ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ৫০
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩২ এএম | আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৩ এএম
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলা অব্যাহত রয়েছে,এর ফলে মানবিক সংকট আরও তীব্রতর হয়েছে।হাসপাতাল, স্কুল এবং তথাকথিত "নিরাপদ অঞ্চল" লক্ষ করে পরিচালিত এই হামলাগুলোতে বেসামরিক মানুষের হতাহতের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। পরিস্থিতি প্রতিদিনই আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনী গাজার দক্ষিণাঞ্চলের আল-মাওয়াসি এলাকার তথাকথিত "নিরাপদ অঞ্চল" বোমা হামলা চালায়। এই হামলায় তাবুতে আগুন ধরে যায় এবং অন্তত সাতজন ফিলিস্তিনি নিহত হন। একদিনে নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫০-এ। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থা (UNRWA)-র প্রধান এই হামলাগুলোর তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, গাজায় স্কুল ও হাসপাতালের ওপর হামলা এখন "প্রায় সাধারণ ঘটনা" হয়ে উঠেছে।
উত্তর গাজার অবরুদ্ধ কামাল আদওয়ান হাসপাতালের পরিচালক জানিয়েছেন, ইসরায়েলের নির্দেশে হাসপাতাল খালি করা অসম্ভব, কারণ প্রায় ৪০০ বেসামরিক মানুষ সেখানে আশ্রয় নিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে নবজাতক ও জীবনরক্ষাকারী চিকিৎসা প্রয়োজন এমন রোগীও রয়েছে।
একই সময়ে, ইসরায়েলি বাহিনী লেবাননের কফার কিলা শহরে বড় আকারের বোমা হামলা চালিয়েছে। স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছে, এই হামলা গত মাসে হওয়া যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করে।
ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয় ৭ অক্টোবর ২০২৩ তারিখে, যখন হামাসের আক্রমণে ইসরায়েলে ১,১৩৯ জন নিহত এবং ২০০ জনের বেশি মানুষ বন্দি হন। এর প্রতিক্রিয়ায় ইসরায়েল গাজায় সামরিক অভিযান শুরু করে, যা এ পর্যন্ত ৪৫,২৫৯ ফিলিস্তিনির প্রাণহানি এবং ১,০৭,৬২৭ জন আহতের কারণ হয়েছে।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
এই সংকটের দ্রুত সমাধান খুঁজে বের করতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। যুদ্ধবিরতি এবং মানবিক সহায়তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি, কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে শান্তি স্থাপনে উদ্যোগ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
নারী পুলিশের দিকে তাকিয়ে আসামির হাসি, নেটদুনিয়ায় তোলপাড়
জার্মানির ক্রিসমাস মার্কেটে হামলায় ৯ বছরের শিশুর মৃত্যুতে শোকের ছায়া
স্ত্রী-কন্যাসহ সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুরের বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
গ্রেপ্তারের ভয়ে পোল্যান্ড সফর বাতিল করলেন নেতানিয়াহু
নাটোরে ৬ ট্রাকের সংঘর্ষে চালকসহ নিহত ২, আহত ৭
রাখাইনের অস্থিরতায় টেকনাফ স্থলবন্দরে পণ্য আমদানি কমেছে ৯০ ভাগ
ক্রিসমাস মার্কেট হামলা, জার্মান কর্তৃপক্ষের কাছে গত বছরেই এসেছিল সতর্কবার্তা
উপদেষ্টা হাসান আরিফকে বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন
ডলার বাজারে অস্থিরতা, দাম বেড়ে ১২৯ টাকা
উত্তরার বিপ্লবী জনতাকে যে কঠিন মূল্য দিতে হয়েছিল
পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার হুমকি ট্রাম্পের
বাংলাদেশ থেকে আরও দক্ষকর্মী নিতে আগ্রহী লিবিয়া
৯১ শিশু খেলোয়াড়সহ ৬৪৪ ক্রীড়াবিদকে হত্যা করেছে ইসরায়েল
ইইউভুক্ত দেশে গ্যাস সরবরাহ বন্ধের হুমকি কাতারের
দক্ষিণ কোরিয়ার সৌন্দর্যের পেছনে ছুটে বিপদের ফাঁদে পর্যটকরা
ঢাকার বাতাস আজ ‘ঝুঁকিপূর্ণ’
২৮ ডিসেম্বর দেশে ফিরছেন সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদ
হিরো নয় কারিনার ছেলের চরিত্রে অভিনয় করতে পারি
রাওয়ার নেতৃত্বে আবদুল হক ও ইরশাদ সাঈদ
স্লোভাক প্রধানমন্ত্রীর মস্কোতে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক