ঢাকা   রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কি এরদোগানের শেষের শুরু?

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

১৭ এপ্রিল ২০২৩, ০৮:১৮ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:৫৬ পিএম

তুরস্কের আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ১৪ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। ধারণা করা হচ্ছে, এবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগানকে নির্বাচনে কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখে পড়তে হবে। দুই দশক ক্ষমতায় থাকার পর এবারই তিনি সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে নির্বাচনে লড়াই করবেন। তুর্কি রাজধানীর একটি নির্বাচনি জেলার এক তরুণ ভোটার বলেন, তুরস্কের জন্য এরদোগান পিতৃতুল্য ব্যক্তি। ২০ বছর ধরে তিনি দেশ পরিচালনা করছেন। আমি মনে করি না যে তাকে দেশ পরিচালনা থেকে সরানো অসম্ভব। কিন্তু তার বিরোধীদের মধ্যে এমন কোনও নেতা নেই যিনি তার স্থান নেবেন। অপর এক তরুণ ভোটার দীর্ঘদিন ধরে তুরস্কের বিরোধী দল রিপাবলিকান পিপল’স পার্টি (সিএইচপি)-এর সমর্থক। কান নামের এই ভোটার বলেছেন, এরদোগান খুব ভালো দেশ পরিচালনা করেছেন বলে আমার মনে হয়। আমি চাই ক্ষমতায় যারা আছেন তারা মানুষের কথা শুনুন। আমি আসলেই মনে করি এবার এরদোগানের পতন হতে পারে অথবা অন্তত আমি এমনটি আশা করি। জনমত জরিপে দেখা গেছে, এবারের নির্বাচনে এরদোগানকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে। তার সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী কামাল কিলিকদারোগলু। সাবেক হিসাবরক্ষক এই আমলা জরিপে কিছুটা এগিয়ে রয়েছেন। তুরস্কের বিরোধিরা ছয়টি দলের একটি জোট। এর নেতৃত্বে রয়েছে কিলিকদারোগলু। তাদের মূল লক্ষ্য হলো এরদোগানকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করা। তারা মনে করছেন, দেশ যে সংকটের মধ্যে রয়েছে তাতে করে এরদোগানকে পরাজিত করা তাদের জন্য সহজ হবে। অর্থনৈতিক সংকট ও বিপর্যয়কর ভূমিকম্পে দেশটির পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। যা এরদোগানের জন্য ইতিবাচক নয়। রাজধানী আঙ্কারার এক বয়স্ক ভোটার হাসান বলেছেন, জীবনে প্রথমবারের মতো তিনি একেপি বা এরদোগানকে ভোট দেবেন না। কারণ তারা আমার সব টাকা-পয়সা কেড়ে নিয়েছে। এখানে আমরা যে কাপড় বিক্রি করছি তা পাইকারি দামে কিনতে আমাদের আগের চেয়ে পাঁচগুণ বেশি দিয়ে কিনতে হচ্ছে। আমার ভাড়া বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। ডেমোক্র্যাসি অ্যান্ড প্রগ্রেস পার্টির নেতা ইব্রাহিম জানাকসি মনে করেন, অর্থনীতির পরিস্থিতি স্পষ্ট, মূল্যস্ফীতি, দারিদ্র। প্রেসিডেন্ট শাসিত ব্যবস্থায় এগুলোর অবনতি হয়েছে। এরদোগান মন্ত্রীদের এবং বিদেশি সংস্থাকে দায়ী করে আসছেন। কিন্তু মানুষ এখন স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে এটি একজনের শাসিত ব্যবস্থা। ফলে এই ফলাফলের জন্য শুধু এক ব্যক্তি দায়ী। দুই দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা এরদোগান ও তার একেপি পার্টিকে নির্বাচনে পরাজিত করা সহজ কাজ হবে না বিরোধীদের। অনেক জরিপে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, এরদোগানবিরোধীরা পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে পারে। তবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি। প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনে জয়ী না হলে প্রতিশ্রুতি মোতাবেক সংবিধান সংশোধন করতে পারবে না বিরোধীরা। এক্ষেত্রে পার্লামেন্টে একেপি পার্টি জয়ী না হলেও এরদোগান যদি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন তাহলে তিনি ক্ষমতা আরও নিজের কুক্ষিগত করতে পারেন। এতে করে বিরোধীরা কোনও সুফল পাবে না। তবে কিলিকদারোগলুর এক সহকারী ও এক নিষ্ঠ সমর্থক ওনুরসাল আদিগুজেল বলেন, ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি আমাদের জন্য পার্লামেন্ট নির্বাচনে জয়ী হওয়ার চেয়ে এরদোগানকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হারানো সহজ হতে পারে। দুই বছর আগে কিলিকদারোগলুকে এরদোগানের কঠিন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচনা করা হতো না। কিন্তু এখন তিনি জরিপে শীর্ষস্থানে রয়েছেন। সর্বোপরি তিনি হলেন এমন ব্যক্তি যিনি তুরস্কে শান্তি স্থাপন করতে পারবেন। তিনি এরদোগানের মতো বিভাজনের ভাষা ব্যবহার করছেন না। পরিবর্তনের জন্য এরদোগানের বিকল্প হিসেবে কিলিকদারোগলুকে সামনে আনছেন দল ও সমর্থকরা। ইব্রাহিম জানাকসি বলেন, এরদোগান হারবেন এবং কিলিকদারোগলু নির্বাচনে জয়ী হবেন­ এই বিষয়ে আমরা আত্মবিশ্বাসী। দ্য গার্ডিয়ান।


বিভাগ : ইসলামী বিশ্ব


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে ভিসা দেওয়ার দাবি হেফাজতের নায়েবে আমিরের
ইসরাইলকে স্বীকৃতি নয়, ফিলিস্তিনকে সহায়তা দেবে মালয়েশিয়া
কারাগারেই বসেই কোরআনের হাফেজ হলেন ১৩ হাজার কারাবন্দি
রাসূল (সা.)-এর রওজা শরিফ জিয়ারতে নতুন নির্দেশনা
ইসরাইল গাজায় মানবিক সাহায্য অবরোধের আইন লংঘন করেনি : যুক্তরাষ্ট্র
আরও

আরও পড়ুন

জর্ডানে ইসরাইলি দূতাবাসের কাছে গুলি, বন্দুকধারী নিহত

জর্ডানে ইসরাইলি দূতাবাসের কাছে গুলি, বন্দুকধারী নিহত

ট্রাম্পের জয়ের পর ইলন মাস্কের সম্পদ বাড়ছে রকেট গতিতে

ট্রাম্পের জয়ের পর ইলন মাস্কের সম্পদ বাড়ছে রকেট গতিতে

ভয়াবহ তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্য, বহু ফ্লাইট বাতিল

ভয়াবহ তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্য, বহু ফ্লাইট বাতিল

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ১২০ ফিলিস্তিনি

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ১২০ ফিলিস্তিনি

ইভেন্টের  সেরা লড়াইটি উপহার দিলেন আফরা-সানজিদা

ইভেন্টের সেরা লড়াইটি উপহার দিলেন আফরা-সানজিদা

ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান পাহাড়ের পর জয়-জাকিরকে হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ

ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান পাহাড়ের পর জয়-জাকিরকে হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ

নাটকীয় শেষ দশ মিনিটে দুই গোল শোধ করে বার্সাকে রুখে দিল সেল্তা

নাটকীয় শেষ দশ মিনিটে দুই গোল শোধ করে বার্সাকে রুখে দিল সেল্তা

বিবর্ণ সিটিকে ইতিহাদেই বিধ্বস্ত করলো টটেনহ্যাম

বিবর্ণ সিটিকে ইতিহাদেই বিধ্বস্ত করলো টটেনহ্যাম

নটিংহ্যামকে হারিয়ে চার ম্যাচের জয়খরা কাটালো আর্সেনাল

নটিংহ্যামকে হারিয়ে চার ম্যাচের জয়খরা কাটালো আর্সেনাল

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবী অত্যন্ত যৌক্তিক

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবী অত্যন্ত যৌক্তিক

পাঠ্যবই ছাপায় অনিয়মে আনন্দ প্রিন্টার্সকে সতর্কতা

পাঠ্যবই ছাপায় অনিয়মে আনন্দ প্রিন্টার্সকে সতর্কতা

দক্ষিণ লেবাননে ৬ চিকিৎসাকর্মী নিহত

দক্ষিণ লেবাননে ৬ চিকিৎসাকর্মী নিহত

জনগণের সাথে জনসংযোগ বাড়াতে হবে

জনগণের সাথে জনসংযোগ বাড়াতে হবে

আমরা যুদ্ধে বিশ্বাসী না কেউ গায়ে পড়লে জবাবের প্রস্তুতি রাখতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

আমরা যুদ্ধে বিশ্বাসী না কেউ গায়ে পড়লে জবাবের প্রস্তুতি রাখতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথের কাছে ২৭ রেফারির চিঠি

বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথের কাছে ২৭ রেফারির চিঠি

ফের বাড়লো সোনার দাম, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা

ফের বাড়লো সোনার দাম, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা

বাংলাদেশে খেলা নিয়ে অনিশ্চিয়তায় হামজা!

বাংলাদেশে খেলা নিয়ে অনিশ্চিয়তায় হামজা!

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই হবে অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফের খেলা

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই হবে অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফের খেলা

সিলেটে মাজিদের ফিফটি

সিলেটে মাজিদের ফিফটি

অ্যাম্বাসেডর কাপ উশুতে সেনাবাহিনী চ্যাম্পিয়ন

অ্যাম্বাসেডর কাপ উশুতে সেনাবাহিনী চ্যাম্পিয়ন