বাঘ বাঁচাতে যেয়ে ভারতকে যে মূল্য দিতে হয়েছে
১৯ মে ২০২৩, ০৫:৫৫ পিএম | আপডেট: ১৯ মে ২০২৩, ০৫:৫৫ পিএম
১৯৭৩ সালে জিম করবেট ন্যাশনাল পার্কের ধিকালা রেঞ্জে ‘প্রোজেক্ট টাইগারে’র সূচনা করেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী। যে ‘রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার’ একদিন ভারতের বনভূমি দাপিয়ে বেড়াত, সেই রাজসিক প্রাণীটিকে অবলুপ্তির হাত থেকে বাঁচাতেই নেয়া হয়েছিল সেই মরিয়া পদক্ষেপ।
গান্ধী তার নোটে সে দিন লিখেছিলেন, ‘প্রোজেক্ট টাইগার কথাটার মধ্যেই রয়েছে বিপুল পরিহাস। হাজার হাজার বছর ধরে যে দেশটি ছিল এই অসাধারণ প্রাণীটির শ্রেষ্ঠ বিচরণভূমি, আজ তারাই বিলুপ্তির হাত থেকে সেই বাঘকে রক্ষা করতে হিমশিম খাচ্ছে!’ আসলে বিংশ শতাব্দীর সূচনায় গোটা ভারতে কম করে হলেও চল্লিশ হাজারের মতো বাঘ (রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার) ছিল বলে ধারণা করা হয়। রাজারাজড়াদের নির্বিচার শিকার, চোরাকারবার ইত্যাদি নানা কারণে সত্তরের দশকের গোড়ায় সেটা মাত্র কয়েকশোতে নেমে আসে।
সেই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে মরিশাস থেকে যেভাবে একদিন ডোডো পাখি হারিয়ে গেছে, ঠিক তেমনি ভারত থেকেও বাঘের চিরতরে হারিয়ে যাওয়াও নেহাত সময়ের অপেক্ষা – এটা ইন্দিরা গান্ধী অনুধাবন করেছিলেন। সে কারণেই গোটা দেশে মোট ন’টি টাইগার রিজার্ভকে চিহ্নিত করে, অনেকগুলো কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে সূত্রপাত হয়েছিল বাঘ সংরক্ষণ অভিযানের। একাত্তরে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ঠিক পর পর ভারত ও আমেরিকার সম্পর্ক তখন তলানিতে, কিন্তু এই অভিযানে ইউরোপ ভারতের দিকে সর্বতোভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল। তখন গোটা ভারতে ১৮০০টির মতো রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার ছিল, আজ প্রোজেক্ট টাইগারের পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে সেটাই ৩১৬৭-তে গিয়ে ঠেকেছে।
এ প্রকল্প পঞ্চাশ বছরে দেশে বাঘের সংখ্যা অনেক বাড়াতে পেরেছে ঠিকই, কিন্তু অনেক বিশেষজ্ঞর মতে এর জন্য দামও দিতে হয়েছে প্রচুর। বহু জায়গায় বাঘের আবাসভূমি নিশ্চিত করতে গিয়ে স্থানীয় বনবাসীদের উচ্ছেদ হতে হয়েছে। সরকারি প্রকল্পের সাফল্য দেখাতে গিয়ে বাঘের সংখ্যা বাড়িয়ে বলা হচ্ছে কি না, সে সন্দেহও আছে অনেকের। বাঘ আর মানুষের সংঘাতও কিন্তু এড়ানো যায়নি, লোকালয়ে এসে রয়্যাল বেঙ্গল টাইগার হানা দিচ্ছে এমন ঘটনাও অহরহ ঘটছে।
ভারতে অনেক বিশেষজ্ঞই আসলে মনে করেন প্রোজেক্ট টাইগার জঙ্গলের মানুষকে একদিকে যেমন প্রান্তবাসী ও বিপন্ন করেছে, পাশাপাশি অরণ্য বা বন্যপ্রাণীকেও কিন্তু ঠিকমতো সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এটা ঠিকই যে গত দেড় দশক ধরে প্রতি বছরই ভারতে বাঘের সংখ্যা একটু একটু করে বাড়ছে – তবে তার সঙ্গেই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মানুষের ভয়। মরচুলা গ্রামের ত্রিলোক সিং যেমন বলছিলেন, ‘আজকাল এ যে এত গাড়ি, আলো, ক্যামেরা আর ট্যুরিস্ট ... বাঘদের যেন ভয়ডর সব চলে গেছে। গাড়ির সামনে পড়ে গেলেও তারা কেউ সরে না! আগে ওরা মানুষকে ভয় পেত, কিন্তু এখন আর পায় না!’ ফলে প্রোজেক্ট টাইগার প্রজন্মের এই সব বাঘ ক্রমশ যেন বেপরোয়া হচ্ছে, আর বনবাসীরা দিন কে দিন আতঙ্কে সিঁটিয়ে যাচ্ছেন। সূত্র: বিবিসি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
পতিত আওয়ামী স্বৈরাচারের গত ১৭ বছরের নির্যাতন ভুলে যাবার সুযোগ নেই: আমিনুল হক
পাবনা ব্যাপ্টিস্ট চার্চে প্রাক বড়দিন উৎসব অনুষ্ঠিত
পূর্বধলায় শীতার্ত মানুষের মাঝে ইসলামী যুব আন্দোলনের কম্বল বিতরণ
ধর্ম-বর্ণ নয়, সমান মর্যাদায় হোক নাগরিক পরিচয়: জোনায়েদ সাকি
এসবিএসি ব্যাংকের শরিয়াহ্ সুপারভাইজরি কমিটির সভা অনুষ্ঠিত
আ.লীগের হাতেও নির্যাতিত হয়েছিলেন সেই মুক্তিযোদ্ধা, কিন্তু তুলে ধরেনি গণমাধ্যম!
ভারত বাংলাদেশ থেকে বস্তা বস্তা টাকা লুট করেছে : দুদু
আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকে সিটিজেন’স চার্টার অবহিতকরণ সভা অনুষ্ঠিত
মতিঝিলে বিশ্বমানের ডায়াগনস্টিক সেবা প্রদান শুরু আইসিডিডিআর,বি’র
স্বামীর অগোচরে স্ত্রী অন্য কারও সাথে কথা বলা প্রসঙ্গে?
চাঁদপুর মেঘনায় মালবাহী জাহাজে ৭ জনকে কুপিয়ে হত্যা, গুরুতর আহত ১
পতিত স্বৈরাচার হাসিনাকে ফেরাতে ভারতকে চিঠি
যাকাত বোর্ডের ১১ কোটি টাকা বিতরণের প্রস্তাব অনুমোদিত
১৬ বছরে নির্বাচন ব্যবস্থা নির্বাসনে চলে গিয়েছিল : সংস্কার কমিশন প্রধান
জিনিসের দাম একবার বাড়লে কমানো কঠিন: পরিকল্পনা উপদেষ্টা
স্বৈরাচারের দোসর শাহরিয়ার আলমের স্ত্রী-সন্তানসহ দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
মুজিবল্যান্ড বানিয়ে হিন্দুস্তানে থাকুক আ.লীগ : রাশেদ প্রধান
মুক্তিযোদ্ধার গলায় জুতার মালা পড়িয়ে সম্মানহানী
আওয়ামী দুঃশাসনের বিচার না হলে জুলাই আগষ্টের শহীদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে: ডা. জাহিদ হোসেন
বাঘায় মেয়াদ উত্তীর্ণ ৪ ইউপিতে প্রশাসক নিয়োগ