খাবার পানির তীব্র সঙ্কট
১৯ মার্চ ২০২৩, ০৯:২১ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০৩:০৮ পিএম
সীমান্তবর্তী শেরপুর জেলার গারো পাহাড়ি উপজেলা ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ীর গারো পাহাড়ি অঞ্চলে বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে নিচে নেমে যাওয়ায় এ সঙ্কট প্রকট থেকে প্রকটতর আকার ধারণ করেছে বলে জানা গেছে। এতে সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ে বসবাসরত কয়েক হাজার মানুষ বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সঙ্কটে চরম দুর্ভোগ পড়েছেন।
প্রসঙ্গত- নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর-ঝর্ণা ও জলাশয় শুকিয়ে যাওয়ায় পানির স্তর অসাভাবিকভাবে নিচে নেমে গেছে। হস্তচালিত নলকূপে পানি না ওঠায় পাহাড়ের মানুষ পড়েছে বিপাকে। ফলে ডোবা, নালা ও ঝর্ণা শুকিয়ে যাওয়া নদীতে গর্ত করে পানি উঠিয়ে পান করে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে পাহাড়ি জনপদের হতদরিদ্র লোকজন।
এ ছাড়া এ মওসুমে গারো পাহাড়ে বসবাসরত কয়েক হাজার মানুষের জন্য বিশুদ্ধ খাবার পানির কোন উৎস্য নেই। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে আবহাওয়া পরিবর্তন, বৃষ্টিপাত কমে যাওয়া, সেচ কার্যে স্যালোমেশিন ও ডিপটিউবওয়েলগুলোতে অতিমাত্রায় ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলন, নদ-নদী, পাহাড়ি ঝর্ণা, ঝোড়ার নাব্যতা হারানো এবং প্রাকৃতিক জলাশয় ক্রমাগত ভরাটের ফলে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর অস্বাভাবিকভাবে নিচে নেমে যাচ্ছে বলে ঝিনাইগাতী উপজেলা জনস্বাস্থ প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা গেছে।
জানা যায়, শুষ্ক মৌসুমের শুরুতেই সীমান্তবর্তী পাহাড়ি গ্রামগুলোতে প্রতিবছর বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দেয়। অন্যান্য বছরের ন্যায় এ বছরও ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর আরো নিচে নেমে যাওয়ায় গারো পাহাড়ি অঞ্চল ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নালিতাবাড়ী উপজেলার সীমান্তবর্তী গারো পাহাড়ে তাওয়াকুচা, পানবর, বাকাকুড়া, গুরুচরণ দুধনই, ছোট গজনী, বড় গজনী, গান্ধিগাঁও, হালচাটি, সন্ধ্যাকুড়া, হলদীগ্রাম, নওকুচি, নকশী ও শ্রীবরদীর ৪-৫ গ্রামে অটোকলে পানি পাওয়া গেলেও বাকি গ্রাম ও নলিতাবাড়ীর গোটা সীমান্তবর্তী পাহাড়ি অঞ্চলে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্তর প্রায় ১৩০-১৪০ ফুট নিচে নেমে গেছে। ফলে ওইসব অঞ্চলে বিশুদ্ধ খাবার পানির তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলা জনস্বাস্থ প্রকৌশলী শ্রী রাধা বল্লভ বিশুদ্ধ খাবার পানির সঙ্কটের কথা স্বীকার করে বলেন, শুষ্ক মৌসুমে উপজেলার পাহড়ি অঞ্চলের ২ ইউনিয়নে বিশুদ্ধ খাবার পানির সঙ্কট দেখা দেয়। বিশুদ্ধ পানির জন্য ফিবছর ৬ মাস কষ্ট করে জনসাধারণ। তবে রিংওয়েল টিউবওয়েল বসানো হলে পানির সঙ্কট কমে যাবে বলে তিনি মনে করেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, বিশুদ্ধ খাবার পানি না পেয়ে মানুষ মাটির কূপ, পাহাড়ি ঝরনাসহ বিভিন্ন জলাশয় থেকে পানি সংগ্রহ করছে। আবার অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে পানি সংগ্রহ করে গৃহস্থালীর কাজ ও খাবার পানির ব্যবস্থা করছেন। নানা রোগজীবাণুযুক্ত পানি ব্যবহারে হতদরিদ্র লোকজন ডায়রিয়া, আমাশয়সহ নানা পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
ঝিনাইগাতী উপজেলা ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মি. নবেশ খকসী বলেন, মূলত সীমান্তবর্তী অঞ্চলের জনসাধারণ বছরে ৬ মাসই দূর দূরান্ত থেকে পানি সংগ্রহ করতে বাধ্য হন। তিনি বলেন. জানুয়ারি থেকে মে/জুন মাস পর্যন্ত পানির লেয়ার গভীর নিচে নেমে যায়। ফলে শুস্ক মওসুমে ৬ মাসই তাদের পানির তীব্র সঙ্কট থাকে। তিনি পানি সঙ্কট প্রবণ এলাকায় পানির নতুন উৎস উদ্ভাবণ করে বিশুদ্ধ খাবার পানি সঙ্কট দূরিকরণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।
ঝিনাইগাতী ইউএনও মো. ফারুক আল মাসুদ বলেন, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের সাথে আলাপ-আলোচনা করে অনতিবিলম্বে কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ভিআইপি মর্যাদায় সাবেক জনপ্রশাসনমন্ত্রীর রিমান্ড শুনানি!
খুনিদের গ্রেফতারে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ
পেশাব করে টিস্যু ব্যবহারের অনেকক্ষন পরেও পেশাবের রাস্তা ভেজা থাকলে করণীয় প্রসঙ্গে।
সৈয়দপুরে বর্ধিত শুল্ক প্রত্যাহারের দাবিতে ফল ব্যবসায়ীদের মানববন্দন
সিলেটে ওবায়দুল কাদেরসহ ৭২ জনের বিরুদ্ধে মামলা
যাত্রাবাড়ীতে বাকপ্রতিবন্ধীসহ আপন দুই বোনকে ধর্ষণ, আটক ১
তিন বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে নির্বাচনী এলাকার সীমানা নির্ধারণ করবে ইসি
আশুলিয়ায় ৬টি ইটভাটাকে ৩৬ লাখ টাকা অর্থদন্ড
গ্রামে আধুনিক চিকিৎসা সুবিধা সম্প্রসারণ জরুরি
অর্থনৈতিক কৌশল পুনর্নির্ধারণে টাস্কফোর্সের প্রতিবেদন হস্তান্তর
বিস্কুটের উপর ভ্যাট বৃদ্ধি কেন?
বিএনপি বনাম নতুন রাজনৈতিক দল
সন্ত্রাসী হামলায় ধলাপাড়া রেঞ্জের বিট কর্মকর্তা ও বন প্রহরীসহ মারাত্মকভাবে আহত ৯
জামালপুরে ট্রাকচাপায় অটোরিকশার ৫ যাত্রীর মৃত্যু
পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার নিয়ে বিভ্রান্তি কাম্য নয়
জামায়াতে ইসলামী মানবিক ও দূর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে চায়: ডা. শফিকুর রহমান
‘রক্ত দিয়ে ছাত্ররা যা অর্জন করেছে, তা তাদেরই রক্ষা করতে হবে’
পালিয়ে যাওয়া হাসিনা দেশের মাটিতে আসতে পারবে না : খায়ের ভূঁইয়া
সামরিক শক্তিতে মিয়ানমার-ইরাকের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ
সরব হওয়ার দিন