প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে অখ্যাত মডেলের ভয়াবহ ঔদ্ধত্য

উপস্থাপনার আড়ালে ভাইরাল হওয়ার ধান্ধা

প্রধান উপদেষ্টাকে নিয়ে অখ্যাত মডেলের ভয়াবহ ঔদ্ধত্য

অনলাইন ডেস্ক

২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৬ এএম | আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০৬ এএম

সাংবাদিকতার মতো একটি মহৎ পেশা কখনও কখনও বিতর্কিত হয় কিছু সংখ্যক তথাকথিত সাংবাদিক-উপস্থাপিকাদের জন্য। যুগে যুগে বহু মহান সাংবাদিকরা অকাতরে সেবা করে গেছেন দেশের মানুষকে সঠিক তথ্যটি উপস্থাপনের জন্য। সাগর-রুনি থেকে শুরু করে সাম্প্রতিক সময়ে ঘটে যাওয়া গণঅভ্যুত্থানে বেশ কিছু সংখ্যক সাংবাদিক হয়েছে শহীদ, অনেকেই কাতরাচ্ছে হাসপাতালের বিছানায়।

দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে এমন মানুষেরা যখন সাংবাদিকতা নিতে চাচ্ছেন অনন্য উচ্চতার শিখরে তখনই সমৃদ্ধি তাবাসসুমদের মতো তথাকথিত ভূঁইফোড় সাংবাদিক-উপস্থাপিকারা সেই পেশাকে করে প্রশ্নবিদ্ধ।

জানা যায়, ব্যক্তি জীবনে প্রেমে ব্যর্থ ছিলেন সমৃদ্ধি। বসন্তের কোকিল প্রেমিক যখন পাত্তা দিত না তখন বেশ কষ্ট পেতেন তিনি৷ শেষ পর্যন্ত যখন তার সাথে নিজের ক্লাস মিলাতে পারলেন না তখন প্রেমিক গেল চলে। সেই কষ্টে-দুঃখে একদিন পণ করেই বসলেন যে তিনি ভাইরাল হবেন। তাই ভাইরাল হওয়ার জন্য বেছে নিলেন সাংবাদিকতার মতো একটি পেশা! দেশের প্রথম সারির একটি গণমাধ্যমের উপস্থাপিকা হয়ে এহেন উদ্ভট চিন্তা-ভাবনা কিভাবে আসতে পারে তা সম্ভবত কোন সুস্থ-স্বাভাবিক এবং সামাজিক মানুষের পক্ষে বোধগম্য নয়।

সম্ভবত সাংবাদিকতার সংজ্ঞাই জানেন না এই তথাকথিত উপস্থাপিকা। কেবল নিজ স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে উপস্থাপনার নামে ভাইরাল হতে বারংবার ঢাকা শহরের সবথেকে নিন্মমানের, নিন্মমানুষিকতার এবং অধিকাংশই নরকের কীট তুলে আনেন তার শোতে। তাদের কথাবার্তার ধরণ, আচরণ এবং ইতরামি যেন প্রমান করেই দেয় যে এরাই পৃথিবীর আদর্শ ছোটলোক।

ফ্যাসিস্ট হাসিনার অবৈধ সরকারের আমলের তেলবাজ সাংবাদিকদের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে নিজেকে উপস্থাপনের চেষ্টা করছেন এই উপস্থাপিকা। তাই তার শো তে সবসময় নিয়ে আসেন ঢাকা শহরের সবথেকে বিতর্কিত মানুষগুলোকে। যা কেবল হাসির খোরাক জোগায় বটে তবে শিক্ষনীয় বিষয় থাকে না।

সম্প্রতি 'ডাঙ্গুলি 'ডাঙ্গুলি এন্টারটেইনমেন্ট' শিরোনামে একটি শো তে মারিয়া কিসপট্টা নামের এক অভদ্র মহিলাকে অতিথি হিসেবে নিয়ে আসে সমৃদ্ধি। সেখানেই ড. মুহাম্মদ ইউনুস সম্পর্কে নোংরামির সকল সীমা অতিক্রম করেন তারা।

ভূঁইফোড় এই মডেলের আচরণ নিঃসন্দেহে প্রমান করে যে, তিনি কোন ভালো পরিবার থেকে নয় বরং পতিতালয় থেকে উঠে এসেছেন এবং সম্ভবত এখনও খদ্দেরদের সাথে করে যাওয়া অভ্যাস ত্যাগ করতে পারেননি। যেন খদ্দের খুঁজে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন সমৃদ্ধি তাই এমন ছ্যাচড়া মানুষগুলোর দাম হাকাতে নিয়ে এসেছেন পর্দার স্ক্রিনে।

সমৃদ্ধি এক প্রশ্নে মানুষের নাম না জানা এই মডেল এবং রন্ধনশিল্পীকে প্রশ্ন করেন যে, আপনি বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধাণ উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুসকে কি রান্না করে খাওয়াবেন? প্রশ্নটা শুনেই যেন তেলে বেগুনে জ্বলে উঠলেন কিসপট্টা। সাথে সাথে তিনি বললেন, 'পৃথিবীতে এতো ব্যক্তি থাকতে এই লোকটার কথা কেন।'

প্রত্যুত্তরে সমৃদ্ধি ফ্যাসিস্টের দোসর রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের উদাহরণ টেনে বলেন, মানুষের তো পছন্দ-অপছন্দ থাকতে পারে তো। জনপ্রিয় ফুড ভ্লগার রাফসান দ্য ছোট ভাই তো সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে তার খাবার টেষ্ট করাতে চেয়েছিল।

এর প্রতিক্রিয়ায় মারিয়া বলেন, 'এত চর্বি-তেল আমার নেই। আমি সাবেক প্রধানমন্ত্রীকেই খাওয়াতে চেষ্টা করিনি সেখানে ইউনুসকে কেন খাওয়াবো। উনি কি বাংলাদেশে শান্তির ঝাড়গাছ বুনে দিয়েছেন যে ওনাকে খাওয়াতে হবে?'

সমৃদ্ধির আচরণে এটা প্রকাশ পাচ্ছিল যে তিনি ইচ্ছে করেই প্রধান উপদেষ্টাকে অপমানিত করতে চেয়েছেন। তাই তিনি আবারও বলেন, 'বাংলাদেশে শান্তি নাই? তখন মারিয়া বলেন, অনেক শান্তি তো। উনি তো শান্তির ঝাড়গাছ রোপণ করেছে। সেই ঝাড়গাছ থেকে কেবল শান্তিই বর্ষাচ্ছে।'

উপস্থাপিকার এমন প্রশ্ন যেমন বাংলাদেশ প্রসঙ্গে পাশ্ববর্তী দেশে এক ধরনের ভুল তথ্য দেয় অন্যদিকে তৈল মর্দনকারী কিছু মানুষের যে আজন্ম কৃতদাস হওয়ার বাসনা তাই ফুটিয়ে তোলে। এমন ঘটনায় অনেকেই মর্মাহত হয়েছেন। একজন গুণী মানুষকে অহেতুক ছোট করার চেষ্টার জন্য এই উপস্থাপিকা এবং মডেলের শাস্তি প্রত্যাশা করেছে দর্শকেরা।

বিভাগ : বিনোদন