আসাদের পতন, নিজের বেঁচে থাকার গল্প বললেন এক সিরিয়ান শরণার্থী
২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৫৩ পিএম | আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:০০ পিএম
সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারকে যখন উৎখাত করা হলো তখন সেটা শুধু তার প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেশ শাসনের ২৪ বছর নয়,বরং এর মধ্য দিয়ে তার পরিবারের ৫০ বছরের শাসনের অবসান ঘটেছে। বাশার আল-আসাদ ২০০০ সালে প্রেসিডেন্ট হওয়ার আগে তারা বাবা হাফিজ আল আসাদ তিন দশক ধরে দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
এই মুহূর্তে সিরিয়াতে ব্যাপক পরিবর্তন ঘটছে। সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ ক্ষমতাচ্যুত হয়ে মস্কোতে আশ্রয় নিয়েছেন এবং তার শাসনামলের অবসান ঘটেছে। এই পরিবর্তনের মাঝে, অনেক শরণার্থী তাদের পুরানো স্মৃতি ও যন্ত্রণার কথা শেয়ার করছেন। এর মধ্যে একজন হলেন রেনে শেভান, যিনি ১২ বছর আগে সিরিয়া থেকে পালিয়ে এসে ইউরোপে আশ্রয় নিয়েছিলেন। তিনি তার ভয়াবহ অভিজ্ঞতা এবং আসাদের শাসনের নিপীড়ন সম্পর্কে কথা বলেছেন। তিনি জানিয়েছেন, তার ওপর যে নির্যাতন হয়েছে, তা এখনো তার স্মৃতিতে স্পষ্ট।
রেনে শেভান যখন ২০১২ সালে সিরিয়া থেকে পালিয়ে আসেন, তখন তিনি ভয় এবং আক্ষেপের মধ্যে ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন সমকামী এবং সিরিয়ায় গণতন্ত্রের পক্ষে একটি প্রতিবাদে অংশগ্রহণ করেছিলেন, এজন্য তাকে সন্ত্রাসী পুলিশ আটক করে এবং তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। রেনেকে গ্যাং রেপের শিকার হতে হয়, এবং সেই সময়টাতে তিনি খুবই অসহায় ছিলেন। তবে, আজ তিনি বলেছেন, "ভয় রাজত্ব শেষ হয়ে গেছে, এখন আমি আর ভয় পাই না।" তিনি এখন প্রকাশ্যে তার মুখ দেখাতে রাজি, কারণ সিরিয়াতে আসমাদের শাসন শেষ হয়ে গেছে এবং তিনি আশা করেন যে ভবিষ্যতে সিরিয়া একটি স্বাধীন, সমান এবং মুক্ত দেশ হবে।
রেনে তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে তার পুরনো স্মৃতির কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, সিরিয়ার জেলে থাকার সময় তিনি বহু সহযাত্রীদের পাশ থেকে যন্ত্রণাদায়ক দৃশ্য দেখেছেন। তার নিজেরও রেপ হয়েছিল এবং প্রতিদিন নির্যাতন সহ্য করতে হয়েছিল। এই স্মৃতিগুলো তাকে আরও বেশি কষ্ট দেয়, কিন্তু বর্তমানে তিনি নিজেকে আরও শক্তিশালী মনে করেন। রেনে জানিয়েছেন যে তিনি এখন তার পরিচয় প্রকাশ্যে নিয়ে আসতে ভয় পান না, কারণ তিনি বিশ্বাস করেন যে সিরিয়া তার জনগণের জন্য ফিরে আসবে।
রেনে শেভানের মতো, আরো অনেক শরণার্থী রয়েছে যারা সিরিয়ার বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন, বিশেষত ধর্মীয় এবং জাতিগত সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে। নুজিন, একজন প্রতিবন্ধী কুর্দি তরুণী, যিনি ২০১৫ সালে সিরিয়া থেকে পালিয়ে ইউরোপে চলে এসেছিলেন, তারও উদ্বেগ রয়েছে। তিনি মনে করেন, সিরিয়া এখনও একটি স্বাধীন এবং শান্তিপূর্ণ দেশ হতে সক্ষম। তবে, নতুন সরকারের আগমনে কুর্দি জনগণের ভবিষ্যৎ নিয়ে অশঙ্কা রয়েছে।
সিরিয়ায় যুদ্ধের অবসান হলে, কিভাবে দেশটি পুনর্গঠিত হবে এবং সেখানে সংখ্যালঘু, নারী ও শিশুদের কীভাবে নিরাপত্তা দেওয়া হবে, তা ভবিষ্যৎ পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে। ইউরোপে শরণার্থী হওয়ার পরেও, সিরিয়ার জনগণের মধ্যে এক নতুন আশা এবং স্বপ্ন জেগে উঠছে। তাদের জন্য এই নতুন সূর্যোদয় একটি নতুন শুরু হতে পারে।
এটা স্পষ্ট যে, সিরিয়ার জনগণের জন্য একটি নতুন ও শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যত নির্মাণের প্রক্রিয়া কঠিন, তবে রেনে, নুজিন এবং তাদের মতো অনেক শরণার্থীর আশা জাগিয়ে রাখতে পারবে তাদের দেশের পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায়। তথ্যসূত্র : বিবিসি
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
কুমিল্লায় মুক্তিযোদ্ধাকে গলায় জুতার মালা পরিয়ে লাঞ্ছিত
টিকটক-এ ৭ কোটি বারের বেশি দেখা হয়েছে স্বল্পদৈর্ঘ্যের ওয়েব সিরিজ ‘প্রেমের বিকাশ’
'সম্মিলিত প্রচেষ্টায় নগরীর যানজট নিরসন করা হবে' ---বিভাগীয় কমিশনার মোখতার আহমেদ
অস্তিত্ব সংকটে ট্রাম্প টাওয়ারসহ ৩৫ বিলাসবহুল ভবন
রাজশাহী সীমান্তে গভীর রাতে বিএসএফের দফায় দফায় গুলি বর্ষন
আজীবন সন্মাননা পাচ্ছেন আবদুল হাদি-খুরশিদ আলম
প্রকৌশলীর দুর্নীতির ৮ প্রকল্পের ৭৫ লাখ টাকা আত্মসাতের সত্যতা পেয়েছে দুদক
পদ্মা সেতু হয়ে বেনাপোল-ঢাকা রুটে আগামীকাল ২৪ ডিসেম্বর যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল শুরু: যাত্রীদের মাঝে ব্যপক সাড়া
বাংলাদেশের কাছে ২০০ কোটি রুপি পায় ত্রিপুরা, জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা
লক্ষ্মীপুরে দুই নারীকে পিটুনি, অভিযুক্ত যুবক গ্রেপ্তার
নওগাঁর রাণীনগরে জাতীয়তাবাদী প্রবাসী ঐক্য পরিষদের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত
বিনিয়োগ ‘ধ্বংসের’ অভিযোগে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনি ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি এস আলমের
বাতিল হলো মৌলভীবাজারের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক প্রকল্প
সাভারে বাস চাপায় সিআরপি শিক্ষার্থী নিহতের প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ
কৃতিত্বপূর্ণ কাজের জন্য পদক পেলেন ৭২ বিজিবি সদস্য
শ্রীমঙ্গলে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা জনজীবন স্থবির
খুবির নির্মাণকাজের গুণগতমান নিশ্চিত ও তদারকি বাড়ানোর নির্দেশ উপাচার্যের
নওগাঁ শহরের দেয়াল থেকে মুছে ফেলা হলো জয় বাংলা
জাহাজে ছিল ৫ জনের লাশ, হাসপাতালে মারা গেলেন আরও ২ জন
বিএসএমএমইউ সুপার স্পেশালইজড হাসপাতালে পুনরায় শুরু হলো বহুল প্রতীক্ষিত কিডনি প্রতিস্থাপন