বিয়ের দাবিতে ১শ’ কিমি পদযাত্রা

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

১১ মার্চ ২০২৩, ০৮:১৩ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৫৬ পিএম

বিয়ের বয়স পার হয়ে যাচ্ছে, অথচ মিলছে না যোগ্য পাত্রীর সন্ধান। এলাকায় মেয়ের সংখ্যাও ঠেকেছে তলানিতে। নারী-পুরুষের অনুপাতের পার্থক্যও বাড়ছে বানের গতিতে। অবস্থা বেগতিক দেখে শেষ পর্যন্ত ব্রহ্মচারিগাল নামে একটি পদযাত্রায় নেমেছে একদল পাত্র। সম্প্রতি এমনই এক ঘটনা হইচই ফেলেছে দক্ষিণ ভারতের কর্নাটকে। ফেব্রুয়ারিতে কর্নাটক রাজ্যে পাত্রী খোঁজার জন্য প্রার্থনা করতে পুরুষদের একটি দল ১২০ কিলোমিটার (৭৪.৫ মাইল) পাড়ি দিয়ে একটি (মহাদেশশ্বর) মন্দির পরিদর্শন করতে গিয়েছিল। শুরুতে ৩০ জন অংশগ্রহণকারী থাকলেও পরে তা ৬০ জনের সঙ্গে শেষ হয়। দলটির বেশিরভাগ কর্নাটকের মান্ডা জেলার কৃষক ছিলেন। যেখানে নারী-পুরুষের অনুপাতের পার্থক্য কয়েক দশক ধরে বেড়ে চলেছে। শেষ পাওয়া আদমশুমারির পরিসংখ্যান অনুসারে— মান্ডার এই অনুপাত ২০০১ সালে ৯৭১:১০০০ থেকে ২০১১ সালে ৯৬০:১০০০ ( নারী : পুরুষ) পৌঁছেছিল। প্রচারকারীরা বলছেন, এর কারণে অনেক পুরুষের বিয়ে করা কঠিন হয়ে গেছে। এ ছাড়া খামারের আয় কমে যাওয়া, নারীদের ক্ষেত্রে পছন্দ নিজ গোত্র থেকে অন্য গোত্রের দিকে যাওয়া এমনকি তাদের পুরুষবিদ্বেষী মনোভাবের কারণেও বিয়ে করতে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। পদযাত্রায় অংশগ্রহণকারী মালেশা ডিপি বিবিসিকে বলেন, গত কয়েক বছরে প্রায় ৩০ জন মহিলা তাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। যখন আমার প্রেমে পড়া উচিত ছিল, আমি কাজে ব্যস্ত ছিলাম। আমি অর্থ উপার্জন করেছি। তিনি আরও বলেন, এখন যেহেতু আমার জীবনের সব কিছু আছে আমি বিয়ে করার জন্য একটি পাত্রী খুঁজে পাচ্ছি না। আমার বয়স মাত্র ৩৩। কিন্তু মনে হচ্ছে ইতোমধ্যে এলাকায় বিয়ের জন্য আদর্শ বয়স পার করে ফেলেছি আমি। তিনি আরও যোগ করেন, আমাদের পরিবারের মহিলাদের গবাদিপশু এবং একটি বড় পরিবারের যতœ নিতে হবে না। এমনকি তার নববধূকে চারজনেরও কম সদস্যের একটি পরিবারের জন্য রান্না করতে হবে। পদযাত্রার পর প্রতিবেশী রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশ এবং কেরালার মতো কৃষকদের কাছ থেকে মালেশা বার্তা পেয়েছেন, তারা ভাবছেন অংশগ্রহণকারীরা এখন তাদের ভাগ্যের পরিবর্তনের আশা রাখতে পারে। তিনি আরও বলেন, এটি ছিল খুবই কঠিন পথচলা। আমরা প্রার্থনা করেছিলাম যেন আমরা সবাই শিগগিরই বিয়ে করতে পারি। পদযাত্রার অন্যতম আয়োজক শিবপ্রসাদ কেএম বলেন, যখন তারা পদযাত্রার জন্য প্রথম ঘোষণা করেছিল তখন ২০০ জনেরও বেশি পুরুষ অংশ নেওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছিল। কিন্তু রাজ্যের স্থানীয় মিডিয়া আমাদের কেসটি নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করার কারণে অনেকেই পিছিয়ে পড়েন। তিনি আরও বলেন, আমাদের এলাকায় জমির পরিমাণ কম এবং উপার্জন খুব বেশি নয়। তাই কৃষি ছাড়া যাদের ব্যবসার মতো অন্য আয়ের উৎস আছে, তারা পাত্রী পেতে কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন। স্থানীয় এক কর্মী নাগরেভাক্কা বলেন, এখনো আশপাশের বাচ্চাদের স্কুলে আপনি দেখতে পাবেন ২০ জন মেয়ের মধ্যে প্রায় ৮০ জন ছেলে আছে। আরও একজন অংশগ্রহণকারী কৃষ্ণা (৩১) বলেন, মান্ডা একটি উর্বর ভালো সেচযুক্ত অঞ্চল। এখানে আখ প্রধান ফসলগুলোর মধ্যে একটি। কিন্তু সম্প্রতি খামারের আয় কমে যাওয়ায় এই পেশাটিকে মর্যাদাহীন করে তুলেছে। পাত্রীর পরিবারের লোকেরা মনে করেন, কৃষক পরিবারের যুবকদের আয় অনিশ্চিত। জয়শীলা প্রকাশ, যিনি মূলত মান্ডিয়ার বাসিন্দা কিন্তু এখন তার পরিবারের সঙ্গে বেঙ্গালুরের শহরে থাকেন। তিনি বলেছেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে গ্রামে থাকতে পছন্দ করি। কারণ এটি প্রকৃতির কাছাকাছি এবং মানুষের সঙ্গে বন্ধন তৈরি করা সহজ। কিন্তু মহিলারা পছন্দ করেন শহুরে এলাকায় চলে যাওয়া। যেন তারা আরও স্বাধীনভাবে চলতে পারেন। বিবিসি বাংলা।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

সীমান্তে আইইডি বিস্ফোরণে ২ ভারতীয় সেনা নিহত
বাংলাদেশের জনগণকে অগ্রাধিকার দিতে ভারতের প্রতি শশী থারুরের আহ্বান
‘বন্ধু’ মোদির সফরের আগেই ইস্পাত-অ্যালুমিনিয়ামে চড়া শুল্ক ট্রাম্পের
মুখোমুখি দুই মহাশক্তি
জম্মুতে বোমা বিস্ফোরণে ভারতের ২ সেনা নিহত
আরও

আরও পড়ুন

টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগের ইউপি চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলরসহ ২১জন নেতাকর্মীদের আটক

টাঙ্গাইলে আওয়ামী লীগের ইউপি চেয়ারম্যান ও কাউন্সিলরসহ ২১জন নেতাকর্মীদের আটক

কক্সবাজারে অপারেশন ডেভিল হান্ট' অভিযান অব্যাহত, গ্রেপ্তার ২৭

কক্সবাজারে অপারেশন ডেভিল হান্ট' অভিযান অব্যাহত, গ্রেপ্তার ২৭

হাজীদের শত কোটি টাকা অতিরিক্ত বিমান ভাড়া আদায়: হাব ঐক্য কল্যাণ পরিষদ

হাজীদের শত কোটি টাকা অতিরিক্ত বিমান ভাড়া আদায়: হাব ঐক্য কল্যাণ পরিষদ

সিঙ্গাপুর থেকে ২৬৫ কোটি টাকায় কেনা হবে ৫০ হাজার টন নন বাসমতি

সিঙ্গাপুর থেকে ২৬৫ কোটি টাকায় কেনা হবে ৫০ হাজার টন নন বাসমতি

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে গাজীপুরে যুবদলের আনন্দ মিছিল

জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিকে অভিনন্দন জানিয়ে গাজীপুরে যুবদলের আনন্দ মিছিল

শৃঙ্খলা রক্ষার্থে আমাদের কঠোর হতে হবে: উপদেষ্টা মাহফুজ

শৃঙ্খলা রক্ষার্থে আমাদের কঠোর হতে হবে: উপদেষ্টা মাহফুজ

পটুয়াখালীতে হামলায় পিপি, জেলা জামায়াতের আমিরসহ আহত ৩

পটুয়াখালীতে হামলায় পিপি, জেলা জামায়াতের আমিরসহ আহত ৩

রামগতিতে আগুনে পুড়ল ২৪ দোকান

রামগতিতে আগুনে পুড়ল ২৪ দোকান

বিনামূল্যে ক্যানসারের ওষুধ দেওয়ার ঘোষণা

বিনামূল্যে ক্যানসারের ওষুধ দেওয়ার ঘোষণা

সীমান্তে আইইডি বিস্ফোরণে ২ ভারতীয় সেনা নিহত

সীমান্তে আইইডি বিস্ফোরণে ২ ভারতীয় সেনা নিহত

সিংগাইরে ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতিসহ আটক ৪

সিংগাইরে ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতিসহ আটক ৪

সাভারে কুটি মোল্লাসহ ১৩ আসামী গ্রেপ্তার

সাভারে কুটি মোল্লাসহ ১৩ আসামী গ্রেপ্তার

স্বামীকে জুতা মারলেন অঙ্কিতা

স্বামীকে জুতা মারলেন অঙ্কিতা

আ’লীগ নেতাকে ছাড়াতে গিয়ে গ্রেপ্তার স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকে বহিস্কার

আ’লীগ নেতাকে ছাড়াতে গিয়ে গ্রেপ্তার স্বেচ্ছাসেবক দল নেতাকে বহিস্কার

গ্রেটার সিলেট ডেভেলপমেন্ট এন্ড ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল ইউকে এর সাথে সিলেট চ্যাপ্টারের মতবিনিময়

গ্রেটার সিলেট ডেভেলপমেন্ট এন্ড ওয়েলফেয়ার কাউন্সিল ইউকে এর সাথে সিলেট চ্যাপ্টারের মতবিনিময়

ময়মনসিংহ জেলা মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের বিজয়ীদের শপথ

ময়মনসিংহ জেলা মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের বিজয়ীদের শপথ

সৈয়দপুরে নাশকতা মামলায় আ'লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান জুন গ্রেফতার

সৈয়দপুরে নাশকতা মামলায় আ'লীগ নেতা ইউপি চেয়ারম্যান জুন গ্রেফতার

বিশ্বনাথ থানা ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ-ও অস্ত্র লুটের ঘটনায় মামলা-ক্ষতি কোটি টাকা

বিশ্বনাথ থানা ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ-ও অস্ত্র লুটের ঘটনায় মামলা-ক্ষতি কোটি টাকা

‘ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন ছাড়া শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়’

‘ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়ন ছাড়া শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়’

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হবে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বুক কর্নার

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হবে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বুক কর্নার