ঢাকা   রোববার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ | ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

তাবলিগের বিরোধের কারণ সরকারের বোঝা দরকার : নেয়ামাতুল্লাহ ফরিদি

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৪ পিএম | আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০১:০৪ পিএম

জামিয়া ইসলামিয়া যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসার মুহাদ্দিস হজরত মাওলানা নেয়ামাতুল্লাহ ফরিদী বলেছেন, তাবলিগের চলমান বিরোধ কীসের তা বর্তমান উপদেষ্টা শাসিত সরকারের বোঝা দরকার। তিনি বলেন, এই বিরোধ শুধু দৃষ্টিগত বিরোধ নয় বরং ধর্মীয় বিরোধ।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দাওয়াত ও তাবলিগ, মাদারেসে কওমিয়া এবং দীনের হেফাজতের লক্ষ্যে আয়োজিত ইসলামি মহাসম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।

মাওলানা নেয়ামাতুল্লাহ ফরিদী মাওলানা সাদ কান্ধলভীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার ভুল ধরে, যে নবীর ভুল ধরে তাকে সুযোগ দিলে উম্মাহকে গোমরাহ করবে। অতএব এই বিরোধ শুধু দৃষ্টিগত বিরোধ নয় বরং ধর্মীয় বিরোধ।’

তিনি বলেন, ‘যেহেতু তাবলিগ জামাত দেওবন্দ সৃষ্টি করেছে। তাই দেওবন্দ যে সিদ্ধান্ত জানাবে সেটাই বাংলাদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত হতে হবে।’

বিরোধের কারণ ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, পৃথিবীর যত সৃষ্টি আছে সব কিছুর নেজাম দিয়েছেন আল্লাহ তাআলা। সূর্য-চন্দ্র, গ্রহ তারা, পশুপাখি জীবজন্তু সবকিছু আল্লাহ তাআলার সেই নিয়ম মেনে চলে। তাই তাদের মাঝে শান্তি বিরাজ করে। মানবজাতির নেজামও আল্লাহ তাআলা ঠিক করেছেন। তাদেরকে আইনকানুন শিখিয়েছেন নবীগণ। তাদের অবর্তমানে সেই দায়িত্ব পালন করেন হজরত ওলামায়ে কেরাম। কিন্তু আমরা দেখতে পাই ইহুদিরা আল্লাহর আইন না মানতে নিজের হাতে নবীদের হত্যা করেছে। নিজের হাতে আলেমদের হত্যা করেছে।’

মাওলানা ফরিদী বলেন, ‘২০১৮ সালে দেখা গেল ইহুদিদের মতো তাবলিগের নামে আলেমদের গায়ে হাত তুলেছে ও হত্যা করেছে সাদপন্থিরা। এটা বড় ভয়ংকর। বিষয়টি বর্তমান উপদেষ্টা সরকারের বোঝা দরকার। এই বিরোধ কেন তাও বুঝতে হবে। এই বিরোধের অনেকগুলো কারণের একটি হলো, মাওলানা সাদ কান্ধলভী আল্লাহ তাআলা ও নবী মুসা আলাইহিস সালামের সিদ্ধান্তকে ভুল বলেছে।’

বিষয়টি ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, ‘হজরত মুসা আলাইহিস সালাম একবার আল্লাহ তাআলার সাথে দেখা করতে গেছেন। মাওলানা সাদ বলেন, তিনি উম্মতকে রেখে চলে গেছেন বিধায় তারা গোমরাহ হয়েছে। যেখানে আল্লাহ তাআলা ৩০ দিনের জন্য মুসা আলাইহিস সালামকে আদেশ দিয়েছেন আর নবী সেই আদেশ পালন করতে গেছেন। সেখানে আল্লাহর আদেশ পালনকে যে ভুল বলে তার কোনো যোগ্যতাই নেই তাবলিগ জামাতের নেতৃত্ব দেয়ার।’

উল্লেখ্য, তুরাগ নদীর তীরে ১৯৬৭ সাল থেকে শুরু হওয়া বিশ্ব ইজতেমায় মুসল্লিদের যাওয়া-আসায় সুবিধার জন্যে গত ২০১১ সাল থেকে সমাবেশটি দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। তবে ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে দুজন নিহত ও শতাধিক আহত হন। এরপর থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দুই ভাগ হয়ে পড়ে তাবলিগ জামাত।

২০১৯ সাল থেকে আলাদাভাবে বিশ্ব ইজতেমা ও তাবলিগের কার্যক্রম পরিচালনা করেন তারা। প্রথম পর্বে এই সম্মেলনে যোগদানকারী জোবায়েরপন্থি ও দ্বিতীয় পর্বে সাদপন্থিরা আয়োজক হিসেবে ভূমিকা রাখছেন। তবে ২০২৫ সালের ইজতেমায় সাদপন্থিরা প্রথম পর্বে ইজতেমা আয়োজন করতে চাইলে এর বিরোধিতা করেন আলেম-ওলামা এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ইসলামি মহাসম্মেলনের ডাক দেন তারা।

 


বিভাগ : মহানগর


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবী অত্যন্ত যৌক্তিক ধর্ম উপদেষ্টা ড.খালিদ হোসেন
মোমবাতি প্রজ্বলনে তাজরীন ট্র্যাজেডিতে নিহতদের স্মরণ
ফ্যাসিবাদের দোসররাই সিন্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি করছে: ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক নাছির
বিএনপিতে অনুপ্রবেশকারীর ঠাঁই হবে না: আমিনুল হক
পিকনিকের বাস বিদ্যুতায়িত হয়ে ৩ শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় শিবিরের শোক
আরও

আরও পড়ুন

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবী অত্যন্ত যৌক্তিক

স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসা জাতীয়করণের দাবী অত্যন্ত যৌক্তিক

পাঠ্যবই ছাপায় অনিয়মে আনন্দ প্রিন্টার্সকে সতর্কতা

পাঠ্যবই ছাপায় অনিয়মে আনন্দ প্রিন্টার্সকে সতর্কতা

দক্ষিণ লেবাননে ৬ চিকিৎসাকর্মী নিহত

দক্ষিণ লেবাননে ৬ চিকিৎসাকর্মী নিহত

জনগণের সাথে জনসংযোগ বাড়াতে হবে

জনগণের সাথে জনসংযোগ বাড়াতে হবে

আমরা যুদ্ধে বিশ্বাসী না কেউ গায়ে পড়লে জবাবের প্রস্তুতি রাখতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

আমরা যুদ্ধে বিশ্বাসী না কেউ গায়ে পড়লে জবাবের প্রস্তুতি রাখতে হবে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথের কাছে ২৭ রেফারির চিঠি

বাফুফের নতুন সভাপতি তাবিথের কাছে ২৭ রেফারির চিঠি

ফের বাড়লো সোনার দাম, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা

ফের বাড়লো সোনার দাম, ভরি ১ লাখ ৪২ হাজার টাকা

বাংলাদেশে খেলা নিয়ে অনিশ্চিয়তায় হামজা!

বাংলাদেশে খেলা নিয়ে অনিশ্চিয়তায় হামজা!

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই হবে অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফের খেলা

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামেই হবে অনূর্ধ্ব-২০ নারী সাফের খেলা

সিলেটে মাজিদের ফিফটি

সিলেটে মাজিদের ফিফটি

অ্যাম্বাসেডর কাপ উশুতে সেনাবাহিনী চ্যাম্পিয়ন

অ্যাম্বাসেডর কাপ উশুতে সেনাবাহিনী চ্যাম্পিয়ন

মাদক শুধু ব্যক্তিকে নয় পরিবারকেও ধ্বংস করে

মাদক শুধু ব্যক্তিকে নয় পরিবারকেও ধ্বংস করে

সাধারণ মানুষের পেটে লাথি মেরে আ.লীগ নিজেদের ভাগ্য গড়েছে : এমরান সালেহ প্রিন্স

সাধারণ মানুষের পেটে লাথি মেরে আ.লীগ নিজেদের ভাগ্য গড়েছে : এমরান সালেহ প্রিন্স

ধর্মদ্রোহী সরকারের সময় কোনো ধর্মই নিরাপদ ছিল না

ধর্মদ্রোহী সরকারের সময় কোনো ধর্মই নিরাপদ ছিল না

দৌলতখানে শীতকালীন সবজি পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক

দৌলতখানে শীতকালীন সবজি পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক

সুন্দরগঞ্জে ছয় পা বিশিষ্ট বাছুরের জন্ম

সুন্দরগঞ্জে ছয় পা বিশিষ্ট বাছুরের জন্ম

বৈষম্যের শিকার কুমিল্লার ১৫ হাজার এতিম শিশু

বৈষম্যের শিকার কুমিল্লার ১৫ হাজার এতিম শিশু

দালালচক্রে জিম্মি রোগীরা

দালালচক্রে জিম্মি রোগীরা

ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোই সাটুরিয়ার শিশু শিক্ষার্থীদের ভরসা

ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকোই সাটুরিয়ার শিশু শিক্ষার্থীদের ভরসা

পঞ্চগড়ে চিকিৎসক পদায়নের দাবিতে সড়ক অবরোধ

পঞ্চগড়ে চিকিৎসক পদায়নের দাবিতে সড়ক অবরোধ