ঢাকা   শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫ | ৩ মাঘ ১৪৩১

কে হচ্ছেন মিয়ানমারের আগামীর নীতিনির্ধারক

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক :

১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৮ এএম

মিয়ানমারে ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের মাধ্যমে শুরু হওয়া বিপ্লব চার বছরে পূর্ণাঙ্গ সশস্ত্র সংগ্রামে রূপ নিয়েছে। তখন থেকে মিয়ানমারের সংঘাতের দৃশ্যপট নাটকীয়ভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। অভ্যুত্থানকারীদের স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল (এসএসি) বিভিন্ন জাতিগত গোষ্ঠী এবং প্রতিরোধ বাহিনীর কাছে অঞ্চল হারাচ্ছে। মিয়ানমারের বেসামরিক জাতীয় ঐক্য সরকার (এনইউজি) সম্প্রতি একটি সামরিক প্রতিবেদনে দাবি করেছে যে তাদের পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফস) এবং সহযোগী জাতিগত বিপ্লবী সংগঠনগুলো (ইআরও) ২০২৪ সালের শেষ নাগাদ দেশের অর্ধেকেরও বেশি অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ অর্জন করেছে। এনইউজি বলে, দেশের ৪৪ শতাংশ শহরতলির ওপর ওই গোষ্ঠীগুলোর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ রয়েছে, যার ২৪ শতাংশ অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এবং প্রতিরোধ বাহিনীর দ্বারা প্রভাবিত। এর অর্থ হলো, দেশের এক-তৃতীয়াংশেরও কম এসএসির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সত্যি কথা বলতে, এনইউজির বর্ণিত বেশিরভাগ অঞ্চলই ইআরওদের হাতে। যদিও ইআরও উল্লেখযোগ্যভাবে স্থান পেয়েছে, তবুও অনেকেই তাদের জাতিগত কারণগুলোর উপর মনোযোগ দিচ্ছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এক ধরনের স্বায়ত্তশাসন অর্জন করা। তবে কিছু বড় প্রশ্ন রয়েই যায়। নবগঠিত প্রতিরোধ গোষ্ঠীগুলোর ওপর তাদের ক্রমবর্ধমান প্রভাব এবং মিয়ানমারের বিশাল অংশ থেকে তারা যে সম্মান অর্জন করেছে, তাতে কি তারা কেন্দ্রীয় সরকার পরিবর্তনে ভূমিকা রাখবে? তারা কি ঐতিহ্যগতভাবে সংকীর্ণ জাতিকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে যেতে পারবে? জাতিগত সশস্ত্র খেলোয়াড়রা কি নির্ধারক ভূমিকা পালন করতে চায়? ভবিষ্যতের গণতান্ত্রিক মিয়ানমারের ক্ষমতার নেপথ্যের কারিগর হওয়ার সাহস কার আছে? মিয়ানমারের অভ্যুত্থানের পর থেকে সংখ্যাগরিষ্ঠ বামার (বার্মিজ) এবং জাতিগত সংখ্যালঘুদের মধ্যে সম্পর্ক বিকশিত হয়েছে। বামাররা সংখ্যালঘুদের অভিযোগগুলো বুঝতে শুরু করেছে। তাদের মধ্যে কিছুটা আস্থা তৈরি হয়েছে, যদিও এটি এখনো ভঙ্গুর। ‘ডু কাবা’ ও ‘ডু চোনের’ মতো জাতিগত সংখ্যালঘু শব্দগুলো এখন বামার অঞ্চলে সাধারণ, যা কাচিন-নেতৃত্বাধীন বাহিনী কেন্দ্রীয় অঞ্চলে পিডিএফস নিয়ন্ত্রণ করার সময় সহযোগিতার প্রতিফলন ঘটায়। তবে অনেক জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠী এখনো বামারকে ভরসা করে না। তারা তাদের নিজস্ব কারণগুলোকে অগ্রাধিকার দেয় এবং আশা করে যে বামার তাদের অঞ্চলের জন্য স্বাধীনভাবে যুদ্ধ করবে। সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়া সত্ত্বেও বামারের সশস্ত্র শক্তি ও নেতৃত্বের অভাব রয়েছে। ফলে তারা সাহায্যের জন্য ইআরওর ওপর নির্ভর করে। সম্ভাব্য পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে অভ্যন্তরীণ বামার দ্বন্দ্ব অব্যাহত রাখা, কেন্দ্রীয় ক্ষমতার উপর ইআরওয়ের আধিপত্য অথবা জাতিগত গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ভাগাভাগি করে শাসনব্যবস্থার মাধ্যমে একটি সহযোগিতামূলক ভবিষ্যৎ। মিয়ানমার উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। জাতিগত গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে ঐক্যবদ্ধ নেতৃত্বের অভাব, অমীমাংসিত রাজনৈতিক সমস্যা এবং প্রতিবেশী দেশগুলোর চাপ পরিস্থিতিকে আরো প্রভাবিত করছে। এই বাধা সত্ত্বেও, শক্তিশালী জাতিগত বিপ্লবী সংগঠনের নেতারা জান্তাকে উৎখাত করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তবে তাদের কেউ মিয়ানমারের রাজা হতে এগিয়ে আসবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে, ২০২৫ সাল শেষের আগেই এর উত্তর বেরিয়ে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। দ্য ইরাবতী।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার শীর্ষ পদে এখনো ভারতীয়রা
অবৈধ খনিতে ৭৮ লাশ, সমালোচনার মুখে দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার
চীনকে রুখতে জ্যামার বসাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
অগ্ন্যুৎপাত, ৩ হাজার বাসিন্দাকে সরিয়ে নিলো ইন্দোনেশিয়া
মুসলিমদের গণহত্যায় উস্কানি দেয়া হয়েছিল তা বিশ্ব প্রত্যক্ষ করেছে
আরও

আরও পড়ুন

জুলাই বিপ্লবে আহত ১৪ জনকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হচ্ছে : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

জুলাই বিপ্লবে আহত ১৪ জনকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠানো হচ্ছে : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার শীর্ষ পদে এখনো ভারতীয়রা

আইএমএফসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার শীর্ষ পদে এখনো ভারতীয়রা

ভারতে নির্যাতনের ভিডিও বাংলাদেশের সা¤প্রতিক ঘটনা হিসেবে প্রচার

ভারতে নির্যাতনের ভিডিও বাংলাদেশের সা¤প্রতিক ঘটনা হিসেবে প্রচার

দাদাবাড়ি বেড়াতে এসে খুন হলো শিশু সাফওয়ান, আটক ২

দাদাবাড়ি বেড়াতে এসে খুন হলো শিশু সাফওয়ান, আটক ২

নরসিংদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে লক্ষ্য করে বালুদস্যুদের গুলিবর্ষণ

নরসিংদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে লক্ষ্য করে বালুদস্যুদের গুলিবর্ষণ

নরসিংদীতে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মানববন্ধন

নরসিংদীতে রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির মানববন্ধন

রাঙামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

রাঙামাটিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

আখাউড়ায় মর্টার সেল উদ্ধার

আখাউড়ায় মর্টার সেল উদ্ধার

রাজবাড়ীতে আ.লীগ দুই নেতা কারাগারে

রাজবাড়ীতে আ.লীগ দুই নেতা কারাগারে

কমলগঞ্জে ৮২ শতক সরকারি খাস জমি উদ্ধার

কমলগঞ্জে ৮২ শতক সরকারি খাস জমি উদ্ধার

প্রিমিয়ার ভার্সিটি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হলেন চসিক মেয়র

প্রিমিয়ার ভার্সিটি ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হলেন চসিক মেয়র

কুষ্টিয়ায় প্লাইউড বোর্ড কারখানায় আগুন

কুষ্টিয়ায় প্লাইউড বোর্ড কারখানায় আগুন

বিএনপি নেতা কায়কোবাদের দারুল উলূম হাটহাজারীসহ বিভিন্ন মাদরাসা পরিদর্শন

বিএনপি নেতা কায়কোবাদের দারুল উলূম হাটহাজারীসহ বিভিন্ন মাদরাসা পরিদর্শন

মাদারীপুরে পদ্মা-আড়িয়াল খাঁ নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত

মাদারীপুরে পদ্মা-আড়িয়াল খাঁ নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত

গফরগাঁও সাবেক এমপি বাবেল গোলন্দাজ দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের ২ মামলা

গফরগাঁও সাবেক এমপি বাবেল গোলন্দাজ দম্পতির বিরুদ্ধে দুদকের ২ মামলা

ময়মনসিংহে পুলিশ রেঞ্জ কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের উদ্বোধন

ময়মনসিংহে পুলিশ রেঞ্জ কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের উদ্বোধন

নওফেল পরিবারের ২৫টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ

নওফেল পরিবারের ২৫টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ

নিজ বাড়িতে ক্ষতিগ্রস্ত বন্ধুদের থাকার ব্যবস্থা করেছেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি

নিজ বাড়িতে ক্ষতিগ্রস্ত বন্ধুদের থাকার ব্যবস্থা করেছেন অ্যাঞ্জেলিনা জোলি

যুবদল নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের অভিযোগ

যুবদল নেতার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের অভিযোগ

ট্রাভেল ব্যান্ড হ্যালির ধুমকেতুর দুই গান

ট্রাভেল ব্যান্ড হ্যালির ধুমকেতুর দুই গান