বিদ্রোহের পর ওয়াগনার গ্রুপের এখন কী হবে?
২৬ জুন ২০২৩, ০২:৩১ পিএম | আপডেট: ২৬ জুন ২০২৩, ০২:৩১ পিএম
ওয়াগনার গ্রুপের ভাড়াটে সৈন্যদের বিদ্রোহের পর মস্কোতে জারি করা জরুরী নিরাপত্তা ব্যবস্থা এখনও বহাল রয়েছে। ওই ঘটনায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের অবস্থান নড়বড়ে হয়ে পড়েছিল বলে মনে করেন অনেক বিশ্লেষক। যদিও দ্রুতই পরিস্থিতি সামাল দিতে চুক্তি করেছে ক্রেমলিন এবং ওয়াগনার বাহিনী। কিন্তু অনেক প্রশ্ন এখনও অমীমাংসিত রয়ে গিয়েছে।
পুতিন এরপর কী করবেন: ওয়াগনার বিদ্রোহের ২৪ ঘণ্টায় ভ্লাদিমির পুতিনকে যে বিশাল চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে এমনটা তার ক্ষমতা গ্রহণের দুই দশকের মধ্যে কখনো হয়নি। উত্তেজনা প্রশমন হলেও ঝুঁকি এখনো কিছু রয়েছে বলে মনে করেন অনেক বিশ্লেষক। রাশিয়ার বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, পুতিনকে খুব শক্তিশালী ভূমিকায় দেখা যাচ্ছে না। বরং তাকে বিধ্বস্ত মনে হচ্ছে। শনিবার সকালে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেয়া ভাষণে পুতিন যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে ওয়াগনারের বিরুদ্ধে তার ঘৃণা এবং বিশ্বাসঘাতকতার অভিযোগ প্রতিফলিত হয়েছে।
ওই ভাষণে তিনি ওয়াগনার নেতা ইয়েভগেনি প্রিগোশিনের বিরুদ্ধে ‘পিছন থেকে ছুরি মারা’ এবং রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ আনেন। এরপর থেকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি এবং সামনে তিনি নতুন কোন ভাষণ দেবেন কিনা সেটাও পরিকল্পনা করা হয়নি। রোববার রাষ্ট্রীয় টিভিতে আগে থেকে রেকর্ড করা সাক্ষাৎকারে - যা বিদ্রোহের আগে রেকর্ড করা হয়েছিল - সেখানে পুতিন বলেছিলেন যে, তিনি ইউক্রেন যুদ্ধের অগ্রগতির বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী।
মস্কোতে এখনও সন্ত্রাসবিরোধী নিরাপত্তা ব্যবস্থা বহাল রয়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট পুতিন এই মুহূর্তে রাশিয়ার রাজধানীতে আছেন কিনা তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না। কেউ কেউ ধারণা করছেন পুতিন কোন না কোনভাবে আক্রমণ করবেন - ইউক্রেনে সেনা হামলা অথবা রাশিয়ার অভ্যন্তরে বিরোধীদের ওপরও হতে পারে সে হামলা। পোলিশ এমইপি রাদেক সিকোরস্কি মনে করেন, এই ঘটনার পর পুতিনের শাসন ‘একই সাথে আরও কর্তৃত্ববাদী এবং আরও নৃশংস’ হয়ে উঠতে পারে।
বেলারুশে প্রিগোশিন কী করতে যাচ্ছেন?
বিদ্রোহের পেছনের প্রধান ব্যক্তি, ইয়েভগেনি প্রিগোশিন, একজন স্বাধীন মানুষ। তিনি রাশিয়ার সামরিক নেতৃত্বকে উৎখাতের চেষ্টা করলেও তার বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহের অভিযোগ তুলে নেয়া হয়েছে। তবে ক্রেমলিন এবং ওয়াগনারের মধ্যে যে চুক্তি হয়েছিল তার পুরো বিবরণ জানা যায়নি। প্রিগোশিন রাতের আধারে মিলিয়ে যাবেন, রুশ বিশ্লেষকরা তা আশা করেন না। এই ভাড়াটে গ্রুপের নেতা দীর্ঘদিন পর্দার আড়ালে কাজ করছেন। অথচ তিনি ইউক্রেনের হাজার হাজার যোদ্ধা জন্য এমনকি প্রেসিডেন্ট পুতিনের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব।
তিনি ক্রেমলিনের জন্য বছরের পর বছর বিতর্কিত কাজ করেছেন। বিশেষ করে সিরিয়ায় যুদ্ধ থেকে শুরু করে ২০১৪ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ পর্যন্ত, যখন ক্রাইমিয়া রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত হয়। কিন্তু পুতিনের কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করার পরে - এবং কারো কারো মতে রুশ প্রেসিডেন্টকে অপমান করার পরে প্রশ্ন উঠেছে -প্রিগোশিনের নিরাপত্তার কী গ্যারান্টি দেয়া হয়েছে? সামনে তার ভূমিকা কী হবে সেই উত্তর জানা এখনও বাকি রয়েছে। পর্যবেক্ষকরা প্রশ্ন করছেন যে, বেলারুশিয়ান নেতা আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো প্রিগোশিনের উপর কতটা নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হবেন - যদি তিনি সত্যিই মিনস্কে যান? এবং, ওয়াগনার বাহিনী তাকে অনুসরণ করলে, তারা রাশিয়া, বেলারুশ এবং ইউক্রেনের জন্য কী হুমকি সৃষ্টি করবে?
ওয়াগনার গ্রুপের এখন কী হবে?
এই সশস্ত্র বিদ্রোহের আগে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে পুতিনের যুদ্ধে কয়েক হাজার ওয়াগনার ভাড়াটে সৈন্য অংশ নিয়েছিল। কিন্তু স্বাধীন সেনাবাহিনী হিসেবে ওয়াগনারের দিন শেষ হয়ে আসছে। কিন্তু স্বল্পস্থায়ী বিদ্রোহ শেষ হওয়ার সাথে সাথে - এবং প্রিগোশিন এখন দৃশ্যত নির্বাসনে যাচ্ছেন – এই অবস্থায় অনেকেরই প্রশ্ন যে এখন তার যোদ্ধারা কী করবে। বিদ্রোহের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে মনে হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ার ভিডিওতে দেখা গেছে ওয়াগনার সৈন্যরা রোস্তভ-অন-ডন শহর ছেড়ে চলে যাচ্ছেন, যেখানে তারা সামরিক ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল।
রোস্তভ এবং মস্কোর মাঝামাঝি থাকা ভোরোনজের গভর্নর বলেছেন, ওয়াগনার বাহিনী তার অঞ্চলও ছেড়ে যাচ্ছে। এটা স্পষ্ট নয় যে, তারা এখন কেবল সহযোগিতা করবে নাকি রাশিয়ার নিয়মিত সামরিক বাহিনীতে একীভূত হবে - বা রাশিয়ার নিয়মিত সৈন্যরা এখন স্বেচ্ছায় তাদের সাথে কাজ করবে কিনা, তা পরিষ্কার নয়। তারা কি কেবল ইউক্রেনের বিদ্যমান বিরোধপূর্ণ অঞ্চলে যুদ্ধে করতে যাবে, যেমনটা রুশ রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম বলছে? কিছু বিশ্লেষক উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যে, যোদ্ধারা প্রিগোশিনকে পশ্চিমে অনুসরণ করতে পারে যদি তিনি বেলারুশে যান। সূত্র: বিবিসি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
'এয়ার কানাডা'র ফ্লাইটে আগুন, হ্যালিফ্যাক্স বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ
ঢাবিতে আজ মেধাবীদের মুখোমুখি হচ্ছে শিবির, সকল প্রশ্নের জবাব দিবে নেতারা
অবশেষে টাঙ্গাইলের সেই আলোচিত ব্রীজটির উদ্বোধন হলো আজ
অস্ট্রেলিয়ার শেষ উইকেট জুটিতে বিপদে ভারত
দেশীয় অস্ত্রসহ খুলনার শীর্ষ সন্ত্রাসী আটক
'দি ওডিসি' সিনেমায় বিশ্বব্যাপী আলোড়ন সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন নোলান
রোমানিয়ার নির্বাচনে অস্বচ্ছতা নিয়ে প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর ক্ষোভ
বাউফলে হামলা-পাল্টা হামলা, বিএনপির এক পক্ষের মানববন্ধন ও আরেক পক্ষের সংবাদ সম্মেলন
১৫ দিনের মধ্যে সাংবাদিকদের জন্য ডিজিটাল কার্ড ইস্যু হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে ২১ সাংবাদিক
চাকরিচ্যুত সাবেক সেনাদের সড়ক অবরোধ, ২ ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক
আশুলিয়ায় ভবন মালিকের স্বেচ্ছাচারিতায় অর্ধশত শিক্ষার্থীর লেখাপড়া বন্ধ
হাটহাজারী সাংবাদিক ঐক্য পরিষদের প্রতিবাদ সভা
৫ আগস্টের পর বেশ কয়েকটি ইসলামী ব্যাংক দখল করেছে একটি ইসলামী দল
মেহেরপুরে তসলিমা হত্যা মামলায় ২ জন আটক
ঈশ্বরদীতে ৫ বছরের শিশু কন্যাকে যৌন হয়রানির অভিযোগে সৎ বাবা গ্রেফতার
নাসার নতুন সাঁতারু রোবট , ইউরোপায় প্রাণের খোঁজে এক বিস্ময়কর যাত্রা
৩১ ডিসেম্বরের ঘোষণাপত্র লিখিত দলিল হিসেবে থাকবে : সারজিস
ইসলাম নিয়ে রাজনীতি করেন, ইসলাম মানে তো বারবার মোনাফেকি করা না : রিজভী
উখিয়ায় চুরির দায়ে পিটিয়ে এক যুবককে হত্যা, পরিবারের অভিযোগ পরিকল্পিত খুন