প্রস্তাব প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ

আমরা বাড়ি ছাড়ব না মারব অথবা মরব

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

১৪ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০০ এএম | আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০০ এএম

চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে উত্তর গাজা খালি করার ইসরাইলি নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করে গাজাভিত্তিক ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস বলেছে, তারা তাদের মাতৃভূমি ত্যাগ করবে না। তারা হয় শত্রুদের পরাজিত করবেন, কিংবা নিজের বাড়িতেই মরবেন। ইসরাইল উত্তর গাজার ১১ লাখ বাসিন্দাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভূখ-ের দক্ষিঞ্চালয় ছেড়ে যেতে বলার প্রেক্ষাপটে হামাস এই মন্তব্য করল। হামাসের রাজনৈতিক ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ব্যুরোর প্রধান বাসেম নাইম বলেন, ‘আমাদের কাছে মাত্র দুটি বিকল্প আছে : হয় এই দখলদারদের পরাজিত করা কিংবা আমাদের বাড়িতে মৃত্যুবরণ করা। তিনি বলেন, ‘আমরা চলে যাব না। আমরা আরেকটি নাকবার পুনরাবৃত্তি ঘটতে প্রস্তুত নই।’ তিনি এ দিয়ে ১৯৪৮ সালে ইসরাইল প্রতিষ্ঠার সময় নৃশংসতার মুখে ফিলিস্তিনিদের ব্যাপকভাবে বাস্তুচ্যুত করার কথা উল্লেখ করেন। নাইম বলেন, গত শনিবারের হামলাটি ছিল ১৭ বছর ধরে গাজাকে অবরুদ্ধ করে রাখার ফল। তিনি বলেন, আমরা নীরবে মারা যাচ্ছি। আমরা উন্মুক্ত-কারাগার থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করছি। আমরা আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আমাদের কণ্ঠ পৌঁছানোর চেষ্টা করছি। আমরা যা করছি, তা আত্মরক্ষামূলক কাজ। আমরা আমাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, আমরা স্বাধীনতা ও মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে চাই। আমরা এই দখলদারিত্ব থেকে মুক্তি পেতে চাই। এটা হলো এই অঞ্চলের সকল সমস্যার মূল কারণ। উত্তর গাজার ১১ লাখ বাসিন্দাকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ভূখ-ের দক্ষিণাঞ্চল ছেড়ে যেতে বলেছে ইসরাইল। এদিকে মানবিক কারণে জাতিসংঘ এই আদেশ প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে। জাতিসংঘের একজন মুখপাত্র বৃহস্পতিবার এএফপি’কে একথা বলেছেন। গাজায় কর্মরত জাতিসঙ্ঘ কর্মকর্তাদের ইসরাইলি সামরিক বাহিনী জানিয়েছে ‘ওয়াদি গাজার উত্তরে গাজার সমগ্র জনসংখ্যাকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণ গাজায় পাঠিয়ে দেয়া হবে।’ জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এএফপি’কে বলেছেন, এই এলাকায় জনসংখ্যা প্রায় ১১ লাখ । ডুজারিক বলেছেন, একই আদেশ স্কুল, স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ক্লিনিকসহ জাতিসঙ্ঘের সমস্ত কর্মী এবং জাতিসঙ্ঘের স্থাপনাগুলোতে আশ্রয়প্রাপ্তদের জন্যও প্রযোজ্য হবে। ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তুদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা (ইউএনআরডব্লিউএ) সাম্প্রতিক দিনগুলোতে গাজা উপত্যকায় বাস্তুচ্যুত ৪ লাখ ২৩ হাজার মানুষের মধ্যে ৬০ শতাংশেরও বেশি লোককে আশ্রয় দিচ্ছে। ওয়াদি গাজার উত্তরে বর্তমানে কতজন লোক অবস্থান করছে তা তাৎক্ষণিকভাবে স্পষ্ট নয়। ডুজারিক বলেন, ‘বিধ্বংসী মানবিক পরিণতি ছাড়া এই ধরনের স্থানান্তর করা অসম্ভব বলে মনে করে জাতিসংঘ।’ ‘একটি ট্র্যাজেডিকে একটি বিপর্যয়কর পরিস্থিতিতে রূপান্তরিত হওয়া এড়াতে এই ধরনের যে কোনো আদেশ প্রত্যাহরে জাতিসংঘ দৃঢ় আবেদন জানায়। ইতিমধ্যেই সেখানে ভয়ংকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে।’ গত শনিবার হামাসের হামলায় ১,২০০ জনেরও বেশি ইসরাইলি মারা যায় এবং প্রায় ১৫০ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে আসে। ইসরাইল প্রতিশোধ নিতে ২৩ লাখ লোকের একটি ঘনবসতিপূর্ণ গাজায় ভয়াবহ বিমান ও কামানের গোলা নিক্ষেপ করেছে। এতে ভবনগুলো মাটির সাথে মিশে যায়। এতে এই পর্যন্ত ইসরাইল ১,৪০০ জনেরও বেশি লোককে হত্যা করেছে, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই বেসামরিক। আল-জাজিরা, এএফপি।

 

 


বিভাগ : ইসলামী বিশ্ব


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে মুসলিম শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় প্রথম যৌথ দলিল অনুমোদন করবে ইসলামী দেশগুলো
ভারতকে জবাব দিতে ইমরান খানের মুক্তি চায় পিটিআই
গাজায় ইহুদি হামলায় শহীদ আরো ৭১
শিয়ায় সেরার তালিকায় ইরানের ৮৫ বিশ্ববিদ্যালয়
আরও
X
  

আরও পড়ুন

লাকসামে আড়াই বছরের শিশু নিখোঁজের একদিন পর ডোবা থেকে লাশ উদ্ধার

লাকসামে আড়াই বছরের শিশু নিখোঁজের একদিন পর ডোবা থেকে লাশ উদ্ধার

নাটোরের বরেণ্য সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা পিপলু ইন্তেকাল করেছেন

নাটোরের বরেণ্য সাংবাদিক ও মুক্তিযোদ্ধা পিপলু ইন্তেকাল করেছেন

বামনায় ছেলে বন্ধুকে বিয়ে করতে না পারায় কলেজ ছাত্রের আত্মহত্যা

বামনায় ছেলে বন্ধুকে বিয়ে করতে না পারায় কলেজ ছাত্রের আত্মহত্যা

কলাপাড়ার বিএনপি নেতা মোস্তাফিজুর রহমান ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে যোগ দিলেন

কলাপাড়ার বিএনপি নেতা মোস্তাফিজুর রহমান ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে যোগ দিলেন

কমলনগরে প্রাথমিক শিক্ষকদের দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন

কমলনগরে প্রাথমিক শিক্ষকদের দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালন

বিচারহীনতার সংষ্কৃতি অপরাধ ও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় : ডা. রফিকুল ইসলাম

বিচারহীনতার সংষ্কৃতি অপরাধ ও অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় : ডা. রফিকুল ইসলাম

সেন্টমার্টিন নিয়ে কেন এই লুকোচুরি? সরকারের সিদ্ধান্ত রহস্যজনক

সেন্টমার্টিন নিয়ে কেন এই লুকোচুরি? সরকারের সিদ্ধান্ত রহস্যজনক

ছাগলনাইয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপারের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

ছাগলনাইয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপারের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠিত

ছাত্রদল নেতা ফরহাদকে স্বপদে পূনবর্হালের দাবিতে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

ছাত্রদল নেতা ফরহাদকে স্বপদে পূনবর্হালের দাবিতে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন

বিচারককে গ্রেপ্তার করে তোপের মুখে ট্রাম্প

বিচারককে গ্রেপ্তার করে তোপের মুখে ট্রাম্প

চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১৫ মে থেকে আম সংগ্রহ শুরু

চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১৫ মে থেকে আম সংগ্রহ শুরু

কুয়েট শিক্ষার্থীর পুকুরে গোসল করতে নেমে মৃত্যু

কুয়েট শিক্ষার্থীর পুকুরে গোসল করতে নেমে মৃত্যু

৪ লাখ অভিবাসীর বৈধ মর্যাদা বাতিলে ট্রাম্পের আবেদন প্রত্যাখ্যান

৪ লাখ অভিবাসীর বৈধ মর্যাদা বাতিলে ট্রাম্পের আবেদন প্রত্যাখ্যান

নতুন প্রজন্মের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করছে ইউজিসি

নতুন প্রজন্মের প্রত্যাশা পূরণে কাজ করছে ইউজিসি

হাউজে মাছ চাষ, চাল বরাদ্দ পেলেন মিল মালিক

হাউজে মাছ চাষ, চাল বরাদ্দ পেলেন মিল মালিক

‘গণতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময়ে’ বাংলাদেশে ফিরেছেন খালেদা জিয়া

‘গণতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সময়ে’ বাংলাদেশে ফিরেছেন খালেদা জিয়া

শ্রীপুরে এসএসসি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে গিয়ে আটক দুই

শ্রীপুরে এসএসসি পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে গিয়ে আটক দুই

কুয়াকাটায় পর্যটককে মারধর করে ৪০ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে যুবদল সভাপতিসহ গ্রেফতার -৩

কুয়াকাটায় পর্যটককে মারধর করে ৪০ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগে যুবদল সভাপতিসহ গ্রেফতার -৩

সাভারে মেট্রো রেলের ডিপোতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান

সাভারে মেট্রো রেলের ডিপোতে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান

পঞ্চগড়ে হাফেজা ছাত্রীদের সংবর্ধনা ও দোয়া অনুষ্ঠান

পঞ্চগড়ে হাফেজা ছাত্রীদের সংবর্ধনা ও দোয়া অনুষ্ঠান