উজানের পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টিতে বন্যা বৃষ্টি-বন্যায় কোরবানির পশু বিক্রিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার শঙ্কা : কর্পোরেট হাউজের বিক্রেতারা অনলাইনে পশুর ন্যায্য দাম পেলেও কৃষক ও ক্ষুদ্র খামারিদের গুনতে হবে লোকসান :: নিম্নাঞ্চলে ঘরে পানি উঠলে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে আসবে এবং অনেক পরিবারকে ঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যেতে হবে :: আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হচ্ছে অনেক চরাঞ্চলে পানি নীচে থাকলেও ঈদের আগে বড় বন্যার আশঙ্কা নেই তবে ভারী বৃষ্টি হতে পারে

ঈদের আগে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা

Daily Inqilab স্টাফ রিপোর্টার

২০ জুন ২০২৩, ১১:৩৭ পিএম | আপডেট: ২১ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম

আষাঢ় মাসের আজ ৭ তারিখ। ঈদুল আহজার আর মাত্র ৮ দিন বাকী। ঈদের মাঝখানে এই ৭ দিন গ্রামীণ অর্থনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সারাদেশের হাজার হাজার খামারি এবং গ্রামগঞ্জের লাখো কৃষক পশু পালন করেছেন ঈদুল আহজায় বিক্রীর জন্য। কিন্তু ঝড়-বৃষ্টি, বন্য তাদের জন্য যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘাঁ’ হয়ে দেখা দিচ্ছে। ইতোমধ্যেই বৃষ্টির কারণে পশু হাটে নেয়ায় সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। রংপুর, লালমনিরহাট, নিলফামারি, কৃড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া ও সিরাজগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ জেলার নি¤œাঞ্চল পানিতে তলিয়ে গেছে। বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা মো. আরিফুজ্জামান জানিয়েছেন, আগামী ১০ দিন বিভিন্ন এলাকায় ভারি বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে। একদিকে বন্যা অন্যদিকে বৃষ্টি ঈদের সময় জনজীবন দুর্ভোগে ফেলতে পারে। উজানে ভারী বৃষ্টিপাত, প্রবল বন্যা ও ভূমিধসে বিপর্যস্ত ভারতের আসাম ও সিকিম রাজ্য। টানা বৃষ্টিপাতে প্লাবিত হয়ে গেছে আসামের বিস্তীর্ণ লোকালয়। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ১৩ জেলার বাসিন্দা। বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। সিকিমে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ চলছে। এবার সিলেটে ধেয়ে আসছে আসামের বন্যা। আসামের পাহাড়ি ঢল গত বছরের মতো এবারও সিলেট, সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারে তান্ডব চালাবে এমন আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদিকে গজলডোবা বাঁধের গেইট খুলে দেয়ায় তিস্তা ব্যারেজের সবগুলো ৪৪টি গেইট খুলে দেয়ায় তিস্তায় পানি বেড়ে গেছে। উজানে পাহাড়ি ঢলে নদনদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ উৎকন্ঠায় পড়ে গেছেন নি¤œাঞ্চলের মানুষ। আবার যারা ঈদুল আজহায় বিক্রীর লক্ষ্যে গবাদিপশু প্রতিপালন করেছেন তারা বৃষ্টির কারণে ন্যায্য দাম পান কিনা তা নিয়ে উদ্বেগে রয়েছেন।

২০১৫ সালে নরেন্দ্র মোদী সরকার ভারত থেকে গরু সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে দেয়। এরপর থেকে বাংলাদেশে গ্রামগঞ্জে কৃষক পর্যায়ে ঘরে ঘরে গরু-ছাগল প্রতিপালন শুরু হয়। গ্রাম পর্যায়ে ব্যবসায়ীরাও ছোট ছোট গরুর খামার গড়ে তোলেন। দেশের চরাঞ্চলগুলোতেও গরুর বাথান করে গরু প্রতিপালন করা হয় ঈদুল আজহায় বিক্রীর জন্য। শুধু তাই নয় গরুর চাহিদা বেশি এবং লাভও বেশি বুঝতে পেরে দেশের কর্পোরেশট হাউজ তথা বড় বড় ব্যবসায়ীরা বিশাল বিশাল এগ্রো খামার গড়ে তোলেন ঈদুল আজহায় পশু বিক্রীর লক্ষ্যে। এতোমধ্যেই কোরনানীর পশু রাজধানী ঢাকার হাটগুলোতে উঠতে শুরু করেছে। বিভাগীয় শহর, জেলা শহর ও উপজেলা শহরগুলোর হাটে কোরবানির পশু বিক্রি দেদারসে হচ্ছে। এ অবস্থায় বৃষ্টি ও বন্যা কার্যত ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দেখা দিয়েছে। কৃষক ও চরাঞ্চলের ‘বাথান’ পর্যায়ের বিক্রেতাদের আশঙ্কা বৃষ্টি ও বন্যা হলে গরুর ন্যায্য দাম পাবেন না। কম দামে গরু বিক্রি করতে বাধ্য হবেন।

ইনকিলাবের রংপুর বিভাগ ও সিলেট বিভাগের বিভিন্ন উপজেলায় কর্মরত সংবাদদাতারা জানান, গ্রীষ্মের প্রচ- দাবদাহের পর আষাঢ় শুরু হতে না হতেই দেশের নদনদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। এক সাপ্তাহ আগেও যে তিস্তাসহ উত্তরাঞ্চলের নদীগুলো শুকনো ছিল সেগুলো এখন পানিতে টইটুম্বুর। রংপুরের তিস্তা কোনো কোনো পয়েন্টে এবং সিলেটের সুরমা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে গ্রাম, বিল, চরাঞ্চলের শাকসব্জির ক্ষেতে পানি ঢুকে পড়েছে। তলিয়ে গেছে নিম্নাঞ্চল। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঈদের আগেই বন্যার আশঙ্কা প্রকাশ করা করা হচ্ছে। বিশেষ করে ভারতের আসাম রাজ্যে ব্যপক বন্যা হওয়ায় সিলেট, সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলের মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। তাদের শঙ্কা গত বছরের মতো বন্যা তাদের সবকিছু ভাসিয়ে নিয়ে যেতে পারে।

রংপুর ও কুড়্রগিাম জেলার একাধিক উপজেলা সংবাদদাতা জানান, রংপুরের তিস্তা নদীতে উজান থেকে আসা পাহাড়ি ঢল নামতে শুরু করেছে। উজানে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় শুকনো তিস্তায় এখন হু হু করে পানি বাড়ছে। তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি এখনো বিপৎসীমার নিচে থাকলেও আজ বুধবার সকালে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে। এ অবস্থায় পবিত্র ঈদুল আজহার আগে তিস্তার তীরের বাসিন্দাদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) রংপুর কার্যালয় জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত তিস্তা ব্যারাজের ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ৪০ সেন্টিমিটার নিচে অবস্থান করলেও উজানে ভারী বৃষ্টি হওয়ায় তিস্তায় পানি বেড়ে বুধবার বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করতে পারে। তিস্তা ছাড়াও কুড়িগ্রামের ধরলা ও দুধকুমার নদের পানি অব্যাহতভাবে বাড়তে পারে। তিস্তা নদী-তীরবর্তী রংপুরের বিভাগের ৫ জেলার চরাঞ্চলের মানুষজনের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় পড়ে গেছেন কখন বাসা-বাসিড়ে পানি ওঠে। পানিবন্দী হওয়ার আশঙ্কায় বাড়িঘর ছেড়ে নিরাপদ স্থানে যেতে প্রস্তুতিও নিচ্ছেন চরাঞ্চলের বাসিন্দারা।

জানতে চাইলে পাউবোর রংপুর কার্যালয়ের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, ভারতের পাহাড়ি ঢল নামতে শুরু করেছে। এ কারণে তিস্তায় পানি বেড়ে যেতে পারে। পানির স্রোতের কারণে নিয়মানুযায়ী তিস্তা ব্যারাজের সব কটি তথা ৪৪টি জলকপাট খুলে দিতে বাধ্য হয়েছি। সামনে কয়েকদিন নদীতে পানি বাড়তেই থাকবে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র বলছে, তিস্তা-ব্রহ্মপুত্র-যমুনা ও গঙ্গা-পদ্মাসহ দেশের প্রধান নদনদীতে আগামী ৭২ ঘণ্টা পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। আর দুধকুমার নদীর পাটেশ্বরী পয়েন্টে গতকাল পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছে। টানা বৃষ্টি ও উজানের আসাম থেকে নেমে আসা ঢলে দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে কুড়িগ্রামের ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা, দুধকুমারসহ ১৬টি নদ-নদীর পানি। এখন পর্যন্ত সবগুলো পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলোর ক্ষেত-খামার পানিতে তলিয়ে গেছে। ঘর-বাড়িতে পানি প্রবেশ না করলেও তলিয়ে গেছে এসব এলাকার পটল, ঢেঁড়সসহ বিভিন্ন সবজি ক্ষেত। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় বন্যার আশংকায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন চরাঞ্চলের মানুষজন। সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষরা দুঃশ্চিন্তায় পড়েছেন। কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের মোল্লারহাট এলাকার মতিয়ার রহমান জানান, ব্রহ্মপুত্রের পানি খুবই দ্রুত গতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। নতুন চরগুলোতে পানি প্রবেশ করছে। এভাবে পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে চরাঞ্চলের ঘর-বাড়ি নিমজ্জিত হয়ে পড়বে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ-আল-মামুন জানান, জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত সবগুলো নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলেও এখনও বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে আগামী ২২ ও ২৩ জুন এসব নদ-নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করতে পারে। তবে আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী আগামী ১০ দিনের মধ্যে (ঈদের আগে ও পরে) বড় কোন বন্যার সম্ভাবনা নেই।

‘ঈদের আগে বড় ধরণের বন্যার আশঙ্কা নেই’ আবহাওয়ার এমন পূর্বাভাস দিলেও বৃষ্টির কারণে কোরবানির হাটে পশু আনা নেয়া এবং বিক্রি নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছেন ব্যাপারী ও ক্ষুদ্র খামারীরা। কর্পোরেট হাউজ ও বড় বড় ব্যবসায়ীরা বেশির ভাগ গরু ডিজিটাল হাট তথা অনলাইনে বিক্রি করলেও কৃষক ও ক্ষুদ্র খামারী পর্যায়ের পশু বিক্রেতারা বৃষ্টিকে বাধা হিসেবে দেখছেন। তারা মনে করছেন, বৃষ্টি বেশি হলে তারা হাটে পশুর ন্যার্য্য দাম থেকে বঞ্ছিত হবেন।

এদিকে সরকারি হিসেবে এবারের ঈদুল আজহায় দেশে কোরবানির জন্য পশুর চাহিদা এক কোটি ৩ লাখ ৯৪ হাজার ৭৩৯টি। আর কোরবানির জন্য দেশে পশু রয়েছে এক কোটি ২৫ লাখ ৩৬ হাজার ৩৩৩টি। যা গত বছরের চেয়ে ৪ লাখ ১১ হাজার বেশি। এই হিসাবে এবার কোরবানির চাহিদার চেয়ে ২১ লাখ ৪১ হাজার ৫৯৪টি বেশি আছে। কোরবানির পশুর মধ্যে ৪৮ লাখ ৪৩ হাজারের বেশি গরু-মহিষ, প্রায় ৭৭ লাখ ছাগল-ভেড়া এবং আড়াই হাজারের বেশি অন্যান্য প্রজাতির গবাদিপশু।

সিরাজগঞ্জ পাউবো সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি প্রায় ৫০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়েছে। গতকাল সিরাজগঞ্জের হার্ড পয়েন্টে যমুনার পানি বিপৎসীমার ১ দশমিক ০৫ মিটার নিচ দিয়ে ১১ দশমিক ৮৫ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে। একই সময় কাজিপুর পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ দশমিক ৬৩ মিটার নিচ দিয়ে ১৩ দশমিক ১৭ মিটার উচ্চতায় প্রবাহিত হচ্ছে।

সিরাজগঞ্জ সদর, কাজিপুর, চৌহালি, শাহজাদপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল ইতোমধ্যে প্লাবিত হয়েছে। সিরাজগঞ্জ পাউবোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার বলেন, যেভাবে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে যমুনার পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছাবে। তবে পানি বাড়লেও আপাতত বন্যার শঙ্কা নেই। পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি পৌঁছার পর আবারও পানি কমতে শুরু করবে। পরবর্তীতে আবার পানি বাড়বে। সে সময় বন্যার আশঙ্কা আছে।

গত সোমবার বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র আগামী ১৫ দিনের বর্ধিত পূর্বাভাস দিয়েছে। সেই পূর্বাভাস অনুসারে, আগামী ২২-২৩ জুন কুড়িগ্রামের উলিপুর ও চিলমারী উপজেলার চরাঞ্চল এবং নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো ব্রহ্মপুত্রের পানিতে সাময়িক প্লাবিত হতে পারে। তবে ওই অঞ্চলে আগামী ২ সপ্তাহে বড় বন্যার আশঙ্কা নেই বলেও পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে। জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ ও ইসলামপুর উপজেলার চরাঞ্চল ও নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলোয় যমুনার পানি বেড়ে আগামী ২২-২৩ জুন নাগাদ সাময়িক বন্যা হতে পারে। তবে ওই অঞ্চলে আগামী ২ সপ্তাহে বড় বন্যার আশঙ্কা নেই বলেও জানানো হয়েছে। গাইবান্ধার সাঘাটা ও ফুলছড়ি, জামালপুরের সরিষাবাড়ী ও মাদারগঞ্জ এবং বগুড়ার সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলার চরাঞ্চল ও নিম্নাঞ্চলগুলোয় যমুনার পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে। তবে আগামী ২ সপ্তাহের মধ্যে ওই এলাকায় বড় বন্যার আশঙ্কা নেই। বগুড়া সারিয়াকান্দি উপজেলার চর বাটিয়ার আবদুর রহমান নিজের আশঙ্কার কথা প্রকাশ করে বলেন, মানুষ যখন ঈদের আনন্দ করবে তখন আমাদের চিন্তা করতে হবে গবাদি পশু ও শিশুদের নিয়ে। গবাদি পশুর খাবারের দাম অনেক। বন্যা হলে খুব বিপদে পড়ে যাব। গত ৩ দিন ধরে নদ-নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। ঈদের আগে বন্যা হলে চরাঞ্চলের মানুষের খুব কষ্ট হবে। কম দামে গরু-ছাগল বেচে দিতে হবে।

এদিকে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং ভারতের মেঘালয় ও আসাম প্রদেশে ব্যাপক বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দেওয়া পূর্বাভাস অনুযায়ী, উজানের পানি নেমে সুরমা, কুশিয়ারা, মনু, খোয়াই, সারিগোয়াইন, ঝালুখালি, ভোগাই-কংশ, সোমেশ্বরী ও যাদুকাটা নদীর পানি সমতল দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এবং বিভাগের ৪ টি জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। গতকাল রোববার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি সিলেটের কানাইঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার মাত্র ১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং হবিগঞ্জের বাল্লা পয়েন্টে খোয়াই নদী বিপদসীমার ১৮ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সুরমা নদী সিলেট শহর পয়েন্টে বিপদসীমার ৮২ সেন্টিমিটার নিচে, সুনামগঞ্জ পয়েন্টে ৭৬ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারা, সারিগোয়াইন, মনু, ধলাই, পুরাতন সুরমা, যাদুকাটা, সোমেশ্বরী, ভোগাই, কংস নদীর পানি এখনো বিপদসীমার অনেকটা নিচে দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম না করলেও জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলা এবং সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলার নিম্নাঞ্চলে বেশ কিছু গ্রামে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। জানতে চাইলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী আসিফ আহমেদ বলেন, গত শনিবার কিছু সময়ের জন্য কানাইঘাটে সুরমা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে তারপর আবারও বিপদসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নিম্নাঞ্চলের কিছু কিছু এলাকা প্লাবিত হলেও আপাতত তীব্র বন্যার আশঙ্কা নেই। ##


বিভাগ : জাতীয়


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

আ.লীগের নিবন্ধন বাতিলসহ ৩ দফা দাবিতে ৭ দিনের আল্টিমেটাম ইনকিলাব মঞ্চের
এলজিইডির এক প্রকল্পে ৪০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
সম্প্রীতির জন্য রাখাইন রাজ্যে টেকসই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন অপরিহার্য: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
বঙ্গবন্ধু রেলসেতুর নাম বদলে হলো ‘যমুনা রেলসেতু’
আরও

আরও পড়ুন

মাদারীপুরে ভুয়া সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্র জনতা

মাদারীপুরে ভুয়া সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে ছাত্র জনতা

সেনবাগে ট্রাক্টর চাপায় ১ শিশু মৃত্যু : আহত ১

সেনবাগে ট্রাক্টর চাপায় ১ শিশু মৃত্যু : আহত ১

আ.লীগের নিবন্ধন বাতিলসহ ৩ দফা দাবিতে ৭ দিনের আল্টিমেটাম ইনকিলাব মঞ্চের

আ.লীগের নিবন্ধন বাতিলসহ ৩ দফা দাবিতে ৭ দিনের আল্টিমেটাম ইনকিলাব মঞ্চের

ঢাকা ফাইট নাইট ৪.০-এ জয়ী মোহাম্মদ ‘রয়্যাল বেঙ্গল’ ফাহাদ

ঢাকা ফাইট নাইট ৪.০-এ জয়ী মোহাম্মদ ‘রয়্যাল বেঙ্গল’ ফাহাদ

শহীদ আবু সাঈদকে কটূক্তি, ক্ষমা চাইলেন কিশোরগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিছ আলী ভূঁইয়া

শহীদ আবু সাঈদকে কটূক্তি, ক্ষমা চাইলেন কিশোরগঞ্জের মুক্তিযোদ্ধা ইদ্রিছ আলী ভূঁইয়া

মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের বার্ষিক কমিটি গঠন

মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রেসক্লাবের বার্ষিক কমিটি গঠন

টাঙ্গাইলে কাকুয়ায় সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর পক্ষ থেকে সুবিধা বঞ্চিত গরীব অসহায়দের শীতবস্ত্র বিতরণ

টাঙ্গাইলে কাকুয়ায় সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর পক্ষ থেকে সুবিধা বঞ্চিত গরীব অসহায়দের শীতবস্ত্র বিতরণ

নোয়াখালীকে বিভাগ ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন

নোয়াখালীকে বিভাগ ঘোষণার দাবিতে মানববন্ধন

রাজশাহীর আদালতে আ:লীগের সাবেক এমপি আসাদের রিমান্ড মঞ্জুর

রাজশাহীর আদালতে আ:লীগের সাবেক এমপি আসাদের রিমান্ড মঞ্জুর

বগুড়ায় পুলিশের উদাসীনতায় রাতের আঁধারে জবর দখল করে ছাদ ঢালাই

বগুড়ায় পুলিশের উদাসীনতায় রাতের আঁধারে জবর দখল করে ছাদ ঢালাই

লাকসামে সরকারি খাল পাড়ের মাটি বিক্রি হচ্ছে ইটভাটায়

লাকসামে সরকারি খাল পাড়ের মাটি বিক্রি হচ্ছে ইটভাটায়

কালিহাতীতে মারামারির সন্ধিগ্ধ মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

কালিহাতীতে মারামারির সন্ধিগ্ধ মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা গ্রেপ্তার

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ইংল্যান্ড দলে নেই স্টোকস, ফিরলেন রুট

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ইংল্যান্ড দলে নেই স্টোকস, ফিরলেন রুট

ঝিকরগাছায় মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে চলছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান

ঝিকরগাছায় মৃত্যুর ঝুঁকি নিয়ে চলছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান

কেবল সেবন নয় মাদক ব্যবসায়ও জড়িত তারকারা, ডিসেম্বরের পরে দেখে নেবে কে?

কেবল সেবন নয় মাদক ব্যবসায়ও জড়িত তারকারা, ডিসেম্বরের পরে দেখে নেবে কে?

গাবতলীতে আরাফাত রহমান কোকো ফুটবল টুর্নামেন্ট ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সাবেক এমপি লালু

গাবতলীতে আরাফাত রহমান কোকো ফুটবল টুর্নামেন্ট ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সাবেক এমপি লালু

যমুনার ভাঙনের মুখে আলোকদিয়াবাসীর বসতবাড়ি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

যমুনার ভাঙনের মুখে আলোকদিয়াবাসীর বসতবাড়ি ও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা

নোবিপ্রবির সঙ্গে নেদারল্যান্ডের ইউট্রিচ বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তি স্বাক্ষর

নোবিপ্রবির সঙ্গে নেদারল্যান্ডের ইউট্রিচ বিশ্ববিদ্যালয়ের চুক্তি স্বাক্ষর

৯ দফা দাবীতে নওগাঁয় পুলিশ সুপারের কার্যালরে সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান

৯ দফা দাবীতে নওগাঁয় পুলিশ সুপারের কার্যালরে সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান

এলজিইডির এক প্রকল্পে ৪০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

এলজিইডির এক প্রকল্পে ৪০ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক