ফাইলেরিয়া বা গোদ রোগ
১৭ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১০ এএম | আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১০ এএম
আমাদের মত গ্রীষ্ম প্রধান দেশে এই অসুখ বেশী হয়। হাত পায়ের অনেকটা অংশ দীর্ঘদিন ধরে ফুলে আছে, প্রায়শই আমরা রাস্তায় এমন মানুষ দেখতে পাই। মূলত কিউলেক্স মশার কামড়ে ফাইলেরিয়া হয়। গোদ রোগের জীবানুর নাম উচেরেরিয়া ব্যানক্রফটি। শুধু যে কিউলেক্স মশার কামড়েই এ অসুখ হয় তা নয়। অ্যানোফিলিস এবং এডিস মশার কামড়েও এই রোগের জীবানু শরীরে প্রবেশ করতে পারে। এই রোগে শরীরের লিম্ফ ভেসেল বা লসিকা নালী ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফলে লসিকা রস হার্টের দিকে ফিরে আসতে না পেরে তা জমতে শুরু করে। ফলে অঙ্গটি ফুলে মোটা হয়ে যায়।
লক্ষণঃ
গোদ রোগে প্রথমে অল্পমাত্রার জ্বর থাকে। লিম্ফনালীতে ব্যথা থাকে এবং ফুলে যায় এবং আসতে আসতে ফোলা বড় হতে থাকে। সাধারণত পা, অন্ডকোষ সহ অন্যান্য স্থান আক্রান্ত হয়। অনেক সময় হাতির মত বিশাল পা হয় এবং হাতির চামড়ার মত চামড়া ভারি হয়ে যায় বলে এ অসুখকে এলিফ্যানটিয়াসিসও বলা হয়।
পরীক্ষাঃ
রক্ত পরীক্ষা করে নিশ্চিতভাবে এ রোগ নির্ণয় করা যায়। স্লাইডে নিয়ে জিমসা স্টেইন করলে জীবাণু দেখা যায়। তবে রক্ত রাতের বেলা নেওয়া উচিত। কারণ এ সময় জীবাণু সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। অনেক সময় লিম্ফ নোড পরীক্ষার প্রয়োজন পড়ে। এছাড়া পিসিআর, আইসিটি, এক্সরে করা হয় ডায়াগনসিসের জন্য।
চিকিৎসাঃ
এলবেনডাজল নামক ওষুধ দিয়ে গোদ রোগের চিকিৎসা করা হয়। এর সাথে আইভারমেকটিন দেওয়া হয়। চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ডাইইথাইল কার্বামাজেপিন ঔষুধও সেবন করতে হয়। তবে দুই বছরের কম বয়সীদের এবং গর্ভবতীদের এ ঔষুধ দেয়া যায়না। স্টেরয়েডও কারও কারও ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়। ফাইলেরিয়া থেকে অন্ডকোষ ফুলে গিয়ে হাইড্রসিল হলে অপাশেন লাগে। অন্ডকোষ বা হাত পা বেশী বড় হয়ে ফুলে গেলে অপারেশন করার প্রয়োজন হয়।
প্রতিরোধঃ
ফাইলেরিয়াসিস বা গোদ রোগ প্রতিরোধযোগ্য। মশার বংশ ধ্বংস করলেই এ রোগ প্রতিরোধ সম্ভব। ঘুমানোর সময় মশারী ব্যবহার করা উচিত। বাড়ির চারিদিকে পরিষ্কার পরিছন্ন রাখতে হবে। মশা মারার ঔষুধ ছিটাতে হবে। সন্ধ্যার পরে দরজা-জানালা বন্ধ করা উচিত। অনেক মলম আছে যেগুলো শরীরে মাখলে মশা কামড়ায় না। এগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। মশা নিধন করলেই ফাইলেরিয়াসিস বা গোদ রোগ প্রতিরোধ সম্ভব।
বিভাগ : স্বাস্থ্য