ঢাকা   রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সুস্থ হয়ে নির্বাচনী মঞ্চে ফিরলেন এরদোগান

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক :

৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:৪৮ পিএম | আপডেট: ০১ মে ২০২৩, ১২:১২ এএম

সুস্থ হয়ে আবারও নির্বাচনী প্রচারণায় ফিরেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েপ এরদোগান। গত সপ্তাহে পেটের সংক্রমণে আক্রান্ত হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তিনি। শনিবার তুরস্কের পূর্বদিকের বন্দর শহর ইজমিরে একটি জনসভায় অংশ নেন এরদোগান। পূর্ণ প্রাণচঞ্চলতা ও উদ্দাম নিয়ে হাজার হাজার সমর্থকের উদ্দেশ্যে এদিন ভাষণ দেন তিনি। ইজমিরের ওই জনসভায় এরদোগানের সমর্থকরা তাকে পতাকা নেড়ে স্বাগতম জানান। প্রখর রোদের মধ্যে প্রেসিডেন্ট এরদোগানের জন্য কয়েক ঘণ্টা অপেক্ষা করেন তারা। সম্প্রতি একটি লাইভ অনুষ্ঠানে সাক্ষাৎকার দেয়ার সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন এরদোগান। ওই সময় সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠান শেষ না করেই চলে যেতে বাধ্য হন তিনি। এরপর টানা তিনদিন কোনো জনসভায় অংশ নিতে পারেননি ৬৯ বছর বয়সী এরদোগান। কিন্তু জনসভায় তার মধ্যে অসুস্থতার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। আগামী ১৪ মে তুরস্কে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গত ২০ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা এরদোগানের জন্য এবারের নির্বাচনটি অন্যতম কঠিন পরীক্ষা হতে যাচ্ছে। তাকে ক্ষমতা থেকে সরানোর জন্য এক হয়েছে দেশটির সব বড় বিরোধীদলগুলো। বন্দর নগরী ইজমিরের জনসভায় এরদোগান প্রায় ৪০ মিনিট কথা বলেন। কঠোর স্বরে তিনি বিরোধীদলগুলোর সমালোচনা করেন, জঙ্গিবাদের আশঙ্কার কথা বলেন। তিনি দাবি করেন, শুধুমাত্র তার নেতৃত্বেই তুরস্ক উন্নতি করতে পারবে। অসুস্থ হয়ে পড়ায় নির্বাচনে এরদোগানের প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সুস্থ হয়ে ফিরেই আবারও নিজের পুরোনো রূপে আবির্ভূত হন তিনি। সেখানে উপস্থিত এরদোগানের কয়েকজন সমর্থক সংবাদমাধ্যম বিবিসির সঙ্গে কথা বলেন। তাদের একজন ৪২ বছর বয়সী দুই সন্তানের মা গুরবেত দোস্তম। এরদোগানের অসুস্থতার খবর শুনে তিনি শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন জানিয়ে বলেছেন, ‘আমি যখন তার অসুস্থতার খবরটি শুনি। আমি আল্লাহকে বলেছিলাম তার অসুস্থতা যেন আমাকে দেন। আমি তার কষ্ট নিতে রাজী আছি। তিনি আমাদের সব দিয়েছেন।’ অপর এক খবরে বলা হয়, তুরস্কের ভোটাররা গত কয়েক বছর ধরেই বিভক্ত। কিন্তু ৬৯ বছর বয়সী এরদোগানএবার যতোটা চাপের মুখে পড়েছেন, এর আগে এরকম কখনো হয়নি। রজব তাইয়েব এরদোগানের জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি সংক্ষেপে এ কে পার্টি ২০০২ সালের নভেম্বর মাস থেকে ক্ষমতায় এবং এরদোগান তুরস্ক শাসন করে আসছেন ২০০৩ সাল থেকে। এবারের নির্বাচনে প্রায় ৬০ লাখ নতুন ভোটার ভোট দেবেন যারা এরদোগান ছাড়া আর কোনো রাজনৈতিক নেতাকে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে দেখেননি। এরদোগান শুরুতে ছিলেন তুরস্কের প্রধানমন্ত্রী। ২০১৪ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট হন এবং ২০১৬ সালে ব্যর্থ এক সামরিক অভ্যুত্থানের পর নাটকীয়ভাবে তিনি তার ক্ষমতা বৃদ্ধি করেন। হয়ে ওঠেন একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী। এখন তিনি বিশাল একটি প্রাসাদ থেকে রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। দেশটির বেশিরভাগ মিডিয়াই তার মিত্রদের নিয়ন্ত্রণে। তুরস্কে ৬০০ আসনের পার্লামেন্টে স্থান পেতে হলে একটি দলকে, অথবা ওই দলটি যে জোটের সদস্য তাদেরকে অন্তত সাত শতাংশ ভোট পেতে হবে। এ কারণে দেশটিতে জোটের রাজনীতি এতোটা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ছয়টি দল নিয়ে গঠিত বিরোধী জোট নির্বাচনে জয়ী হলে যেসব সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তার একটি হচ্ছে এই নিয়ম পরিবর্তন করা। তুরস্কের নির্বাচনী ব্যবস্থায় ভোটাররা প্রার্থীকে নয়, বরং তাদের পছন্দের দলকে ভোট দিয়ে থাকে। এই পদ্ধতিতে একটি দল যতো ভোট পায় সে অনুপাতে তাদের আসন সংখ্যা নির্ধারিত হয়। এ কারণে আসছে পার্লামেন্ট নির্বাচনে ন্যাশন্স এলায়েন্সের চারটি ছোট শরিক দল সিএইচপি এবং জাতীয়তাবাদী গুড পার্টি এই বড় দুটো দলের ব্যানারে অংশ নেবে। ক্ষমতাসীন ও প্রেসিডেন্ট এরদোগানের রাজনৈতিক দল এ কে পার্টি পিপলস অ্যালায়েন্সের সদস্য। তবে এই জোটের প্রত্যেকটি দল আলাদা আলাদাভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। প্রেসিডেন্ট এরদোগান শাসনব্যবস্থায় যে পরিবর্তন এনেছেন তার ফলে প্রেসিডেন্টই সরকার গঠন করেন। এখানে কোনো প্রধানমন্ত্রী নেই। আগামী নির্বাচনে তার পিপলস অ্যালায়েন্স যদি পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে এখন তিনি যেভাবে শাসন করছেন সেভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারবেন না। বর্তমান পার্লামেন্টে এরদোগানপন্থী পিপলস অ্যালায়েন্সের ৩৩৪ জন এমপি রয়েছেন। এরদোগান এর মধ্যেই দুবার দুই মেয়াদে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেছেন। ফলে তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিলে সেটা তুরস্কের সংবিধানের লঙ্ঘন বলে বিবেচিত হতে পারে। বিবিসি।


বিভাগ : ইসলামী বিশ্ব


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে ভিসা দেওয়ার দাবি হেফাজতের নায়েবে আমিরের
ইসরাইলকে স্বীকৃতি নয়, ফিলিস্তিনকে সহায়তা দেবে মালয়েশিয়া
কারাগারেই বসেই কোরআনের হাফেজ হলেন ১৩ হাজার কারাবন্দি
রাসূল (সা.)-এর রওজা শরিফ জিয়ারতে নতুন নির্দেশনা
ইসরাইল গাজায় মানবিক সাহায্য অবরোধের আইন লংঘন করেনি : যুক্তরাষ্ট্র
আরও

আরও পড়ুন

ট্রাম্পের জয়ের পর ইলন মাস্কের সম্পদ বাড়ছে রকেট গতিতে

ট্রাম্পের জয়ের পর ইলন মাস্কের সম্পদ বাড়ছে রকেট গতিতে

ভয়াবহ তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্য, বহু ফ্লাইট বাতিল

ভয়াবহ তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্য, বহু ফ্লাইট বাতিল

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ১২০ ফিলিস্তিনি

ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ১২০ ফিলিস্তিনি

ইভেন্টের  সেরা লড়াইটি উপহার দিলেন আফরা-সানজিদা

ইভেন্টের সেরা লড়াইটি উপহার দিলেন আফরা-সানজিদা

ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান পাহাড়ের পর জয়-জাকিরকে হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ

ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান পাহাড়ের পর জয়-জাকিরকে হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ

নাটকীয় শেষ দশ মিনিটে দুই গোল শোধ করে বার্সাকে রুখে দিল সেল্তা

নাটকীয় শেষ দশ মিনিটে দুই গোল শোধ করে বার্সাকে রুখে দিল সেল্তা

বিবর্ণ সিটিকে ইতিহাদেই বিধ্বস্ত করলো টটেনহ্যাম

বিবর্ণ সিটিকে ইতিহাদেই বিধ্বস্ত করলো টটেনহ্যাম

নটিংহ্যামকে হারিয়ে চার ম্যাচের জয়খরা কাটালো আর্সেনাল

নটিংহ্যামকে হারিয়ে চার ম্যাচের জয়খরা কাটালো আর্সেনাল

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবী অত্যন্ত যৌক্তিক

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবী অত্যন্ত যৌক্তিক

পাঠ্যবই ছাপায় অনিয়মে আনন্দ প্রিন্টার্সকে সতর্কতা

পাঠ্যবই ছাপায় অনিয়মে আনন্দ প্রিন্টার্সকে সতর্কতা

দক্ষিণ লেবাননে ৬ চিকিৎসাকর্মী নিহত

দক্ষিণ লেবাননে ৬ চিকিৎসাকর্মী নিহত

জনগণের সাথে জনসংযোগ বাড়াতে হবে

জনগণের সাথে জনসংযোগ বাড়াতে হবে

আমরা যুদ্ধে বিশ্বাসী না কেউ গায়ে পড়লে জবাবের প্রস্তুতি রাখতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

আমরা যুদ্ধে বিশ্বাসী না কেউ গায়ে পড়লে জবাবের প্রস্তুতি রাখতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথের কাছে ২৭ রেফারির চিঠি

বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথের কাছে ২৭ রেফারির চিঠি

ফের বাড়লো সোনার দাম, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা

ফের বাড়লো সোনার দাম, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা

বাংলাদেশে খেলা নিয়ে অনিশ্চিয়তায় হামজা!

বাংলাদেশে খেলা নিয়ে অনিশ্চিয়তায় হামজা!

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই হবে অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফের খেলা

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই হবে অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফের খেলা

সিলেটে মাজিদের ফিফটি

সিলেটে মাজিদের ফিফটি

অ্যাম্বাসেডর কাপ উশুতে সেনাবাহিনী চ্যাম্পিয়ন

অ্যাম্বাসেডর কাপ উশুতে সেনাবাহিনী চ্যাম্পিয়ন

মাদক শুধু ব্যক্তিকে নয় পরিবারকেও ধ্বংস করে

মাদক শুধু ব্যক্তিকে নয় পরিবারকেও ধ্বংস করে