ঝিটকা বাজারে প্রধান সড়কে খানাখন্দ : জনদুর্ভোগ চরমে
২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৩ এএম
মানিকগঞ্জের হরিরামপুরের বাণিজ্যিক প্রাণকেন্দ্র ঐতিহ্যেবাহী ঝিটকা বাজারের প্রধান গলির রাস্তা ভেঙে খানাখন্দে পরিণত হয়ে চরম জনদুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। বাজারের দুর্গা মন্দির হতে মাংসপট্টি পর্যন্ত প্রায় ২০০ ফিট পাকা রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ভেঙে বড় বড় গর্তে পরিরণত হয়েছে। এতে একটু বৃষ্টি হলেই ভাঙা জায়গাগুলো পানি জমে যায়। এছাড়াও রাস্তার দু’পাশে কাঁদা ও ময়লা আর্বজনায় জমে থাকায় দুর্গন্ধের সৃষ্টি হওয়ায় বাজারের ব্যবসায়ীসহ ক্রেতা ও পথচারীদের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। রাস্তা ভেঙে বড় বড় গর্ত তৈরি হওয়ায় বাজারে এই প্রধান গলিতে বিভিন্ন ধরনের যান চলাচলে ব্যাহত হচ্ছে।
জানা যায়, প্রায় পাঁচ বছর আগে উপজেলার ঝিটকাবাজার প্রধান গলি দিয়ে সড়ক বিভাগের এই রাস্তাটি মানিকগঞ্জ থেকে পাটুয়ারিয়াঘাট পর্যন্ত কাজ করা হয়। কিন্তু প্রায় তিন বছর ধরে বাজারের প্রধান গলি এই রাস্তার বাজারের দূর্গা মন্দির থেকে মাংস পট্টি পর্যন্ত ২০০ মিটার রাস্তার দু’পাশে ভেঙে বড় বড় গর্তে পরিণত হয়েছে। একটু বৃষ্টি হলেই গর্তে পানি জমে যায়। এতে পণ্যবাহী ট্রাক, পিকআপ, কাভার ভ্যান, ইজিবাইক, অটোরিকশা, সিএনজি, নসিমনসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি হয়। রাস্তা ভাঙার কারণে বাজারের সময়ে প্রতিদিনই জ্যাম লেগেই থাকে। রাস্তার দু’পাশে কাঁদা ও ময়লা-আর্বজনার স্তূপ জমে থাকায় মানুষজন পায়ে হেঁটেও যেতে পারে না।
সরেজমিনে দেখা যায়, মাংসপট্টি, দুধবাজার এলাকায় বৃষ্টি নামলেই পাকা রাস্তার পাশেই কাঁদা ও ময়লার স্তূপ জমে যায়। পাকা রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ভেঙে বড় বড় গর্তে পরিণত হওয়ায় অনেক জায়গায় রাস্তার প্রস্থের অধিকাংশই ভেঙ্গে গেছে। বাজারে উন্নতমানের ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় পানি জমে থাকে এবং কাঁদা ও ময়লার স্তূপে পরিবেশ দূষিত হচ্ছে বলে দাবি করেন বাজারের একাধিক ব্যবসায়ীরা। রাস্তাটি সংস্করণের কেউ উদ্যোগী হচ্ছে না বলেও অভিযোগ ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন যানবাহন চালকদের।
অটোরিকশা চালক রাজ্জাক জানান, ঝিটকা বাজারের এটাই প্রধান গলি। এই রাস্তাটা কয়েক বছর যাবৎ এভাবেই ভেঙ্গে গর্ত হয়ে আছে। আমাগো মালামাল ও যাত্রী নিয়ে এই রাস্তাটুকু যেতে খুব কষ্ট হয়। অনেক সময় গর্তে গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনাও ঘটে। রাস্তাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই আমাদের দাবি রাস্তাটা দ্রুত মেরামত করা হোক।
মোটরসাইকেল আরোহী স্কুল শিক্ষক মোল্লা আব্দুর রহিম জানান, এই মাংস পট্টি থেকে শুরু করে রাস্তাটি যেভাবে ভেঙ্গেছে আর বৃষ্টিতে পানি জমে রাস্তার দুই পাশে যে কাদা আর ময়লা আর্বজনার স্তূপ, তাতে সুস্থ মানুষের এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করবে না। এটা এই বাজার প্রধান গলি। প্রতিদিনি ছোট বড় হাজার হাজার যানবাহন চলাচল করছে। রাস্তা ভালো না থাকায় প্রতিদিনই এখানে জ্যামের সৃষ্টি হয়। ফলে পুরো বাজারে জ্যাম পড়ে যায়। অনেক জরুরি রোগী বহন করা অ্যাম্বুলেন্সও ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে পড়ে। আর বৃষ্টি নামলে তো পায়ে হেঁটে যাওয়ার আর কোনো সুযোগ নেই। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি করছি, যেন দ্রুত রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
কাঁচামাল ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাবুল হোসেন জানান, প্রতিদিন ঝিটকা বাজার থেকে শতশত টন কাঁচামাল রপ্তানি ও আমদানি করা হয়। প্রতিদিন পণ্যবাহী শতশত গাড়ি এই বাজারের প্রধান গলি দিয়ে যাতায়াত করে। অথচ রাস্তাটি কয়েক বছর ধরেই বিভিন্ন জায়গায় ভেঙ্গে গর্ত হয়ে গেছে। বৃষ্টি নামলেই পানি জমে যায়। এতে জনগণের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তাই আমি বাজারের ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে জোর দাবি করব, রাস্তাটি যেন দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। তাহলে বাজারের ব্যবসায়ীসহ সর্বসাধারণের জন্য উপকার হবে।
বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি গালা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শফিক বিশ্বাস ইনকিলাবকে জানান, বাজারের দূর্গা মন্দির থেকে মাংস পট্টি পর্যন্ত রাস্তার অবস্থা মূলতই নাজুক। এটা সংস্কার করা জরুরি। আমি সংশ্লিষ্টদের সাথে যোগাযোগ করে কিভাবে দ্রুত সংস্কার করা যায় সে ব্যবস্থার গ্রহণের চেষ্টা করব। পাশাপাশি বাজারের উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থা করারও দ্রুত উদ্যোগ করার চেষ্টা করব।
এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সড়ক ও জনপদ বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান ইনকিলাবকে জানান, ঝিটকা বাজারের পাশ দিয়ে আমাদের একটা বাইপাস রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। এটি হলে বাজারের ওপর গাড়ির চাপ কমে যাবে। এ রাস্তায় আমাদের আপাতত বড় কোনো কাজ করার বাজেট নেই। তবে ছোটখাটো গর্ত হলে এগুলো তো আমরা মাঝে মাঝেই সংস্কার করা হয়।
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ