ভারতীয় নার্সের মৃত্যুদণ্ডের বিষয়ে ইয়েমেনের সঙ্গে আলোচনায় ইরান

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:০২ পিএম | আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:২৪ পিএম

ইয়েমেনি নাগরিক তালাল আবেদা মাহেদিকে হত্যার দায়ে ২০১৭ সাল থেকে জেলবন্দী ভারতীয় নার্স নিমিশা প্রিয়া। টানা ৭ বছর কারাবাসের পর গতবছর ৩০ ডিসেম্বর ইয়েমেনের রাষ্ট্রপতি রাশাদ আল-আলিমি নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করেছেন। কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১ মাসের মধ্যেই নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে।

 

এদিকে মেয়েকে বাঁচাতে ভারত সরকারের সাহায্য চাইছেন নিমিশার পরিবার। নিমিষার একাধিকবার জামিনের আবেদনও খারিজ হয়েছে। এরপরেই গত সোমবার (৩০ ডিসেম্বর) ইয়েমেনের রাষ্ট্রপতি রাশাদ আল-আলিমি নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করেন। এ নিয়ে ভারত সরকারের কাছেও সাহায্য চেয়েছিলেন নিমিষার পরিবার। অবশেষে ইয়েমেনে নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ডের ব্যাপারে ইরান সরকারের পক্ষ থেকে স্বস্তির খবর সামনে এসেছে। ইরান সরকারের সংশ্লিষ্ট সূত্রের বরাত দিয়ে একটি সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছে, ইরান এ বিষয়টি নিয়ে ইয়েমেন সরকারের সঙ্গে আলোচনা করবে।

 

সূত্র জানিয়েছে, ইরান সরকার এ বিষয়ে সম্ভাব্য সব ধরনের সহায়তা করতে রাজি। ইয়েমেনের আদালত নিমিশাকে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল, এবং তা ইয়েমেনের রাষ্ট্রপতি অনুমোদন করেছিলেন। অন্যদিকে নিমিশা প্রিয়ার মৃত্যুদণ্ডের অনুমোদনের প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় (MEA) মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল একটি বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন, ‘ভারত ইয়েমেনে নিমিশা প্রিয়ার সাজা সম্পর্কে সচেতন। আমরা বুঝতে পেরেছি যে প্রিয়ার পরিবার মেয়েকে বাঁচাতে সরকারের সাহায্য চাইছেন। সরকার এই বিষয়ে সম্ভাব্য সব ধরনের সাহায্য করতে প্রস্তুত।”

 

ইয়েমেনি রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আগামী ১ মাসের মধ্যে ৩৬ বছর বয়সী নিমিশা প্রিয়ার ফাঁসি হবে। এদিকে মেয়েকে মৃত্যুদণ্ডের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য সবরকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তার পরিবার। তার মা প্রেমা কুমারী, ৫৭, চলতি বছরের শুরুতে ইয়েমেনের রাজধানী সানায় চলে গিয়েছেন। নিহত তালাল আবেদার পরিবারকে আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নিমিশা ২০১৭ সাল থেকে ইয়েমেনের কারাগারে বন্দি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, পাসপোর্ট জমা দেয়ার জন্য ইয়েমেনি নাগরিক তালাল মাহদিকে অচেতন অবস্থায় ওভারডোজের সিডেটিভ ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলেছিলেন। এই ঘটনায় তার সঙ্গে তার একজন সহকর্মীও ছিলেন। এরপর জন্যে নিমিশা ও তার সহকর্মী তালালেল দেহ টুকরো টুকরো করে জলের ট্যাঙ্কে ফেলে দেন। এই ঘটনায় অভিযুক্ত নিমিষা ২০১৭ সাল থেকে ইয়েমেন জেল খাটছেন।

 

কেরলের পালাক্কাদের বাসিন্দা নার্স নিমিশা ২০১১ সাল থেকে স্বামী ও মেয়ের সঙ্গে ইয়েমেনে থাকেন। সেখানে একটি হাসপাতালে কাজ করতেন তিনি। তবে তার স্বামী ও মেয়ে ২০১৪ সালে ভারতে ফিরে গিয়েছেন। কিন্তু নিমিশা ফিরতে পারেননি। এরপর ২০১৭ সালে পাসপোর্ট সংক্রান্ত কারণে তালাল আবেদার সঙ্গে তার বিবাদ হয়। এবং তাকে ইনজেকশন দিয়ে মেরে ফেলেন। গ্রেফতারের পর ২০১৮ সালের ৭ মার্চ, ইয়েমেনের আদালত নিমিশার মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিল। এরপর মেয়েকে বাঁচানোর জন্যে দিল্লি হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন নিমিশার মা। দিল্লি হাইকোর্টে দায়ের করা পিটিশনে দাবি করা হয়েছিল যে, মাহদি নার্সকে শারীরিক ও আর্থিকভাবে নির্যাতন করেছিলেন। তার পাসপোর্ট বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বাধ্য হয়ে নিমিশা এই কান্ড ঘটিয়েছে।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

১১৬ বছর বয়সে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তির মৃত্যু
লাদাখে দুই প্রশাসনিক অঞ্চল তৈরী চীনের
চিনির নিম্নমুখী বাজারে বিশ্বে কমেছে খাদ্যপণ্যের দাম
মার্কিন শপিং সেন্টারে প্রাণ গেল ৫ শতাধিক প্রাণীর
গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলায় দুইদিনে নিহত ১৫০
আরও

আরও পড়ুন

রহমতের লড়াকু সেঞ্চুরিতে জয়ের স্বপ্ন দেখছে আফগানিস্তান

রহমতের লড়াকু সেঞ্চুরিতে জয়ের স্বপ্ন দেখছে আফগানিস্তান

আশুলিয়ায় ছাত্র হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার

আশুলিয়ায় ছাত্র হত্যা মামলার আসামি গ্রেফতার

আটঘরিয়ায় প্রভাষকের বাড়িতে দুর্ধর্ষ চুরি

আটঘরিয়ায় প্রভাষকের বাড়িতে দুর্ধর্ষ চুরি

আরব বসন্ত থেকে বাংলাদেশ: স্বৈরাচার মুক্ত নতুন ব্যবস্থার সন্ধানে

আরব বসন্ত থেকে বাংলাদেশ: স্বৈরাচার মুক্ত নতুন ব্যবস্থার সন্ধানে

৫০০ হজ কোটা বহাল রাখতে প্রধান উপদেষ্টার সহায়তা কামনা

৫০০ হজ কোটা বহাল রাখতে প্রধান উপদেষ্টার সহায়তা কামনা

ফেব্রুয়ারিতে আয়ারল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ

ফেব্রুয়ারিতে আয়ারল্যান্ড-জিম্বাবুয়ে পূর্ণাঙ্গ সিরিজ

পাওনা টাকা ফেরত দিতে বিলম্ব যাওয়ায় পাওনাদার টাকা ফেরত নিতে না চাওয়া প্রসঙ্গে।

পাওনা টাকা ফেরত দিতে বিলম্ব যাওয়ায় পাওনাদার টাকা ফেরত নিতে না চাওয়া প্রসঙ্গে।

‘রাষ্ট্র সংস্কার শেষ করে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন দিতে হবে’

‘রাষ্ট্র সংস্কার শেষ করে সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির নির্বাচন দিতে হবে’

শীতে পশু-পাখিদের যত্ন

শীতে পশু-পাখিদের যত্ন

মানব পাচার রোধ করতে হবে

মানব পাচার রোধ করতে হবে

মজলুমের বিজয় ও জালেমের পরাজয় অবধারিত

মজলুমের বিজয় ও জালেমের পরাজয় অবধারিত

বিনিয়োগ বাড়ানোর কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

বিনিয়োগ বাড়ানোর কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

১১৬ বছর বয়সে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তির মৃত্যু

১১৬ বছর বয়সে বিশ্বের সবচেয়ে বয়স্ক ব্যক্তির মৃত্যু

লাদাখে দুই প্রশাসনিক অঞ্চল তৈরী চীনের

লাদাখে দুই প্রশাসনিক অঞ্চল তৈরী চীনের

চিনির নিম্নমুখী বাজারে বিশ্বে কমেছে খাদ্যপণ্যের দাম

চিনির নিম্নমুখী বাজারে বিশ্বে কমেছে খাদ্যপণ্যের দাম

মার্কিন শপিং সেন্টারে প্রাণ গেল ৫ শতাধিক প্রাণীর

মার্কিন শপিং সেন্টারে প্রাণ গেল ৫ শতাধিক প্রাণীর

জাতীয় ঐক্য এখন আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন: মির্জা ফখরুল

জাতীয় ঐক্য এখন আমাদের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন: মির্জা ফখরুল

গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলায় দুইদিনে নিহত ১৫০

গাজায় ইসরাইলি বিমান হামলায় দুইদিনে নিহত ১৫০

কালো টাকায় ভাসছে শীর্ষস্থানীয় মার্কিন ৩৬% থিংক ট্যাংক

কালো টাকায় ভাসছে শীর্ষস্থানীয় মার্কিন ৩৬% থিংক ট্যাংক

পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অনেক হতাহত, ফের উত্তপ্ত মণিপুর

পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অনেক হতাহত, ফের উত্তপ্ত মণিপুর