দৌলতখানে বিলুপ্তির পথে খেজুর রস
০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:১২ এএম | আপডেট: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:১২ এএম
বাংলাদেশ ঋতু-বৈচিত্রের দেশ। এখানে এক এক ঋতুর এক এক রূপ। প্রতি দুই মাস অন্তর একটি নতুন ঋতুর আবির্ভাব ঘটে। প্রত্যেক ঋতুর আবির্ভাবে বাংলাদেশের রূপ ও সৌন্দর্য বিচিত্রময় হয়ে ওঠে। হেমন্তের পরে কুয়াশার চাদর গায়ে উত্তরের হওয়ার সাথে আসে শীত। শীতের দাপটে মানুষ ও প্রকৃতি যখন অসহায় হয়ে পড়ে। তখন রকমারি শাকসবজি, ফল ও ফুলের সমারোহে বিষন্ন প্রকৃতি ভরে ওঠে। শীত আসলেই বাতাসে ভাসে খেজুর রসের ঘ্রাণ। ক্ষীর, পায়েস আর পিঠাপুলির উৎসবে মাতোয়ারা হয় গ্রামগুলো। প্রিয় টাটকা খেজুর রসের স্বাদ পেতে প্রচন্ড শীত উপেক্ষা করে ভোরবেলা মানুষ ছুটে যান দূর-দূরান্তে। খেজুর গাছের চারপাশ পরিণত হতো রস পিপাসুদের কেন্দ্রস্থল। কারণ কখন গাছ থেকে হাড়িগুলো নামাবেন গাছিরা, কখন খাবেন শীতের এই মধু। ভোলার দৌলতখানে শীতের এমন দৃশ্য এখন আর চোখে পড়ে না। এখানে প্রায় বিলুপ্তির পথে খেজুর রস। আগ্রহ থাকলেও আগের মত গাছ না থাকায় পাওয়া যাচ্ছে না স্বাদের এই খেজুর রস। এক সময় শীতকাল আসতেই গাছ কেটে হাঁড়ি বসিয়ে সকালবেলা রস বিক্রি করত এখানকার গাছিরা। মাঝরাতেও রস সংগ্রহ করে বিক্রি হত। গভীররাতে গৃহিণীরা টাটকা খেজুর রস দিয়ে পায়েস তৈরি করে পরিবারের সকলের মাঝে বিতরণ করতেন। সবাই মিলে একসাথে পায়েস খাওয়া ছিল অনেক আনন্দের। শীতে গ্রামের প্রতি ঘরে ঘরে চলত পায়েস খাওয়ার উৎসব। সেই সঙ্গে ছিল শীতের পিঠা। এখন এসব কেবলই অতীত। দৌলতখান উপজেলার বিভিন্ন বাড়িতে ও রাস্তার দু’ধারে এখন আর আগের মতো দেখা য়ায় না সারি সারি খেজুর গাছ। যা আছে, তা থেকে আগের মত রস পড়ে না।
সরেজমিনে ঘুরে স্থানীয় গাছি ও কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোন কোন এলাকায় কিছু কিছু খেজুর গাছ থাকলেও আগের মত রস হয় না। আবহাওয়ার পরিবর্তন ও ইটভাটায় খেজুর গাছ পোড়ানোর ফলে গাছের সংখ্যা দিনে দিনে কমছে। এছাড়াও নানা কারণে এলাকার খেজুর গাছগুলো মরে যাচ্ছে। যা আছে, তা থেকেও কাঙ্খিত রস পাওয়া যায় না।
গাছি কাঞ্চন মিয়া জানান, আগে একটি গাছ থেকে মাঝারি সাইজের এক হাঁড়ি রস পাওয়া যেত। কিছু কিছু গাছে বিকেলে হাঁড়ি বসালে মাঝরাতেই হাঁড়ি ভরে যেত। এখন গাছে আগের মতো রস হয় না।
নুর মিয়ার হাট এলাকার শানু মিয়া বলেন, শীতকালে ২০ থেকে ৩০টি খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতাম। রস বিক্রি করে সংসারের খরচ উঠাইতে পারতাম। এখন এলাকায় খেজুর গাছ নেই বললেই চলে।
কৃষক হেজু বলেন, গ্রামে একসময় খেজুর গাছ কেটে রস সংগ্রহ করে গুর তৈরি করে বাজারে বিক্রি করে পারিবারিক ব্যয় নির্বাহ করা যেতো। এখন গাছ কম। গাছে আগের মতো রসও হয় না। তাই খেজুর গাছ কাটার পাশাপাশি কৃষিকাজ করি।
দৌলতখান উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ হুমায়রা সিদ্দিকা ইনকিলাবকে বলেন, শীতকালে খেজুরের রসের পিঠা পায়েস বাংলাদেশের গ্রামীণ খাদ্যাভাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। ব্যক্তিগত পর্যায়ে খেজুর গাছ রোপন প্রবণতা দক্ষিণাঞ্চল তথা ভোলা জেলায় কম রয়েছে। এছাড়াও মানুষ নির্বিচারে গাছ কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছে। রস ও গুড়ের প্রচুর চাহিদা থাকলেও যতেœর অভাবে গাছ কমে যাচ্ছে। বজ্রপাত প্রতিরোধে এবং রস ও নলেন গুড়ের উৎপাদন বৃদ্ধিতে বিভিন্ন প্রশিক্ষণে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে কৃষকদেরকে ব্যাপকভাবে খেজুর গাছ রোপনের ব্যাপারে উৎসাহিত করা হচ্ছে।
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
চীনের অবিশ্বাস্য সামরিক উত্থানে টনক নড়েছে ভারতের
পারমাণবিক বোমা সজ্জিত নতুন যুদ্ধজাহাজে আতঙ্ক ছড়াচ্ছেন কিম
ধর্ষণের প্রতিশোধে বাবাকে হত্যা, গ্রেফতার ২ কিশোরী
আমাকে ধর্ষণ করার ভিডিও দেখে স্বামী
হজযাত্রীর সর্বনিম্ন কোটা নির্ধারণে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্টতা নেই
ফিলিপাইনে ৪০০ বিদেশি অনলাইন প্রতারক গ্রেফতার
ইসরাইলি ৪শ’ সেনা নিহত গাজায় স্থল অভিযানে
কুষ্টিয়ায় কৃষি যন্ত্র বিতরণে দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে দুদক
জীববৈচিত্র্য সুরক্ষা করতে হবে
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সিরিজ ড্র করল বাংলাদেশ
ভোলায় শীতার্তদের মাঝে জেলা প্রশাসকের কম্বল বিতরণ
গাজীপুরে বিএনপি নেতার উপর হামলা
চাঁদপুরে হত্যা মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা জসিম গ্রেপ্তার
বিভিন্ন বিভাগ ছোট হচ্ছে পাকিস্তানে
আশুলিয়ায় চাঁদার দাবিতে প্রকাশ্যে দিবালোকে দোকানীকে গুলি
গ্রিনল্যান্ড দখলের হুমকি নিয়ে ট্রাম্পকে সতর্ক করল জার্মানি-ফ্রান্স
৪ ভূখ-কে অন্তর্ভুক্ত করে ইসরাইলি মানচিত্র প্রকাশ
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার
চলতি বছর বিশ্ববাজারে নিত্যপণ্যের দাম কমার পূর্বাভাস
যুক্তরাষ্ট্রের নাম মেক্সিকান আমেরিকা রাখার পরামর্শ