ঢাকা   শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

মৃগী রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা

Daily Inqilab ইনকিলাব

০৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩৫ এএম | আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৩৫ এএম

নিজ বাড়িতে না হলেও রাস্তায় চলার পথে অনেকেই হঠাৎ খিঁচুনি আক্রান্ত হয়েছে এমন রুগী দেখেছি। এদের বেশীর ভাগই মৃগী রোগে আক্রান্ত। এদের তৎক্ষনাৎ কি করতে হবে বুঝতে না পারলে এদের পরিনতি খারাপ হতে পারে। যে যার মত বলতে থাকে, করতে থাকে। এতে করে রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে যায়। তাই আমরা সংক্ষেপে কি কি করা যায় তার একটা ধারনা এখানে দিচ্ছি। মৃগী রোগীর মূর্ছা যাওয়া কালে “অঈঞওঙঘ” (একশন) শব্দটি মনে রেখে নিম্নলিখিত ব্যবস্থাগুলো নেয়া যেতে পারে।

অ-অংংবংংসবহঃ : (এ= এসেসমেন্ট) রোগীর অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেয়া দরকার। যদি তার আশেপাশে কোন শক্ত বা ধারাল বস্তু ক্ষতিকর কিছু (আগুন, পানি ইত্যাদি) থাকে তবে সেগুলো সরিয়ে রোগীকে নিরাপদ অবস্থানে নিয়ে যেতে হবে। হাত-পা খিঁচুনির সময় পড়ে গিয়ে সে যেন আঘাত না পায় সেদিকে খেয়াল রাখা উচিৎ।

 

ঈ–ঈঁংযরড়হ : (সি= কুশন) মৃগী রোগীর মাথার নিচে নরম বালিশ, পেঁচানো গামছা বা ভাঁজ করা কাঁথা রেখে শুইয়ে দিতে হবে। মাথায় যেন কোনভাবেই চোট না লাগে, এ ব্যাপারে যতœবান হওয়া উচিৎ ।

ঞ – ঞরসরহম : (টি= টাইমিং) অজ্ঞান অবস্থায় রোগীর যাবতীয় সেবা শুশ্রƒষার পাশাপাশি অবশ্যই সময়ের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। যদি পাঁচ-সাত মিনিটের মধ্যে তার জ্ঞান না ফেরে, তবে তাকে হাসপাতালে স্থানান্তরের চিন্তা করা উচিত। রোগী যদি বয়স্ক, গর্ভবতী বা ডায়াবেটিক হয় তবে জরুরি ভিত্তিতে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে।

ও – ওফবহঃরঃু : (আই= আইডেনটিটি) রোগীর সাথে মেডিকেল ব্রেসলেট, আই ডি কার্ড বা স্বাস্থ্য বিষয়ক কোন নোট থাকলে, এ অবস্থায় যাবতীয় করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানা সম্ভব। তার পরিবার, ডাক্তার বা হাসপাতালের খোঁজও এখানে থাকতে পারে। ফলে রোগী সামলাতে সুবিধা হয়।

ঙ–ঙাবৎ : (ও= ওভার) জ্ঞান ফিরে এলে, রোগীকে খোলামেলা ও কোলাহলমুক্ত পরিবেশে, তার গায়ের কাপড়-চোপড় ঢিলা করে, বাম কাত করে হাঁটু ‘দ’ এর মত ভাঁজ করে শুইয়ে দিতে হবে। এমতাবস্থায়, দায়িত্বশীল কেউ তার পাশে থেকে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। রোগীর শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে তার বুকের উঠানামা, চামড়ার রং ও হৃদস্পন্দন স্বাভাবিক কিনা, গায়ে কোন আঘাতের চিহ্ন বা রক্তক্ষরণ, পায়খানা বা প্রশাব হয়ে গেছে কিনা ইত্যাদি নিরীক্ষণ করা উচিত। জ্ঞান ফিরলে রোগী অনেক কিছুই মনে করতে পারে না এবং সে কান্না করতে পারে। এসময়ে তাকে আন্তরিকতার সাথে সাহস দিতে হবে। জানাতে হবে-সে অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল, এখন ভালো আছে কি না, আপনজনরা তার পাশেই আছে। কোনভাবেই বিরূপ আলোচনা করা ঠিক হবে না।

ঘ–ঘবাবৎ : (এন= নেভার) রোগীর হাত-পায়ের খিচুনি বন্ধ করার জন্য তাকে জোর করে ধরে রাখা যাবে না। এসময়ে রোগীকে খাদ্য, পানীয় বা ওষুধ দেয়া যাবে না। রোগীকে জুতা শুকানো যাবে না । জ্বিন, ভুত, কবিরাজের কোন বিশ্বাসের উপর ভরসা করে অবৈজ্ঞানিক কিছু করা যাবে না।
আমরা সচেতন হলে সহজেই রুগীকে সুস্থতার দিকে নিয়ে যেতে পারব। যে যে যার যার মত অবৈজ্ঞানিকভাবে চিকিৎসক না হয়েও চিকিৎসা দিতে শুরু করলে রুগীর বিপদ হতে পারে।

ডা. এন ইউ মাহমুদ
বাংলাদেশ এপিলেপ্টিক সোসাইটি
মোবাইল : ০১৯৮০৪৮৫০০৭
ইমেইল : [email protected]


বিভাগ : স্বাস্থ্য


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

কাঁচকলার উপকারিতা
অপরিণত নবজাতকরাও ফিরবে স্বাভাবিক জীবনে
বিমান ভ্রমণে জেট ল্যাগ
চোখ ওঠা রোগের কারণ ও প্রতিকার
ডায়াবেটিস রোগীর হৃদরোগের ঝুঁকি
আরও

আরও পড়ুন

কিশোরগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার কামালসহ তিনজন গ্রেফতার

কিশোরগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার কামালসহ তিনজন গ্রেফতার

প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ

প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ

বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত

বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত

উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ

উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ

গাজায় যুদ্ধবিরতি ছাড়া বন্দী বিনিময় হবে না : হামাস

গাজায় যুদ্ধবিরতি ছাড়া বন্দী বিনিময় হবে না : হামাস

শান্তিরক্ষা মিশন মোতায়েন করতে চায় জাতিসংঘ হাইতিতে

শান্তিরক্ষা মিশন মোতায়েন করতে চায় জাতিসংঘ হাইতিতে

চকরিয়ার বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরীর মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাসিনা আহমদের শোক

চকরিয়ার বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরীর মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাসিনা আহমদের শোক

পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবেন না : সার্বিয়া

পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবেন না : সার্বিয়া

ক্লাইমেট অর্থায়ন ইস্যুতে দেশগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব

ক্লাইমেট অর্থায়ন ইস্যুতে দেশগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব

লালমোহনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু

লালমোহনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু

ট্রাম্পের অ্যাটর্নির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন আটকে গেল

ট্রাম্পের অ্যাটর্নির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন আটকে গেল

‘ফিলিস্তিনের পর ইরান, সউদী ও তুরস্ক হবে পরবর্তী টার্গেট’

‘ফিলিস্তিনের পর ইরান, সউদী ও তুরস্ক হবে পরবর্তী টার্গেট’

প্রতি বছর ৩ লাখ নথিবিহীন অভিবাসীকে বৈধতা দানের ঘোষণা স্পেনের

প্রতি বছর ৩ লাখ নথিবিহীন অভিবাসীকে বৈধতা দানের ঘোষণা স্পেনের

প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে সবচেয়ে অসুখী দেশ জাপান-কোরিয়া

প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে সবচেয়ে অসুখী দেশ জাপান-কোরিয়া

মুসলিম চিকিৎসক

মুসলিম চিকিৎসক

শীর্ষে দিল্লি

শীর্ষে দিল্লি

সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সংবর্ধনা

সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সংবর্ধনা

ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অব গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সম্বর্ধনা

ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অব গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সম্বর্ধনা

বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান

বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান

মানসিক সুস্থতায় কর্মবিরতি

মানসিক সুস্থতায় কর্মবিরতি