সতী নারী দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ
০৩ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ০৩ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৮ এএম
পুরুষের জন্য দুনিয়াতে সবচেয়ে চিত্তাকর্ষক বস্তু হলো নারী। নারী ছাড়া জীবন ধুসর মরুভূমি। জীবনের পূর্ণতার অপর নাম নারী। জান্নাতে আদমের আ: কোনো কিছুর অভাব ছিল না। তবুও তাঁর মন শান্ত ছিল না। একাকীত্ব ও নি:সঙ্গতা তাকে ব্যথিত করছিল সারাক্ষণ। ‘ইন্নাল্লাহা আলিমুম বিযাতিস সুদুর’ আল্লাহ তো অন্তর্যামী। তিনি আদমের মনের অস্থিরতার কারণ জানতেন। যদিও আদম এ ব্যাপারে কিছুই জানতো না। নারী সম্পর্কে পূর্ব কোনো জ্ঞান তাঁর ছিল না। যে কারণে আল্লাহর কাছে আবদার জানানোরও প্রশ্ন ওঠেনা। অত:পর আদমের পাঁজর দ্বারা হাওয়াকে সৃষ্টি করে কাছে পাঠালে আদম শান্তি পেলেন। স্বস্তিবোধ করলেন। কুরআনে এসেছে, তিনিই সে সত্তা যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন এক ব্যক্তি থেকে এবং তার থেকে বানিয়েছেন তার সঙ্গিনীকে, যাতে সে তার নিকট প্রশান্তি লাভ করে। (সুরা আরাফ : ১৮৯)।
এখানে লক্ষণীয় বিষয় হলো, আল্লাহ তায়ালা আদমের জন্য অপর কোনো পুরুষ সঙ্গী না বানিয়ে নারী সঙ্গী বানালেন এবং তাদের বিয়ে দিলেন, যাতে তার জীবন সুখে ভরপুর হয়ে ওঠে। সুতরাং বলা যায় নারী সুখের মূল। প্রশান্তির শ্রেষ্ঠ উপকরণ। আদম সন্তানদের জনও আল্লাহ তায়ালা একই ভাষা ব্যবহার করলেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে সৃষ্টি করেছেন তোমাদের জোড়া (স্ত্রী) যাতে তোমরা তাদের কাছে শান্তি পাও এবং সৃজন করেছেন তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও সহমর্মিতা। (সুরা আর-রূম : ২১)।সুরা আলে ইমরানের ১৪ নং আয়াতে দুনিয়ার ভোগসামগ্রীর মধ্যে সর্বাপেক্ষা মোহনীয় যে কয়টি বস্তুর বর্ণনা এসেছে তন্মধ্যে নারীর স্থান সর্বাগ্রে। ইরশাদ হয়েছে, ‘মানুষের জন্য সুশোভিত করা হয়েছে প্রবৃত্তির ভালোবাসা- নারী, সন্তানাদি, রাশি রাশি সোনা-রূপা, চিিহ্নত ঘোড়া, গবাদি পশু ও শস্যক্ষেত। এগুলো দুনিয়ার জীবনের ভোগসামগ্রী।’ কোনো শ্রেষ্ঠ বস্তু ততক্ষণ শ্রেষ্ঠ থাকে যতক্ষন তার গুণাগুণ বৈশিষ্ট্য সঠিক থাকে। কিন্তু যখন সে তার আপন গুণ হারায়, বৈশিষ্ট্য নষ্ট করে দেয় তখন তা বিষাক্ত হয়ে ওঠে।
উপকারের স্থলে ক্ষতি করে। উদাহরণস্বরূপ দুধ-মাখনের কথা বলা যায়। ভালো থাকলে তাদের যে কদর পঁচে গেলে বা নষ্ট হলে তার কিন্তু কোনো কদরই থাকে না। ঠিক তেমন নারীর বিষয়টিও। সে যতক্ষণ আপন গুণ ধরে রাখতে পারে ততক্ষণ তাকে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ বলা যায়। হাদিসে নবিজি সা : বলেন, ‘সতী নারী দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ।’ (সহিহ মুসলিম : ১৪৬৭)। অপর দিকে বৈশিষ্ট্য হারালে তাকে আর সম্পদ বলা চলে না। হাদিসের ভাষায় সে হয় তখন ‘শয়তানের জাল বা রশি’। (মিশকাত : ৫২১২)। মূলত একথা দুশ্চরিত্র নারীর ব্যাপারেই বলা হয়েছে। অপর একটি হাদিসে নারী থেকে সরে থাকার নির্দেশ এসেছে। (সহিহ মুসলিম : ২৭৪২)। সেটাও আসলে গুণহীন খারাপ নারী সম্পর্কে বলা হয়েছে।
এখন আমরা প্রকৃত নারী ও সতী নারীর কুরআন হাদিস ভিত্তিক কিছু গুণাগুন বা বৈশিষ্ট্য তুলে ধরা হলো : আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘অতএব যারা সতী-সাধ্বী স্ত্রীলোক তারা তাদের স্বামীদের ব্যাপারে আল্লাহর হুকুম পালনকারী এবং স্বামীদের অনুপস্থিতিতে গোপনীয় বিষয়গুলোর হেফাযতকারী হয়ে থাকে।’ (সুরা নিসা : ৩৪)। এই আয়াতে ভালো নারীর তিনটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করা হয়েছে- ১. সতী-সাধ্বী : আর তারা হলো সেসব নারী যারা অসাধু ও দৃষ্টিকটু আচরণ থেকে বেঁচে থাকে। ২. আল্লাহর বিধান মান্যকারী : অর্থাৎ যারা আল্লাহ হুকুম যথাসাধ্য সর্বদা মেনে চলার চেষ্টা করে। ভুল হলে তাওবা করে ফিরে আসে। ৩. স্বামীর অনুপস্থিতিতে গোপনীয়তা রক্ষাকারী।
অন্য আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘নবি যদি তোমাদের সবাইকে তালাক দেন তাহলে অসম্ভব নয় যে, আল্লাহ নবিকে তোমাদের পরিবর্তে এমন সব স্ত্রী দেবেন যারা তোমাদের চেয়ে উত্তম হবে। যারা হবে সত্যিকার মুসলিম, অনুগত, তওবাকারী, ইবাদাতকারী, সিয়াম পালনকারী, কুমারী কিংবা অকুমারী।’ (সুরা তাহরিম : ৫)। এ আয়াতে ভালো নারীর ছয়টি গুণ উল্লেখ হয়েছে- ১. মুসলিম : এমন স্ত্রী যারা একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর হুকুম পালন করতে সর্বদা প্রস্তুত থাকে। ২. মুমিন : যে খাটিভাবে ইমান গ্রহণ করেছে। ৩. আনুগত্যশীল : অর্থাৎ যে নারী আল্লাহ, রাসুল ও স্বামীর আনুগত্য করে। ৪. তওবাকারী : এমন স্ত্রী লোক যারা কোনো অন্যায় কাজ করলে জেদ বা অহঙ্কার না করে আল্লাহ কাছে তাওবা করে এবং ভবিষ্যতে এমন কাজ করবে না বলে দৃঢ় সংকল্প করে। ৫. ইবাদাতকারী : অর্থাৎ শরীয়ত নির্ধারিত ফরয-ওয়াজিব ইবাদাতগুলো সঠিকভাবে যারা আদায় করে। ৬. সিয়াম পালনকারী : তথা ফরয সিয়াম পালন করে। সাধ্যমত নফল পালনেরও চেষ্টা করে। সতী নারীর ব্যাপারে রাসুল (সা : ) বলেন, ‘তোমাদের মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে উত্তম হচ্ছে এমন নারী যে, বন্ধুভাবাপন্ন, ঘন ঘন সন্তান প্রসবকারী, সমব্যথী, সান্তনা দানকারী ও সহযোগী’ (সিলসিলা সহিহাহ : ১৮৪৯, ১৯৫২)।
হাদিসটিতে ভালো নারীর চারটি বৈশিষ্ট্য বর্ণিত হয়েছে। যথা- ১. স্বামীর প্রতি গভীর অনুরাগী ও বন্ধুভাবাপন্ন হওয়া। ২. অধিক সন্তান প্রসব করা। দারিদ্রের ভয়ে সন্তান নেয়া বন্ধ না করা। কেননা রিযিকের মালিক একমাত্র আল্লাহ। ৩. স্বামীর কাজে সহযোগিতা করা। ইবাদত-বন্দেগি হতে শুরু করে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক সব কাজে তাকে সহযোগিতা করা। ৪. সমব্যথী হওয়া। অর্থাৎ স্বামীর দুঃখে দুঃখী হওয়া এবং তাকে প্রবোধ দেয়া। সুতরাং কোনো নারী যখন এসব গুণে গুণবতী হবে তখন সে হবে দুনিয়ার শ্রেষ্ঠ সম্পদ। পুরুষের প্রশান্তির উপকরণ। চক্ষুশীতলকারী বস্তু। নতুবা সে হবে তার গলার কাটা। জীবন ধ্বংসকারী বিষ।
বিভাগ : ইসলামী জীবন
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
কলকাতায় বাংলাদেশ উপ হাইকমিশনের নিরাপত্তা জোরদার
‘সাইবার মানডে’ উপলক্ষে ওয়েব হোস্টিংয়ে লিমডা হোস্টে চলছে ৬০% পর্যন্ত ছাড়!
ঢাকায় আসছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রী
ফ্যাসিস্ট সরকারের ৮ বছরের নিষেধাজ্ঞার পর অবশেষে মঞ্চে আসছে থিয়েট্রিক্যাল বাহাস ও কন্ঠনালীতে সূর্য
মিলেছে ‘হারিছ চৌধুরী’র ডিএনএ, রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় দাফনের নির্দেশ
নাম পরিবর্তনের দাবি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের
গলায় ফাঁস দিয়ে বৃদ্ধের আত্মহত্যা
আইএসের নৃশংসতার বিচারে জাতিসংঘ ব্যর্থ : নাদিয়া মুরাদ
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ইসকন নিষিদ্ধের দাবিতে হেফাজতের মানববন্ধন
মানিকগঞ্জে হাঙ্গার প্রজেক্টের গণতন্ত্র অলিম্পিয়াড অনুষ্ঠিত
এবার ভারতের মালদহে বাংলাদেশিদের জন্য হোটেল ভাড়া বন্ধ ঘোষণা
কিশোরগঞ্জের হাওর-অর্থনীতি বেগবান করতে চলছে কয়েকশ কোটি টাকার প্রকল্প
প্লাস্টিক ব্যবহার রোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে: অতিরিক্ত সচিব ফাহমিদা খানম
দেশের ৬৯ কারাগারের ১৯টি ঝুঁকিপূর্ণ, ৭০ জঙ্গিসহ ৭০০ বন্দি এখনো পলাতক
পায়রার রাজস্ব আয় বাড়বে তিনগুণ, দেশের অর্থনীতিতে রাখবে বড় ভূমিকা
মমতা ব্যানার্জির মনে গভীর কট্টরপন্থি হিন্দুত্ববাদ : রিজভী
কঠিন সময় পার করছে বাংলাদেশ : প্রধান উপদেষ্টা
কুড়িগ্রামে সাবেক এমপি পুত্র সবুজ গ্রেফতার
ভারতে ৫.৩ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প
অমৃতসরে স্বর্ণ মন্দিরে পাঞ্জাবের সাবেক উপমুখ্যমন্ত্রী সুখবীর সিং বাদালের ওপর গুলিবর্ষণ