৬ এএম

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক আবারও উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্ক নীতির জেরে চীনা পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে বড় ধরনের বাধা তৈরি হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই পদক্ষেপ শুধু চীনের জন্য নয়, বরং যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ শিল্প ও সাধারণ ভোক্তাদের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

 

বুধবার (৯ এপ্রিল) থেকে কার্যকর হওয়া এই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চীন থেকে আমদানি হওয়া কিছু পণ্যের ওপর এখন ১০৪ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। সোমবার ট্রাম্প প্রশাসন চীনের পাল্টা শুল্কের জবাবে অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়। ফলে পূর্বের ৫৪ শতাংশসহ মোট শুল্ক দাঁড়ায় ১০৪ শতাংশে। হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট জানিয়েছেন, “বুধবার থেকেই এই চমকপ্রদ শুল্ক কার্যকর হচ্ছে।” মূলত ‘ফেনটানিল’ নামক একটি ভয়ঙ্কর মাদক চীনের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ ঠেকাতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

 

চীন এই শুল্ক আরোপকে তীব্রভাবে সমালোচনা করেছে এবং এটিকে ‘ভুলের ওপর ভুল’ বলে অভিহিত করেছে দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। তারা পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেছে। শুল্ক কার্যকর হওয়ার ঘোষণা আসার পরপরই যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে আবারও দরপতন শুরু হয়, যদিও এর আগে বাজার ছিল ইতিবাচক। সিএনএন জানায়, বর্তমানে চীনকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য পাঠাতে গড়ে প্রায় ১২০ শতাংশ শুল্ক দিতে হচ্ছে, যা রপ্তানিকারকদের জন্য অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।

 

২০২৪ সালে চীন ছিল যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় বৃহৎ আমদানিকারক দেশ। সে বছর চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্র আমদানি করেছিল ৪৩৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য, আর রপ্তানি করেছিল ১৪৪ বিলিয়ন ডলারের পণ্য। এই বৈষম্য ও রাজনৈতিক উত্তেজনার প্রেক্ষিতে ট্রাম্প প্রশাসনের এই পদক্ষেপ এসেছে। তবে অর্থনীতিবিদরা সতর্ক করে বলছেন, এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবিত্ত, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং শিল্প খাতের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। শুল্কের কারণে উৎপাদন খরচ বাড়বে, কর্মসংস্থান হ্রাস পাবে এবং ভোক্তারা পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির চাপ অনুভব করবেন।

 

বর্তমান পরিস্থিতিতে দুই অর্থনৈতিক পরাশক্তির মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান খোঁজা জরুরি। বাণিজ্য প্রতিশোধ ও অতিরিক্ত শুল্ক ব্যবস্থার মাধ্যমে অস্থিরতা বাড়ানো নয়, বরং যৌথ স্বার্থে স্থিতিশীল ও ন্যায্য সমঝোতা খুঁজে বের করাই হবে সবার জন্য মঙ্গলজনক। এমনকি বৈশ্বিক অর্থনীতির স্বাভাবিক গতির জন্যও এই চুক্তিমূলক দৃষ্টিভঙ্গিই একমাত্র টেকসই পথ।  তথ্যসূত্র : সিএনএন

 


বিভাগ : অর্থনীতি


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

আবারও কমালো সোনার দাম
বাজেটের কাঠামোগত সংস্কারের মাধ্যমে বৈষম্যহীন টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতের দাবি
বীমা খাতে ব্যতিক্রম কাজিম উদ্দিন, ন্যাশনাল লাইফের নানা অর্জন
২০২৫ সালের প্রথম তিন মাসে ব্র্যাক ব্যাংক ব্রাঞ্চ নেটওয়ার্কের ৫,০০০ কোটি টাকার নিট ডিপোজিট প্রবৃদ্ধি
সবুজ আবাসনের উন্নয়নে আইএফসির সাথে ডিবিএইচের চুক্তি
আরও
X
  

আরও পড়ুন

কেরানীগঞ্জে রাজাবাড়িতে যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার

কেরানীগঞ্জে রাজাবাড়িতে যুবকের গলাকাটা লাশ উদ্ধার

উড়ন্ত বিমানের দিকে ফুটবলে কিক যুবকের! যা জানা গেল ভাইরাল ভিডিও প্রসঙ্গে

উড়ন্ত বিমানের দিকে ফুটবলে কিক যুবকের! যা জানা গেল ভাইরাল ভিডিও প্রসঙ্গে

২০ হাজার ইন্টার্নশিপসহ ৬ দফা দাবিতে নার্সিং শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

২০ হাজার ইন্টার্নশিপসহ ৬ দফা দাবিতে নার্সিং শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ

ভারতকে ১৩১ মিলিয়ন ডলার মূল্যের সামরিক সরঞ্জাম দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

ভারতকে ১৩১ মিলিয়ন ডলার মূল্যের সামরিক সরঞ্জাম দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকোতে হামের প্রকোপ কেন বাড়ছে?

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকোতে হামের প্রকোপ কেন বাড়ছে?

ভারতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ২ মার্কিন নাগরিক গ্রেপ্তার

ভারতে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ২ মার্কিন নাগরিক গ্রেপ্তার

পাবিপ্রবিতে স্ক্যাবিসের প্রকোপ, সচেতন থাকতে ডাক্তারের পরামর্শ     ‎

পাবিপ্রবিতে স্ক্যাবিসের প্রকোপ, সচেতন থাকতে ডাক্তারের পরামর্শ   ‎

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আপিল শুনানি মঙ্গলবার

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার আপিল শুনানি মঙ্গলবার

দুবাইয়ে ভারতীয় ধনকুবেরের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি, দেশত্যাগের নির্দেশ

দুবাইয়ে ভারতীয় ধনকুবেরের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তি, দেশত্যাগের নির্দেশ

সালমান দিনে একরকম–রাতে অন্যরকম

সালমান দিনে একরকম–রাতে অন্যরকম

ঐকমত্যের মাধ্যমে একটি সনদ তৈরিতে সবাইকে একটু ছাড় দিতে হবে: আলী রীয়াজ

ঐকমত্যের মাধ্যমে একটি সনদ তৈরিতে সবাইকে একটু ছাড় দিতে হবে: আলী রীয়াজ

স্ট্যান্ডার্ড 'টু লেন' সড়কে উন্নীত হচ্ছে ফেনী-করেরহাট সড়ক, প্রশস্ত হবে ৩৪ ফুট

স্ট্যান্ডার্ড 'টু লেন' সড়কে উন্নীত হচ্ছে ফেনী-করেরহাট সড়ক, প্রশস্ত হবে ৩৪ ফুট

সাইপ্রাস আলোচনা হবে দুই রাষ্ট্রের ভিত্তিতে: এরদোয়ান

সাইপ্রাস আলোচনা হবে দুই রাষ্ট্রের ভিত্তিতে: এরদোয়ান

ঝালকাঠিতে জিও ব্যাগ ফেলতে গিয়ে নদীতে ডুবে শ্রমিকের মৃত্যু

ঝালকাঠিতে জিও ব্যাগ ফেলতে গিয়ে নদীতে ডুবে শ্রমিকের মৃত্যু

বিতর্কিত সাংবাদিক ময়ূখকে গ্রেফতারের দাবিতে এবার উত্তাল কলকাতা!

বিতর্কিত সাংবাদিক ময়ূখকে গ্রেফতারের দাবিতে এবার উত্তাল কলকাতা!

নরসিংদীর শিবপুরে মাদকাসক্ত ছেলের হাতে প্রাণ হারিয়েছে মা

নরসিংদীর শিবপুরে মাদকাসক্ত ছেলের হাতে প্রাণ হারিয়েছে মা

সউদী সফরে আরব নেতাদের সঙ্গে শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন ট্রাম্প

সউদী সফরে আরব নেতাদের সঙ্গে শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেবেন ট্রাম্প

বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক

বিএনপি মহাসচিবের সঙ্গে রাশিয়ার রাষ্ট্রদূতের বৈঠক

নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আপিল শুনানি এ সপ্তাহে

নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আপিল শুনানি এ সপ্তাহে

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকায় পৌঁছাবেন খালেদা জিয়া

মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকায় পৌঁছাবেন খালেদা জিয়া