গাজায় বর্বর হত্যাযজ্ঞ চলছেই, ইসরায়েলি হামলায় নিহত আরও ৭০ ফিলিস্তিনি
০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৫ এএম | আপডেট: ০৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৮:৪৬ এএম
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় শনিবার(০৪জানুয়ারি) অন্তত ৭০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ হামলার শিকারদের মধ্যে বহু শিশুও রয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক এবং উদ্ধারকর্মীরা।
৭০ জন ফিলিস্তিনি হত্যার ঘটনাটি শনিবার ঘটে,ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন এলাকায় ৩০টি পৃথক হামলা চালায়। এই ঘটনায় হতাহতের মধ্যে শিশুদের উপস্থিতি মানবিক সংকটকে আরও গভীর করে তুলেছে। একই সময়ে, বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইসরায়েলের জন্য ৮ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রির প্রস্তাব করেছেন। এই পদক্ষেপটি এমন সময়ে এসেছে, যখন গাজায় নিহতের সংখ্যা প্রতিদিনই বাড়ছে এবং সমালোচকরা একে মানবিক মূল্যবোধের পরিপন্থী হিসেবে দেখছেন।
ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ নিশ্চিত করেছেন যে হামাসের সঙ্গে বন্দি মুক্তির বিষয়ে কাতারে পরোক্ষ আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। অন্যদিকে, লেবাননের সশস্ত্র স্বাধীনতাকামী সংগঠন হিজবুল্লাহর প্রধান নাঈম কাসেম জানিয়েছেন, ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির শর্ত ভঙ্গ করলে তারা উপযুক্ত জবাব দেবে। লেবাননের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনী (ইউএনআইএফআইএল) ইসরায়েলের কার্যক্রমকে যুদ্ধবিরতি চুক্তির জন্য হুমকি বলে অভিহিত করেছে।
এদিকে, ৭ অক্টোবর ২০২৩ থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের যুদ্ধ ইতোমধ্যে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪৫ হাজার ৭১৭ জনে পৌঁছেছে এবং ১,০৮,৫৮৩ জনকে আহত । অন্যদিকে, হামাসের হামলায় ইসরায়েলে ১,১৩৯ জন নিহত এবং ২০০ জনেরও বেশি মানুষ বন্দি হয়েছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে,নিরলস এই হামলায় আরও অন্তত এক লাখ ৮ হাজার ৮৫৬ জন ব্যক্তিও আহত হয়েছেন। মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত আগ্রাসনে ৫৯ জন নিহত এবং আরও ২৭৩ জন আহত হয়েছেন।অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।এছাড়া ইসরায়েলি আগ্রাসনের কারণে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি বাসিন্দা তাদের বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
গাজায় চলমান এই সংঘাত মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করছে। যুদ্ধবিরতি এবং আলোচনার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা এখন সময়ের দাবি। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত, এমন পদক্ষেপ নেওয়া যা এই সহিংসতার ইতি ঘটাতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। তথ্যসূত্র : আল-জাজিরা
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে রাশিয়া
রাজনীতি ও রাষ্ট্রাচার ব্যবসায়িক পণ্যে পরিণত হয়েছে : সেলিম উদ্দিন
ভারতে ঢুকে পড়েছে এইচএমপিভি
আন্তর্জাতিক আইকিউ টেস্টে দ্বিতীয় ইরান
গণঅধিকার পরিষদের ফারুকের ওপর হামলা : দুই আসামির জামিন
লেনদেন ও সূচকের উত্থান পুঁজিবাজারে চাঙাভাব
খালেদা জিয়ার নাইকো মামলায় ৩২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ
পাবনায় শীর্ষ সন্ত্রাসী কাঙ্গাল বাবু গ্রেপ্তার
১৫ হাজার পিচ ইয়াবার মামলায় প্রবাসীর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
হাসিনাকে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে : মাহমুদুর রহমান
বৃদ্ধাশ্রমের বাবা মায়ের পাশে জেলা প্রশাসন সব সময় আছে এবং থাকবে
তামিমের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ের দিন প্রশ্নবিদ্ধ এনামুল
বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে চীনের সহযোগিতা চান পরিবেশ উপদেষ্টা
গাজীপুরে বিএনপির বিক্ষোভ
সোনারগাঁওয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমি দখলের অভিযোগ
র্যাগিংমুক্ত ক্যাম্পাস গড়ার প্রতিশ্রুতি শেকৃবি ভিসির
অংশীজনদের সঙ্গে আজ বসছেন অর্থ উপদেষ্টা
কোম্পানীগঞ্জের ইউএনওর নাম্বার ক্লোন করে শিক্ষকের কাছে টাকা দাবি
সমস্যাগ্রস্ত ৬ ব্যাংকের নিরীক্ষায় ২ বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দিলো বাংলাদেশ ব্যাংক
অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদারের সিদ্ধান্ত