সরকারের পতনের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলনে যাবে ইসলামী আন্দোলন
১৮ জুন ২০২৩, ০৩:৫৫ পিএম | আপডেট: ১৮ জুন ২০২৩, ০৩:৫৫ পিএম
আওয়ামী লীগ সরকার দেশের নির্বাচন ব্যবস্থাকেই ধ্বংস করে ফেলেছে। বিগত ১৪ বছর দেশে কোন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হয়নি। আগামীতে মানুষ আর তামাশা ও প্রহসনের নির্বাচবন দেখতে চায় না। জাতীয় সংসদ বহাল রেখে দলী সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে, সেই নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে না। বর্তমান সংসদ ভেঙ্গে দিয়ে পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নিসর্বাচনবকালীন জাতীয় সরকারে অধীনে সকল দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য জাতীয় নির্বাচন দিতে হবে। বর্তমান সরকারের পতন ও সিইসির পদত্যাগের দাবিতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ যুগপৎ আন্দোলন করবে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয় না। দলীয় সরকারের অধীনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিবে না। জনগণের স্বার্থেই নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। সংসদ ভেঙ্গে দেয়ার পাশাপাশি বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে নিবর্কাচনকালীন জাতীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও দেশপ্রেমিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনকালীন জাতীয় সরকারের বিস্তৃত রূপরেখা ঘোষণা করা হবে ইনশাআল্লাহ। বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট চোরের এই সরকারের নির্লজ্জ চরিত্র আরেক বার প্রকাশিত হয়েছে। আজ রোববার পুরানা পল্টনস্থ ইসলামী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হাতপাখার মেয়র প্রার্থী দলের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ববরোচিত হামলার প্রতিবাদ, সিইসির পদত্যাগ এবং জাতীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবিতে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে দলের আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই এসব কথা বলেন। পীর সাহেব বলেন, ইভিএম এর প্রহসনের নির্বাচনে আমরা যাবো না। এক প্রশ্নের জবাবে পীর সাহেব বলেন, ভারত কী ভাবে এই সরকারকে ক্ষমতায় রাখবে তা’ বুঝে আসে না। বর্তমান সরকার এক দলীয় নির্বাচন পদ্ধতি জনগণের উপর চাপিয়ে দিয়েছে। তিনি বলেন , ক্ষমতাসীন আওয়ামীলীগ নবম জাতীয় সংসদে একতরফাভাবে সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী পাশ করার পর থেকেই রাজনৈতিক সঙ্কটে নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। রাজনৈতিক সঙ্কট উত্তরণের দাবী উঠলেও এ যাবত কার্যকরী কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য প্রিন্সিপাল মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, প্রেসিডিয়াম সদস্য আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা আলহাজ আব্দুর রহমান, মাওলানা আহমদ আব্দুল কাইয়ূম, অধ্যাপক সৈয়দ বেলায়েত হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, মাওলানা আরিফুর রহমান ও মুক্তিযোদ্ধা প্রজন্ম সংগঠনের সভাপতি শহিদুল ইসলাম কবীর। এক প্রশ্নের জবাবে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, ইসলামী আন্দোলনের দাওয়াত ব্যক্তি পর্যায়ে পৌঁছে দেয়া এবং দেশে বঞ্চিত মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই আমরা স্থানীয় নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। পীর সাহেব বলেন, গত ১২ জুন বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা নির্মম ও পৈশাচিকভাবে হাতপাখার মেয়রপ্রার্থী মুফতি ফয়জুল করীমকে দফায় দফায় আক্রমণ করেছে। চরমভাবে অপমান অপদস্ত করেছে এমনকি শারীরিকভাবে আক্রমণ করে রক্তাক্ত করেছে। প্রধান নির্বাচন কমিশন হাবিবুল আউয়াল একজন অবিবেচক উন্মাদের মতো মুফতি ফয়জুল করীমের শরীর থেকে রক্তক্ষরণ নিয়ে তুচ্ছতাচ্ছিল্য ও উপহাস করেছেন। আমরা অবিলম্বে কান্ডজ্ঞানহীন বিকারগ্রস্ত সিইসি হাবিবুল আউয়ালের
পদত্যাগ করতে হবে। সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে। পীর সাহেব বলেন, অবিলম্বে বিনা পবচারে দীর্ঘদিন ধরে কারাবন্দি সকল মজলুম আলেম এবং রাজবন্দিদের মুক্তি দিতে হবে। বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে। পীর সাহেব কতিপয় প্রস্তাব ও দাবি তুলে ধরেন। তিনি আগামী বুধবার সকাল ১০টায় প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ ও ব্যর্থ নির্বাচন কমিশন বাতিলের দাবিতে নির্বাচন কমিশন কার্যালয় অভিমূকে গণমিছিলের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এছাড়া তিনি বিদ্যমান রাজনৈতিক সঙ্কট উত্তরণ ও একটি সুষ্ঠু নিরপেক্ষ জাতীয় নির্বাচনের লক্ষ্যে করণীয় বিষয়ে আগামী ২৪ জুন শনিবার রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি এবং শীর্ষ ওলামা মাশায়েখ ও বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজনের কথা ঘোষণা দেন।
বিভাগ : মহানগর
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও