ওরাই আল্লাহর দলভুক্ত, ওরাই সফল-১
১৬ জুলাই ২০২৩, ১১:৩৭ পিএম | আপডেট: ১৭ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
সূরা মুজাদালার শেষ আয়াতে আল্লাহ তা’আলা ইরশাদ করেছেন : এরা আল্লাহর দল। আর শোনো, নিশ্চয়ই আল্লাহর দলই সফলকাম। বলাবাহুল্য, আল্লাহ তা‘আলার দলের সদস্য যারা, তারা সফল হবেই। আল্লাহ তা‘আলার সৃষ্ট জগৎ, যা একমাত্র তাঁরই নিয়ন্ত্রণাধীন, তাঁর বান্দারা সেখানে সফল হতে চাইলে তাঁর দলভুক্ত হতেই হবে। উপরোক্ত আয়াতের শুরুতে আল্লাহ তা‘আলা তাঁর দলের সদস্যদের কিছু পরিচয়ও তুলে ধরেছেন। পবিত্র কুরআনের ভাষায় : আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী এমন কোনো জাতি তুমি পাবে না, যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি শত্রুতাপোষণকারীদের ভালোবাসে, যদিও তারা তাদের বাবা, সন্তান, ভাই কিংবা আত্মীয়-স্বজন হয়। তাদের অন্তরে আল্লাহ ইমান লিখে দিয়েছেন এবং নিজের পক্ষ থেকে রূহ দিয়ে তাদের সাহায্য করেছেন। তিনি তাদের প্রবেশ করাবেন এমন সব জান্নাতে, যার তলদেশে নদীসমূহ প্রবাহিত থাকবে, তারা তাতে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। তারাই আল্লাহর দল। শুনে রেখো, আল্লাহর দলই সফলকাম হবে। (সূরা মুজাদালা : ২২)।
এ আয়াতে আল্লাহ তা’আলার দলের সদস্যদের মোটা দাগে যে পরিচয় আমরা পাইÑ ১. তারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী। ইমান হচ্ছে একজন মুমিনের প্রাণ। আল্লাহ তা‘আলার দলের সদস্যদের জন্য এ ইমান প্রথম পরিচয়। যে কোনো নেক আমল গ্রহণযোগ্য হওয়ার জন্য এবং পরকালে এর অফুরন্ত পুরস্কার লাভ করার জন্য ঈমানের বিকল্প নেই। ইমান ছাড়া কোনো নেক আমলই আল্লাহ তা‘আলার দরবারে কবুল হয় না। ইমান আনতে হয় আল্লাহর প্রতি, পরকালের প্রতি, ফেরেশতা, নবী-রাসূল, আসমানী কিতাব ও তাকদিরের ভালো-মন্দের প্রতি।
তবে বিশেষ গুরুত্বের বিবেচনায় বিভিন্ন জায়গায় ইমান প্রসঙ্গে আল্লাহ তা’আলার সঙ্গে কেবল পরকালের কথা বলা হয়েছে। আলোচ্য আয়াতটিও এমনই, এখানে আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমানের কথা বলা হয়েছে। এর অর্থ মোটেও এমন নয়- অন্য বিষয়গুলোর প্রতি যদি কারও ইমান না থাকে, শুধু আল্লাহ ও পরকালের প্রতি বিশ্বাস থাকে, তবেই সে মুক্তি পেয়ে যাতে পারে, সফল মানুষদের দলে সেও অন্তভুর্ক্ত হতে পারে। এমন বিশ্বাস খ-িত বিশ্বাস, আংশিক ইমান। মুক্তি পেতে হলে, সফল হতে হলে, ইমানকে পূর্ণ করতে হবে। সবগুলো বিষয়ের প্রতিই পরিপূর্ণ ইমান রাখতে হবে।
কোনো একটি বিষয়ের কোনো একটি স্বতঃসিদ্ধ প্রসঙ্গ অস্বীকার করলেও ইমান হয়ে পড়বে অর্থহীন। পবিত্র কুরআনের আরেক আয়াতে বলা হয়েছে আল্লাহ তা‘আলা মুমিনদের অভিভাবক : আল্লাহ মুমিনদের অভিভাবক, তিনি তাদেরকে বের করে আনেন অন্ধকার থেকে আলোর দিকে। আর যারা কাফের, তাদের অভিভাবক তাগুত। এরা তাদেরকে আলো থেকে অন্ধকারের দিকে বের করে নিয়ে যায়। (সূরা বাকারা : ২৫৭)। এ আয়াতে স্পষ্টতই মানুষদের দুটি ভাগে বিভক্ত করা হয়েছে : এক. মুমিন, আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাসী। দুই. কাফের।
মুমিনদের অভিভাবক আল্লাহ, তিনি তাদেরকে আলোর পথে, কল্যাণের পথে, সত্য ও ন্যায়ের পথে পরিচালিত করেন। কুফরের অন্ধকারাচ্ছন্ন সরু গলিপথ থেকে তাদের তিনি বের করে নিয়ে আসেন ইমানের আলোকোজ্জ্বল রাজপথে। আর নিজেদের অভিভাবক হিসেবে যারা শয়তানকে বেছে নিয়েছে, অর্থাৎ যারা কাফের, তাদেরকে শয়তান অন্ধকারের দিকে টেনে নিয়ে যায়।
বিপরীতমুখী এ দুই শিবিরে মানবজাতির বিভক্তির প্রতি আলোকপাত করা হয়েছে পবিত্র কুরআনের আরও অনেক আয়াতে। আরেকটি আয়াত লক্ষ করুন : যারা মুমিন তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করে, আর যারা কাফের তারা শয়তানের পথে লড়াই করে। (সূরা নিসা : ৭৬)।
কথা তো দ্ব্যর্থহীন, যারা মুমিন তারা আল্লাহ তা’আলার সৈনিক, তারা আল্লাহর দলভুক্ত। তারা তাই আল্লাহর পথে লড়াই করে। আল্লাহ তা’আলার মনোনীত দ্বীন সমুন্নত রাখার জন্য তারা লড়াই করে। নিজেদের জান-মাল দিয়ে, নিজেদের শক্তি-সামর্থ্য সবকিছু বিলিয়ে দিয়ে লড়াই করে। অস্ত্রের শক্তিতে লড়াই করে, কলমের শক্তিতে লড়াই করে, ভাষার শক্তিতে লড়াই করে, লড়াই করে নিজেদের সভ্যতা-সংস্কৃতি দিয়েও। এ লড়াই শয়তানের বিরুদ্ধে, শয়তানের দোসর কাফেরদের বিরুদ্ধে। একইভাবে লড়াইয়ের যত মাধ্যম, সবকিছু দিয়ে কাফেররাও লড়াই করে যায়, মুমিনদের বিরুদ্ধে, ইমান ও ইসলামের বিরুদ্ধে।
সঙ্গত কারণেই যে মুমিন, যে আল্লাহ তা’আলার দলভুক্ত, তাকে লড়াই করতেই হবে। শয়তান তো লড়াই করেই যাচ্ছে। তাই এ লড়াই থেকে পিছু হটার কিংবা নিজে কেবলই দর্শক হয়ে থাকার কোনো সুযোগ নেই। এ লড়াই নিজের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। এ লড়াই নিজেকে আল্লাহ তা’আলার দলে টিকিয়ে রাখারও লড়াই।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তা’আলা নিজেকে কেবল মুমিনদের অভিভাবক হিসেবেই ঘোষণা করেছেন- এমন নয় বরং মুমিনদেরকেও পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন আল্লাহ তা’আলার বন্ধু হিসেবে। তিনি ইরশাদ করেছেন : শুনে রেখো, নিশ্চয়ই আল্লাহর বন্ধুদের কোনো ভয় নেই, তারা দুঃখিতও হবে না- যারা ইমান এনেছে এবং তাকওয়া অবলম্বন করেছে। (সূরা ইউনুস : ৬২-৬৩)।
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
কিশোরগঞ্জের আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার কামালসহ তিনজন গ্রেফতার
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত
উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
গাজায় যুদ্ধবিরতি ছাড়া বন্দী বিনিময় হবে না : হামাস
শান্তিরক্ষা মিশন মোতায়েন করতে চায় জাতিসংঘ হাইতিতে
চকরিয়ার বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরীর মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাসিনা আহমদের শোক
পুতিন পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করতে দ্বিধা করবেন না : সার্বিয়া
ক্লাইমেট অর্থায়ন ইস্যুতে দেশগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব
লালমোহনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
ট্রাম্পের অ্যাটর্নির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন আটকে গেল
‘ফিলিস্তিনের পর ইরান, সউদী ও তুরস্ক হবে পরবর্তী টার্গেট’
প্রতি বছর ৩ লাখ নথিবিহীন অভিবাসীকে বৈধতা দানের ঘোষণা স্পেনের
প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে সবচেয়ে অসুখী দেশ জাপান-কোরিয়া
মুসলিম চিকিৎসক
শীর্ষে দিল্লি
সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সংবর্ধনা
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অব গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সম্বর্ধনা
বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান
মানসিক সুস্থতায় কর্মবিরতি