ঋণের বোঝায় আফ্রিকা, ডলারের উত্থানে বাড়তে পারে সংকট
২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০২ এএম
আমদানিতে শুল্ক বাড়ানো ও নতুন নীতির অঙ্গীকার করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফলে বিশ্বের অন্যান্য প্রধান মুদ্রার বিপরীতে ডলারের মূল্য বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে, যা ট্রাম্প নির্বাচিত হওয়ার পর বেড়ে এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ হয়েছে। বলা হচ্ছে, ডলারের মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব বিশ্বজুড়েই পড়বে। এতে আমদানি খরচ বাড়ার পাশাপাশি মূল্যস্ফীতি বাড়বে। নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে বাড়তে পারে ঋণের বোঝা। বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ডলারের মূল্য বৃদ্ধির প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়তে পারে আফ্রিকায়। যেখানের নয়টি দেশ এরই মধ্যে ঋণ নিয়ে সংকটে আছে। তাছাড়া আরও ১০টি দেশ ঋণখেলাপির উচ্চ ঝুঁকিতে আছে। লন্ডনভিত্তিক ক্যাপিটাল ইকোনমিক্সের আফ্রিকাকেন্দ্রিক উদীয়মান বাজার অর্থনীতিবিদ ডেভিড ওমোজোমোলো এই সপ্তাহে একটি গবেষণা প্রতিবেদনে সতর্ক করেছেন যে আমদানি পণ্যের ওপর ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্কের হুমকি একটি স্পষ্ট উদ্বেগ। কারণ ক্রমবর্ধমান ডলার কিছু আফ্রিকান দেশের জন্য বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে অ্যাক্সেসকে আরও কঠিন করে তুলবে। কেনিয়া, জাম্বিয়া, ঘানা ও ইথিওপিয়াসহ বেশ কয়েকটি আফ্রিকান সরকারকে বর্তমানে তাদের উচ্চ ঋণের কারণে বৈশ্বিক আর্থিক বাজার থেকে মূলধন সংগ্রহ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ওমোজোমোলো সতর্ক করে বলেন, আন্তর্জাতিক পুঁজিবাজার থেকে ঋণ নেওয়া আরও কঠিন হয়ে পড়লে এই অঞ্চলের অনেকেই সার্বভৌম খেলাপি এড়াতে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ও বিশ্বব্যাংকের মতো অর্থায়নের ওপর নির্ভরশীল থাকবে। ইথিওপিয়া, রিপাবলিক অব কঙ্গো, মোজাম্বিক, সোমালিয়া, সুদান, দক্ষিণ সুদান, জিম্বাবুয়ে ও চাদকে গত বছর বিশ্বব্যাংক ঋণ সংকটে শ্রেণীবদ্ধ করেছে। আফ্রিকা, তেল, স্বর্ণ ও তামার মতো গুরুত্বপূর্ণ পণ্যগুলোর একটি প্রধান উৎপাদক। যা মূলত ডলারে বিক্রি হয়। যদি ডলারের মূল্য বাড়তেই থাকে তাহলে তাদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তবে মূল্য বৃদ্ধির কারণে প্রাথমিকভাবে দেশগুলো লাভবান হতে পারে। কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। কারণ ডলারের দাম বাড়লে বিশ্বে এর চাহিদা কমে যেতে পারে। রপ্তানি কমলে তেল উৎপাদনকারী নাইজেরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার স্বর্ণ ও প্লাটিনাম বাণিজ্য এবং জাম্বিয়ার প্রধান তামার খনিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। এই দেশগুলো বিদেশি আয়ের ক্ষেত্রে পণ্য রপ্তানির ওপর খুব বেশি নির্ভর করে, যা জাতীয় বাজেটে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাছাড়া ক্রমবর্ধমান ডলারের কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে ব্যাপকভাবে। আফ্রিকার অনেক দেশে মূল্যস্ফীতি প্রায়ই ২০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। দক্ষিণ সুদান জুলাই মাসে ১০৭ শতাংশ মূল্যস্ফীতির কথা জানায়। জিম্বাবুয়েতে এক বছরে মূল্য বেড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি। আফ্রিকার সবচেয়ে বড় অর্থনীতি দেশ নাইজেরিয়ায় সেপ্টেম্বরে বার্ষিকভিত্তিতে গড়ে ৩২ দশমিক ৭ শতাংশ মূল্যস্ফীতির সাক্ষী হয়েছে। দেশটির ঋণের বোঝা ১০০ বিলিয়ন ডলার ছাড়েয়ে গেছে। রয়টার্স।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও