ঢাকা   শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

স্বাধীনতার সুফল পেতে ইসলামী‘কল্যাণরাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : খেলাফত আন্দোলন

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

২৬ মার্চ ২০২৩, ০৮:৩৩ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:১৪ পিএম

বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির ও ঢাকা মহানগরীর আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী বলেছেন, স্বাধীনতা মহান আল্লাহ তাআলার অনেক বড় নিয়ামত। এটা একক কারোর অর্জন নয়। আমাদেরকে বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রকৃত ইতিহাস তুলে ধরতে হবে। স্বাধীনতার সুফল পেতে ইসলামী আদর্শনির্ভর ‘কল্যাণরাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠা করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যেখানে সুদ ঘুষ স্বজনপ্রীতি দুর্নীতি থাকবে না। দেশের সম্পদ বিদেশে পাচারের পথ চিরতরে বন্ধ হবে।

আজ রবিবার বিকেলে বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন ঢাকা মহানগরীর লালবাগ থানা শাখা আয়োজিত মহান স্বাধীনতার তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। থানা শাখা আহবায়ক মাওলানা হাফেজ সাইফুল ইসলাম জামালীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন। বক্তব্য রাখেন মহানগর নায়েবে আমীর মাওলানা ফিরোজ আশরাফী, মুফতী আখতারুজ্জামান আশরাফী, সহ সাধারণ সম্পাদক মুফতী নাঈম হোসাইন, মাষ্টার শরীফুল ইসলাম ও মাওলানা আবু বকর প্রমুখ।

মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী আরো বলেন, ব্রিটিশদের দখলদারিত্ব থেকে মুক্ত হয়ে ১৯৪৭ সালে পূর্ব বাংলার জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করেছিল ইসলাম ও মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার জন্য। কিন্তু পাকিস্তানী শাসককরা তাদের অঙ্গীকার রক্ষা ও নীতি-আদর্শে অটল থাকেনি। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার চর্চা সেখানে হয়নি। নেয়া হয়নি ইসলামী আদর্শনির্ভর ‘কল্যাণরাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগও। আঞ্চলিকতা-স্বজনপ্রীতি, জুলুম-অত্যাচার ও স্বৈরাচারী নীতির কারনে পাকিস্তানে চরম সংকট সৃষ্টি হয়।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের মুসলমানরা ১৯৪৭ থেকে ১৯৭০ পর্যন্ত বঞ্চিত হতে থাকে নিজেদের জীবনযাপনের সর্বপ্রকার মৌলিক অধিকার থেকে। সত্তরের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন নিরঙ্কুশ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হলেন। কিন্তু পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠি তাঁর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেনি। পাকসেনাচক্র হামলে পড়ল বাংলাদেশের জনগণের ওপর। ২৫ মার্চের ভয়ঙ্কর কাল রাতের সৃষ্টি করল। তখন বাংলাদেশের জনগণের স্বাধীনতা অর্জনের বিকল্প ছিল না। বাঙালি জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কাঙ্খিত স্বাধীনতার সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ৯ মাসের দীর্ঘ রক্তক্ষয়ী লড়াইয়ের পর স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। বাঙালি মুসলমানরা মুক্তি পায় পাকিস্তানি দুঃশাসন থেকে।

তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার সাথে ইসলামী চেতনার কোনো সঙ্ঘাত নেই। যারা এ নিয়ে সঙ্ঘাত সৃষ্টি করতে চায়, তারা দেশ ও জাতির দুশমন। মহান স্বাধীনতার সুফল সুরক্ষায় সরকারকে স্বার্থন্বেষী মহলের লুটপাট, দুর্নীতি ও বিদেশে সম্পদ পাচারের গলিপথ বন্ধ করতে হবে। যারা দেশের সম্পদ লোপাট করে সম্পদের পাহাড় গড়ে, তারা দেশপ্রেমিক হতে পারে না। মাওলানা সুলতান মহিউদ্দিন বলেন, ৭১ সালে স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু হয় ‘ইনশাআল্লাহ’র মাধ্যমে। মুক্তিযোদ্ধারা বিসমিল্লাহ এবং লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু বলে অস্ত্র তুলে ধরেন। আর আল্লাহর প্রতি শোকরিয়া আদায় এবং একটি সুখী সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গঠনে আল্লাহর সাহায্য কামনার মাধ্যমে শেষ করা হয়। বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধ ও ধর্মকে মুখোমুখি দাঁড় করানোর সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র চলছে। অর্জিত স্বাধীনতা রক্ষায় সব ষড়যন্ত্র রুখে দাঁড়াতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে মাওলানা সাইফুল ইসলাম বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় হাফেজ্জী হুজুরকে প্রশ্ন করা হয়েছিল যে, এক দিকে ইসলামের স্বার্থ রক্ষায় প্রতিষ্ঠিত পাকিস্তান, আরেক দিকে বাঙালিদের মুক্তিযুদ্ধ; আমরা কোন দিকে যাবো? তখন হাফেজ্জী হুজুর রহ: বলেন, পাকিস্তানিরা বাঙালিদের ওপর জুলুম-অত্যাচার করেছে। তারা জালিম। জুলুম আর ইসলাম কখনো এক হতে পারে না। এটা ইসলামের সাথে কুফরের যুদ্ধ নয়; বরং মুক্তিযুদ্ধ হলো জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াই। ৭১এর মুক্তিযুদ্ধ ইসলামের বিরুদ্ধে ছিল না।


বিভাগ : মহানগর


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

আইপিএলের মেগা নিলামে নজর বাংলাদেশের ১২ ক্রিকেটারের উপর

আইপিএলের মেগা নিলামে নজর বাংলাদেশের ১২ ক্রিকেটারের উপর

বেনাপোল থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ

বেনাপোল থেকে দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ

“রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ”

“রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ”

বিএনপিতে অনুপ্রবেশকারীর ঠাঁই হবে না: আমিনুল হক

বিএনপিতে অনুপ্রবেশকারীর ঠাঁই হবে না: আমিনুল হক

আলেম সমাজের সাথে ঐতিহাসিক সুসম্পর্ক রয়েছে বিএনপির: ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক নাছির

আলেম সমাজের সাথে ঐতিহাসিক সুসম্পর্ক রয়েছে বিএনপির: ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক নাছির

৪ দিনে ভারত থেকে এলো ৭২৫ মেট্রিক টন চাল

৪ দিনে ভারত থেকে এলো ৭২৫ মেট্রিক টন চাল

পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে ৩ শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় শিবিরের শোক

পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে ৩ শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় শিবিরের শোক

নিরীহ কোনো মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয় : আইজিপি

নিরীহ কোনো মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয় : আইজিপি

দেশকে এগিয়ে নিতে মেয়েদের সুশিক্ষা অর্জনের বিকল্প নেই - শেরপুরের পুলিশ সুপার

দেশকে এগিয়ে নিতে মেয়েদের সুশিক্ষা অর্জনের বিকল্প নেই - শেরপুরের পুলিশ সুপার

গণতন্ত্রের মোড়কে বাকশাল কায়েম করতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা: জোনায়েদ সাকি

গণতন্ত্রের মোড়কে বাকশাল কায়েম করতে চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা: জোনায়েদ সাকি

নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় সরকার চায় - মাওলানা এবিএম জাকারিয়া

নির্বাচনের মাধ্যমে জাতীয় সরকার চায় - মাওলানা এবিএম জাকারিয়া

বৈশ্বিক নিরাপত্তা ইস্যুতে ট্রাম্পের সঙ্গে ন্যাটো প্রধানের বৈঠক

বৈশ্বিক নিরাপত্তা ইস্যুতে ট্রাম্পের সঙ্গে ন্যাটো প্রধানের বৈঠক

রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

অর্থবহ সংস্কারের   আগে নির্বাচন নয়  -প্রিন্সিপাল মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী

অর্থবহ সংস্কারের  আগে নির্বাচন নয় -প্রিন্সিপাল মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী

শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না

শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না

অপরিকল্পিত বাধ-রাস্তা নির্মাণে মাছের বিচরণ ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি হয়েছে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

অপরিকল্পিত বাধ-রাস্তা নির্মাণে মাছের বিচরণ ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি হয়েছে: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

সাটু‌রিয়ায় তে‌লের পা‌ম্পে ভয়াবহ আগুন

সাটু‌রিয়ায় তে‌লের পা‌ম্পে ভয়াবহ আগুন

নির্বাচনব্যবস্থা আমূল পুনর্গঠনের তাগিদ রাষ্ট্রচিন্তাবিদদের

নির্বাচনব্যবস্থা আমূল পুনর্গঠনের তাগিদ রাষ্ট্রচিন্তাবিদদের

কর্মস্থলে অনুপস্থিত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা

কর্মস্থলে অনুপস্থিত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা

ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৮৮৬

ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, শনাক্ত ৮৮৬