ইয়েমেনে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ভারতীয় নার্সের অপরাধের নেপথ্য কাহিনি
০১ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০৩ এএম
সোমবারই ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ডের রায়ে সিলমোহর দিয়েছেন ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট রাশাদ আল-আলিমি। সাত বছর পর সাজা হতে চলেছে ইয়েমেন অভিবাসী কেরলের মেয়ের। এক মাসের মধ্যেই সাজা কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে সে দেশের আদালত। ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ও। কিন্তু কে এই নিমিশা? কোন অপরাধে মৃত্যুদণ্ড পেতে চলেছেন তিনি?
কেরলের পালাক্কড় জেলার বাসিন্দা নিমিশা পেশায় নার্স। স্বামী টমি থমাস এবং মেয়েকে নিয়ে ইয়েমেনে থাকতেন তিনি। ২০০৮ সাল থেকে ইয়েমেনের এক বেসরকারি হাসপাতালে কাজ করতেন নিমিশা। ২০১৪ সালে তার স্বামী এবং ১১ বছরের কন্যা ভারতে ফিরে এলেও নিমিশা ইয়েমেনেই থেকে যান। স্বপ্ন ছিল নিজের ক্লিনিক খোলা। ওই বছরই ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আব্দো মাহদির সঙ্গে যোগাযোগ হয় তার। মাহদি তাকে নতুন ক্লিনিক খুলতে সাহায্য করবেন বলে আশ্বাস দেন। কারণ, আইন অনুযায়ী, ইয়েমেনে নতুন ব্যবসা শুরু করতে গেলে দেশীয় অংশীদারের দরকার ছিল নিমিশার। সেই মতো ২০১৫ সালে দু’জন মিলে নতুন ক্লিনিক খোলেন।
এর পর থেকেই শুরু হয় দুই অংশীদারের মতবিরোধ। নিমিশার টাকাপয়সা কেড়ে নেন ওই যুবক। শুধু তা-ই নয়, অভিযোগ, মাহদি তাকে মাদকসেবনেও বাধ্য করেন। বিরোধ বাড়তে বাড়তে এক পর্যায়ে তার পাসপোর্ট কেড়ে নেন মাহদি, যাতে কোনও ভাবেই নিমিশা ইয়েমেন ছাড়তে না-পারেন। আইনি কাগজপত্রে নিমিশাকে নিজের স্ত্রী হিসাবে পরিচয় দিয়েছিলেন মাহদি, ফলে নিমিশার প্রশাসনিক সাহায্য পাওয়া জটিল হয়ে পড়ে। অভিযোগ, একাধিক বার পুলিশের দ্বারস্থ হলেও কোনও লাভ হয়নি। মাসখানেক জেলে থাকার পরেই ছাড়া পেয়ে যান মাহদি। জেল থেকে বেরিয়ে নিমিশার জীবন আরও দুর্বিষহ করে তোলেন তিনি।
বাধ্য হয়ে ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই মাহদিকে ঘুমের ইঞ্জেকশন দেন ওই নার্স। নিমিশার দাবি, মাহদিকে ঘুম পাড়িয়ে নিজের পাসপোর্ট পুনরুদ্ধার করাই ছিল তার উদ্দেশ্য। কিন্তু ওভারডোজের কারণে মৃত্যু হয় মাহদির। এর পর হানান নামে এক সহকর্মীর সঙ্গে মিলে মাহদির লাশ টুকরো টুকরো করে কেটে পানির ট্যাঙ্কে ফেলে দেন ওই নার্স। ওই মাসেই ইয়েমেন ছেড়ে পালানোর সময় ধরা পড়ে যান নিমিশা। সেই থেকে ইয়েমেনের জেলেই বন্দি রয়েছেন ভারতের যুবতী।
মাহদিকে হত্যার দায়ে ২০১৮ সালে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে ইয়েমেনের আদালত। মৃত্যুদণ্ড পান নিমিশা। এই সাত বছরে পরিবারের তরফে ৩৬ বছর বয়সি নিমিশাকে বাঁচানোর সব রকম চেষ্টা করা হয়েছে। আইনজীবীর ব্যবস্থা করে দিয়েছে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়। শেষ চেষ্টা হিসাবে ‘দিয়া’ (নিহতের পরিবারের নির্ধারিত ক্ষতিপূরণের অঙ্ক) দিয়ে মেয়েকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছেন নিমিশার মা প্রেমা কুমারী। সে জন্য চলতি বছরেই জমিবাড়ি বেচে ইয়েমেনে চলে এসেছেন প্রৌঢ়া। কিন্তু কিছুতেই চিঁড়ে ভেজেনি। গত বছর নিমিশার সাজা মওকুফের শেষ আবেদনও খারিজ হয়ে গিয়েছে সে দেশের সুপ্রিম কোর্টে। এ বার প্রেসিডেন্টের সম্মতিতে মৃত্যুদণ্ডে সিলমোহর পড়ল তার।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ঢাবি ভিসির সঙ্গে সাদা দলের নবনির্বাচিত কমিটির নেতৃবৃন্দের সৌজন্য সাক্ষাৎ
ঝিনাইগাতীতে মৎস্যজীবী যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে অধিকারের কথা বললেই গুমের শিকার হতে হয়েছে- খুবি ভিসি
সড়ক দুর্ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতার মৃত্যু
মতলবে সমন্বয়ক পরিচয় দানকারী ৫ জন অস্ত্রসহ আটক
যুক্তরাষ্ট্রে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর জন্য নিরাপদ আশ্রয় থাকবে না : বাইডেন
বগুড়ায় বাসের ধাক্কায় পথচারী নিহত
সালথায় দু-গ্রুপের সংঘর্ষে আহত-১০, বসতঘর ভাংচুর
ইউরোপেও ভালো নেই মুসলিমরা
হাসনাত আবদুল্লাহ সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতারের তথ্য ভুয়া
ডাকসু নিয়ে অপপ্রচার হচ্ছে, প্রতিবাদ করলো ছাত্রদল
আফগান মরুভূমি থেকে ব্রিটেনে অভিবাসী পাচারের ভয়াবহ পথ
'দেয়ালের দেশ' মুক্তি পেল পাকিস্তানের প্রেক্ষাগৃহে
চট্টগ্রামের জাতিসংঘ পার্ক এখন ‘জুলাই স্মৃতি উদ্যান’
সাভারে তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ছাত্রদলের শীতবস্ত্র বিতরণ
কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গ্রেপ্তার
নাঈমুল ইসলাম ও পরিবারের অ্যাকাউন্টে জমা ৩৮৬ কোটি টাকা, তুলেছেন ৩৭৯ কোটি
গাজায় ইসরাইলের নৃশংস হামলায় একদিনে নিহত অন্তত ৯০
মহেশপুরের লম্বা আসাদুলকে নিয়ে এলাকায় কৌতূহল !
হাড় কাঁপানো শীতে কাঁপছে উপকুলবাসীর জনজীবন, ভোগান্তিতে ছিন্নমূল মানুষ