জিন প্রযুক্তিতে ডেঙ্গু প্রতিরোধে বিজ্ঞানীদের নতুন কৌশল আবিস্কার
০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৬ পিএম | আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৬ পিএম
বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি মশার মাধ্যমে ছড়ানো রোগ ডেঙ্গু, ইয়েলো ফিভার ও জিকা প্রতিরোধের একটি অভিনব পদ্ধতি খুঁজে পেয়েছেন। তাঁরা পুরুষ মশাকে বধির বানিয়ে দিয়েছেন, যাতে তারা স্ত্রী মশাদের সাথে মিলন করতে এবং প্রজনন করতে না পারে।
গবেষণাটি ২০২৩ সালে ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল বিজ্ঞানী পরিচালনা করেন। পুরুষ মশারা সাধারণত স্ত্রী মশাদের ডানার শব্দ শুনে তাদের দিকে আকৃষ্ট হয় এবং আকাশে উড়ে মিলে যেতে থাকে। এই বিশেষ পদ্ধতির মাধ্যমে পুরুষ মশাদের শুনতে না পাওয়ার জন্য কিছু নির্দিষ্ট জিনের পরিবর্তন ঘটানো হয়। এর ফলে পুরুষ মশারা তিনদিন এক খাঁচায় থাকার পরও স্ত্রী মশাদের সাথে কোনো মিলনে যেতে পারেনি।
ডেঙ্গু, ইয়েলো ফিভার ও জিকার মতো মারাত্মক রোগের বাহক এডিস ইজিপ্টাই মশা। এই রোগগুলো প্রতি বছর প্রায় ৪০০ মিলিয়ন মানুষকে আক্রান্ত করে। ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল মশার এই উড়ন্ত মিলনের প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করে এবং এটি বাধাগ্রস্ত করার জন্য প্রয়োজনীয় জিনগত পরিবর্তন আবিষ্কার করে। তাঁরা একটি (trpVa) প্রোটিনকে লক্ষ্য করেন, যা মশাদের শুনতে সাহায্য করে।এটি প্রক্রিয়ার জন্য অপরিহার্য বলে মনে করা হয়।
এই পরিবর্তনের ফলে, সংশোধিত পুরুষ মশাদের মস্তিষ্কের সেই নিউরনগুলো কোনো ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখায়নি, যা সাধারণত স্ত্রী মশার ডানার শব্দ শুনে সক্রিয় হয়। এর ফলে স্ত্রী মশাদের প্রলোভনমূলক শব্দ তাঁদের বধির কানে পৌঁছায়নি।
অন্যদিকে, সাধারণ (অ-মিউট্যান্ট) পুরুষ মশারা দ্রুত মিলনে যেতে সক্ষম হয় এবং খাঁচায় প্রায় সব স্ত্রী মশাকে নিষিক্ত করতে পারে। গবেষণাটি (PNAS) জার্নালে প্রকাশিত হয়, এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্তা বারবারা শাখার গবেষকরা জানান, বধির পুরুষ মশার ক্ষেত্রে এই জিন মিউটেশনের প্রভাব ছিল সম্পূর্ণ, কারণ মেটিং বা মিলন প্রক্রিয়া পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়।
এই বিষয়ে, মশার প্রজনন প্রক্রিয়া নিয়ে গবেষণা করেন এমন একজন জার্মানির ওল্ডেনবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ড. জর্গ আলবার্ট জানান, মশার শোনার ক্ষমতা কমানোর মাধ্যমে তাদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের এই প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে, তবে তা আরও গভীরভাবে গবেষণা ও ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন রয়েছে।
মশারা যদিও রোগ বহন করতে পারে, তবুও তারা খাদ্য শৃঙ্খলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, কারণ তারা মাছ, পাখি, বাদুড় ও ব্যাঙের জন্য খাদ্য এবং কিছু ক্ষেত্রে পরাগায়নে সহায়ক।
বিজ্ঞানীরা ধারনা করছেন যে,ডেঙ্গু এবং অন্যান্য মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে এটি একটি নতুন ও সম্ভাবনাময় পথ, যা ভবিষ্যতে আমাদের জন্য আরও সুরক্ষিত পরিবেশ তৈরিতে সহায়ক হতে পারে। তথ্যসূত্র : বিবিসি
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুরে সীসা কারখানায় যৌথ বাহিনীর অভিযান, জরিমানা ৬ লক্ষ টাকা
মুন্নি-তাপস রঙ্গলীলা; দুর্নীতি ও নারী সাপ্লাইয়ের ইতিকথা।
উত্তরপ্রদেশে মাদ্রাসা শিক্ষা বৈধ, হাই কোর্টের নির্দেশ খারিজ করে রায় সুপ্রিম কোর্টের
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ২০২৪ সম্পর্কে যে ৭টি তথ্য জানা প্রয়োজন
ভূমি রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম সমন্বিতকরণের তাগিদ
কমলা-ট্রাম্প,কার জয়ে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কী হবে?
বিশ্বের শীর্ষ ১৫ ধনীর তালিকা থেকে ছিটকে গেলেন আম্বানি-আদানি
ব্যক্তিগত সম্পত্তি অধিগ্রহণ করতে পারবে না সরকার, ঐতিহাসিক রায় ভারতে
১৩২ বছরের রেকর্ড ভাঙার সুযোগ ট্রাম্পের সামনে
গোদাগাড়ীসহ বরেন্দ্র অঞ্চলে শীতের আগাম সবজিতে চাষির মুখে হাসির ঝলক,
জাভা সমুদ্রে ইন্দোনেশিয়া ও রাশিয়ার যৌথ নৌ-মহড়া শুরু
কানাডায় মন্দিরে হামলা খালিস্তানপন্থিদের, গ্রেপ্তার তিন
সড়কের স্পিড ব্রেকারে ইন্ডিকেটর দিল জাবি ছাত্রদল
জুড়ীর ফুলতলা সীমান্তে মাদকদ্রব্যসহ বিজিবির হাতে যুবলীগ নেতা আটক
শাহজাদপুরে যানজটে জনদুর্ভোগ চরমে!
মনোহরগঞ্জে উত্তর হাওলা ইউনিয়ন বাসীর ভোগান্তির অবসান ঘটালো যুবদল
কুমিল্লা দেবিদ্বারে বাস-ট্রাক-কাভার্ডভ্যানের ত্রিমুখী সংঘর্ষে শিশুসহ আহত ২০
আইওয়ার দিকে সবার নজর কেন ?
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি গঠিত অ্যাডভোকেট মান্নান আহবায়ক সিরাজ সদস্য সচিব
বাগেরহাটে সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহত ব্যবসায়ীর মৃত্য