ঢাকা   শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪ | ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

জুমার নামাজ শেষে কাকরাইল মসজিদ ছাড়লেন সাদপন্থীরা

Daily Inqilab অনলাইন ডেস্ক

১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৪৭ পিএম | আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৪৭ পিএম

কাকরাইল মসজিদে নিজেদের অবস্থান জানান দিতে পবিত্র জুমার নামাজ আদায় করেছেন হাজার হাজার সাদপন্থীরা। নামাজ শেষে মোনাজাতের পর তারা মসজিদ ছাড়তে শুরু করেন এবং কিছু সময়ের মধ্যে ফাঁকা হতে শুরু করে কাকরাইল মসজিদ ও আশপাশের এলাকা।

 

দাওয়াতি কার্যক্রম না থাকা সাদপন্থিরা শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে কাকরাইল এলাকা ছেড়ে নিজ নিজ গন্তব্যে চলে গেছেন। এছাড়া যাদের দাওয়াতি কার্যক্রম রয়েছে, কেবল তারা কাকরাইল মারকাজ মসজিদে অবস্থান করছেন। অনুসারীদের কাকরাইল মসজিদ থেকে বেশ কিছু নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে।

 

এর আগে শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) দুপুর ১২টা ১০ মিনিটে কাকরাইল মারকাজ মসজিদে শুরু হয় জুমার নামাজ এবং শেষ হয় সাড়ে ১২টায়। এরপর ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে শুরু হওয়া মোনাজাত শেষে দুপুর ১টার দিকে দাওয়াতি কার্যক্রমে না থাকা সাদ অনুসারীরা কাকরাইল এলাকা ছাড়তে থাকেন।

মাওলানা সাদকে আগামী ইজতেমায় আসতে দেওয়া হবে না, জুবায়েরপন্থিদের এমন ঘোষণা ও দুই পক্ষের উত্তেজনার মধ্য দিয়ে শুক্রবার সকাল থেকেই কাকরাইল মসজিদ ও তার আশেপাশের এলাকায় অবস্থান নিতে শুরু করেন সাদপন্থিরা।

কাকরাইল মসজিদ থেকে জমায়েত ছড়ায় নয়াপল্টন ও মৎস্যভবন পর্যন্ত। দুপুর ১২টার আগে হাজার হাজার লোকে পরিপূর্ণ হয়ে যায় কাকরাইল এলাকা। নিরাপত্তার স্বার্থে কাকরাইল মসজিদের পাশে, রমনা ও প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনে যাওয়ার পথটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। কাকরাইল এলাকায় অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

পরে তারা রাস্তার ফুটপাতে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে সাদপন্থিদের কাকরাইল এলাকায় আসা-যাওয়ার পথে বেশকিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অনুসারীদের চলতি পথে সেসব নির্দেশনা মেনে চলতে বলা হয়েছে। সেই নির্দেশনা মেনেই অনুসারী কাকরাইল ছেড়েছেন।

নির্দেশনাগুলো হচ্ছে, মৎস্যভবন থেকে শাহবাগের রাস্তা যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করা যাবে, কিন্তু কোনো অবস্থান করা যাবে না। অবস্থান করা যাবে কাকরাইল মসজিদের পূর্ব এবং উত্তর ও দক্ষিণে। রমনা পার্কে কোনো সাথী প্রবেশ করবে না, কাকরাইল মসজিদের উত্তর অংশ থেকে হোটেল শেরাটন পর্যন্ত কেউ চলাচল করবে না, মসজিদ থেকে মগবাজার পর্যন্ত যাতায়াত করা যাবে, কিন্তু অবস্থান করা যাবে না। শাহবাগ থেকে টিএসসসি এবং পরে দোয়েল চত্বর হয়ে হাইকোর্ট মাজার পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় কেউ ঘোরাঘুরি করবে না ও কোনো প্রয়োজনেই সেখানে যাবে না, মেট্রোরেল দেখার জন্য মেট্রো স্টেশনে কেউ প্রবেশ করবে না; রাস্তার আশপাশে কেউ মানবিক জরুরিরত (ইস্তিঞ্জা) পুরা করবে না; রাস্তায় কোনো ময়লা-আবর্জনা ফেলা যাবে না। বরং কোনো আবর্জনা দেখলে নিজ দায়িত্বে পরিস্কার করে দেবো; কোনো ভাই অসুস্থ হলে মেডিকেল টিমের সঙ্গে যোগাযোগ করবে; কোনো স্থানে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে শুধু জিম্মাদাররাই তাৎক্ষণিক সমাধানের চেষ্টা করবে। অপরাধীকে প্রয়োজনে প্রশাসনের হাতে সোপর্দ করবে। নিজের হাতে অবশ্যই কেউ আইন তুলে নেবো না।

এই জমায়েত ও তাবলিগে বিরোধ নিয়ে কথা হয় একাধিক সাদপন্থি অনুসারীর সঙ্গে। সহিদুল নামের একজন বলেন, তাবলিগে কোনো বিভক্তি নেই। হেফাজতে ইসলাম তাবলিগে প্রবেশ করে ঝামেলা তৈরি করেছে। আমরা আগেও এক প্লেটে খাবার খেয়েছি। আগামীতে তাবলিগে কোনো বিভক্তি থাকবে না।

মাওলানা সাদকে ইজতেমায় আসার সুযোগ দিতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানান কামরুল ইসলাম নামের একজন।

তিনি বলেন, প্রতিবার জুবায়েরপন্থিরা ইজতেমা করে। তারা পুরো ইজতেমা ময়দান নোংরা করে ফেলে। এবার আমরা আগে করবো। সাদ সাহেব তার বয়ানের মাধ্যমে সব বিভক্তি দূর করবেন। আগামীতে আরও বড় জমায়েত করা হবে বলেও জানান এই অনুসারীরা।

এদিকে, কাকরাইল মসজিদে অবস্থানের ক্ষেত্রে তাবলিগের দুই গ্রুপের মধ্যে মাওলানা জুবায়েরপন্থিরা চার সপ্তাহ ও মাওলানা সাদপন্থিরা দুই সপ্তাহ করে পর্যায়ক্রমে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। সেই নিয়ম অনুযায়ী, আজ সাদপন্থিরা কাকরাইল মসজিদে অবস্থান নেন।

সম্প্রতি কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গী ইজতেমা ময়দানকে দখল নিয়ে তাবলিগের দুই গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। দুই গ্রুপই পাল্টাপাল্টি বক্তব্য দিচ্ছে।


বিভাগ : মহানগর


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

বাংলাদেশে ইউরোপীয় দেশগুলোর দূতাবাস স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন
সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হচ্ছে বইমেলা
চিকিৎসক দম্পতির বাড়িতে ডাকাতি, ধানমন্ডিতে ছুরিকাঘাতে একজনের মৃত্যু
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতি চর্চার বিষয়ে বিশেষ কমিটি
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আব্দুল্লাহর জানাজা অনুষ্ঠিত
আরও

আরও পড়ুন

মাদারীপুরের শিবচরে ডাকাতি

মাদারীপুরের শিবচরে ডাকাতি

বাংলাদেশে ইউরোপীয় দেশগুলোর দূতাবাস স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন

বাংলাদেশে ইউরোপীয় দেশগুলোর দূতাবাস স্থাপনের দাবিতে মানববন্ধন

দৌলতখানে বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ তিন সন্ত্রাসী গ্রেফতার

দৌলতখানে বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ তিন সন্ত্রাসী গ্রেফতার

চালু করা হবে আবু সাঈদ ও মুগ্ধ ট্রাস্ট স্কলারশিপ

চালু করা হবে আবু সাঈদ ও মুগ্ধ ট্রাস্ট স্কলারশিপ

কেন ট্রাম্পের মনোনীত গোয়েন্দা প্রধান এত বিতর্কিত?

কেন ট্রাম্পের মনোনীত গোয়েন্দা প্রধান এত বিতর্কিত?

নির্মাণের এক বছরেই নদীতে ধসে পড়লো বাঁধ

নির্মাণের এক বছরেই নদীতে ধসে পড়লো বাঁধ

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে পিক-আপ ও সিএনজি সংঘর্ষে একজন নিহত

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে পিক-আপ ও সিএনজি সংঘর্ষে একজন নিহত

মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতা থেকে মিয়া লে রু'র সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা

মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগিতা থেকে মিয়া লে রু'র সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হচ্ছে বইমেলা

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই হচ্ছে বইমেলা

ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের টেকসই রূপরেখা

ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের টেকসই রূপরেখা

কক্সবাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক নিহত

কক্সবাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক নিহত

নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলেন লি জে-মিয়ং

নির্বাচনী আইন লঙ্ঘনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত হলেন লি জে-মিয়ং

বাংলাদেশের বন্দরে পাকিস্তানের পণ্যবাহী জাহাজ, উদ্বেগ ভারতের

বাংলাদেশের বন্দরে পাকিস্তানের পণ্যবাহী জাহাজ, উদ্বেগ ভারতের

মাদারীপুরে দুর্বৃত্তের হামলায় যাত্রীবাহী বাস ভাংচুর, যাত্রী ও কর্মচারী আহত

মাদারীপুরে দুর্বৃত্তের হামলায় যাত্রীবাহী বাস ভাংচুর, যাত্রী ও কর্মচারী আহত

বরগুনায় যৌথ অভিযানে নারীসহ ২ মাদক ব্যবসায়ী আটক

বরগুনায় যৌথ অভিযানে নারীসহ ২ মাদক ব্যবসায়ী আটক

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১০০ দিন: ক্রীড়াঙ্গনে নতুন দিনের স্বপ্ন

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ১০০ দিন: ক্রীড়াঙ্গনে নতুন দিনের স্বপ্ন

মির্জাপুরে দুই কোটি টাকা মূল্যের স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা উদ্ধার

মির্জাপুরে দুই কোটি টাকা মূল্যের স্বর্ণালঙ্কার ও নগদ টাকা উদ্ধার

বঙ্গবন্ধু বাদ দিয়ে তিন মাস পর খুললো গাজীপুরের সাফারি পার্ক

বঙ্গবন্ধু বাদ দিয়ে তিন মাস পর খুললো গাজীপুরের সাফারি পার্ক

স্পেনের বৃদ্ধাশ্রমে ভয়াবহ আগুনে ১০ জনের মৃত্যু

স্পেনের বৃদ্ধাশ্রমে ভয়াবহ আগুনে ১০ জনের মৃত্যু

চাটমোহরে নিখোঁজের পরদিন বিলে ভেসে উঠল কৃষকের লাশ

চাটমোহরে নিখোঁজের পরদিন বিলে ভেসে উঠল কৃষকের লাশ