অহঙ্কার-আত্মগরিমা নয়, বিনয় ও নম্রতা-২
২১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০২ এএম | আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০২ এএম
আল্লাহর রাসূল (সা.) যেমন তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও ব্যঙ্গ-বিদ্রƒপ নিষিদ্ধ করেছেন তেমনি নিষিদ্ধ করেছেন মিথ্যাচার, কপটচারিতা ও চাটুকারিতার মতো হীন স্বভাব ও আচরণও। সমাজের কিছু লোকের মধ্যে দর্প-অহঙ্কার দৃঢ় ও বদ্ধমূল হওয়ার পেছনে এক শ্রেণির মেরুদণ্ডহীন লোকের অতিরঞ্জন, অতিভক্তি ও তোষামুদে আচরণেরও বিরাট প্রভাব থাকে। আল্লাহর রাসূল (সা.) তাঁর নিজের সম্পর্কে উম্মতকে নির্দেশ দিয়ে গেছেন : তোমরা আমার সম্পর্কে অতিরঞ্জন করো না যেমন খ্রিষ্টানরা ইবনে মারইয়ামের ব্যাপারে করেছে। আমি তো আল্লাহর বান্দা। সুতরাং তোমরা (আমার সম্পর্কে) বলবেÑ ‘আল্লাহর বান্দা ও রাসূল।’ (সহিহ বুখারি : ৩৪৪৫, ৬৮৩০)
হাদিস শরিফে তোষামোদকারীর মুখে মাটি নিক্ষেপ করতে বলা হয়েছে যাতে চাটুকার শ্রেণি নিরুৎসাহিত হয় এবং মুসলিম-সমাজে এই ব্যাধির বিস্তার ঘটতে না পারে। জ্ঞান-প্রজ্ঞাহীন কাঁচা মগজে তোষামোদের ক্রিয়া বিষতুল্য হয়ে থাকে। আর ধোঁকাবাজ, ভণ্ড, চাটুকারদের দ্বারা পরিবেষ্টিত থাকলে তো কথাই নেই। ঘরভর্তি প্রশংসা আর ন্যায়-অন্যায় সব কিছুতে অকুণ্ঠ সমর্থন-ধ্বনিতে নরক গুলজার হয়ে ওঠে।
এই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে অন্য সবাইকে ছোট মনে করার, তাদের দিকে তাকিয়ে নাক কুচকানোর, কপাল ভাঁজ করার স্বভাব গড়ে ওঠে। সমাজের যেখানেই এই প্রবণতার বিস্তার ঘটবে সেখানেই অন্যায়-অনাচার বাড়তে থাকবে। সদুপদেশ, সৎপরামর্শ ও গঠনমূলক সমালোচনার পরিবেশ বিলুপ্ত হবে। নীতি-নৈতিকতা ভূলুণ্ঠিত হবে। দেশ-জাতি রসাতলে যাবে।
সচেতন ব্যক্তিদের অজানা নয় যে, বর্তমান সভ্য দুনিয়ায় রাজনীতি-প্রশাসনসহ সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এই অবক্ষয় কী ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। অবস্থা এই দাঁড়িয়েছে যে, যে কোনো ধরনের বিচ্যুতি-বিভ্রান্তি, অন্যায়-অনাচারের সমর্থনের জন্যও সমর্থকের কোনো অভাব হয় না। সমাজ, রাষ্ট্র ও পৃথিবীকে এই ধ্বংসের পথ থেকে বাঁচানোর একমাত্র উপায় নবী (সা.) এর পবিত্র জীবনাদর্শের দিকে ফিরে আসা।
তাঁর শিক্ষা ও সাহচর্যে এমন এক জাতি তৈরি হয়েছিল, যারা ছিলেন চারিত্রিক দৃঢ়তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। স্তব-স্তুতির কোনো প্রয়োজন তাদের ছিল না। এইসব বেহুদা-আড়ম্বরে তারা অস্বস্তি ও আতঙ্ক বোধ করতেন। এর কুপ্রভাব সম্পর্কে তারা গভীরভাবে সচেতন ছিলেন। ইমাম বায়হাকি রাহ. বর্ণনা করেছেন যে, এক ব্যক্তি হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা.-কে লক্ষ্য করে বলেছিলেন : ‘হে সর্বোত্তম ব্যক্তি, হে সর্বোত্তম ব্যক্তির সন্তান!’
ইবনে ওমর রা. তার জবাবে বলেছিলেন : ‘আমি সর্বোত্তম ব্যক্তি নই, আমার বাবাও সর্বোত্তম ব্যক্তি নন। আমি তো আল্লাহর বান্দাদের একজন। আমি তাঁর দয়ার প্রত্যাশা করি। তাঁর শাস্তির ভয় করি। আল্লাহর কসম তোমরা তো এভাবে মানুষের পেছনে লেগে তাকে শেষ করে ছাড়বে।’ (আলমাদখাল ইলাস সুনানিল কুবরা, বায়হাকি : ১/৩৩৪, বর্ণনা-৫৪১)
আল্লাহর রাসূল (সা.) এর পবিত্র সাহচর্যে সাহাবায়ে কেরাম কত উন্নত মানসিকতার অধিকারী হয়েছিলেন! তাদের সুস্থ-স্বাভাবিক রুচি ও নির্মল-পরিচ্ছন্ন চেতনার মূলে ছিল ঈমান ও তাওহিদের বিশ্বাস। এটি নিছক মৌখিক সৌজন্যের ব্যাপার ছিল না। চেতনা-বিশ্বাসের অনেক গভীর থেকে উৎসারিত ছিল।
বিভাগ : শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র বৈঠক, হাসিনাকে ফেরানো নিয়ে আলোচনা থাকবে
রামু সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালিত
এক সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ল ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার
প্রবাসীদের যে জন্য সুখবর দিলো মালয়েশিয়া
জাবি শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় মামলা, তদন্ত কমিটি গঠন, ফটকে তালা, মশাল মিছিল
মাদকের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে থাকবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল
"নতুন সিনেমা নিয়ে ফিরছেন গ্লোবাল তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি"
ড. ইউনূসকে নিয়ে খালেদা জিয়ার পুরোনো যে বক্তব্য ভাইরাল
নতুন নির্বাচন কমিশনের প্রতি ইসলামী আন্দোলনের শুভ কামনা
আলোচনায় ফ্যাসিস্ট হাসিনার ‘টুস করে ফেলে দেয়ার’ হুমকি
দীর্ঘ ১৫ বছর সাংবাদিকরা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে পারেনি: খোকন
'ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে রয়েছে অভিনেতা তারিক আনাম খানের নাটক'
বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অব গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সম্বর্ধনা
সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সংবর্ধনা
লালমোহনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
চকরিয়ার বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরীর মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাসিনা আহমদের শোক
উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ