সংবিধানের বাইরে বিরোধী দলকে স্পেস দেয়ার সুযোগ নেই
২৮ মার্চ ২০২৩, ১১:২৯ পিএম | আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৩০ এএম
সংবিধানের বাইরে বিরোধী (বিএনপি) দলকে স্পেস দেয়ার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি বলেছেন, নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বিরোধীদের আলোচনায় অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়েছে। তবে সংবিধানের বাইরে গিয়ে বিরোধী দলকে স্পেস দেয়ার সুযোগ নেই। আমরা শুধু নির্বাচনে অংশগ্রহণের অনুরোধ করতে পারি। নির্বাচন পর্যবেক্ষণে বিদেশী পর্যকেক্ষকদের স্বাগত জানানো হবে। গতকাল মঙ্গলবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (এফডিসি) মিলনায়তনে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির আয়োজনে স্বাধীনতা দিবস বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনটির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
দেশে আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পূর্ণ অবাধ ও সুষ্ঠু হবে জানিয়ে সালমান এফ রহমান বলেন, বিরোধী দলগুলোকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহবান জানাচ্ছি। সংবিধান অনুসরণ করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন।
‘রাজনৈতিক স্পেস নাই’ এমন এক প্রশ্নের উত্তরে সালমান এফ রহমান বলেন, সামনে আগামী নির্বাচন। দুইটি জিনিস বলা হচ্ছে। একটি হচ্ছে রাজনৈতিক স্পেস। কথা না বলে যদি মুখোমুখী অবস্থানে থাকে তাহলে রাজনীতি এগুবে কীভাবে। আমাদের কথা হলো যে সংবিধান অনুয়ায়ী যা যা করার আমরা করেছি। নির্বাচন কমিশন গঠন করেছি। মহামান্য প্রেসিডেন্ট যখন বললেন নির্বাচন কমিশনে আসেন কথা বলবো। তখন একটি বিরোধী দল উনারা আসলেন না। এখন উনারা কী বলছেন, তাদের দাবিটা কী। প্রথমত, উনাদের দাবি এই সরকারের অধীনে নির্বাচন করবো না। দ্বিতীয় দাবি হচ্ছে-এই নির্বাচন কমিশনের অধীন নির্বাচনে যাবো না। তৃতীয়-আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকার পরিবর্তন করবো। নতুন তত্ত্বাবধায়ক সরকার হলে তার অধীনে নিবার্চনে যাবে। তিনি বলেন, অন্য কোনো সভ্য দেশে আছে যে, পাবলিকলি বলছে তোমাকে ক্ষমতায় থাকতে দেবো না। এটা তো রাজনৈতিক স্পেসের কারণে করতে পারছে তারা। এর চেয়ে আর বেশি রাজনৈতিক স্পেস দিতে পারি না। তারপরও আমরা অনুরোধ করছি, আপনারা আসেন। সবাই বলছি। নির্বাচন কমিশন কিছু দিন আগেও বলেছে আপনারা আসেন, কথা বলেন। উনারা যদি নির্বাচনে না আসতে চান, তাহলে সরকার তো কিছু করতে পারবে না। আমরা শুধু অনুরোধ করতে পারবো।
সালমান এফ রহমান বলেন, আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু হবে। সুন্দর একটা নির্বাচন হবে। প্রধানমন্ত্রী ইতিমধ্যে বলে দিয়েছেন, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষদের আমরা এলাও করছি। আগামী নির্বাচনটা সম্পূর্ণ অবাধ ও সুষ্ঠু হবে। এজন্য আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক আসুক। নির্বাচন কমিশন এখন স্বাধীন। কয়েকদিন আগের একটি উপ-নির্বাচন দেখেছেন। যেখানে নির্বাচন ঠিক হচ্ছে না, সেখানে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে কমিশন।
গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কারণে ব্যবসা-বিনিয়োগে বাধা হচ্ছে এমন এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা বলেন, কিছুটা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। উপায় নেই। জ্বালানি খাতে আন্তর্জাতিক বাজারে যেভাবে দাম বেড়েছে। এর আগেও আমরা ভর্তুকি দিতাম। এখনো দাম বাড়ার পরেও অনেক ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছে, দাম বাড়ার কারণে ব্যবসা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। তাদেরকে বলেছি উপায় নেই। আমরা কিন্তু বাড়াইনি। যেসব দেশের সঙ্গে আমরা রপ্তানিতে প্রতিযোগিতা করি, সেসব দেশেও বেড়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য জ্বালানির খাতের এই অবস্থা। যুদ্ধে সবচেয়ে বড় ক্ষতি জ্বালানি খাতে। এটা আমাদের হাতের বাইরে। যদি ১০ থেকে ২০ শতাংশ বাড়তো তাহলে কিছু করার থাকতো। যেখানে ১৩ থেকে ১৪ ডলারে গ্যাস কিনতাম। তা বেড়ে ৬০ ডলার হয়েছে। যদিও এখন কিছুটা কমে আসছে। এভাবে দাম বাড়ার কারণে সিরিয়াস প্রভাব পড়েছে। গ্যাসের সুখবর দিয়ে তিনি বলেন, ভোলার যে গ্যাস আছে তা মেইন লাইনে কিভাবে আনা যায় সেই ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তাহলে কিছুটা সুবিধা পাওয়া যাবে।
দেশের দ্রব্য মূল্যের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত অপর এক প্রশ্নের জবাবে সালমান এফ রহমান বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়। সারা বিশ্বে দাম বেড়েছে। টিসিবি’র মাধ্যমে ভর্তুকি দিয়ে কম দামে রমজানে বিভিন্ন আইটেমের পণ্য দেয়া হচ্ছে। যাতে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি। তিনি ব্যবসায়ীদের অনুরোধ করে বলেন, যাতে নিত্যপণ্যের দাম ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকে। দাম মাঝে মাঝে বেড়ে যায়। সরকার ব্যবস্থা নেয়ার পরে আবার কমেও আসে।
শ্রমিকদের বেতন বাড়ানোর সংক্রান্ত সিপিডি’র বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর এই উপদেষ্টা বলেন, শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধির বিষয়টি চলমান প্রক্রিয়া। প্রধানমন্ত্রী সব সময়ে শ্রমিকদের চাওয়ার আগেই কিন্তু উনি ন্যূনতম মুজরি বাড়িয়ে দেন। হঠাৎ সিপিডি’র দাবি করলেই তো হবে না। বিষয়টি শ্রমিকদের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে হয়ে থাকে। তিনি বলেন, বিশ্বে বিভিন্ন দেশে যখন কথা বলি যে বাংলাদেশ ১৬ কোটি মানুষের দেশ। জনসংখ্যার দিক থেকে অষ্টম বৃহৎ দেশ। আমরা জনসংখ্যার দিক থেকে খুবই ঘনত্বপূর্ণ একটি দেশ। পুরো আমেরিকায় যে জনসংখ্যা রয়েছে তার ৫০ শতাংশ জনসংখ্যা এখানে বাস করে।
বর্তমান সরকারের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে সালমান এফ রহমান বলেন, গত ১৪ বছরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এতো বড় জনসংখ্যার দেশে যে উন্নতি হয়েছে, তা সত্যিই গর্ব করার মতো। স্বাধীনতার পর ২০০৯ সালে জিডিপির আকার ছিল ৯০ বিলিয়ন ডলার। ৩৫ বছর লেগেছে এখানে আসতে। আর গত ১৪ বছরে তা বেড়ে ৪৬০ বিলিয়ন ডলারে উন্নতি হয়েছে। কীভাবে কত দ্রুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অগ্রগতি হয়েছে। সব জায়গায় উন্নতি হয়েছে। এটা কিন্তু এমনি এমনি হয়নি। রাজনৈতিক অনুকূল পরিবেশ তৈরি করার কারণে এটা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, পরবর্তী চ্যালেঞ্জ হচ্ছে চতুর্থ শিল্প বিপ্লব। প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ। তার জন্য আমাদের তৈরি হতে হবে। আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ করেছি। ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে। তরুণদের অনলাইনে কর্মসংস্থান হয়েছে। তৈরি পোশাকের পর আইটি খাত ভালো করছে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে অনেক কাজ করতে হবে। প্রতিটি খাতে সরকারি-বেসরকারি পার্টনারশিপে অনেক উন্নতি হয়েছে।
সালমান এফ রহমান বলেন, করোনাকে ভালোভাবে মোকাবিলা করেছি। অনেক উন্নত দেশের আগেই আমরা করোনার ভ্যাকসিন পেয়েছি। কৃষিতে আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়েছি। ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আন্তর্জাতিক অনেক সমস্যা তৈরি হয়েছে। ভোজ্য তেলে ঘাটতি থাকলেও ভবিষ্যতে আমরা ভালো করবো।
‘সামাজিক সূচকে বাংলাদেশের অগ্রগতি স্বাধীনতার বড় অর্জন’ শীর্ষক প্রস্তাবের পক্ষে লালমাটিয়া সরকারি মহিলা কলেজ ও বিপক্ষে বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের বিতার্কিকরা অংশগ্রহণ করেন। এতে চ্যাম্পিয়ন হয় বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ। অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি›র চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বাংলাদেশের আর্থ সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে ১০ দফা দাবি তুলে ধরেন অনুষ্ঠানে।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
বিসিএ নির্বাচন সম্পন্ন: মিজান সভাপতি, মতিন সম্পাদক
ডেঙ্গুতে আরও ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৫৩
বিএনপি মুক্ত সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী: শাহজাহান চৌধুরী
সচিবালয়ে আগুন: গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর ব্যর্থতাকে দায়ী করলো এবি পার্টি
পরকীয়া প্রেমের ঘটনায় গৌরনদীতে উপ-সহকারী ২ কৃষি কর্মকর্তা এলাকাবাসীর হাতে আটক
‘প্রতিবন্ধীদের সংগঠন ও সম্পদ দখল করে পতিত সরকারের শিল্পমন্ত্রীর কন্যা’
আশিয়ান সিটির স্টলে বুকিং দিলেই মিলছে ল্যাপটপ
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি পরিকল্পিত নাশকতা: ইসলামী আইনজীবী পরিষদ
গাজীপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় বিএনপি নেতাদের ভিড়
মাদ্রাসার ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে শিশুর মৃত্যু
জকিগঞ্জে প্রাক্সিসের ৭ দিনব্যাপী ইংলিশ স্পিকিং চ্যালেঞ্জ কম্পিটিশনের পুরস্কার বিতরণী
লামায় ১৭টি ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বসতঘর পুড়ে ছাই হওয়ার ঘটনায় ৪জন গ্রেপ্তার
বিজয় দিবস টেনিস শুক্রবার শুরু
আশুলিয়ায় ভাড়াটিয়া তাড়িয়ে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ
আজানের জবাব দেওয়া প্রসঙ্গে।
লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে নাকে খত দেওয়ার ঘটনায় মামলা
শরীয়তপুরে শ্রমিক দলের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
হেঁটে টেকনাফ গেলেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাসেদুল
বিদেশি অপারেটরের সঙ্গে সম্পাদিত গোপন চুক্তি বাতিল চেয়ে আইনি নোটিশ!
বাগেরহাটে জেলা একীভূত চক্ষু সেবা কর্মসূচির এডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত