দেশে মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নেই: ডা. জাহিদ
১২ এপ্রিল ২০২৩, ০৭:৫৬ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:২৯ পিএম
দেশে মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহবায়ক প্রফেসর ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, আইনের শাসন না থাকায় এখন ঘরে-বাইরে কারও জীবনের নিরাপত্তা নেই। কোনো অপরাধের সঙ্গে জড়িত নয়- এমন নির্দোষ মানুষকেও অপরাধী বানিয়ে গায়েবি মামলা দেওয়া হচ্ছে। গ্রেফতার করে কারান্তরীণ করা হচ্ছে, রিমান্ডে নিয়ে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এমন কি হত্যা করা হচ্ছে। নওগাঁর সুলতানা জেসমিনকে রাস্তা থেকে র্যাব তুলে নেয়ার পর পরিবারের কাছে লাশ ফেরত দেয়া হয়েছে। কি দোষ ছিল জেসমিনের এখনো জানাতে পারে নি সরকার।
বুধবার রাজধানীর মিরপুরের একটি রেস্তোরাঁয় ইউনানি আয়ূর্বেদিক গ্রাজুয়েট ডক্টরস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-আগড্যাবের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. জাহিদ বলেন, গুম-খুন, ক্রসফায়ারসহ নানা ধরণের মানবতা বিরোধী কর্মকা-ের মাধ্যমে সরকার দেশকে বসবাসে অযোগ্য করে ফেলেছে। তাই আমাদের তরুণরা আর দেশে থাকতে চাইছেন না। সুযোগ পেলেই তারা পাড়ি জমাচ্ছেন বিদেশে। বিদেশে যারা পড়তে যান তারা আর দেশে ফিরতে চান না। জাতি হিসেবে এটা আমাদের জন্য লজ্জার। তিনি বলেন, একটি কার্যকর ও মানবিক বাংলাদেশ গড়তে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান রাষ্ট্র মেরামতের ২৭ দফা রুপরেখা ঘোষণা করছেন। এই রূপরেখা দুর্নীতি ও দুঃশাসনের কারণে প্রায় অকার্যকর বাংলাদেশকে রক্ষা করতে পারে।
সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী বলেন, নিত্যপ্রয়োজনী দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে জনজীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। টিসিবির পণ্য কিনতেও রীতিমতো যুদ্ধ করছেন মানুষ। চাল না পেয়ে ট্রাকের নিচে পড়ে থাকা চাল কুড়িয়ে মানুষ ক্ষুধা নিবারণ করছেন। অথচ দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ না নিয়ে ব্যর্থ এ সরকার বিরোধীদল ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন নিয়ন্ত্রণ ও দমনে ফ্যাসিবাদী কায়দায় ধারাবাহিকভাবে জুলুম-নির্যাতন অব্যাহত রেখেছে।
তিনি বলেন, বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু হওয়ায় মানুষ আজ ন্যায়বিচার বঞ্চিত। অপরাধীরা দিন দিন শক্তিশালী হয়ে উঠছে। প্রতিবাদকারিরা হচ্ছে জুলুমের শিকার। আজ মানবাধিকার র্যাবের তপ্ত বুলেটে ক্ষতবিক্ষত। গণতন্ত্র পুলিশের বুটের তলায় পৃষ্ঠ। মানবতা আজ "আয়নাঘরে" আহাজারি করছে। মানুষের ভোটাধিকার লুণ্ঠন করা হয়েছে। কেড়ে নেয়া হয়েছে বাকস্বাধীনতা। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা শৃঙ্খলিত করা হয়েছে। হরণ করা হয়েছে গণতন্ত্র। স্বৈরতন্ত্রের খোলসের ভেতরে দুর্নীতি, লুটপাট, অর্থ পাচার আজ মহামারি আকারে রূপ নিয়েছে। গুম, খুন, বিনাবিচারে হত্যা, ধর্ষণ সহ্যসীমা ছড়িয়ে গেছে। এ থেকে পরিত্রাণ দরকার। এজন্য সবার আগে প্রয়োজন রাতের আঁধারে লুট হয়ে যাওয়া মানুষের ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা। লুণ্ঠিত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা। স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নিশ্চিত করা।
সাংবাদিকদের এ নেতা বলেন, দেশ আজ একটি দল ও পরিবারের হাতে জিম্মি। কোথাও কাউকে জবাবদিহিতা করতে হচ্ছে না। বিনা ভোটে জয়ী হওয়ার সংস্কৃতি চালু হয়েছে। স্বাধীন দেশে আজ ভিন্ন মত দমনে রাষ্ট্রযন্ত্রের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে কর্তৃত্ববাদী শাসনের সামাজিক ভিত্তি রচনা করা হচ্ছে। ক্ষমতার লিপ্সা রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দিয়েছে, রাষ্ট্রকে দেউলিয়া করে ফেলেছে। সুতরাং দেশ ও জনগণের স্বার্থেই এ অবৈধ আওয়ামী সরকারের পতন ও রাষ্ট্র মেরামত আবশ্যক হয়ে পড়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রফেসর ডা. সিরাজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থার মূল ভিত্তি হচ্ছে জনগণের শাসন। আর এই শাসন ব্যবস্থা আবর্তিত হয় মানুষের ভোটাধিকার প্রয়োগের মধ্য দিয়ে। ‘আমার ভোট আমি দেবো, যাকে খুশি তাকে দেবো’-এটাই মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত করার মূল শর্ত। দুর্ভাগ্য মানুষ এখন আর পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারছে না।আমরা দেখলাম, দিনের ভোট আগের দিন রাতেই হয়ে গেছে। সুপ্রিম কোর্ট বার নির্বাচনেও আইনজীবীরা ভোট দিতে পারে নি।এর আগে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকরা ভোট দিতে পারে নি।এভাবে সর্বস্তরে ভোটাধিকার হরণ করা হচ্ছে।ভোটাধিকার কেড়ে নেয়া মানে গণতন্ত্রকে হত্যা করা।যা প্রতিনিয়ত এ বিনাভোটের সরকার করছে। একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে এর চাইতে বড় লজ্জার বিষয় আর কিছু হতে পারে না।
আগড্যাবের সভাপতি মির্জা লুৎফর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে ও ডা. আমিনুল বারি কাননের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য রাখেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য প্রফেসর ড. লুৎফর রহমান, বিএনপির সহ-স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা সিদ্দিকী, অধ্যক্ষ ডা. আতাউর রহমান, বিএনপি নির্বাহী কমিটির সদস্য মামুন হাসান, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক জোটের মহাসচিব রফিকুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার মুহাম্মদ হানিফ, এমট্যাবের মহাসচিব বিপ্লবউজ্জামান বিপ্লব, ডা. মিজানুর রহমান খান, ডা. মাসুদুল ইসলাম দুখু, ডা. আবদুল মজিদ, ডা. গোলাম হায়াত, ডা. মেহেদী জামান, ডা. সোহেল, এমট্যাবের হাফিজুর রহমান, ডা. আরিফুর রহমান. ডা. মামুন প্রমুখ।
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
সরাইলে বিএনপি-যুবদলের সংঘর্ষে আহত ১০
পিকনিক বাসে তিন শিক্ষার্থীর মৃত্যু : ময়মনসিংহ পল্লী বিদ্যুতের ৭ কর্মকর্তা-কর্মচারী বরখাস্ত
সাবেক প্রধান বিচারপতির মৃত্যুতে সুপ্রিম কোর্ট বন্ধ থাকবে আজ
বাংলাদেশ সফরে আসতে পারেন ব্রিটেনের রাজা তৃতীয় চার্লস
কুড়িগ্রামে বাড়ছে শীতের তীব্রতা, তাপমাত্রা ১৫.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস
আজ ঢাকায় বাংলাদেশ-বেলজিয়াম রাজনৈতিক সংলাপ
চকরিয়ায় দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত
কুরস্কে ৪০ শতাংশ এলাকার দখল হারিয়েছে ইউক্রেন
আমরা জমিদার নই,মানুষের পাহারাদার : মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
জর্ডানে ইসরাইলি দূতাবাসের কাছে গুলি, বন্দুকধারী নিহত
ট্রাম্পের জয়ের পর ইলন মাস্কের সম্পদ বাড়ছে রকেট গতিতে
ভয়াবহ তুষারঝড়ে বিপর্যস্ত যুক্তরাজ্য, বহু ফ্লাইট বাতিল
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ১২০ ফিলিস্তিনি
ইভেন্টের সেরা লড়াইটি উপহার দিলেন আফরা-সানজিদা
ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান পাহাড়ের পর জয়-জাকিরকে হারিয়ে চাপে বাংলাদেশ
নাটকীয় শেষ দশ মিনিটে দুই গোল শোধ করে বার্সাকে রুখে দিল সেল্তা
বিবর্ণ সিটিকে ইতিহাদেই বিধ্বস্ত করলো টটেনহ্যাম
নটিংহ্যামকে হারিয়ে চার ম্যাচের জয়খরা কাটালো আর্সেনাল
স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবী অত্যন্ত যৌক্তিক
পাঠ্যবই ছাপায় অনিয়মে আনন্দ প্রিন্টার্সকে সতর্কতা