হিসাব মিলে না পণ্যের দামে
১৭ মার্চ ২০২৩, ১০:৩৯ পিএম | আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:৪৫ পিএম

কয়েকদিন পর শুরু হচ্ছে সিয়াম সাধনার মাস রমজান। যার সপ্তাহখানেক আগে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে বাজারে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন গতকাল শুক্রবার আগে থেকে চড়া কিছু পণ্যের পাশাপাশি রোজায় চাহিদা বাড়া দ্রব্য বিক্রি হয় বেশি দামে। বিক্রেতারা বলছেন, দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় রোজার আগে মধ্যবিত্তের হিসেবি বাজারেও কাটছাঁট করতে বাধ্য হচ্ছে। কাস্টমার আগের চেয়ে কমে গেছে, পরিমাণে কম কিনছে। দোকানে তেমন বেচাকেনা নাই, রোজার আগে যেভাবে এতদিন মার্কেট জমে উঠত, সেভাবে আর জমছে না। এবার মাল উঠাতেও ভয় লাগছে বলে উল্লেখ করেন একজন বিক্রেতা।
এদিকে, রমজানের আগে বেড়েছে সবজির দাম। এছাড়া নতুন করে ব্রয়লার মুরগির দাম না বাড়লেও গত সপ্তাহের মতো ২৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে পাকিস্তানি কর্ক ও দেশি মুরগির দাম কিছুটা বেড়েছে। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে এ চিত্র। ক্রেতা ও বিক্রেতারা বলছেন, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি কেজি সবজিতে অন্তত ১০-২০ টাকা বেড়েছে। বিশেষ করে নতুন সবজির দাম বেড়েছে বেশি। রমজানের শুরুতে এই দাম আরও কিছুটা বাড়ার আশঙ্কা করছেন বিক্রেতারা।
শান্তিনগর ও সেগুনবাগিচা বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি সজনে বিক্রি হচ্ছে ১৮০-২০০ টাকায়, বরবটি ১০০-১২০ টাকা ও কচুরলতি ১০০-১৪০ টাকা। আর প্রতি কেজি করলা ৭০-৮০ টাকা, শিম ৫০-৬০ টাকা, পটল ৬০-৮০ টাকা, টমেটো ৪০-৫০ টাকা, বেগুন ৬০-৯০ টাকা, চিচিংগা ৬০-৮০ টাকা ও ঝিঙ্গা ৬০-৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া বাজারে লাউ প্রতি পিসি বিক্রি হচ্ছে আকার ভেদে ৫০-৮০ টাকা এবং মিষ্টি কুমড়া প্রতি ফালি ২০-৪০ টাকা দরে। এদিকে কমেনি লেবুর দাম। প্রতি হালি লেবু ৬০-৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
সবজি বিক্রেতারা বলেন, শীতকালীন সবজি শেষ হয়ে যাওয়া এবং অনেক সবজির ক্ষেতে ধান লাগানোর কারণে উৎপাদন কমে গেছে। সেই কারণে সবজির সরবরাহ কম থাকায় দাম বাড়তি। এরমধ্যে রোজার প্রভাবও রয়েছে। রোজা শুরু হলে বেগুন, শসা, লেবু, টমেটো ও ধনেপাতার দাম কিছুটা বাড়তে পারে। সঙ্গে কাঁচামরিচও।
রাজধানীর সূত্রাপুর বাজার ঘুরে দেখা যায়, রমজানে বেশি কেনা হয় এমন সব পণ্যের দাম বেড়েছে। ছোলার দাম কেজিপ্রতি বিক্রি হয় ৯০ টাকায়, যা কয়েক দিন আগেও ছিল ৮০ থেকে ৮২ টাকা। চিনির দামও ৫ টাকা বেড়ে বিক্রি হয় ১১৫ টাকা কেজিতে। ১০ ও ১৫ টাকা বেড়ে বুটের ডাল ও মসুর ডালের কেজি দাঁড়ায় ১৪০ টাকায়। পাঁচ লিটার তেল কিনতে ভোক্তাকে গুনতে হচ্ছে ৯০০ টাকা। এক কেজি লাল মরিচ কিনতে হচ্ছে ৪৫০ টাকা, যা মাসখানেক আগেও ছিল ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে। এক কেজি প্যাকেটের পোলাওর চাল ১৭০ টাকায় ঠেকেছে, যা ২০ দিন বা ১ মাস আগেও ছিল ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়।
সূত্রাপুর বাজারের এক বিক্রেতা বলেন, আমরা কী করব বলেন? দাম তো আমরা বাড়াই না। আমাদের দাম দিয়ে কিনতে হয়। তাই আমরা সেই দাম থেকে কিছুটা লাভ করে বিক্রি করি। আমাদেরও তো লাভ করতে হবে। বেশি দাম হলে মানুষ কেনাকাটা কম করে। এতে তো আমাদের আরও লোকসান হয়। আগে দেখা যেত রোজা এলে মানুষ এক মাসের বাজার একসাথে করত, কিন্তু এখন কোনো রকম এক সপ্তাহ বা দুই-তিন দিনের বাজার করছে। এতে আমাদের বিক্রি আগের তুলনায় অনেক কমে গেছে।
একই বাজারে খাসির গোশতের বিক্রেতা জানান, খাসির গোশত ১ হাজার ১৫০ টাকা কেজি। আর বকরির (ছাগলের) গোশত ১ হাজার ৫০ টাকা কেজি। আর গরুর গোশত হাড়ছাড়া ১ হাজার টাকা এবং হাড়সহ ৭৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে রোজার আগে আবারও বেড়েছে ছোলা, চিনি ও ডালের দাম। ধুপখোলা বাজারের মাছবিক্রেতা বলেন, ২ কেজি ওজনের পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ টাকা কেজি। আর রুই ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। আর অন্যান্য মাছ প্রতি কেজিতে ৩০ থেকে ৫০ টাকা বেড়েছে। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রয়লার মুরগির সেই চড়া দামই বহাল আছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকায়। আর লেয়ার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা কেজি।
সবজির মধ্যে করলার কেজি ৮০ টাকা, শিমের ৬০ টাকা, পটল ৭০ টাকা, আলুর ৩০ টাকা, টমেটোর ৫০ টাকা। এ ছাড়া বেগুন ৮০ টাকা, চিচিঙ্গা ও ঝিঙা ৭০ টাকা, লাউ প্রকারভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা এবং লেবু ৫০ থেকে ৬০ টাকা হালি দরে বিক্রি হতে দেখা যায়।
এক দম্পতি মিরপুর দুই নম্বর বাজারে এসেছেন ছোলা, ডাল, চিনি, বেসনের মত পণ্য কিনতে, যেগুলো ইফতারি বানাতে লাগে। তাদের দুজনকে মলিন মুখে ঘুরতে দেখা গেল দোকান থেকে দোকানে। তারা বললেন, দোকানিদের সাথে দামাদামিতে বনিবনা হচ্ছে না, তাই মেজাজ খারাপ। যতটুকু কিনবেন ভেবে বাসা থেকে বের হয়েছেন, সেটুকু তাদের কেনা হচ্ছে না। রোজা এলে ইফতারের জন্য সবসময় এগুলো কিনি, কিন্তু এবার দাম এত বেশি যে মনমতো কিছুই নিতে পারছি না জানান তিনি।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ৯০-১০০ টাকায় বিক্রি হওয়া ছোলা কিছুটা কমে ৮৫-৯৫ টাকায় বিক্রি হলেও দেশি ভালো জাতের ছোলা ১০০ টাকা কেজিতেই বিক্রি হচ্ছে। খোলা চিনি বিক্রি হচ্ছে ১১৫-১২০ টাকায়। ভালো মানের মসুর ডাল ১৫০ টাকা, খেসারি ডাল ৮০-৯০ টাকা, অ্যাংকরের বেসন ৭৫-৮৫ টাকা এবং বুটের বেসন বিক্রি হচ্ছে ১০০-১১০ টাকায়। ##
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

হাকিমপুরে ডাকাতির প্রস্তুতি কালে পুলিশের হাতে ৭ জন গ্রেফতার

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে দৃষ্টি শক্তি হারানো ফেনীর সাকিবের পাশে তারেক রহমান

ফের আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জানালেন সারজিস আলম

শহীদ স্বজনদের বুকফাটা কান্নায় স্তব্ধ শাহবাগের গোটা পরিবেশ

যুক্তরাষ্ট্রের বিচারক হান্না ডুগানকে এফবিআই গ্রেপ্তার করেছে

প্রধান উপদেষ্টার সাথে কাতার সফরকে স্বপ্নের মত বললেন চার ক্রীড়াবিদ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া তৃণমূলের মতামতে নয়, চাপিয়ে দেওয়া কমিটির দিকে হাঁটছে বিএনপি!

সাভারে টানা ৪০ দিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে সাইকেল উপহার পেল ১২ শিশু

পুরুষদের পর্দার বিধান প্রসঙ্গে।

বাংলাদেশ নিয়ে নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে : ব্যারিস্টার ফুয়াদ

সিলেটের দুই কিশোরীকে কক্সবাজারে নিয়ে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ!

খুব বেশি প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে এই রাষ্ট্রটি মেরামত করার : খন্দকার মুক্তাদির

ঈশ্বরগঞ্জে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

নারী সংস্কার কমিশনের ইসলাম বিরোধী প্রস্তাবনা বাতিলের দাবিতে কক্সবাজারে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ মিছিল

জকিগঞ্জে পতিত জমি চাষে আগ্রহী চাষীরা: এসডিএস-এর উদ্যোগে মতবিনিময় সভা

অটোরিকশাচালকের ছেলে আরাফাত, রাবির ‘বি’ ইউনিটে প্রথম হয়ে তাক লাগাল দেশকে

গফরগাঁওয়ে ৪ দফা দাবী আদায়ে হেফাজতের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল

গফরগাঁওয়ে ৪ দফা দাবী আদায়ে হেফাজতের সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল

নারী সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন বাতিলের দাবিতে কুমিল্লায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

যে হাসিনা পেছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে গেছে, সে কখনো নেতা হতে পারে না : আব্দুস সালাম