ঢাকা   শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫ | ৩ মাঘ ১৪৩১

শূন্য কার্বন নির্গমনে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে জার্মানি

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

১০ আগস্ট ২০২৩, ০৮:১৭ পিএম | আপডেট: ১১ আগস্ট ২০২৩, ১২:০৪ এএম

২০৪৫ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন শূন্যে আনার লক্ষ্যে জার্মানি আগামী চার বছরের জন্য বিশাল অংকের বাড়তি ব্যয় করতে চলেছে। ইউরোপে বর্তমান পরিবেশ বিপর্যয়ের প্রেক্ষাপটে এই সিদ্ধান্ত বাড়তি গুরুত্ব পাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে ইউরোপ মহাদেশ। দক্ষিণে অস্বাভাবিক উষ্ণ তাপমাত্রা, ঝড়-বৃষ্টি-বন্যার ফলে ধ্বংসলীলা সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে ইউরোপের অনেক দেশ। এমন অবস্থায় জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করতে আরও জোরালো পদক্ষেপের জন্য চাপ বাড়ছে। শুধু পরিবহন ক্ষেত্রে নয়, সার্বিকভাবে কার্বন নির্গমন কমাতে উচ্চাকাক্সক্ষী লক্ষ্যমাত্রা স্থির করছে ইউরোপের অনেক দেশ। জার্মানির মন্ত্রিসভা পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি তরান্বিত করতে আগামী বছরের জন্য প্রায় ৫ হাজার ৭৮০ কোটি ইউরো বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ২০২৩ সালের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় সেই অংক প্রায় ৬০ শতাংশ বেশি। ২০৪৫ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমন শূন্যে আনার লক্ষ্যে জার্মানি ভর্তুকিও বাড়াচ্ছে জার্মান সরকার। আগামী বছর ‘ক্লাইমেট অ্যান্ড ট্রান্সফর্মেশন’- তহবিলের সিংহভাগ নির্মাণ ক্ষেত্রে পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে ব্যয় করা হবে। জার্মানির অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্র অনুযায়ী, ২০২৪ সালে পুরোনো ভবনের সংস্কার ও নতুন পরিবেশবান্ধব ভবন তৈরির লক্ষ্যে ১৮৯ কোটি ইউরো ধার্য করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানির ক্ষেত্রে ভর্তুকি এবং ব্যাটারিচালিত যান চার্জ করার অবকাঠামোর উন্নতির জন্যও সরকার বড় অংকের অর্থ ব্যয় করবে। জার্মানি শুধু আগামী বছরেই পরিবেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে বড় বিনিয়োগ করছে না। ২০২৪ সাল থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত মোট ২১ হাজার ২০০ কোটি ইউরো ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রাও স্থির করা হয়েছে। জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে পুরোনো ভবনের সংস্কারের প্রশ্নে জার্মানিতে মানুষের মনে অনিশ্চয়তা রয়েছে। বিদ্যুৎ ও ঘর গরম রাখার ব্যয় কমাতে যে ধরনের বিনিয়োগ প্রয়োজন, তার দায় মালিক বা ভাড়াটেদের ঘাড়ে চাপানোর বিষয়ে অসন্তোষ রয়েছে। নির্মাণের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ক্লারা গাইভিৎস বলেন, সংস্কারের চাপ যাতে সামাজিক অসন্তোষ সৃষ্টি না করে, সেই লক্ষ্যে সরকারি ভর্তুকি জরুরি। এছাড়া ঘর গরম রাখার হিটিং ব্যবস্থা যেখানে পৌর পর্যায়ে স্থির করা সম্ভব, সেই পদক্ষেপের জন্যও সরকার আর্থিক সহায়তা দিতে চায়। একমাত্র সার্বিক উদ্যোগের মাধ্যমেই জার্মানিতে নির্গমন কমানোর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করা যাবে বলে সরকার মনে করছে। ব্যাটারিচালিত যানের প্রসার বাড়াতে অবকাঠামোর উন্নতির পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব হাইড্রোজেন জ্বালানির উন্নয়নের জন্যও জার্মান সরকার উদ্যোগ নিচ্ছে। সংকটের সময়ে বিদেশের ওপর নির্ভরতা কমাতে চিপ উৎপাদনের ক্ষেত্রে আরও আকর্ষণীয় প্রণোদনা দিতে চায় চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সরকার। উল্লেখ্য, বিশ্বের সবচেয়ে বড় চিপ উৎপাদনকারী কোম্পানি তাইওয়ানের টিএসএমসি জার্মানির ড্রেসডেন শহরে কমপক্ষে ১ হাজার কোটি ইউরো মূল্যের কারখানা গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছে। জার্মানির রেল ব্যবস্থা ও অবকাঠামোর উন্নতির জন্যও পরিবেশ তহবিল থেকে বিশাল অংক বিনিয়োগ করা হচ্ছে। বিভিন্ন পথে সরকারের সরাসরি অনুদানের পাশাপাশি রেল কোম্পানিও পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি ও অবকাঠামোর উন্নতির লক্ষ্যে বিপুল বিনিয়োগ করবে। ডিডব্লিউ, রয়টার্স।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

বগুড়ায় গ্রামে সর্বহারা পার্টির পোষ্টারে গ্রাম ভিত্তিক জনযুদ্ধের ডাক, আতংক উদ্বেগ

বগুড়ায় গ্রামে সর্বহারা পার্টির পোষ্টারে গ্রাম ভিত্তিক জনযুদ্ধের ডাক, আতংক উদ্বেগ

হুতি আক্রমণের বার্ষিকীতে সংহতির আহ্বান আমিরাত নেতাদের

হুতি আক্রমণের বার্ষিকীতে সংহতির আহ্বান আমিরাত নেতাদের

৯ বছর পর দেশে ফিরে স্ত্রীকে পেলেন ঝুলন্ত অবস্থায়

৯ বছর পর দেশে ফিরে স্ত্রীকে পেলেন ঝুলন্ত অবস্থায়

চীনে জন্মহার হ্রাস, অর্থনীতিতে বিপর্যয়ের শঙ্কা

চীনে জন্মহার হ্রাস, অর্থনীতিতে বিপর্যয়ের শঙ্কা

বিএনপিকে ধুয়ে দিলেন সাংবাদিক মাসুদ কামাল

বিএনপিকে ধুয়ে দিলেন সাংবাদিক মাসুদ কামাল

যুক্তরাজ্য-ইউক্রেন ১০০ বছরের ‘যুগান্তকারী’ চুক্তি

যুক্তরাজ্য-ইউক্রেন ১০০ বছরের ‘যুগান্তকারী’ চুক্তি

লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানল নিয়ন্ত্রণে আসছে, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে বাংলাদেশিরাও

লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানল নিয়ন্ত্রণে আসছে, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে বাংলাদেশিরাও

কেন চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি ফারিয়া?

কেন চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি ফারিয়া?

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়ির ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী ৩ বন্ধুর মৃত্যু

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়ির ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী ৩ বন্ধুর মৃত্যু

তাপমাত্রা কমে বাড়বে শীত

তাপমাত্রা কমে বাড়বে শীত

এলএন-এর বিরুদ্ধে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ, কলম্বিয়ায় শান্তি আলোচনা বাধাগ্রস্ত

এলএন-এর বিরুদ্ধে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ, কলম্বিয়ায় শান্তি আলোচনা বাধাগ্রস্ত

ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি হলেন ইউসুফ হোসেন

ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি হলেন ইউসুফ হোসেন

ভাঙ্গায় এক্সপ্রেসওয়েতে পড়েছিল মোটরসাইকেল আরোহীর চূর্ণ-বিচূর্ণ লাশ

ভাঙ্গায় এক্সপ্রেসওয়েতে পড়েছিল মোটরসাইকেল আরোহীর চূর্ণ-বিচূর্ণ লাশ

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদরাই আজকের বাংলাদেশ- কক্সবাজারে শিল্প উপদেষ্টা

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদরাই আজকের বাংলাদেশ- কক্সবাজারে শিল্প উপদেষ্টা

অতিরিক্ত সময়ে এন্দ্রিকের জোড়া গোলে জিতে শেষ আটে রিয়াল

অতিরিক্ত সময়ে এন্দ্রিকের জোড়া গোলে জিতে শেষ আটে রিয়াল

গ্রিক সাইপ্রিয়ট প্রশাসনকে অস্ত্র বিক্রয়ের মার্কিন সিদ্ধান্তে টিআরএনসি-এর ক্ষোভ ও উদ্বেগ

গ্রিক সাইপ্রিয়ট প্রশাসনকে অস্ত্র বিক্রয়ের মার্কিন সিদ্ধান্তে টিআরএনসি-এর ক্ষোভ ও উদ্বেগ

নরসিংদীতে বাস-ট্রাকের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, আহত ৮

নরসিংদীতে বাস-ট্রাকের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, আহত ৮

পাবনায় জনজীবনে ভয়াবহ হচ্ছে ভার্চুয়াল আসক্তি

পাবনায় জনজীবনে ভয়াবহ হচ্ছে ভার্চুয়াল আসক্তি

মাঝ আকাশে ভেঙে টুকরো ইলন মাস্কের ‘স্টারশিপ’

মাঝ আকাশে ভেঙে টুকরো ইলন মাস্কের ‘স্টারশিপ’

বাংলাদেশ-ভারতকে অতীত কবর দিয়ে নতুন করে শুরু করতে হবে: সুনন্দা কে দত্ত রায়

বাংলাদেশ-ভারতকে অতীত কবর দিয়ে নতুন করে শুরু করতে হবে: সুনন্দা কে দত্ত রায়