খাদ্য গ্রহণে ও স্বাস্থ্য সংরক্ষণে ইসলামের রীতিনীতি-১
০৩ জুলাই ২০২৩, ১১:৩২ পিএম | আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
আল্লাহ তায়ালা খাদ্যকে মানুষের শরীরের জন্য এতটা জরুরি করেছেন যে, খাদ্য গ্রহণ ছাড়া মানুষ বাঁচতে পারে না। সুতরাং বাঁচতে হলে মানুষকে খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। শরীর সুস্থ রাখতে হবে। শরীর সুস্থ থাকলে এই পৃথিবীতে পাঠানোর যে মাকসাদ আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগি যথাযথ আদায় কর সম্ভব হবে। অতএব, সুস্থতা হলো ইলম-আমলের পূর্ণ হক আদায় করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক।
সুস্থতা এবং শরীরের ভারসাম্য মানুষকে যেমন কাজকর্মে স্পৃহা জোগায় তেমনি কাজটি যথাযথ আঞ্জাম দেওয়ার আগ্রহ সৃষ্টি করে। শরীর সুরক্ষার জন্য খাদ্য নির্বাচন হলো মূল বিষয়। কেননা মানুষের স্বভাব-রুচির বৈচিত্র্যের কারণে খাদ্যের পরিমাণ, কার্যকারিতা ও উপযোগিতায় তারতম্য হওয়াটাই স্বাভাবিক। তাই এই তারতম্যের ভিত্তিতেই খাবার নির্বাচন করতে হয় আর এর ব্যতিক্রম করার কারণেই সাধারণ মানুষের শরীরের অধিকাংশ রোগ সৃষ্টি হয়। সুতরাং সাধারণভাবে সকল ক্ষেত্রে ‘সর্বোত্তম পন্থা, মধ্যম পন্থা’-এর নীতি অবলম্বন করতে হবে। ইসলামি তাহযীব জীবনের সকল ক্ষেত্রের মতো এ বিষয়টিকেও সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছে। আলোচ্য বিষয়ে ইসলামের শিক্ষা হলো, হালাল খাদ্য গ্রহণ ও বৈধ পন্থায় উপার্জন :
ক. ইসলামে যেহেতু বৈরাগ্যের কোনো স্থান নেই তাই খাদ্য গ্রহণের বিষয়টি এখানে অবহেলিত নয়; বরং মানুষ প্রয়োজন মাফিক খাদ্য গ্রহণ করবে এটাই ইসলামের শিক্ষা। মানব রুচিতে যেটা অরুচিকর মনে হবে সেটা অনায়াসে পরিত্যাগ করতে পারবে। এক্ষেত্রে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। তবে কি ধরনের খাদ্য গ্রহণ করবে তার একটি সুস্পষ্ট মানদ- ইসলামে রয়েছে। কুরআনে কারীমে ইরশাদ হয়েছে : হে রাসূলগণ! পবিত্র হালাল বস্তু আহার করুন এং সৎ কাজ করুন। (সূরা মুমিনূন : ৫১)।
উল্লেখিত আয়াতে হালাল খাবার গ্রহণ করতে বলা হয়েছে এবং নেক আমলের আদেশ করা হয়েছে। হালাল রুজি খেয়ে আমল করলে কলব ইবাদতের স্বাদ অনুভব করবে এবং আল্লাহর কাছে তা মাকবুল হওয়ার অতি নিকটে পৌঁছবে। অন্য একটি আয়াতে আরও স্পষ্ট করে মানব সম্প্রদায়কে উদ্দেশ করে খাবারের মানদ- বর্ণনা করা হয়েছে এভাবে : হে মানব সম্প্রদায় পৃথিবীর হালাল ও পবিত্র বস্তু আহার কর। (সূরা বাকারা : ১৬৮)।
খ. উপার্জিত খাদ্য বৈধ পন্থায় হতে হবে; আহার্য যেমন শরিয়তে নিষিদ্ধ নয় এমন কোনো বস্তু হতে হবে, তেমনি সেটা উপার্জন করতে হবে বৈধ পন্থায়। তাহলে এই খাদ্য স্বাস্থ্যের পুষ্টি জোগায়ে, কলবের উত্তম গিযায় পরিণত হবে, আমলে তারাক্কী হবে, আল্লাহর নিকট আমল কবুল হওয়ার অতি নিকটে পৌঁছবে। পক্ষান্তরে শরিয়ত যে খাদ্যগুলোকে স্বাস্থ্যের অনুপযোগী, মন্দ, অনুত্তম ও হারাম করেছে সেগুলো পরিহার করে চলতে হবে।
অন্যথায় এগুলো কখনো বাহ্যিক কিছু ফায়দা দিলেও ক্ষতির সম্ভাবনাই থাকবে বেশি। এতে নূরের পরিবর্তে কলবে মাঝে ‘জুলমাত’ সৃষ্টি হবে এবং একদিন সেই জুলমাতের তাড়নায় সত্যবিমূখ হয়ে যাওয়ারও সমূহ আশঙ্কা রয়েছে। ইরশাদ হয়েছে : হে ঈমানদারগণ! তোমরা একে-অপরের সম্পদ অন্যায়ভাবে গ্রাস করো না। (সূরা নিসা : ২৯)। উল্লেখিত আয়াত থেকে এ কথা প্রতীয়মান হয় যে, অবৈধ পন্থায় উপার্জিত খাদ্য গ্রহণ করা শরিয়তে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আর হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে : ‘তোমাদের কেউ এলোমেলো চুলে, ধুলায় ধুসরিত হয়ে সকাল বেলা বলবে হে প্রভু! হে প্রভু! অথচ তার খাবার হবে হারাম, পানীয় হবে হারাম, পরিধেয় বস্তু হবে হারাম এবং হারাম বস্তু দিয়ে খাদ্য গ্রহণ করবে তাহলে কীভাবে তার দুয়া কবুল করা হবে’। এই হাদিস দ্বারা বুঝা যায়, হারাম বস্তু গ্রহণের ফলে ইবাদত কবুল হয় না। তাই হারাম বস্তু গ্রহণ করা থেকে আমাদেরকে বেঁচে থাকতে হবে।
উত্তম খাদ্য গ্রহণ ও বৈধ পন্থায় উপার্জনের সাথে সাথে শরীর সুস্থ রাখার ব্যাপারেও ইসলামে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। শরীরের ওপর মাত্রাতিরিক্ত চাপ প্রয়োগ করার অধিকার কাউকে দেওয়া হয়নি। কেননা মানুষের ওপর তার রক্ত ও মাংসের, স্বাস্থ্য ও শরীরের বিরাট হক রয়েছে। সে হকের প্রতি নজর রাখা এবং শরীরকে সুস্থ রেখে ইবাদত বন্দেগিতে মগ্ন থাকা মানুষের দায়িত্ব। হাদিস শরিফে বর্ণিত হয়েছে, ‘অসুস্থ হওয়ার আগে সুস্থতাকে গনিমত মনে কর’। (মুসতাদরাকে হাকেম : ৭৯১৬)। কেননা সুস্থতা হলো আল্লাহর নেয়ামত সেটার যথাযথ কদর করা মানুষের কর্তব্য।
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
জর্ডানে ইসরাইলি দূতাবাসের কাছে গুলি, বন্দুকধারী নিহত
ট্রাম্পের জয়ের পর ইলন মাস্কের সম্পদ বাড়ছে রকেট গতিতে
ভয়াবহ তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্য, বহু ফ্লাইট বাতিল
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ১২০ ফিলিস্তিনি
ইভেন্টের সেরা লড়াইটি উপহার দিলেন আফরা-সানজিদা
ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান পাহাড়ের পর জয়-জাকিরকে হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ
নাটকীয় শেষ দশ মিনিটে দুই গোল শোধ করে বার্সাকে রুখে দিল সেল্তা
বিবর্ণ সিটিকে ইতিহাদেই বিধ্বস্ত করলো টটেনহ্যাম
নটিংহ্যামকে হারিয়ে চার ম্যাচের জয়খরা কাটালো আর্সেনাল
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবী অত্যন্ত যৌক্তিক
পাঠ্যবই ছাপায় অনিয়মে আনন্দ প্রিন্টার্সকে সতর্কতা
দক্ষিণ লেবাননে ৬ চিকিৎসাকর্মী নিহত
জনগণের সাথে জনসংযোগ বাড়াতে হবে
আমরা যুদ্ধে বিশ্বাসী না কেউ গায়ে পড়লে জবাবের প্রস্তুতি রাখতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথের কাছে ২৭ রেফারির চিঠি
ফের বাড়লো সোনার দাম, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা
বাংলাদেশে খেলা নিয়ে অনিশ্চিয়তায় হামজা!
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই হবে অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফের খেলা
সিলেটে মাজিদের ফিফটি
অ্যাম্বাসেডর কাপ উশুতে সেনাবাহিনী চ্যাম্পিয়ন