পশ্চিম থেকে ছড়িয়ে পড়েছে বৈশ্বিক অর্থ সঙ্কট চীনকে বিআরআই প্রকল্পে আগাতে হবে
১৯ মার্চ ২০২৩, ১০:৫৫ পিএম | আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৩, ০১:৪৮ পিএম
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর আজ শুরু হওয়া মস্কোতে তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফর এবং যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিবি) এবং অন্যান্যগুলোর পতন বিশে^র পূর্ব বনাম পশ্চিমের অর্থনৈতিক শক্তির ভারসাম্যের একটি আসন্ন পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যা অপ্রত্যাশিতভাবে অসামান্য হিসেবে প্রমাণিত হতে পারে। এসভিবি’র পতন এবং ক্রেডিট সুইসকে ঘিরে ফেলা অর্থ মন্দা আবারও (২০০৮ সালের বৈশ্বিক অর্থমন্দার মতো) দুর্বল বাজার অর্থনীতি ও অর্থ-ব্যবস্থার সংকটকে প্রকাশ করেছে। বিশ^ এখন এমন একটি পরিস্থিতি রয়েছে, যখন একদিকে চীন লকডাউন থেকে অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের সিড়িতে চড়ছে ও বিশ্বব্যাপী তার কূটনৈতিক প্রভাব বাড়াচ্ছে, তখন আরেকদিকে, পশ্চিমা অর্থনীতিগুলি সামরিক ব্যয় ও যুদ্ধ-পরবর্তী পুনর্গঠনগুলির ক্রমবর্ধমান বোঝা কাঁধে নিয়ে একটি সম্ভাব্য পদ্ধতিগত আর্থিক সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে।
এসভিবি’র পতন সরাসরি মার্কিন-চীন প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভূমিকা রাখছে। আটলান্টিক কাউন্সিলের গবেষক হাং ট্রান উল্লেখ করেছেন, ‘উচ্চ প্রযুক্তির বিনিয়োগ খাতগুলি অর্থায়নের ক্রমবর্ধমান সংকটের সম্মুখীন হবে। চীনের সাথে তার প্রতিযোগিতা করতে গেলে এই খাতটিতে বর্তমানে মার্কিন নেতৃত্ব টিকিয়ে রাখার প্রয়োজন।’ এই সময়ে অর্থ মন্দার সংক্রমণ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং যা পরিস্থিতিকে এতটাই অস্থির করে তুলছে, তা হল, আমানতের নিশ্চয়তা বা অংশীদারিত্বের বিনিয়োগ। কিন্তু আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে সমর্থন করার জন্য মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের পদক্ষেপগুলি তার মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের নীতির মতোই বিপরীতমুখী। ফলে, আর্থিক ব্যবস্থার সমস্যা বাড়তে থাকবে এই নির্বোধ বিশ্বাসের বিপরীতে যে, মুদ্রাস্ফীতি কমলে সব ঠিক হয়ে যাবে। যেহেতু মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হারে চড়া বৃদ্ধির ফলে আর্থিক ব্যবস্থার দুরবস্থা নিশ্চিত হয়ে গেছে, এটিকে উপপাদ্য করে রয়টার্সের সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‹এতে কোন সন্দেহ নেই যে, ক্রেডিট সুইস ব্যাংকিং সংকটকে বিশ্বজনীনে পরিণত করেছে।›
এদিকে, ওয়াশিংটনের পিটারসন ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক্স পর্যবেক্ষণ করেছে যে, সম্ভাব্য ঋণ খেলাপি হওয়া ঠেকাতে রিপাবলিকানদের মার্কিন বাজেট কমানোর দাবি ডলারের আধিপত্য হ্রাস করতে যাচ্ছে। এবং এটি বেইজিং ও মস্কোর দাবিকে বৈধতা দিচ্ছে যে, যুক্তরাষ্ট্র একটি দুর্বল ও অবিশ্বস্ত অংশীদার। সচেতনভাবে না হলেও, প্রেসিডেন্ট শি রাশিয়ায় কূটনৈতিক সফরে যাওয়ার জন্য এবং ইরান-সউদী আরবের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য একটি ভাল মুহূর্ত বেছে নিয়েছেন। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সাথে সাক্ষাত করার পর, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে ভার্চুয়াল বৈঠকের জন্য প্রস্তুত শি যদি ইউক্রেন যুদ্ধে একটি মীমাংসা করতে পারেন, তবে এটি ইউরোপে নতুন চীনা অগ্রগতির মঞ্চ তৈরি করবে। ‹রাশিয়া-ইউক্রেন ক্রাইসিস: চায়না›স বেল্ট রোড ইনিশিয়েটিভ অ্যাট দ্য ক্রসরোড্স› শিরোনামের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, ইউরোপ এবং এশিয়ার সংযোগস্থলের কাছে ইউক্রেন বিআরআই-তে একটি কৌশলগত অবস্থানে রয়েছে, যা দেশটিকে ইউরোপের একটি সম্ভাব্য প্রবেশদ্বার হিসাবে উপস্থাপন করে। অতএব, চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের মূল স্থল সংযোগ হিসেবে একটি স্থিতিশীল ইউক্রেন প্রয়োজন।
অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন কর্নেল এবং প্রাক্তন সরকারি কর্মকর্তা ডগলাস ম্যাকগ্রেগর একটি সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘যদি ইউক্রেন অস্থিতিশীল থাকে, তবে সেই ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড প্রকল্পটি ভেঙে পড়বে।› ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ একই সাথে বৈশ্বিক মূল্য শৃঙ্খলকে বিপর্যস্ত করে, মুক্ত বাণিজ্যকে দুর্বল করে, এবং খাদ্য ও জ¦ালানীর নিরাপত্তাহীনতাকে চরমে নিয়ে সামগ্রিকভাবে চীনের অবকাঠামো উদ্যোগ ও সংযোগ উভয়ই ব্যাহত করেছে। কিন্তু পশ্চিমা অর্থনীতির দুর্বলতাকে পুরোপুরি ব্যবহার করতে চীনকে বেল্ট অ্যান্ড রোডের কাঠামো, বিশ্বাসযোগ্যতা এবং বৈশ্বিক ভাবমূর্তিকে শক্তিশালী করতে হবে। সেন্টার ফর চায়না এন্ড গ্লোবালাইজেশন-এর সভাপতি ওয়াং হুইয়াও যেমনটি উল্লেখ করেছেন, ‘প্রকল্পটি মূলত চীনের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের আধারে নির্মিত। যেহেতু, এসভিবি’র এবং অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পতনের ঘটনাগুলির মাধ্যমে প্রাথমিক আর্থিক সংকট ছড়িয়ে পড়েছে, বেইজিংকে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের ভিত্তি এবং প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামোকে শক্তিশালী করার জন্য এই সুযোগটি গ্রহণ করতে হবে।’ সূত্র : সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
স্ত্রী-সন্তানসহ শাহরিয়ার আলমের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
মোজাম্বিকে বাংলাদেশিদের ৩শ' ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান লুটপাট ও ভাঙচুর
অতিসত্বর নির্বাচন হওয়ার দরকার : আমীর খসরু
দুর্নীতিগ্রস্ত লুটেরা মাফিয়াদল যাতে বাংলাদেশে আর ফেরত না আসতে পারে : মেজর হাফিজ
বঞ্চিত ৭৬৪ কর্মকর্তাকে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি দিচ্ছে সরকার
ক্যাডার বর্হিভূত রাখার সুপারিশ প্রত্যাখ্যান শিক্ষা ক্যাডারের
শেখ হাসিনাসহ ৬৩ জনের নামে মামলা
অভিযানের খবরে পালাল শ্রাবণধারা কারখানার পরিচালক-ম্যানেজার
সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নেই আশানুরূপ সাড়া
একতাই পারবে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে
তিতাস গ্যাস টি.এন্ড ডি. পিএলসি’র ৫% নগদ লভ্যাংশ অনুমোদিত
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আল্লামা সাজিদুর নির্বাহী সভাপতি মাওলানা জুনায়েদ
‘আপনারা আমার খালেদকে ফেরত এনে দেন’ : নিখোঁজ সহ-সমন্বয়কের বাবা লুৎফর
২৮ ডিসেম্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে খেলাফত মজলিসের অধিবেশন প্রেস ব্রিফিংয়ে নেতৃবৃন্দ
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা
ইনসেপ্টার বিক্রয় প্রতিনিধির ২২টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ
পিকে হালদারের পাঁচ সহযোগীর ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের নির্দেশ
ভূমধ্যসাগরে ৮ বাংলাদেশি নিহত
মুক্তি পেলেন ভারতের সমুদ্রসীমায় গ্রেফতার ১২ বাংলাদেশি
আ.লীগকে পুনর্বাসনকারীদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়বে গণঅধিকার পরিষদ